আর কিছুদিন পরই কোরবানির ঈদ। প্রতিবছর ঈদ এলেই বড় আকারের ও বাহারি নামের গরুর দেখা মেলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
সযত্নে লালনপালন করা এসব গরু জনসম্মুখে নিয়ে আসেন খামারিরা। এসব বিশালাকার গরু ও দাম নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহও থাকে তুঙ্গে।
এবার চাঁদপুরের পশুরহাট মাতাবে যুবরাজ, রাজাবাবু ও কালোমানিক নামের তিনটি গরু। শারিরীক কাঠামো, সাইজ ও সৌন্দর্যে অন্য সব পশুদের সবাইকে ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
যুবরাজের মালিক চাঁদপুর সদরের মান্দারি গ্রামের সবুজ বাংলা খামারের সফল খামারি এবং সরকারিভাবে কয়েকরার শ্রেষ্ঠ নারী পশু খামারি হিসেবে পুরস্কার পাওয়া পারভিন ইসলাম এবং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের বহরিয়া এলাকার নুর মোহাম্মদ বেপারি।
পারভিনের খামারটি চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত।
পারভিন জানান, তার আমেরিকাপ্রবাসী স্বামী, প্রকৌশলী ছেলে এবং ৫/৬ জন কাজের লোক এ খামার দেখভাল করছেন।
পারভিন আরও জানান, ২০০৫ সালে ২টি গরু দিয়ে তার পথচলা। তার খামারে এখন ৬৬টি গরু রয়েছে, কেরাণীগঞ্জের এক খামারে রয়েছে আরও দেড় শতাধিক গরু। চাঁদপুরের খামারে পশুর মধ্যে বলদ, ষাঁড় ও বাজা গরুও আছে।
তিনি বলেন, এবার ঈদ উপলক্ষে যুবরাজসহ তিনি ৪৮টি গরু বিক্রি করবেন চাঁদপুরের পশুর হাটে। বাড়ির সামনেই মহাসড়কের পাশে এসব গরু বিক্রির জন্য ডিসপ্লে করে সারিবদ্ধভাবে রাখবেন ২২ জুনের পর। যাদের পছন্দ হবে তারা সরাসরি কিনতে পারবেন।
পারভিন জানান, তার খুব আদরের পশু এই যুবরাজ। সে শান্ত স্বভাবের। যুবরাজকে ১৫ লাখ টাকায় বা কিছু কমমূল্যে বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
তিনি জানান, এর জন্ম তার খামারেই। এর বয়স তিন বছর সাত মাস। লম্বায় সাড়ে ৮ ফিট ও উচ্চতায় সাড়ে ৬ ফিট।
পারভিন আরও বলেন, তিনি সারাদিনই তার খামারের পশুদের দেখভাল করেন। খামারের গরুগুলো রিষ্টপুষ্ট ও সুঠাম। দেশীয় খাবার দিয়ে পশুগুলোকে গড়ে তোলেছেন।
সদর উপজেলা পশু সম্পদ অফিসের ডা মকবুল হোসেন বলেন, তিনি জেলা পশু অফিসার ডা. বখতিয়ারউদ্দীনসহ এ খামারটি পরিদশর্ন করেছেন।
তিনি বলেন, এ গরুর মাংস সুস্বাদু হবে। এ থেকে মাংস পাওয়া যাবে ১১/১২০০ কেজির মতো। এটার শারিরীক গড়নও ভালো। চর্বি বা ফ্যাটবিহীন। স্পারটা ট্রয় জাতের বিজ থেকে ক্রস করে গরুটি জন্মানো হয়। প্রাকৃতিকভাবে লোকাল খাবার দিয়ে তাকে গড়ে তোলা হয়। কোনো ফ্যাটজাতীয় খাবার দেওয়া হয়নি।
ওদিকে, এবার ফরিদগঞ্জের বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের প্রাচীনতম ব্যবসাকেন্দ্র পাটোয়ারি বাজারের পশুর হাট কাঁপাবে কালোমানিক।
গরুটিকে তিন লাখ টাকায় ৪ বছর আগে কেনেন বলে জানান মালিক রেজাউল করিম।
তিনি স্থানীয় মায়ের দোয়া ডেইরি ফার্মের মালিক। গতবার ভালো দাম পান নি, তাই এবার তিনি আশা করছেন তার কালো মানিক ভালো দামে বিক্রি হবে।
তিনি বলেন, এ যাবত খরচ হয়েছে ২০ লাখ টাকার মতো। তিনি গরুর দাম চান ২৫ লাখ টাকা। গরুটি লম্বায় ১০ ফিট আর উচ্চতায় ৮ ফিট।
আরও পড়ুন: কোরবানির ঈদে কিশোরগঞ্জের দম্পতির উপহার হিসেবে গরু গ্রহণ করলেন প্রধানমন্ত্রী