ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় যে পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ হয় তার তুলনায় তাদের আয় বহুগুণ বেশি বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
মার্কিন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘এই ৪০ লাখ থ্রি হুইলারকে আমি বাংলার টেসলা বলি। তারা তাদের নিজস্ব সৃজনশীলতা ব্যবহার করে এগুলো তৈরি করছে। আমরা তাদের থামাচ্ছি না।’
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নারায়ণগঞ্জ থেকে নির্বাচিত সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এতে যান্ত্রিক ত্রুটি থাকতে পারে। তারা যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে তার তুলনায় রিটার্ন অনেক বেশি। প্রায় ৪০ লাখ রিকশাচালক বিদ্যুৎ ব্যবহার করে আয় করছেন।’
তিনি বলেন, সরকার সীসা ব্যাটারি থেকে লিথিয়াম ব্যাটারির দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, 'আমরা এ বিষয়ে একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছি। আমরা তাদের লিথিয়াম ব্যাটারি সরবরাহ করব এবং সীসা ব্যাটারি নিয়ে যাব।’
ওসমান তার সম্পূরক প্রশ্নে বলেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং এগুলো চলতে দেওয়া উচিত নয়।
তিনি বলেন, ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার জন্য এসব অটোরিকশা তার ৯০ শতাংশ বিদ্যুৎ চুরি করে।
তারা আমাদের ৭০০-৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। সারাদেশে এগুলো বন্ধে বিশেষ কোনো উদ্যোগ নেন কি না?'
জবাবে হামিদ বলেন, পরিবহন ব্যবস্থাকে কত দ্রুত বৈদ্যুতিক যানবাহনে রূপান্তর করা যায় তা নিয়ে সারা বিশ্বে এখন বিপ্লব চলছে।
তিনি উল্লেখ করেন, তেলচালিত গাড়ির কার্যক্ষমতা ২০ শতাংশ। অন্যদিকে বিদ্যুৎচালিত ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা ৮০ শতাংশ।
তিনি বলেন, ‘মূলত আমরা যত দ্রুত সম্ভব বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারে আনতে উৎসাহিত করি।’
আরও পড়ুন: বাজারের কোনো এনার্জি ড্রিংকে মাদকদ্রব্যের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি: শিল্পমন্ত্রী
তিনি উল্লেখ করেন, তেলচালিত গাড়িতে যে দূরত্ব যেতে ১০০ টাকা লাগে, বিদ্যুতচালিত গাড়িতে ওই দূরত্ব যেতে ২০ টাকা লাগবে।
‘বাংলাদেশে ৪০ লাখের বেশি যানবাহন রয়েছে যেগুলোতে সীসা ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। এগুলো চার্জ হতে সময় লাগে ৭/৮ ঘণ্টা। লিথিয়াম ব্যাটারি থাকলে সময় লাগবে মাত্র আধা ঘণ্টা।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগ বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জিং স্টেশন স্থাপনে একটি নীতিমালা করেছে। এই নীতি অনুসারে, যে কেউ চার্জ স্টেশন স্থাপন করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গণপরিবহনকে (বাস) দ্রুত বিদ্যুতে রূপান্তর করতে হবে। এটি সস্তা ও পরিবেশবান্ধব।’
হামিদ বলেন, বাংলাদেশের পরিবহন খাতে ১৮ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ হয়।
তবে বিদ্যুতের অবৈধ ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। কোথাও অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে কি না, সেদিকে নজর রাখছে বিদ্যুৎ সংস্থাগুলো। অধিকাংশই এখন অবৈধভাবে বিদ্যুৎ না নিয়ে মিটার ব্যবহার করছে।’
আরও পড়ুন: বিদেশ থেকে আসা ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই: তথ্য প্রতিমন্ত্রী