জেলা শহরের বাজারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ সরবরাহ হলেও আগের মতই বিক্রি হচ্ছে রুপালী ইলিশ। বাজারে সবচেয়ে সরবরাহ হচ্ছে বরিশাল থেকে আসা ইলিশ। চাঁদপুরের ইলিশ সরবরাহ একদম কম বলে জানা যায়। বরিশালের পাশাপাশি ছোট সাইজের ইলিশ বেশিরভাগ আসছে চট্টগ্রাম থেকে।
শনিবার মৌলভীবাজার শহরের পশ্চিমবাজার মৎস্য আড়ৎ সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, প্রচুর সরবরাহ আর ব্যাপক চাহিদা থাকায় বাজার সয়লাব রুপালী ইলিশে। রুপালী ইলিশের পাশাপাশি এখানে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ আসছে চট্টগ্রাম থেকে। ব্যাপারীরা ছোট-বড় বিভিন্ন সাইজের ইলিশের পসরা সাজিয়ে বেশ খোশ মেজাজে ক্রেতাদের সাথে দরদাম ঠিক করছেন।
দেখা যায়, এক কেজি ২০০ গ্রাম সাইজের বড় ইলিশের দাম প্রতি কেজি হাঁকছেন এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত। মাঝারি সাইজের প্রতি কেজি ইলিশ ৬৫০ টাকা করে এবং একদম ছোট সাইজের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, নদীগুলোতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ার কারণে এখন আগের তুলনায় সরবরাহের পাশাপাশি বাড়ছে ইলিশের চাহিদাও। তবে দাম না কমার কারণে স্থানীয় আড়তদারদের কাছ থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা উচ্চ মূল্যে ইলিশ ক্রয় করছেন।
খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রতি কেজি রুপালী ইলিশ বড় সাইজের ৯০০ টাকা ক্রয় করে সেটা খুচরা বাজারে এক হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হয়।
পশ্চিমবাজারের খুচরা বাজারে ইলিশ ক্রয় করতে আসা আব্দুর রহমান বলেন, টেলিভিশন এবং পত্র-পত্রিকায় দেখলাম ইলিশের দাম কমেছে, এখন দেখছি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ইলিশ। তিনি এর জন্য সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দায়ী করেন।
তিনি বলেন, ‘বাজার মনিটরিং এবং তদারকি হলে ইলিশের বাজারে দাম ঠিকই কমবে।’
খুচরা মৎস্য ব্যবসায়ী রিয়াজ ইসলাম রাজু জানান, তিনি মাঝারি সাইজের প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি করছেন ৬৫০ টাকা দরে।
বাজারে ইলিশ বেশি দামে বিক্রি হওয়ার কারণ সিন্ডিকেট এমন অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমরা বেশি দামে ক্রয় করার কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।’
মৌলভীবাজার শহরের সবচেয়ে বড় মৎস্য আড়ৎ মতিউর সিন্ডিকেটের ম্যানেজার অনুপ মল্লিক বলেন, আগের থেকে ইলিশের সরবরাহ বাড়ছে তবে বর্তমানে ইলিশের দাম কমার বিষয়ে গণমাধ্যমের তথ্যের সাথে বাস্তবের কোনো মিল নেই।
বাজারে দাম না কমার কারণ হিসেবে তিনি পরিবহন খরচ, প্যাকেজিং খরচ এবং বরফের মূল্য বেড়ে যাওয়ার কথা বলেন।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আল-আমিন বলেন, ‘নদী এবং সাগরে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ার কারণে বাজারে দাম কম থাকার কথা, তারপরেও কেউ বেশি দামে ইলিশ বিক্রি করলে তদারকি করে খুব শিগগরিই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’