শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে শহরের পূর্ব খাবাসপুর লঞ্চ ঘাট এলাকাস্থ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পুলিশ।
শহরের পূর্ব খাবাসপুর লঞ্চ ঘাট এলাকার শওকত মো. কামালের ছেলে আসিবুর রহমান যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, ‘ফারহান শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফাইন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। এই দুই বন্ধুর মধ্যে ফারহান ছিলেন খন্দকার মোশাররফের ভাই খন্দকার মোহতেসাম হোসেন বাবরের অনুসারী।’
জানা যায়, ২০১৮ সালে ফেব্রুয়ারিতে ফরিদপুরে সোনালী ব্যাংকের কিাছে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় মারা যান ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক সেবিকা। এর সাথে আসিবুরের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ার পর তিনি আত্মগোপন করেন।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, ‘আসিবুরকে ঢাকার কাফরুল থানায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
আসিবুরকে শনিবার বিকালে জেলা মূখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে এবং পরে তাকে ফরিদপুর জেলখানা থেকে সিআইডি জিম্মায় নেবে বলেও জানান তিনি।
মোরশেদ আলম আরও জানান, সিআইডির চাহিদা অনুযায়ী ফরিদপুর পুলিশ গত শুক্রবার দুপুর পৌনে ১টা থেকে শনিবার দিবাগত রাত ৩টা পর্যন্ত আসিবুরসহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার হওয়া অপর দুজন হলেন- ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভি(৬১) এবং জেলা শ্রমিক লীগের কোষাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন (৫৪)।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘নাজমুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন ও আসিবুর রাহমানকে মানি লন্ডারিং মামলায় সিআইডি পুলিশের চাহিদা অনুযায়ী গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, শহর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ বাদী হয়ে গত ২৬ জুন ঢাকার কাফরুল থানায় মানি লন্ডালিং এর অভিযোগ এনে এ মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় ওই দুই ভায়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
পরে সিআইডি এ মামলায় দুই ভায়ের দশ দিনের রিমান্ড চায়। গত ১৩ জুলাই ভার্চুয়াল আদালতের মাধ্যমে এ রিমান্ড শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এরপর গত ১৯ জুলাই সিআইডি ওই দুই ভাইকে ফরিদপুর জেলখানা থেকে তাদের জিম্মায় নেয়। ঢাকার সিআইডি কার্যালয়ে দুইদিন রিমান্ড শেষে সিআইডি গত ২১ জুলাই পুনরায় দশ দিন করে রিমান্ড চাইলে আদালত তিন দিন রিমান্ড মঞ্জুর করে। গত ২৪ জুলাই মোট পাঁচ দিন রিমান্ড শেষ হওয়ার পর রুবেল ও ররকতকে মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
উল্লেখ্য, গত ১৬ মে রাতে ফরিদপুর জেলা আ’লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত ১৮ মে সুবল সাহা অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গত ৭ জুন রাতে ওই মামলার আসামি হিসেবে শহরের বদরপুরসহ বিভিন্ন মহল্লায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ সাজ্জাদ, ইমতিয়াজসহ মোট নয়জনকে গ্রেপ্তার করে।
ওই মামলায় এ নিয়ে মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।