গত বৃহস্পতিবার বিকালে সূত্রপাঠ করে বেইন ঘর উদ্বোধন করে মহাপরিনির্বাণগত মহাসাধক শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের শিষ্যমণ্ডলীগণ ও চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় চরকায় সুতা কেটে দুই দিনের কঠিন চীবর দান উৎসবের সূচনা করেন। পরে শুক্রবার বিকালে ভিক্ষু সংঘের কাছে চীবর দানের মাধ্যমে শেষ হয় দানোত্তম কঠিন চীবর দান উৎসবের।
বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় গেরুয়া কাপড়কে বলা হয় চীবর। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে চরকায় সুতা কেটে, সুতা রং করে আগুনে শুকিয়ে সেই সুতায় তাঁতে কাপড় বুনে চীবর তৈরি করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করা হয় বলে এর নাম কঠিন চীবর দান।
পার্বত্য এলাকার বৌদ্ধরা দানোত্তম কঠিন চীবর দান উৎসব পালন করে প্রাচীন নিয়মে। বিশ্বের আর কোথাও এ নিয়মের প্রচলন নেই। তাই ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা কঠিন চীবর দানে অংশগ্রহণ করতে দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার পূণ্যার্থী এই উৎসবে সমবেত হন।
বৌদ্ধ শাস্ত্র মতে, দীর্ঘ আড়াই হাজার বছর পূর্বে গৌতম বুদ্ধের শিষ্য বিশাখা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চীবর তৈরির প্রচলন করেছিলেন। প্রতি বছর আষাড়ী পূর্ণিমা থেকে কার্তিকী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ষাবাস শেষে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের চীবর দান করতে হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৩ সাল থেকে বুদ্ধের শিষ্য বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে ৪৬ বছর ধরে কঠিন চীবর দান উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মতে, জগতে যত প্রকার দান রয়েছে তার মধ্যে এ চীবর দানই হচ্ছে সর্বোত্তম দান।