আশুলিয়ার জিরানী বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে টিনের দোকান, লাইব্রেরি, কাপড়ের দোকান, জুতার দোকান ও মুদি দোকানসহ অন্তত ১৭টি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এবং দোকানে থাকা সমস্ত মালামাল ভস্মীভূত হয়েছে। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন দোকানমালিকরা।
শনিবার (১১ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে আশুলিয়ার ও গাজীপুর মহানগরীর সীমান্তবর্তী জিরানী বাজারে আগুনের এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে আগুন নির্বাপণ করতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় লেগে যায় বলে রোববার সকালে ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার প্রণব চৌধুরী জানান।
তিনি জানান, আগুনের খবর পেয়ে ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিস থেকে প্রথমে তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়। আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকায় পরে সারাবো ফায়ার সার্ভিস থেকে আরও দুটি ইউনিটসহ মোট ৫টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করে এবং প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলোর মধ্যে মুদি দোকান, বইয়ের লাইব্রেরি, কাপড়ের দোকান, জুতার দোকান ও টিনের দোকান সহ অন্তত ১৭টি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ভস্মীভূত হয়েছে বলে জানান তিনি।
দোকানমালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে দোকানপাট বন্ধ করে বাড়ি চলে যান তারা। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে ছুটে যান বাজারে। তারপর প্রথমে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তারা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন।
সামি লাইব্রেরির মালিক আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তার দোকানে অন্তত এক কোটি টাকার উপরে বইখাতাসহ স্টেশনারি মালামাল ছিল বলে দাবি করেন তিনি।
এছাড়া বাজারের বাইরে কেরু বেপারী মার্কেটের ইমরুলের কাপড়ের দোকান, লিজু মোল্লার কাপড়ের দোকান, মঞ্জুর কাপড়ের দোকান, আব্দুস সবুরের জুতার দোকান এবং আরিফের জুতার দোকানে আগুন লাগে। সেসব দোকানেরও সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
দোকানমালিকরা জানান, তারা বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে দোকানে মালামাল তুলেছিলেন।
ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার প্রণব কুমার চৌধুরী বলেন, ‘আগুনের খবর পেয়ে ডিইপিজেড থেকে তিনিটি এবং পরে সারাবো ফায়ার সার্ভিস থেকে আরও দুটি ইউনিট যোগ দেওয়ার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ করতে সময় লাগে প্রায় আড়ায় ঘণ্টা। আগুনে প্রায় দুই কোটি টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না, তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে।’