বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘মব জাস্টিস বর্তমানে মানবতার ও গণতন্ত্র বিকাশের পরিবেশের জন্য গুরুতর হুমকিতে পরিণত হয়েছে।’
নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবস উপলক্ষে বুধবার (২৫ জুন) এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত হলেও প্রকৃত অর্থে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ও গণতন্ত্র চর্চার পথচলা এখনো শুরু হয়নি। মব জাস্টিস নামে এক হিংস্র উন্মাদনা মানবতার শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গঠনের পরিবেশকে বিপন্ন করে তুলবে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারেকের এই বাণী তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, নির্যাতনের শিকারদের প্রতি সংহতি ও সম্মান জানাতে জাতিসংঘ ঘোষিত এ আন্তর্জাতিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বহু দেশ স্বাধীনতা অর্জন করলেও বিশ্বজুড়ে সহিংসতা ও সংঘাত বন্ধ হয়নি। এখনো বহু দেশে ভয়াবহ রক্তপাত চলছে, যার ফলে অগণিত মানুষ নিহত, আহত বা চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন।’
বিএনপি নেতা অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন রাষ্ট্রে স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী ভিন্নমত দমন করতে নৃশংস নিপীড়ন চালাচ্ছেন। ‘এসব দেশে মানুষের জীবন ও সম্পদ হুমকির মুখে পড়েছে। নিপীড়নের মাধ্যমে গুম, হত্যা ও মিথ্যা মামলায় বিরোধীদের কারাবন্দী করে রাখা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ইসির সঙ্গে বৈঠকে সংসদের আগে স্থানীয় নির্বাচন দাবি জামায়াতের
বাণীতে বাংলাদেশের প্রসঙ্গে তারেক বলেন, প্রায় ১৬ বছর ধরে গণতন্ত্রকে বন্দী করে ভয়াবহ আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন চলেছে। এই সময়ে বাংলাদেশকে একটি সর্বগ্রাসী রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করা হয়েছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ সব ধরনের নাগরিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে বিভিন্ন কালাকানুনের মাধ্যমে দমন করা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং তার চিকিৎসা পর্যন্ত অমানবিকভাবে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে বলেও জানান তারেক।
তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে দেশজুড়ে এক ভয়, আতঙ্ক ও নীরবতার পরিবেশ বিরাজ করছে।
একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন যেন ফিরে না আসে তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে তারেক বলেন, ‘গণতন্ত্রকে সচল ও কার্যকর রাখতে হবে এবং এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। মানবতা, ন্যায়বিচার, আইনের শাসন এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। এজন্য গণতান্ত্রিক শক্তির অটুট ঐক্য অত্যন্ত জরুরি।’
তিনি বিশ্বের সব নির্যাতিত মানুষের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বলেন, ‘নিপীড়িত মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার পথে থাকা সব বাধা দূর করতে হবে। মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সব গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমেই কেবল নিষ্ঠুর নির্যাতনকারী ও স্বৈরাচারীদের পরাজিত করা সম্ভব।’