সোমবার বিকালে এন্ড্রু কিশোরের দুলাভাই ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস এ কথা জানিয়েছেন।
এন্ড্রু কিশোর সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে রাজশাহীতে এসে বর্তমানে মহানগরীর মহিষবাতান এলাকায় তার বোন ডা. শিখা বিশ্বাস ও দুলাভাই ডা. প্যাট্রিক বিপুলের বাসায় রয়েছেন।
প্যাট্রিক বিশ্বাস জানান, এন্ড্রু কিশোরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বাড়ির ক্লিনিকেই লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
তার শারীরিক সুস্থতার জন্য সবাইকে দোয়া করার আহ্বান জানিয়েছেন তার স্বজনরা।
এর আগে রবিবার বিকালে জনপ্রিয় এ কণ্ঠশিল্পীর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে।
রাত ১০টার দিকে এন্ড্রু কিশোরের ফেসবুক পেজ থেকে তার স্ত্রী একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি এন্ড্রু কিশোরের শারীরিক অবস্থার বিবরণ জানিয়ে লেখেন, ‘এখন কিশোর কোনো কথা বলে না। চুপচাপ চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকে।’
তিনি লিখেছেন, ক্যানসার এর লাস্ট স্টেজ খুব যন্ত্রনাদায়ক ও কষ্টের হয়। এন্ড্রু কিশোরের জন্য সবাই প্রাণ খুলে দোয়া করবেন, যেন কম কষ্ট পায় এবং একটু শান্তিতে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে যেতে পারে।
ব্লাড ক্যানসার নিয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর ১১ জুন রাতে বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন তিনি। পরেরদিন তিনি ঢাকা থেকে রাজশাহী চলে আসেন। এরপর থেকে তিনি তার বোন ডা. শিখার বাড়িতে রয়েছেন।
এন্ড্রু কিশোরের জন্ম রাজশাহীতে। সেখানেই কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর। এন্ড্রু কিশোর প্রাথমিকভাবে সংগীতের পাঠ শুরু করেন রাজশাহীর আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে। একসময় গানের নেশায় রাজধানীতে ছুটে আসেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক গান, লোকগান ও দেশাত্মবোধক গানে রেডিওর তালিকাভুক্ত শিল্পী হন।
১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রে ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে এন্ড্রু কিশোরের চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক যাত্রা শুরু হয়। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
এন্ড্রু কিশোরের খুব জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যেখানে’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’, ‘ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘পড়ে না চোখের পলক’, ‘পদ্মপাতার পানি’, ‘ওগো বিদেশিনী’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘আমি চিরকাল প্রেমের কাঙ্গাল’ প্রভৃতি। এন্ড্রু কিশোর আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।