স্পেনে বসবাসরত অন্তত তিন লাখ অবৈধ অভিবাসীকে তিন বছরের জন্য বসবাস ও কাজের অনুমতি দেবে দেশটির সরকার। বুধবার দেশটির অভিভাসনমন্ত্রী এলমা সাইস এ ঘোষণা দেন।
অভিবাসনপ্রত্যাশী ও আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলো যেখানে কঠোর নীতি প্রয়োগে ব্যস্ত, ঠিক সেই সময়ে উল্টো পথে হাঁটছে স্পেন।
আগামী বছরের মে মাস থেকে এই আইন কার্যকর হবে। স্পেনের বয়স্ক কর্মশক্তির বিকল্প খুঁজতেই এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির অভিভাসনমন্ত্রী।
দেশটির জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম রেডিও নাসিওনাল দে এস্পানিয়াকে বুধবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাইস বলেন, ‘কেবল সাংস্কৃতিক সম্পদ ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাই নয়, দেশের সমৃদ্ধিও এই পদক্ষেপ গ্রহণের একটি উদ্দেশ্য।’
‘আজকে স্পেনকে আমরা উত্তম দেশ বলতে পারি। দেশের উন্নতির এই ধারা বজায় রাখতে প্রতি বছর অন্তত আড়াই লাখ নিবন্ধিত বিদেশি শ্রমিকের প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: স্পেন যাওয়ার পথে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকাডুবি, নিহত ৯, নিখোঁজ ৪৮
প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ প্রায়ই অভিবাসন নীতিকে স্পেনের নিম্ন জন্মহার মোকাবিলার একটি উপায় হিসেবে বর্ণনা করেন।
মঙ্গলবার নতুন নীতিটিতে অনুমোদন দিয়েছে সানচেজের বামপন্থী সংখ্যালঘু জোট সরকার। এর ফলে অভিবাসীদের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী ভিসার জন্য প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজ এবং তাদের শ্রম নীতি আরও নিরাপদ হবে। এ ছাড়াও, আগে থেকে চাকরিরতদের দেওয়া ভিসার মেয়াদ তিন মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে অনিয়মিত ও অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে আগস্টে পশ্চিম আফ্রিকার তিনটি দেশ সফর করেন প্রধানমন্ত্রী সানচেজ।
আফ্রিকা উপকূলে অবস্থিত দ্বীপপুঞ্জটিকে সহজে ইউরোপে পৌঁছানোর রুট হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন মালি, সেনেগাল ও মৌরিতানিয়াসহ আফ্রিকার অন্যান্য দেশের তরুণরা। উন্নত জীবন ও কাজের সন্ধানে বিপজ্জনকভাবে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে এসে ওঠেন তারা। অনেকে আবার নিজ দেশের সহিংসতা ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থেকে মুক্তি পেতে চলে আসেন।
স্পেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রায় ৫৪ হাজার অভিবাসী স্থল ও সমুদ্রপথে দেশটিতে পৌঁছেছে। তবে অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশির সংখ্যা ঠিক কত, তা স্পষ্ট করে জানে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও।
কোভিড মহামারির পর পর্যটনের মাধ্যমে দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়েছে স্পেনের অর্থনীতি। বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির মধ্যে অন্যতম দেশটি।