দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দেশের সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, সরকার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের নির্বিচারে দোষী সাব্যস্ত ও কারারুদ্ধ করে বিচার বিভাগকে তার বিরাজনীতিকরণ এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
ফখরুল আরও বলেন, 'আমি বলতে চাই যে তাদের (সরকার) একটি ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে তারা সংকট কাটিয়ে উঠেছে। তবে আমি বলছি, গত (জাতীয়) নির্বাচনের পর সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। আপনারা যদি এখনও এই বাস্তবতা উপলব্ধি না করেন এবং সংকট মোকাবিলার প্রচেষ্টা না করেন তবে আপনাদের ভবিষ্যৎও অন্ধকার।’
গত ৮ মে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ফখরুল বলেন, দল ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের একতরফাভাবে বিচার ও সাজা দেওয়ার প্রক্রিয়ার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে।
বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিশ্চিহ্ন করে দেশের রাজনীতিকে নির্বাসনে পাঠানোর চেষ্টার অংশ হিসেবে সরকার ২ হাজারেরও বেশি বিরোধী নেতাকর্মীকে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আদালত মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল, কিন্তু তারা সেখানে বিচার পাচ্ছে না।’
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, সরকার দেশে একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীকে নানা ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে সম্পদ অর্জনের সুযোগ করে দিয়ে ক্ষমতায়িত করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এই সরকারকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য তারা লুণ্ঠনের ষড়যন্ত্র করেছে।’
ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন দলের লুটেরারা বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে।
ফখরুল অভিযোগ করেন, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে একটি বিশেষ মহলকে অবৈধভাবে জনগণের অর্থ লুটপাট এবং বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা গ্রহণের সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশকে আর্থিকভাবে অন্যের ওপর নির্ভরশীল করে তুলছে সরকার।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, ইতোমধ্যে এটা প্রমাণিত হয়েছে। একটি দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড যখন ভেঙে যায় এবং জবাবদিহির অভাবে দেশটির রাজনৈতিক ও সামাজিক কাঠামো ধ্বংস হয়ে যায়, তখন তা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়। সারাদেশে এখন অরাজকতা বিরাজ করছে।’