রবিবার দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামান এ রায় দেন।
এছাড়াও ওই সন্তানের ভরণপোষণ প্রদানসহ ধর্ষকের ওয়ারিশ হিসাবে ঘোষণা দেন বিচারক। রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত আবুল কালাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, পীরগাছা উপজেলার হরিরাম গ্রামের বাক প্রতিবন্ধী (তৎকালীন ১৮ বছর বয়স) এক যুবতিকে প্রায়ই উত্যক্ত করতেন চাচাতো বোনের স্বামী প্রতিবেশী আব্দুল জলিলের ছেলে আবুল কালাম (তৎকালীন ৩৫ বছর বয়স)। এ নিয়ে তাকে নিষেধ করা হলে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০০৮ সালের ১ ডিসেম্বর বিকালে কৌশলে ওই যুবতিকে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন কালাম।
কিছুদিন পর মেয়েটির শারীরিক পরিবর্তন হতে থাকলে বিষযটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। একপর্যায়ে মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করা হলে ইশারায় আবুল কালামকে চিহ্নিত করে পরিবারের লোকজনদের ধর্ষণের বিষয়টি অবগত করেন। একপর্যায়ে মেয়েটি গুরত্বর অসুস্থ হয়ে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দিলে ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তাকে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
পরবর্তীতে ধর্ষণের ঘটনা এবং সন্তানের স্বীকৃতি অস্বীকার করলে ২০০৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আবুল কালামকে আসামি করে আদালতে পিটিশন মামলা দায়ের করেন মেয়েটির বাবা।
আদালতের নির্দেশে ওই বছরের ২৫ ডিসেম্বর অভিযোগপত্র দাখিল করেন তৎকালীন পীরগাছা থানার এসআই আব্দুস সামাদ সরকার। একপর্যায়ে ধর্ষণে জন্ম নেয়া শিশুর এবং ধর্ষকের ডিএনএ পরীক্ষা ও ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দীর্ঘ ১১ বছরেরও বেশি দিন পর রবিবার এর রায় ঘোষণা করা হয়।
মামলার রাস্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন বলেন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও একলক্ষ টাকা জরিমানা আদায় এবং ধর্ষকের ওয়ারিশ হিসাবে সম্পত্তির অংশীদারিত্বের রায় দিয়েছেন বিচারক। যদি ধর্ষকের কোনো সম্পত্তি না থাকে তাহলে ওই শিশুর ব্যয়ভার রাস্ট্রকে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
‘অনেক দেরীতে হলেও আসামির যাবজ্জীবন সাজা ও সন্তানের স্বীকৃতির এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট,’ বলেন তিনি।