পাকিস্তানের বিখ্যাত তরুণ তিন নাত ও মানকাবাত শিল্পী আলী কাজিম খাঁজা ও তার বড় ভাই নাদিম খাঁজা ও জান আলী শাহ কাজেমিকে সমাহিত করা হয়েছে। হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে জানাযা শেষে গিলগিত-বেলুচিস্তানের নিজ নিজ গ্রামের কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
স্কার্দুর বাসিন্দা ১৬ বছর বয়সী কাজিম আলী ও ১৮ বছর বয়সী তার ভাই নাদিম, শিগারের ধর্মীয় গুরু হাসান তুরাবির ছেলে সমাজকর্মী জাইন তুরাবি রোহরির আবদুল গনি মাংরিও এবং ২৪ বছর বয়সী জান আলী শাহ গত শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) খায়েরপুরে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। অনুষ্ঠান শেষ করে করাচি ফেরার পথে সিন্ধু হাইওয়ের সান টাউনের কাছে একটি এসইউভি তাদের গাড়িকে সামনের দিক থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তারা সবাই মারা যান।
আরও পড়ুন: জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার আর নেই
তাদের লাশগুলো প্রথমে মানঝন্দ তালুক হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে করাচিতে নিয়ে তাদের দুজনকে সমাহিত করা হয়। বাকী তিনজনের লাশ স্কার্দু ও শিগারে দাফনের জন্য বিমানে করে স্কার্দু আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে আনা হয়। এসময় স্কার্দু বিমান বন্দরে লাশ গ্রহণের জন্য হাজার হাজার ভক্ত সমবেত উপস্থিত হয়েছিলেন।
পরে লাশগুলো দাফনের জন্য মারকাজি ইমামিয়া জামিয়া মসজিদে নেওয়া হলে সেখানে এক আবেগঘন দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা শাবি হুসেন বলেন, 'বেলুচিস্তানের দুই সেরা নাত ও মানকবাত শিল্পী সিন্ধুতে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোয় আজ আমরা শোকাহত।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই দুঃখিত কারণ, এই অঞ্চলের সবচেয়ে জনপ্রিয় দু'জন শিল্পীকে হারিয়েছি। যারা সারা বিশ্বে জনপ্রিয় ছিলেন।’
মুহাম্মদ আব্বাস নামে আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এটা এই অঞ্চলের জন্য দুঃখজনক। এমন প্রতিভাবান এবং জনপ্রিয় নাত ও মানকাবাত শিল্পী খুব অল্প বয়সে প্রাণ হারিয়েছেন। ‘তারা এই অঞ্চলের রত্ন ছিলেন।’
হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে জানাযায় ইমামতি করেন বেলুচিস্তানের আঞ্জুমান ইমামিয়ার সভাপতি সৈয়দ বাকির আল-হুসাইনি।
জানাজা শেষে নিহতদের লাশ দাফনের জন্য স্কার্দু ও শিগার জেলার নিজ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে, বেলুচিস্তানের আঞ্জুমান ইমামিয়া কেন্দ্রীয় সরকার এবং সিন্ধুর প্রাদেশিক প্রশাসনকে এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: সঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় আর নেই
সামাজিক মাধ্যমে শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানিয়ে ভক্তরা নিহত শিল্পীদের পরিবেশনা এবং তাদের জনপ্রিয় নাত এবং মানকাবাতগুলো নিজেদের সামাজিক মাধ্যমের ওয়ালে শেয়ার করছেন।
স্কার্দুর বাসিন্দা কাজিম স্কার্দুতে ধর্মীয় সমাবেশে খুব অল্প বয়স থেকেই নাত পরিবেশনা শুরু করেছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিনি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। কয়েক বছর আগে মানকাবাত ও নাত পাঠ করে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
কাজিম প্রায়ই নাত ও মানকাবাত পাঠের জন্য দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সমাবেশে যেতেন।