আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের নামে 'ধ্বংসাত্মক' উন্নয়ন নীতি গ্রহণ করে সারাদেশে পরিবেশের অবনতি ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘ঢাকার প্রচণ্ড গরম অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ঢাকার আশপাশে তুরাগ, বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যার মতো নদী থাকার পরও এটা হওয়ার কথা ছিল না। বাস্তবতা হলো, দখলদাররা এসব নদী দখল করে নিয়েছে। তারা দেশের প্রায় প্রতিটি নদী ভরাট করে ফেলেছে। এটা স্বৈরাচারী শাসনের আমলেই সম্ভব।’
তীব্র তাপপ্রবাহে জনদুর্ভোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বর্তমান সরকারের পরিবেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের ফলেই তাপমাত্রা বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পথচারী, দিনমজুর, রিকশাচালক, হকারসহ শ্রমজীবী মানুষের মাঝে বোতলজাত পানি, স্যালাইন ও জুস বিতরণ অনুষ্ঠানে রিজভী এসব কথা বলেন।
তাপমাত্রা নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছানোর কারণে জনদুর্ভোগ লাঘবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
রিজভী বলেন, সবুজ বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীরা বারবার সরকারকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন না করার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু গণবিরোধীদলীয় প্রধানমন্ত্রী তাদের পরামর্শ উপেক্ষা করে উল্টো উন্নয়নের নামে ব্যাপক দুর্নীতির মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, সরকার পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে পটুয়াখালীর কলাপাড়া এলাকায় কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করছে, যা সমগ্র বরিশাল অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।
রিজভী বলেন, ‘তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কারণে পটুয়াখালী ও বরিশালের আশেপাশের এলাকায় নারিকেল গাছে এখন আর ফল ধরছে না। একটা সময় ছিল যখন ওইসব এলাকায় নারকেলের প্রাচুর্য ছিল, কিন্তু এখন নদীতেও মাছের অভাব।’
রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের যে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তাও তুলে ধরেন তিনি।
রিজভী বলেন, 'রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে বাংলাদেশের ফুসফুস হিসেবে পরিচিত সুন্দরবন এখন বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, পশুর নদীর কুমির এবং সুদৃশ্য হরিণের মতো বাসিন্দাদের নিয়ে বেঁচে থাকার লড়াই করছে।’
জনগণকে ক্ষমতার উৎস মনে করে না বলেই দেশের মানুষের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ সৃষ্টিতে সরকারের কোনো মনোযোগী নেই বলে মন্তব্য করেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘তারা পরিবেশ, বন ও নদী ধ্বংসসহ যেকোনো কিছু করতে পারে।’
আসন্ন উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এবার ডামি প্রার্থীদের নিয়ে উপজেলা নির্বাচন করতে যাচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যরা নিজস্ব রাজত্ব সৃষ্টি করেছেন।
রিজভী আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারাও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কোনো সুযোগই পাচ্ছেন না। মন্ত্রী-এমপিদের স্ত্রী, ভাই ও ভগ্নিপতিদের নিয়ে এমপিদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’