খুলনায় তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ ও হাসপাতাল চত্বর থেকে অপহরণের অভিযোগে ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে।
মামলাটি করেন ওই তরুণীর ভাই পরিচয়ে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা ব্যক্তি।
বুধবার বিকালে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ ওই সংক্রান্ত অভিযোগ দাখিল করা হলে বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোসাম্মৎ দিলরুবা সুলতানা মামলাটি এজাহার হিসেবে নেওয়ার জন্য ডুমুরিয়া থানাকে নির্দেশ দেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদের চাচাতো ভাই রুদাঘরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামান ও গাজী আবদুল হক এবং আল আমিন গাজী, আক্তারুল আলম, সাদ্দাম গাজী ও মো. ইমরান হোসাইন।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে মেডিকেল শিক্ষার্থীকে গুলি করার ঘটনায় মামলা
মামলার আইনজীবী ও বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়ক মোমিনুল ইসলাম বলেন, বুধবার সকালের দিকে আদালতে অভিযোগ করা হয়। সাড়ে ৪টার দিকে বিচারক ওই অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলার এজাহার হিসেবে নেওয়ার জন্য ডুমুরিয়া থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাটি তদন্ত করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবেন।
আদালতে দাখিল করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে আসছিলেন। গত ২৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে এজাজ আহমেদ ওই তরুণীকে শাহপুর বাজারে অবস্থিত তার নিজস্ব কার্যালয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে তাড়িয়ে দেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় ২ শিশুকে ধর্ষণ মামলায় ১ জনের যাবজ্জীবন
পরে তরুণী ঘটনাটি তার দূর সম্পর্কের খালাতো ভাইকে জানালে তিনি তরুণীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠান। পরের দিন ওসিসির সামনে থেকে আসামি তৌহিদুজ্জামাসহ ১০-১৫ জন তরুণী ও তার মাকে জোর করে একটি মাইক্রোবাসে অপহরণ করে নিয়ে যান।
পরে ওই তরুণী ও তার মাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অপহরণ করা হয়নি মর্মে স্বীকারোক্তি দেওয়ার জন্য সোনাডাঙ্গা থানায় নেওয়া হয়। পরে আবার সেখান থেকে মাইক্রোবাসে করে তাদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
অভিযোগে বলা হয়েছে, বিষয়টি খুলনাসহ সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করলেও সোনাডাঙ্গা ও ডুমুরিয়া থানা-পুলিশ ওই তরুণী ও তার মাকে উদ্ধারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাদের উদ্ধারের জন্য ডুমুরিয়া থানায় মামলা করতে গেলে থানা থেকে মামলা নেওয়া হয়নি। এ কারণে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
জানতে চাইলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত সাহা বলেন, ডুমুরিয়া থানায় ওই সংক্রান্ত কেউ কোনো অভিযোগ কখনও নিয়ে আসেননি।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলা থেকেই অব্যাহতি পেলেন জবি শিক্ষার্থী খাদিজা