জামার্নির নির্বাচনের বুথফেরত জরিপের ফলাফলে জয়ী হয়েছে ফ্রিডরিখ মেরৎসের রক্ষণশীল দল ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক ইউনিয়ন (সিডিইউ )। পাশাপাশি উত্থান ঘটেছে কট্টর ডানপন্থিদের। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জার্মানিতে অনুষ্ঠিত হয় দেশটির ২১তম পার্লামেন্ট নির্বাচন।
নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী দল হিসেবে জামার্ন চ্যান্সেলর হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করতে চলেছেন ফ্রিডরিখ মেরৎস। তবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেলেও কট্টর ডানপন্থিদের সঙ্গে জোট বাঁধতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন মেরৎস।
নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত ফলাফল অনুসারে, জামার্নির পার্লামেন্ট বুন্দেসটাগে ৬৩০ আসনের মধ্যে মেরৎসের সিডিইউ পেয়েছে ২০৮টি আসন। অন্যদিকে এএফডি নিশ্চিত করেছে ১৫২টি আসন। তবে তাদের সঙ্গে জোট না বাঁধার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন সিডিইউপ্রধান।
বুন্দেসটাগে ১২০ আসন পাওয়া মধ্য-বামপন্থি সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটসদের সঙ্গে জোট সরকার গঠিত হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: পরিবর্তনের আভাস দিয়ে জার্মানিতে চলছে ভোটগ্রহণ
স্থানীয় সময় রবিবারে এক সাক্ষাৎকারে মেরৎস বলেন, তার লক্ষ্য ইউরোপকে শক্তিশালী করে তোলার মাধ্যমে ধাপে ধাপে যুক্তরাষ্ট্রের বলয় থেকে বের হয়ে এসে স্বাধীনভাবে ইউরোপকে পরিচালনা করা। আগামী ইস্টারের আগেই তিনি সরকার গঠন করবেন বলেও জানান।
এসময় তিনি এএফডিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ইলন মাস্কের সমর্থনের অভিযোগ তুলে তাদের সঙ্গে জোট না বাঁধার কথাও জানান। একারণে জোট সরকার গঠনের আলোচনা দীর্ঘায়িত হতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
তবে সমালোচনা থাকলেও সবার নজর কেড়েছে অল্টারনেটিভ ফর জার্মানির (এএফডি) দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পাওয়ার বিষয়টি। এর মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানির পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রথমবারের মতো শক্ত অবস্থান গড়েছে কোনো কট্টর ডানপন্থি দল।
স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচনের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত এএফডির নেতারা। জার্মানির নাৎসী অতিত এতদিন যে প্রাচীর হয়ে ছিল দলটির জন্য তা ভাঙতে পেরেই খুশি অভিবাসন বিরোধী, রুশপন্থি এই কট্টর ডানপন্থি দলটি।
দ্য ফিনান্সিয়াল পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দলটির প্রধান এলিস উইদেল আগামী নির্বাচনে জয়ী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
অভিবাসন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নাটকীয় পট পরিবর্তনের ইঙ্গিতের মধ্যেই ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জার্মানির অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি স্থবিরতা এবং অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের চাপ এই নির্বাচনী প্রচারণাকে প্রভাবিত করেছে। গত কয়েক সপ্তাহে মেরৎসের কঠোর অভিবাসন নীতির দাবি রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি করেছিল। ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কে অনিশ্চয়তার মধ্যেই এই নির্বাচনে নজর ছিলো পুরো বিশ্বের।