বিএনপি নেতা হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বাধা সৃষ্টি করতে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে একটি মহল ধানমন্ডি-৩২ নম্বর বাসা ও অন্যান্য স্থাপনায় হামলা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবার(৬ ফেব্রুয়ারি) এক আলোচনায় অংশ নিয়ে হাফিজউদ্দিন এই মন্তব্য করেন।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাধা সৃষ্টি না করে দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ প্রশস্ত করবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবে 'বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ' শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপিপন্থী ফোরাম স্বাধীনতা ফোরাম।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) থেকে শুরু হওয়া ঘটনা এখনো চলমান; এখনো শেষ হয়নি। কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে আমরা জানি না, সরকারের ভূমিকা সম্পর্কেও আমরা অবগত নই। আমরা আরও কিছু সময় অপেক্ষা করব এবং সম্ভবত আজকের মধ্যেই আমরা জানতে পারব কে এর জন্য দায়ী।’
তিনি বলেন, এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেলে তার দল এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাবে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘কিন্তু আমরা মনে করি, আগামী দিনে গণতন্ত্রের পথকে রুদ্ধ করতেই কিছু মানুষ এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে থাকতে পারে। বিশেষ করে আমাদের প্রতিবেশী দেশের (ভারত) সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা আছে কিনা— তা খতিয়ে দেখতে হবে।’
তিনি বলেন, বুধবারের ঘটনার ওপর তাদের দল নজর রাখছে। ‘আমরা আশা করি খুব শিগগিরই দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে, কারণ গণতন্ত্রের অভাবে অনেক ঘটনা ঘটে।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা আশা করি, বর্তমান সরকার গণতন্ত্রের পথে সব বাধা দ্রুত দূর করবে। তাদের সচেতন হতে হবে, তারা যেন আর কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে।’
হাফিজ বলেন, সকল গণতান্ত্রিক শক্তি ও শিক্ষার্থীদের সুদৃঢ় ঐক্য এখন জরুরি, কারণ বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা আবারও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন।
আরও পড়ুন: সংস্কারের নামে বেশি সময়ক্ষেপণ না করার আহ্বান তারেক রহমানের
তিনি আরও বলেন, আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ছাত্রদের একটি রাজনৈতিক দল গঠনের অনুরোধ করেছেন। ‘এর কোনো প্রয়োজন নেই। কেউ অনুরোধ করুক বা না করুক, তারা (শিক্ষার্থীরা) তাদের নিজস্ব দল গঠন করবে।’
হাফিজ বলেন, ছাত্ররা দল গঠন করলে বিএনপি স্বাগত জানাবে, কারণ দল গঠন করা খারাপ কিছু নয়। বরং জনগণের জন্য আরেকটি পছন্দ তৈরি করার সুযোগ হবে।’
তিনি বলেন, ছাত্ররা দল গঠন করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় পেয়েছে। ‘তারা আরও সময় চায়। আমরা মনে করি, এ বছরের মধ্যেই নির্বাচন হওয়া উচিত। তাই গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে সকল বিশৃঙ্খলা, বাধা ও ষড়যন্ত্র বন্ধ করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচন আয়োজনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার দেখতে চায়, কিন্তু একমাত্র ভারত অস্থিতিশীলতা চায় এবং তারা চায় না বাংলাদেশে গণতন্ত্রের চর্চা হোক।
আরও পড়ুন: সংস্কার সংস্কার করা ষড়যন্ত্র কিনা, প্রশ্ন তারেকের
হাফিজউদ্দিন আরও বলেন, বিভিন্ন কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য সরকারের উদ্যোগকে তাদের দল স্বাগত জানায়।
হাফিজউদ্দিন বলেন, সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে বিএনপি ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের কাছে তাদের সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরবে। কেউ কেউ মনে করছেন, সংস্কারের আড়ালে সরকার বিলম্বের চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাপী একজন জ্ঞানী ও সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব। আমরা তার ওপর আস্থা রেখেছি এবং তাকে আমাদের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আমরা তাই করব। তবে আমরা আশা করি, তিনি আমাদের বিশ্বাস ভঙ্গ করবেন না। তিনি নিরপেক্ষ থাকবেন এবং জাতিকে সকল সংকট থেকে মুক্ত করতে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করবেন।’
আরও পড়ুন: আ. লীগ বর্তমান নামে রাজনীতি করতে পারবে না: সালাহউদ্দিন