বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে তার দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে বলেছেন, ক্ষমতায় আসা বা পরিবর্তন আনার একমাত্র উপায় নির্বাচন।
তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং জাতীয় পার্টি সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এছাড়া জাতীয় পার্টি কখনো নির্বাচন বয়কট করেনি এবং ভবিষ্যতেও বয়কট করবে না।
সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য পরিবেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সোমবার বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে একটি প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় তার সমাপনী বক্তব্যে বিরোধীদলীয় নেত্রী এসব মন্তব্য করেন।
সংসদের ৫০ বছর পূর্তিতে শুক্রবার সংসদে এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রওশন এরশাদ বলেন, জাতীয় পার্টি সব সময় গঠনমূলক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আমরা কখনই ধ্বংসাত্মক রাজনীতিতে বিশ্বাস করিনি। রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে, জাতীয় পার্টি দেশে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক সরকার বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রধান বিরোধী দল হিসেবে সংসদে ও সংসদের বাইরে গঠনমূলক ও কার্যকর ভূমিকা পালন করছে।
সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, কয়েকদিন ধরে দেশে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে।
আরও পড়ুন: রাজনীতি এখন ‘পেশা’ হয়ে গেছে, আগে ছিল আবেগের বিষয়: ফিরোজ রশীদ
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যবশত আগুন নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে উঠছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের অসাবধানতা, অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বে অবহেলার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে।
তিনি বলেন, বারবার এ ধরনের ঘটনার কারণে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং দেশের অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের সঠিক তদন্ত ও উপযুক্ত প্রতিকারের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সংসদকে সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারি দল ও বিরোধী দলের উপস্থিতির পাশাপাশি তাদের পারস্পরিক আলোচনা-সমালোচনায় সংসদ সমৃদ্ধ হয়।
এটি জনগণের প্রত্যাশা ও আশা পূরণকেও প্রতিফলিত করে। এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। সংসদের কাজ জনগণের পক্ষে কাজ করা। জনস্বার্থের বিষয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ এবং আইন প্রণয়নে ভূমিকা পালন করা।
এছাড়া সংসদে এসব কার্যক্রম ভালোভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। বিরোধী দল হিসেবে আমরা আমাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছি।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের মূল কেন্দ্র হচ্ছে সংসদ। জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত এই সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানটি জনগণের আশা-আকাঙ্খার প্রতীক এবং জনমত ও প্রত্যাশাকে ধারণ করে।
তিনি আরও বলেন, জনগণ আশা করে যে সংসদ নাগরিক জীবনের জরুরি ও জনসাধারণের সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। জাতীয় সংসদকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সমাজের সকল স্তরের নাগরিক, বিভিন্ন দল, দল, সংগঠনের দাবি ও স্বার্থ সমন্বয় করতে হবে।
রওশান বলেন, রাজনৈতিক ভিন্নতা ও মতাদর্শের পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু সংসদকে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য থাকতে পারে না। তাই জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হিসেবে সংসদকে কার্যকর করার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: রিজার্ভ সঙ্কটের কারণে দেশ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে: জিএম কাদের