বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভারতের আধিপত্যবাদী মনোভাবের সমালোচনা করে বলেছেন, ভারত প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আধিপত্যবাদের রাজনীতি করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতি রাজনীতি ও আচরণের কারণগুলো ভারত ভালোভাবেই বোঝে।’
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল দুঃখের সঙ্গে বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে।
তিনি বলেন, ‘আমার মতে এর প্রধান কারণ এই প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের ধারাবাহিক আধিপত্যের রাজনীতি। এই দৃষ্টিভঙ্গি ভারত বা তার প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনবে না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তাদের দল বিশ্বাস করে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধা, মর্যাদা ও অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা উচিত।
ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল এসব কথা বলেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং শান্তি বজায় রাখতে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
বিএনপির জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নেতাকর্মীদের নিয়ে শেরেবাংলা নগরে জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মির্জা ফখরুল।
তারা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।
এ সময় বিএনপিার স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ও এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: হাসিনার 'প্রেতাত্মারা' দেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে: ডা. জাহিদ
১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পর ৯ সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমান মহিলা দল প্রতিষ্ঠা করেন।
ফখরুল বলেন, ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রায় ১৬ বছর পর দেশ ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর হাত থেকে মুক্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, এই বিপ্লবে বহু ছাত্রের পাশাপাশি নারী ও শিশু তাদের জীবন উৎসর্গ করেছে।
বিএনপির এই নেতা জোর দিয়ে বলেন, গণতন্ত্রের জন্য এই আন্দোলন পুনরুদ্ধারে নারীর অবদান কেউ অস্বীকার করতে পারে না।
তিনি বলেন, 'আজকের এই দিনে আমদের যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে তা সুসংহত করা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং দেশে আইনের শাসন ও জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত রাখার শপথ নিয়েছি।’
একই সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দু'বার সাক্ষাৎ করেছেন এবং সংস্কার প্রস্তাবগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরার এবং একটি সময়সীমা নির্ধারণ করার অনুরোধ করেছেন, যাতে সুনির্দিষ্ট ও যুক্তিসঙ্গত সময়সীমার মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যায়।