বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, পেট্রোবাংলার প্রতিটি কোম্পানিকে হাইড্রোকার্বন অনুসন্ধানের জন্য গ্যাসক্ষেত্রে কূপ খননের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হবে এবং ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তাদের পদ থেকে অপসারণ করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) পেট্রোবাংলা মিলনায়তনে 'গ্যাসের চাহিদা-সরবরাহ পরিস্থিতি' শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
পেট্রোবাংলা আয়োজিত এই সেমিনারে 'হাইড্রোকার্বন উৎপাদন ত্বরান্বিত করতে ভূকম্পন জরিপের সুযোগ ও ড্রিলিং কার্যক্রম বৃদ্ধি' শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'কোনো ব্যর্থতার জন্য কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না এবং কোনো যুক্তি পরামর্শও গ্রহণযোগ্য হবে না।’
আরও পড়ুন: সড়ক থেকে বিদ্যুৎচালিত অটোরিকশা সরানোর দাবি নাকচ করলেন নসরুল হামিদ
পেট্রোবাংলার কার্যক্রমে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, দলগতভাবে কাজ করার মতো প্রতিষ্ঠান ও এর অধীনস্থ সংস্থাগুলোর ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে।
তারা সমন্বিতভাবে কাজ করে না। ফলে অনেক সময় কূপে গ্যাস পাওয়া গেলেও প্রক্রিয়াজাতকরণ প্লান্ট থেকে যায় জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহের জন্য অপ্রস্তুত থাকে।
তিনি বলেন, ‘কখনো কখনো একটি কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করতে ৪ বছর লেগে যায়।’
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) এবং বিদ্যুৎ খাতের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান একটি দল হিসেবে কাজ করে শতভাগ বিদ্যুৎ ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফল হয়েছে বলে জানান তিনি।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকারের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য দেন জ্বালানি সচিব মো. নূরুল আলম।
সেমিনারের বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম এবং পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক মেহেরুল হাসান।
নসরুল হামিদ বলেন, পেট্রোবাংলা দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) উৎপাদনের জন্য ৪৮টি কূপ খননের পরিকল্পনা করেছে।
তিনি বলেন, 'পরিকল্পনার কার্যকর ফলাফল দেখতে আমরা সবাই পেট্রোবাংলার দিকে তাকিয়ে আছি...গ্যাস খাতে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে শতকরা ২০ ভাগ কার্যকারিতার অনেক অদক্ষ ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। কিছু নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হলে কার্যকারিতা ৬২ শতাংশ হয়।
নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে গ্যাস সরবরাহ করতে পারলে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ৭০ শতাংশ কমে যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
উপস্থাপনায় পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা জানান, সারা দেশে ১০০টি কূপ খননের পরিকল্পনা করা হয়েছে। খনন করা এসব কূপ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে ১ হাজার ৫০০ এমএমসিএফডি গ্যাস উৎপাদিত হবে। আর এসময় দেশে গ্যাসের চাহিদা দাঁড়াবে ৬০০০ এমএমসিএফডিতে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগকে স্বাগত জানায় বাংলাদেশ: নসরুল হামিদ