আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, অতীতে বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে তার সক্ষমতা এবং স্বাভাবিক অবস্থায় প্রত্যাবর্তনের পরিচয় দিয়েছে এবং আমরা আশাবাদী, সাহস ও দৃঢ়তার সাথে আসন্ন এ বিপদকে কাটিয়ে উঠতে আমরা সক্ষম হব।
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, আইসিসি, বাংলাদেশ, বিশ্বাস করে আসন্ন চ্যালেঞ্জগুলোতে তাৎক্ষণিকভাবে এবং জোড়ালোভাবে সাড়া না দেয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছে দেশটি।
তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতার ক্ষেত্রে আমাদের সরকার ও ব্যবসায়ীদেরকে একটি নীতিগত কাঠামোর বিষয়ে ঐক্যমতে আসা জরুরি। আমাদের দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ বিশ্বাস যে কেবলমাত্র সমন্বিত পদক্ষেপই প্রাকৃতিকভাবে কোনো সীমানা না মানা এ হুমকি মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) আনুষ্ঠানিকভাবে ১১ মার্চ করোনভাইরাসকে (কোভিড-১৯) বিশ্বব্যাপী মহামারির প্রাদুর্ভাব হিসেবে ঘোষণা করেছে। যা এখন ১৭০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এবং এতে প্রায় তিন লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে।
আইসিসি, বাংলাদেশের সভাপতি বলেন, এ বিপুল পরিমাণ সংক্রমণ বিশ্বব্যাপী সঙ্কটের মাত্রা নির্দেশ করে। যা কেবল জনস্বাস্থ্যের সাথেই নয় সেইসাথে বিশ্ব অর্থনীতির সাথেও সম্পর্কিত।
তিনি বলেন, অর্থনীতিবিদরা এ বিশাল বিপর্যয় পরবর্তী পরিস্থিতি অনুধাবন এবং ভবিষ্যতদ্বানী করার চেষ্টা করছেন। কেউ জানে না আগামীকাল কি হবে ও তারপরে কি আসবে এবং সমাজ, সরকার, স্বাস্থ্যসেবা এবং অর্থনীতি কীভাবে পরিবর্তিত হবে।
মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এতে প্রান্তিক ও ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি যে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে তা স্পষ্টই বুঝা যাচ্ছে। আর, এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। কেননা আমাদের মোট রপ্তানির ৭০ শতাংশেরও বেশির গন্তব্য হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং ইইউভুক্ত দেশ।’
প্রবীণ এ ব্যবসায়িক নেতা জানান, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় চার দশমিক ২৪ শতাংশ কমেছে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের ২৭ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে ২৬ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে। আগামী দিনগুলোতে রপ্তানি আদেশ বাতিল হওয়ার ফলে কয়েক মাসের মধ্যে এ নিম্নগতির প্রবণতা অব্যাহত থাকবে।
অন্যদিকে, চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং সাপ্লাই চেইনে সর্বোচ্চ অবদানকারী হিসেবে আমদানি ও রপ্তানি নির্ভর উভয় উৎপাদনকেই যোগান দিয়ে থাকে, বলেন তিনি।
আইসিসি, বাংলাদেশের সভাপতি বলেন, এ জন্যে উৎপাদন, সাপ্লাই চেইন এবং বাজার ব্যবস্থায় বিঘ্ন সৃষ্টির পাশাপাশি সংস্থা ও আর্থিক বাজারে প্রভাবের ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
আর্থিক খাত বিশেষত বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে এবং বাংলাদেশের রেমিট্যান্স কমতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মাহবুবুর রহমান বলেন, করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি যেহেতু প্রতিদিন বাড়ছে, অর্থনৈতিক অনুমানগুলো কেবলমাত্র এর প্রভাবের মাত্রা জানাতে পারবে। করোনার প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কী কী ক্ষতি হবে এখনই তা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করার সময় হয়নি।
তিনি বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবের সময়কালের বিস্তার এবং স্থায়িত্বের উপর নির্ভর করবে এর শাখাপ্রশাখার আসল বিস্তার এবং নীতি নির্ধারকরা কীভাবে স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠার পদক্ষেপ নিতে পারবেন তার উপর নির্ভর করবে।