স্থানীয় সরকারে (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রশাসক নিয়োগের বিধান রেখে আইনের সংশোধনী পাস হয়েছে।
সোমবার (১ জুলাই) জাতীয় সংসদে ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) বিল-২০২৪’ পাস হয়।
জাতীয় সংসদে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বিলটি উত্থাপন করলে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়।
নতুন আইনে বলা হয়েছে, কোনও এলাকাকে ইউনিয়ন ঘোষণার পর বা পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য সরকার একজন উপযুক্ত কর্মকর্তা বা ব্যক্তিকে ‘প্রশাসক’ হিসেবে নিয়োগ করবে এবং নির্বাচিত পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন। প্রশাসক নিয়োগ হবে কেবল এক মেয়াদে ১২০ দিনের জন্য। কোনও দৈবদুর্বিপাক, অতিমারি, মহামারি ইত্যাদি বিশেষ ক্ষেত্রে নির্বাচিত পরিষদ গঠন করা সম্ভব না হলে সরকার ওই মেয়াদ যৌক্তিক সময় পর্যন্ত বাড়াতে পারবে।
আরও পড়ুন: বিপন্ন ভাষাগুলোর সংরক্ষণ-গবেষণার লক্ষ্যে সংসদে নতুন বিল উত্থাপন
বিলে আরও বলা হয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কোনো অজুহাতে তাদের মেয়াদের বেশি সময় পদে থাকতে পারবেন না। চেয়ারম্যান বা চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো সদস্য বা প্রশাসক যদি নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে ব্যর্থ হন, তাহলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হবে, যা বর্তমানে ১০ হাজার টাকা রয়েছে।
এতে চেয়ারম্যানদের তাদের মেয়াদের পরও অফিসে থাকার অনুমতি দেওয়ার বর্তমান পার্থক্যটি দূর হবে। এছাড়া মামলা-মোকদ্দমার মাধ্যমে নির্বাচন বিলম্বিত করার অভ্যাসও এই পদক্ষেপের মাধ্যমে রোধ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ‘সচিব’ পদটির নাম পরিবর্তন করে ইউনিয়ন পরিষদ ‘প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ করা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, ইউয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত পর্ষদকে শপথ নেওয়ার ১০ দিনের মধ্যে প্রথম সভা করতে হবে, যা ২০০৯ সালের স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইনে ছিল না।
আরও পড়ুন: গ্রামাঞ্চলে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আশঙ্কা সংসদ সদস্যের
নতুন আইন অনুসারে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা তাদের মেয়াদকালে সরকার-নির্ধারিত সম্মানী পাবেন এবং বরখাস্ত হলে ভাতা প্রাপ্তির বিষয়ে যেকোনো আইনি অস্পষ্টতার সমাধান করবেন।
স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আর্থিকভাবে শক্তিশালী করা, সরকারি বরাদ্দের ওপর নির্ভরতা হ্রাস এবং ইউনিয়ন পরিষদ আইনকে আরও আধুনিক ও সেবামুখী করাই সংশোধিত এই আইনের লক্ষ্য।
বিলটি গ্রাম আদালত পরিচালনা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করবে।