কিশোরগঞ্জে পৃথক বজ্রপাতের ঘটনায় তিন ছাত্রীসহ চারজন মারা গেছেন। এর মধ্যে জেলার পাকুন্দিয়ায় তিন স্কুলছাত্রী এবং মিঠামইনে এক কৃষক রয়েছেন।
পাকুন্দিয়ায় বিদ্যালয়ে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য যাওয়ার পথে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের চরটেকী গ্রামে বজ্রপাতে তিন ছাত্রীর মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন- ফারিয়া জান্নাত ইরিনা (১৫), আদ্রিতা ইসলাম প্রিয়া (১৫) ও বর্ষা (১৫)।
ফারিয়া জান্নাত ইরিনা চরটেকী নামাপাড়ার ফকির বাড়ির জালাল উদ্দিনের মেয়ে, আদ্রিতা ইসলাম প্রিয়া একই বাড়ির বাদল মিয়ার মেয়ে ও হিমা আক্তার বর্ষাএকই এলাকার মো. বোরহান উদ্দিনের মেয়ে।
তিনজনই চরটেকী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার বেলা ১টার থেকে বিদ্যালয়ে তাদের বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল।
চরটেকী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমিনুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিদ্যালয়ে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা চলছে। মঙ্গলবার বেলা ১টায় ৯ম শ্রেণির বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত ছিল। এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য ইরিনা, প্রিয়া ও বর্ষা বাড়ি থেকে স্কুলে আসতেছিল। পথে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হলে বজ্রাঘাতে তিনজনই গুরুতর আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ইরিনা ও প্রিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া গুরুতর আহত বর্ষাকে কিশোরগঞ্জে রেফার্ড করা হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথে বর্ষা মারা যায়।
আরও পড়ুন: যমুনায় মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে দুই ভাই নিহত
পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নূর-এ-আলম খান জানান, ইরিনা ও প্রিয়া এই দুইজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। এছাড়া আহত অবস্থায় বর্ষা নামে আরেকজনকে আনা হয়েছে। তাকে কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বিল্লাল হোসেন তিন ছাত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে যান। হাসপাতালে ইরিনা ও প্রিয়া এই দুইজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এছাড়া গুরুতর আহত বর্ষাকে কিশোরগঞ্জে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাফন-কাফনের জন্য আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে।
এদিকে একই সময় জেলার হাওর উপজেলা মিঠামইনের ঘাগড়া ইউনিয়নের চমকপুর খেতে গরু আনতে গিয়ে কটু মিয়া (৪০) নামে এক কৃষক বজ্রপাতে মারা গেছেন। তিনি চমকপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালিবের ছেলে।
মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কৃষক কটু মিয়া দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাড়ির পাশে হাওরে যান। এসময় হঠাৎ বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই কটু মিয়া মারা যান।