ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মসজিদে নামাজের মাসআলা নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চরচারতলা মোল্লা বাড়ি ও কিছকি বাড়ি গোষ্ঠীর মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে। পরে বিষয়টি শনিবারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চরচারতলা উত্তরপাড়া জামে মসজিদে মোল্লা বাড়ির নেতা মাওলানা মহিউদ্দিন মোল্লা ইমামতি করেন। শুক্রবার এশা ও তারাবির নামাজ শেষে কিছকি বাড়ির নেতা ঠিকাদার শফিকুর রহমান ইমাম সাহেবের অনুমতি নিয়ে নামাজের কিছু মাসআলা নিয়ে মুসল্লিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এতে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে নামাজ শেষে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন: গড়াই নদী থেকে মাটি কাটায় বাধা দেওয়ায় সংঘর্ষ, আহত ৫
মাওলানা মহিউদ্দিন মোল্লা বলেন, তারাবি নামাজ শেষে কিছকি বাড়ির নেতা ঠিকাদার শফিকুর রহমান ২ মিনিট কথা বলতে আমার অনুমতি চাইলে আমি তাকে অনুমতি দেই। তিনি তার বক্তৃতায় এ মসজিদের কোনো মুসল্লিরই নামাজ হয় না এমনটা বললে উপস্থিত সবাই এর প্রতিবাদ করেন। এতে শফিকুল ইসলামের বাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদসহ আমাদের বাড়ির লোকজনের উপর হামলা করে। এ সময় আমাদের বাড়ির ৫ জন গুরুতর আহত হন।
ঠিকাদার শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমি তারাবি নামাজ শেষে নিয়ম অনুযায়ী অনুমতি নিয়ে নামাজের কিছু গুরত্বপূর্ণ মাসআলার বিষয়ে ইমাম সাহেব ও মুসল্লিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করি। নামাজের প্রয়োজনীয় তাসবিহ পাঠের জন্য রুকু, সিজদা ও দাঁড়ানোতে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া ও কাতার সোজা করার গুরুত্ব নিয়ে এসব বিষয়ে নজর দিতে ইমাম সাহেবকে অনুরোধ করি। এতে ইমাম সাহেব ও তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদের ভেতরেই আমাকে নাজেহাল করেন।’
আরও পড়ুন: অষ্টগ্রামে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, পুলিশসহ আহত ১৫
তিনি আরও বলেন, ‘পরে তারা আমার ও আমার এক ভাইয়ের বিল্ডিংয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। আমার ব্যবহারের গাড়ি ও দুটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করেন। এ সময় আমদের বাড়ির ৮ জন গুরুতর আহত হয়।’
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহাম্মেদ বলেন, সংঘর্ষ বাধার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ উপস্থিত হয়ে নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ প্রায় ৩৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
তিনি আরও বলেন, অফিসারসহ ৩ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। ঘটনার পর থেকে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে ঘোড়ার লাথিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ১০