উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদ ও ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
বন্যা পরিস্থিতির অবনতির ফলে গত ৪দিন ধরে ঘরের ভেতর মাচা ও চৌকি উঁচু করে আশ্রয় নিয়েছেন এসব এলাকার মানুষ। চৌকিতেই তাদের করতে হচ্ছে রান্না, চৌকিতেই রাত কাটাতে হচ্ছে। বাড়ির চারপাশে অথৈ পানিতে অসহায় অবস্থায় দিন কাটছে নারী, শিশুসহ সবার।
কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল গফুর জানান, ‘আমার ইউনিয়নে ১ হাজার ৫০০ মানুষের বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। এছাড়াও ৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে।’
বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল হামিদ শেখ জানান, আমার ওয়ার্ডে ১৫০ ঘরে পানি উঠেছে। এছাড়াও এই ইউনিয়নে প্রায় ৮০০ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় আছে।
ফকিরের চরে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৮০টি পরিবার আশ্রয় নিলেও তারা বিশুদ্ধ পানি ও পায়খানার সমস্যায় ভুগছেন।
এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতাউর রহমান বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানলাম। এখনই জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে লোকজনকে পাঠাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের সাড়ে ৩ লাখ ডলার সহায়তা
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাফসান জানি জানান, কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী নৌবন্দর পয়েন্টে ৬৩ এবং ধরলার নদীর পানি কুড়িগ্রামের ব্রিজ পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ বলেন, বন্যাকবলিত কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী, উলিপুর ও নাগেশ্বরীতে খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি ইতোমধ্যে দুর্গত এলাকায় ১ হাজার ২০০ পরিবারকে ১০ কেজি করে চালসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এছাড়া ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটায় ১৫০ জন পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়।