আকস্মিক দাবানলে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের ৫০ কিলোমিটার উপকূল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে করে বাস্তুহারা হয়ে পড়েছেন ৩০ হাজারের বেশি মানুষ।
দাবানলে লস ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসের বড় বড় ভবন। সৈকত শহর সান্তা মনিকা আর মালিবুর মাঝখানের অন্তত ৩ হাজার একর জায়গাজুড়ে বিখ্যাত প্যাসিফিক পালিসেডস। বড় বড় চলচ্চিত্র ও সঙ্গীত তারকাদের বাসভবন এ এলাকাজুড়ে। দাবানলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে এই এলাকাটিতেই।
প্রদেশের গভর্নর গ্যাভিস নিউসম এরইমধ্যে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছাতে মহাসড়কে ভীড় করছে। দূর থেকে দেখা যাচ্ছে, ধোঁয়া উঠছে। এ ঘটনায় উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো শহরে।
নগরবাসী জানিয়েছেন, প্রলয়ের গতিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ার কারণে বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের গাড়ি নিয়ে পর্যন্ত বের হতে পারেননি। প্রাণে বাঁচতে এক কাপড়ে পালাতে হয়েছে তাদের।
হলিউড অভিনেতা জেমস উড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করে জানান, কোনোমতে তিনি পালাতে সক্ষম হয়েছেন।
আগুনের যে তীব্রতা দেখা যাচ্ছে, তাতে বাড়িঘর কিছু টিকে নেই বলে শঙ্কা করেছেন এই অভিনেতা। অনেকেই তাড়াহুড়া করে পালাতে গিয়ে আহত হয়েছেন। অনেকের হাত-পা পুড়ে গেছে। আগুন নেভাতে অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা যথাসাধ্য চেষ্টা চালালেও খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারছেন না।
আগুন ধীরে ধীরে সান্তা মনিকা ও মালিবো বন্দরে ছড়িয়ে পড়ছে। এরইমধ্যে বাসিন্দাদের সান্তা মনিকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। হেলিকপ্টারে করে প্রশান্ত মহাসাগর থেকে পানি এনে ছিটানো হচ্ছে প্রতিনয়ত।
তবে আগুন ছড়িয়ে পড়ার কারণে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রাংশ ও উদ্ধারকারী বিমানগুলো নর্থ ক্যালিফোর্নিয়ায় সরিয়ে রাখা হয়েছে। যারা পালাচ্ছেন তাদের অধিকাংশ এ রাজ্যেই আশ্রয় নিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত আগুনে ২৫ হাজার মানুষ এবং ১০ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্তের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বার্তায় জানিয়েছেন, যেকোনো প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় সরকারকে পাশে পাবে প্রদেশটির গভর্নর। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সহায়তা বিল অনুমোদিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।