রবিবার রাত ১০টার দিকে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলায় সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের চরাপুটিয়া এলাকা থেকে শিকারিদের আটক করা হয়।
তারা হলেন খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার মনিদার গাজীর ছেলে সৈয়দ গাজী (৫৫) ও কাউমখোলা গ্রামের পীর আলী শেখের ছেলে মো. ফারুক শেখ (৪০) এবং দাকোপ উপজেলার বানিয়াখালী গ্রামের মাহাবুব শেখের ছেলে হযরত আলী শেখ (৪০)।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘বন বিভাগের সদস্যরা নিয়মিত টহল দেয়ার সময় চরাপুটিয়া এলাকা থেকে তিন হরিণ শিকারিকে আটক করেন। সংঘবদ্ধ ওই হরিণ শিকারি চক্রের সদস্যরা আইন ভঙ্গ করে চোরাপথে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। ফাঁদ পেতে হরিণ শিকারের প্রস্তুতি নেয়ার সময় তাদের আটক করা হয়।’
তাদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান ডিএফও বেলায়েত।
বন বিভাগ বলছে, হরিণ শিকার ঠেকাতে তাদের নানা তৎপরতা রয়েছে সুন্দরবনে। স্মার্ট টহলের পাশাপাশি বন বিভাগের নিয়মিত এবং বিশেষ টহল চলে সুন্দরবনে। বনের সম্পদ রক্ষায় বন বিভাগ সব সময় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। এরপরেও শিকারি চক্র চোরাইভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করে হরিণ শিকার করে। তবে, বন বিভাগের তৎপরতার কারণে শিকারিরা ধরা পড়ছেন। বিভিন্ন সময়ে উদ্ধার করা হচ্ছে হরিণের মাংস, মাথা, চামড়া, নৌকা ও ফাঁদ।
বন বিভাগের তথ্য মতে, সুন্দরবন থেকে শিকার করে নিয়ে যাওয়ার সময় এ বছর এখন পর্যন্ত বন বিভাগ প্রায় ২৫০ কেজি হরিণের মাংস উদ্ধার করেছে। এ সময় ধরা পড়েছেন অর্ধশত হরিণ শিকারি। বনের মধ্যে শিকারিদের ফাঁদ থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ২২ হরিণ। আর লোকালয় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তিনটি।
সূত্র জানায়, প্রায় সারা বছর ধরে কম বেশি হরিণ শিকার চলে সুন্দরবনে। বনসংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয় রয়েছে একাধিক শিকারি চক্র। কখনও জেলে সেজে আবার কখনও বন বিভাগের চোখ ফাঁকি দিয়ে চোরাপথে শিকারিরা বনে প্রবেশ করেন। বনের যেসব স্থানে হরিণের বেশি চলাফেরা এমন সব স্থানে ফাঁদ পেতে এবং বিষটোপ দিয়ে হরিণ শিকার করা হয়। এরপর বনের মধ্যে মাংস তৈরি করে লোকালয়ে নিয়ে আসা হয়। মাঝে মধ্যে জীবিত হরিণও লোকালয়ে নিয়ে আসেন শিকারিরা।
সূত্র আরও জানায়, ফাঁদ পেতে এবং বিষটোপ দিয়ে অধিকাংশ সময় হরিণ শিকার করা হচ্ছে। ধরা না পড়লে জানার উপায় নেই সুন্দরবন থেকে বছরে কত সংখ্যক হরিণ শিকার করা হচ্ছে। শিকারিরা সুন্দরবনে যে পরিমাণ হরিণ শিকার করে তার নামমাত্র ধরা পড়ে। আর শিকারি চক্র রয়ে যায় ধরা ছোয়ার বাইরে। মাঝে মধ্যে শিকারি চক্রের সদস্যরা ধরা পড়লেও থেমে নেই হরিণ শিকার।