ইয়েমেনের রাজধানী সানায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ে ঢুকে নথিপত্র, আসবাবপত্র ও যানবাহন জব্দ করেছে হুথি বিদ্রোহীরা।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) জাতিসংঘের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
জাতিসংঘ, ত্রাণ সংস্থা ও বিদেশি দূতাবাসে কর্মরতদের বিরুদ্ধে হুথিদের দমনপীড়নের সর্বশেষ পদক্ষেপ এটি। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধকে কেন্দ্র করে লোহিত সাগরের করিডোরজুড়ে ইরান-সমর্থিত এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী জাহাজ চলাচলকে লক্ষ্যবস্তু করার মাঝেই এ অভিযান চালানো হলো।
জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে বলেন, ইয়েমেনে (জাতিসংঘের) কর্মীদের নথি, আসবাবপত্র ও যানবাহনসহ সব জিনিসপত্র হস্তান্তর করতে বাধ্য করার পর বিদ্রোহীরা গত ৩ আগস্ট সানায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় প্রাঙ্গণ দখল করে।
আরও পড়ুন: মধ্যপ্রাচ্যের জলসীমায় জাহাজে হুথিদের হামলা বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের
হুথিদের প্রাতিষ্ঠানিক নাম উল্লেখ করে তুর্ক বলেন, ‘আনসার আল্লাহ বাহিনীকে অবশ্যই (জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়) প্রাঙ্গণ ত্যাগ করে অবিলম্বে সব সম্পদ ও মালামাল ফেরত দিতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে হুথিদের একজন মুখপাত্রের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। এমনকি মেসেজ দেওয়া হলে তারও উত্তর দেননি তিনি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে, গত জুন মাসের অভিযানের পর সানা ও হুথি নিয়ন্ত্রিত অন্যান্য ইয়েমেনি এলাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনের অংশে এখনও কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
২০১৪ সাল থেকে হুথিরা সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের সমর্থনে ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের সঙ্গে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। তারা দেশটির রাজধানী সানা ও উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ নেয়।
ইয়েমেনে যুদ্ধে সৈনিক ও বেসামরিক নাগরিকসহ দেড় লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি করেছে।
যুদ্ধের সময় বিদ্রোহীরা হাজার হাজার মানুষকে বন্দি করে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তারা দেশটির ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর দমন-পীড়ন জোরদার করেছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ৪৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: লোহিত সাগরে হুথিদের ৪টি নৌকা ও ২টি ড্রোন ধ্বংস করার দাবি যুক্তরাষ্ট্রের