এ সময় হত্যার ঘটনার রেকি (লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ, আক্রমণ পূর্ব পর্যবেক্ষণ, আক্রমণের কলাকৌশল) এবং ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করেন র্যাবের কর্মকর্তারা।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তাফা সরওয়ারের নেতৃত্বে র্যাবের একটি দল সিনহা খুনের ঘটনাস্থল বাহারছড়া শাপলাপুরে পৌঁছায়।
র্যাব সূত্র জানায়, এমন কি ঘটনা ঘটেছিল সিনহাকে এক থেকে দেড় মিনিটের মধ্যে গুলি করা হয়েছিল এই প্রশ্নের উত্তর জানতে প্রধান তিন আসামিকে ঘটনাস্থলে নেয়া হয়।
খুনের ঘটনাস্থল পৌঁছার পর র্যাবের তদন্ত দল প্রথমে ঘটনাস্থল এবং আশপাশ ঘুরে দেখেন। দুপুর ২টা পর্যন্ত র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তাফা সরওয়ার, র্যাবের আইন ও মিডিয়া উইং প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ, র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক সারোয়ার বিন কাশেম ও র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক আজিম আহমেদ এবং সিনহা হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-১৫ এর সহকারী পরিচালক সিনিয়র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম ঘটনাস্থল ও আশপাশ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজনের সাথেও কথা বলেন র্যাবের কর্মকর্তারা।
তদন্তের অংশ হিসেবে কীভাবে সিনহাকে হত্যা করা হয়েছিল তার চিত্র তুলে আনতে ঘটনার রেকি শুরু করেন তারা। এই জন্য একটি সাদা কার ব্যবহার করা হয়। আসামিদের বর্ণনা মতে রেকি পরিচালনা করা হয়। বেলা ৩টার দিকে রেকি সম্পন্ন হয়।
রেকিতে ওই ঘটনার সাথে মিল রেখে প্রথমে এএসআই নন্দদুলালকে গাড়ি থেকে তার ভূমিকার চিত্র ধারণ, এরপর লিয়াকত আলী ও সর্বশেষ সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের রেকি নেয়া হয়।
এ সময় তাদেরকে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়। রেকি পরিচালনা করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিনিয়র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। রেকি শেষ করেই র্যাব ঘটনাস্থলে ছেড়ে চলে আসে।
তথ্য মতে, বরখাস্ত হওয়া টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বরখাস্ত হওয়া ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী ও বরখাস্ত হওয়া এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে আদালতের নির্দেশ মতে গত ১৮ আগস্ট কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে রিমান্ডের জন্য হেফাজতে নিয়ে যায় র্যাব। আজকের করা রেকিও রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদের অংশ বলে জানিয়েছে র্যাব সূত্র।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই খুন হওয়া সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান টেকনাফের বাহারছড়ায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন। এরপর ৫ আগস্ট তার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলী, নন্দদুলাল রক্ষিত, সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়াসহ ৯ জনকে আসামি করে টেকনাফ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। পরে মামলা টেকনাফ থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু হয়।
এই মামলায় এজাহারভুক্ত ৯ আসামির মধ্যে সাতজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এছাড়াও পরে আসামিভুক্ত বাহারছড়ার স্থানীয় তিনজন ও এপিবিএন এর তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সবাই জেলা কারাগারে রয়েছেন।