পতিত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে জগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া হেলমেট বাহিনীর অনুপস্থিতিতে বড় পাথর বাহিনীর আবির্ভাব ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম।
রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনের হত্যাকাণ্ডে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদীরা ২৮ আক্টোবর প্রকাশ্য দিবালোকে রাজপথে পিটিয়ে হত্যা করে লাশের ওপর পৈশাচিক নৃত্য চালিয়েছিল।
শনিবার (১২ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর মগবাজারে বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
পুরান ঢাকার মিটফোর্ডের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে পাথর দিয়ে আঘাত করে হত্যার প্রতিবাদে ও অপরাধীদের বিচারের দাবিতে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখা এই বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে।
ড. রেজাউল করিম বলেন, অপশাসন-দুঃশাসন এবং জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা আওয়ামী লীগ ১৫ বছর ক্ষমতায় টিকে ছিল। তারা নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য জনগণের ওপর দীর্ঘ পরিসরে জুলুম ও নির্যাতন চালিয়েছিল। কিন্তু তাদের শেষ রক্ষা হয়নি। বরং ছাত্র-ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে তাদেরকে লজ্জাজনকভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছে।
পড়ুন:পুরান ঢাকায় সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের দ্রুত তদন্ত দাবি ফখরুলের
তিনি বলেন, আজ যারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য দিবাস্বপ্নে বিভোর, তারা যদি পতিত স্বৈরাচারের পরিণতি থেকে শিক্ষা গ্রহণ না করে, তাহলে তারা ১৫ মাসও ক্ষমতায় টিকতে পারবে না। তারাই মিটফোর্ডে ব্যবসায়ীকে পাথর মেরে হত্যা করে নিজেদের বর্বরতার জানান দিয়েছে।
অবিলম্বে সকল প্রকার বর্বরতা বন্ধ, গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও নির্বাচনে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানান জামায়াতের এই নেতা।
তিনি বলেন, আবু সাঈদ-মুগ্ধের দেশে কোনো প্রকার সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দখলদার, হেলমেট বাহিনী, রড বাহিনী ও পাথর বাহিনীর স্থান নেই, বরং জনগণ এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
তিনি প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘অপরাধ দমনে ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে জনপ্রশাসনকে জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে। এতে যদি আপনারা ভয় পান তাহলে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে পদত্যাগ করুন। বিপ্লবীরা নতুন করে জনপ্রশাসনকে গণবান্ধব করে ঢেলে সাজাবে, যাতে নতুন প্রশাসন খুনি, চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।’
পড়ুন: মিটফোর্ড হত্যায় ভিডিও থাকার পরেও হামলাকারীদের ধরা হচ্ছে না কেন, প্রশ্ন তারেকের
একই সঙ্গে মিটফোর্ডে নির্মমভাবে ব্যবসায়ীকে হত্যার প্রতিবাদ ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান ড. রেজাউল করিম।
তিনি বিপ্লবীদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ইয়াছিন আরাফাত, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য হেদায়েত উল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার নোমান আহমেদি প্রমুখ।