শ্রীলঙ্কায় সংসদীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে। বৃহস্পতিবার(১৪ নভেম্বর) ভোট দিতে কেন্দ্রগুলোতে হাজির হয়েছেন লঙ্কানরা। দেশটির এই নির্বাচনকে মার্কসবাদী নতুন প্রেসিডেন্টের দলের ক্ষমতাকে সুসংহত করা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি পূরণের মূল চাবিকাঠি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ব্রিটিশ শাসন থেকে ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। এর পর থেকে দ্বীপরাষ্ট্রটি শাসন করে আসছে ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দলগুলো। চলতি বছরের ২১ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুরোনো দলগুলোকে পেছনে ফেলে জয়ী হয়েছেন প্রেসিডেন্ট অনুঢ়া কুমারা দিশানায়েকে।
তবে দিশানায়েকের ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে তার দলের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।
২২৫ সদস্যের পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ নিতে হলে তার দল ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার পার্টিকে অবশ্যই উল্লেখযোগ্যভাবে ভোট বাড়াতে হবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তারা যে ৪২ শতাংশ আসনে জিতেছিল। তবে ২২৫ আসনের সংসদের নিয়ন্ত্রণ নিতে হলে ন্যূনতম ১১৩টি আসবে জয় পেতে হবে।
২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এনপিপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো দলটি শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক দৃশ্যপটে তুলনামূলকভাবে নবাগত। এছাড়া দলটির অনেক প্রার্থী ঐতিহ্যবাহী দলগুলোর সুপ্রতিষ্ঠিত রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াইয়ে একেবারে নতুন মুখ।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মার্ক্সবাদী দিশানায়েকের জয়
শ্রীলঙ্কার আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচনি ব্যবস্থায় সংসদীয় ২২৫টি আসনের মধ্যে ১৯৬টি আসন রয়েছে। এই ব্যবস্থার অধীনে প্রতিটি জেলায় প্রাপ্ত ভোটের অনুপাত অনুসারে দলগুলোর মধ্যে আসন বণ্টন করে।
অবশিষ্ট ২৯টি আসনকে জাতীয় তালিকার আসন বলা হয়। দলগুলোর দেশব্যাপী প্রাপ্ত মোট ভোটের অনুপাত অনুসারে দল এবং স্বতন্ত্র দলগুলোর মাঝে বণ্টন করা হয়।
নির্বাচিত সংসদ সদস্য পদে ১৯৬টি আসনের বিপরীতে ৮ হাজার ৮২১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী সাজিথ প্রেমাদাসা এবং তার সামাগি জানা বালাওয়েগায়া বা ইউনাইটেড পিপলস পাওয়ার পার্টি এনপিপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।
দিশানায়েকে তার দলের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা চালানোর সময় ভোটারদের সংসদে নির্বাচিত করতে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছেন যাতে তিনি যে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা বাস্তবায়নের জন্য তাকে একটি জোটের উপর নির্ভর করতে না হয়।
শুক্রবার নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কানদের জন্য এই নির্বাচন একটি সিদ্ধান্তমূলক সময় হিসেবে সামনে এসেছে। কারণ, সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য লড়াই করছে দেশটি। এর আগে ২০২২ সালে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার পর দেউলিয়া ঘোষণা করা হয় দ্বীপরাষ্ট্রটিকে।