ইসরায়েলি বিমান হামলায় গত একদিনে গাজা উপত্যকায় কমপক্ষে ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ইসরায়েল ঘোষিত মানবিক অঞ্চলের একটি অস্থায়ী ক্যাফেটেরিয়ায় ১১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এদিকে লেবাননের বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরতলীতে মঙ্গলবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩৩ জন নিহত হয়েছে।
গাজায় যখন আরও মানবিক ত্রাণ সহায়তা অনুমোদনের সময়সীমা পার হয়ে গেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে দেওয়া সামরিক সহায়তা না কমানোর ঘোষণা দিয়েছে তারপরই সর্বশেষ বোমা হামলা চালানো হলো।
অন্যদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু অগ্রগতির কথা উল্লেখ করেছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো বলেছে, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের দাবি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
লেবাননের বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলির দাহিয়েহ নামে পরিচিত একটি এলাকায় বড় ধরনের বিস্ফোরণে ঘটে। এই এলাকায় হিজবুল্লাহর উল্লেখযোগ্য অবস্থান রয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সেখানকার ১১টি বাড়ি খালি করার সতর্কতা জারি করার পরপরই এই হামলা চালানো হয়।
হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। কোনো প্রমাণ না দেখিয়েই ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা কমান্ড সেন্টার ও অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রসহ হিজবুল্লাহর অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
আরও পড়ুন: লেবাননজুড়ে ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক দিনে নিহত ৩৮
বৈরুতের পূর্বাঞ্চলে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। ওয়ায়েল মুরতাদা বলেন, বিধ্বস্ত বাড়িটি তার চাচার এবং ভেতরে থাকা লোকজন গত মাসে দাহিয়েহ থেকে পালিয়ে গেছে। তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে তিন শিশু ও বাকিরা নিখোঁজ রয়েছেন।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মধ্য লেবাননের একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় আট নারী ও চার শিশুসহ ১৫ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া হামলায় কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়েছেন। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, কোনো ধরনের সতর্কবার্তা ছাড়াই এই হামলা চালানো হয়েছে। ভবনটিতে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল।
হিজবুল্লাহকে দুর্বল করে দেওয়া এবং লেবাননের এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্তঃসীমান্ত গোলাবর্ষণ বন্ধের প্রতিশ্রুতি করে সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে লেবাননে বোমা হামলা জোরদার করছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর নাহারিয়া শহরের একটি গুদামে মঙ্গলবার একটি রকেট বিস্ফোরিত হয়ে দুইজন নিহত হয়েছেন। শহরের বাইরে পৃথক হামলায় আরও দুইজন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে হিজবুল্লাহর একটি ড্রোন ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর হাইফার কাছে একটি নার্সারি স্কুলে বিধ্বস্ত হয়। তবে এসময় শিশুরা একটি বোমাপ্রতিরোধী আশ্রয়কেন্দ্রের ভিতরে থাকায় কেউ আহত হয়নি। খেলার মাঠে ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়েছিল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলার পর শুরু হওয়া গাজায় ১৩ মাস ধরে অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত ২৫