ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ মোকাবিলায় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবকদের ও তৃণমূল পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মীদের সরকারি-বেসরকারি সব সংস্থার সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান।
দুপুরে ঘূর্ণিঝড়ের সর্বশেষ পরিস্থিতি বিষয়ে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জাতীয় সদর দপ্তরের ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারে (ইওসি) আয়োজিত জরুরি বৈঠকে যোগ দিয়ে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় দেশের ৪৯টি মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করছে। এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।’
চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় ও ভূমিধসের আশঙ্কা থাকায় সেদিকেও সংশ্লিষ্ট সবাইকে খেয়াল রাখতে নির্দেশ দেন তিনি।
বৈঠকে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম ইউ কবীর চৌধুরী বলেন, ‘অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় ও জরুরি সহায়তায় সরকারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলের জনমানুষের জানমালের নিরাপত্তায় উপকূলীয় অঞ্চলজুড়ে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের সঙ্গে কাজ করতে মাঠে আছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ২ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক।’
ঘূর্ণিঝড় রিমালের সর্বশেষ পরিস্থিতি বিষয়ে আয়োজিত জরুরি সভায় আরও ছিলেন- বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান চৌধুরী হেলাল, মহাসচিব কাজী শফিকুল আযম, উপমহাসচিব সুলতান আহমেদ, বিভিন্ন বিভাগের পরিচালকরা, আইএফআরসির হেড অব ডেলিগেশন আলবার্টো বোকানেগ্রা ও বিভিন্ন পার্টনার ন্যাশনাল সোসাইটির প্রতিনিধিরা।
ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মাইকিং করে স্থানীয় জনগণকে ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় সচেতন করছেন রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকরা। এছাড়াও বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঘূর্ণিঝড়ে করণীয় বিষয়ে স্থানীয়দের জানাচ্ছেন তারা।
পাশাপাশি সমুদ্রবন্দরগুলোতে বিপৎসংকেত ও সতর্ক বার্তা প্রচার এবং টেকনাফ ও ভাসানচরের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতেও ঘূর্ণিঝড় বিষয়ক সচেতনতামূলক বার্তা পৌঁছে দিতে কাজ করছে সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবকরা।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় প্রশিক্ষিত ইউনিয়ন ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট টিম (ইউডিআরটি) কমিটির সদস্যদের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জামাদি দেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ সরঞ্জামও। উপকূলীয় অঞ্চলের অধিবাসীদের জন্য শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এছাড়াও জরুরি প্রয়োজনের জন্য তারপলিন, জেরিকেন, স্লিপিং ম্যাট, বালতি, হাইজিন কিটসহ অন্যান্য সামগ্রী মজুদ রাখা হয়েছে।
এদিকে গত সপ্তাহ থেকেই উপকূলীয় জেলাগুলোতে বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ ৮ জেলায় (খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ভোলা ও ঝালকাঠি) রেড ক্রিসেন্টের আগাম সতর্কতা কার্যক্রম চলছে।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে আবহাওয়া অধিদপ্তর, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি), আইএফআরসি ও অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং গ্রুপের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি।