ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনে মৃত আরও ৪৫টি হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সুন্দরবনের কটকা ও কচিখালীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মৃত ওই হরিণ উদ্ধার করা হয়। এনিয়ে তিন দিনে সুন্দরবন থেকে ৯৬টি মৃত হরিণ এবং দুটি বন্য শূকর উদ্ধার করে বন বিভাগ।
বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানতে বন বিভাগের সদস্যরা সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছে। তবে সুন্দরবন বিভাগ এখনও পর্যন্ত জানাতে পারেনি রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো জানান, বৃহস্পতিবার সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি করে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকা ৪৫টি হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে বুধবার ১২টি এবং মঙ্গলবার ৩৯টি মৃত হরিণ উদ্ধার করা হয়। এনিয়ে তিন দিনে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৯৬টি মৃত হরিণ উদ্ধার করা হলো। এছাড়া জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়ার সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৮টি জীবিত হরিণ, চারটি বন্য শূকর ও একটি অজগর উদ্ধার করা হয়।
মিহির কুমার দো আরও জানান, ঘুর্ণিঝড় রিমালের জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের মধ্যে দিয়ে ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়েছে। পানির কারণে বন্যপ্রাণী দিকবিদিক ছুটাছুটি করে। জলোচ্ছ্বাসে ওই হরিণগুলোর মৃত্যু হয়েছে।
প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে বন কর্মকর্তারা কাজ করছে। তিন দিনে বন থেকে ৯৬টি মৃত হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। বনের কোথাও আর কোনো বন্যপ্রাণী মরে পড়ে আছে কি না- তা ঘুরে দেখছে বন বিভাগের সদস্যরা। তালিকা পাওয়ার পর সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যাবে।
জানা গেছে, ঘুর্ণিঝড় রিমাল রবিবার প্রথমে বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবনে আঘাত হানে। এর পর দীর্ঘ সময় ধরে রিমাল উপকূল অতিক্রম করে। রিমালের প্রভাবে রবিবার দুপুর ও রাত এবং সোমবার দুপুরের পর নদ-নদীতে ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়। রিমালের জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবন প্লাবিত হয়। বনের কটকা, কচিখালী, দুবলা, শেলা, নীলকমল, মান্দাবাড়িসহ বনের বিভিন্ন এলাকায় পানি থই থই করতে দেখা গেছে। পানিতে বনের রাস্তাঘাট যেম ডুবে যায় তেমনি বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলও ডুবে গিয়ে ছিল। এসময় বন্যপ্রাণীদের দিকবিদিক ছুটতে দেখে বন বিভাগের সদস্যরা। ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।