বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জনগণ ও অর্থনীতির জন্য সহায়ক নীতির ক্ষেত্রে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সরকারের চিফ হুইপ জোয়ান রায়ান।
অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পবিষয়ক সম্মেলনে তিনি এ আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) উদ্যোগে এবং অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহযোগিতায় এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে সহযোগী পার্টনার ছিল এইচএসবিসি ব্যাংক।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভিক্টোরিয়া রাজ্যের ডেপুটি স্পিকার ম্যাট ফ্রেগন এবং এ রাজ্যের বিরোধী দলের বাণিজ্য ও বিনিযোগবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী ডেভিড সাউথ উইক।
এ ছাড়াও সম্মেলনে অংশ নেন তৈরি পোশাক শিল্পের ক্রেতা, বিক্রেতা, সরবরাহকারী, উন্নয়ন সহযোগী এবং অস্ট্রেলিয়া সরকারের নীতি নির্ধারকসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রায় ১৩০ জন। সম্মেলনের শুরুতে প্লিনারি সেশন এবং দু'টি প্যানেল আলোচনায় বক্তারা তাদের মতামত তুলে ধরেন। প্যানেল আলোচনার শিরোনাম ছিল যথাক্রমে ‘অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বাণিজ্য: পরবর্তী দশকের পথ চলার পরিকল্পনা’ এবং ‘টেকসই উপাদান: ভবিষ্যৎ ফ্যাশন সৃষ্টিতে ইএসজির সহযোগিতা।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের পতাকার রঙে সাজল ক্যানবেরা
সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। তিনি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের অপার সম্ভাবনা ও সরবরাহ ব্যবস্থার স্বচ্ছতা, দায়িত্বশীল সোর্সিং এবং নৈতিক উৎপাদন পদ্ধতিসহ এখাতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেন। সামাজিক পরিবেশ এবং দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আদর্শ ও মানের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বিকাশমান ফ্যাশন শিল্পের ক্ষেত্রে পারস্পারিক সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগের বিষয়টি তুলে ধরেন এবং এ সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে দুদেশের দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নের উপর জোর দেন।
এ সম্মেলনে তৈরি পোশাক শিল্পবিষয়ক ফলপ্রসু আলোচনার পাশাপাশি তথ্য আদান প্রদান এবং মতবিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি করে। এতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক ও অস্ট্রেলিয়ার ক্রেতাদের মধ্যে পারস্পারিক যোগাযোগ ও সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়। সম্মেলনে করোনাকালীন ও করোনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার বাজারের অবদানের উপর আলোকপাত করা হয়। এ ছাড়া দুদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থে বাণিজ্যনীতি, বিশেষ করে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণকালীন সময়ে সহায়তার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
আরও পড়ুন: ক্যানবেরায় বহু ভাষা ও সংস্কৃতির ব্যক্তিদের অংশগ্রহণে অমর একুশে উদযাপন
কেমার্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়ান বেইলি বাংলাদেশের সামাজিক ও পরিবেশগত উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তিনি সংশ্লিষ্ট শিল্পবিষয়ক তথ্য উপাত্ত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তৈরি পোশাক শিল্পের সরবরাহ ব্যবস্থার দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতার উপর জোর দেন। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের কারখানাগুলোকে প্রথম স্তরে উন্নয়নের বিষয়ে তার মতামত তুলে ধরেন।
এইচএসবিসি, অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী অ্যান্টনি শঁ বাংলাদেশের শিল্পসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে অবকাঠামো উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তিনি উল্লেখ করেন বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে এইচএসবিসি গর্ববোধ করে এবং ভবিষ্যতে এ অংশীদারিত্ব অব্যাহত থাকবে।
এসময় বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও প্রকৃতির উপর প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্য সামগ্রীর সর্বশেষ সংগ্রহ প্রদর্শন করা হয় যাতে বাংলাদেশের উৎপাদন ক্ষেত্রে সক্ষমতার ছাপ রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাণিজ্য সম্পর্কিত গবেষণা ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর