সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে গত ৮ দিনে ৬ হাজার ৫২০.২১ মেট্রিক টন ভারতীয় চাল আমদানি হয়েছে। চাল আমদানির উপর থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) শুল্ক কর প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর শুরু হয় চাল আমদানি।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, চাল আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহারের পর খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত ১২টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান গত ১৩ নভেম্বর থেকে ভোমরা বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু করে।
শুরু থেকে ঢাকার পুরানা পল্টনের মজুমদার এগ্রোটেক ইন্টারন্যাশনাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চার দফায় ভোমরা বন্দর ব্যবহার করে ভারত থেকে প্রায় ১৮৬১.৪৭ মেট্রিক টন চাল আমদানি করেছে।
এর মধ্যে চলতি অর্থবছরের ১৩ নভেম্বর ৭৭০ মেট্রিক টন, ১৬ নভেম্বর প্রায় ৩৬৮.৫০ মেট্রিক টন, ১৭ নভেম্বর ৩৮০.৯৭ মেট্রিক টন এবং ১৮ নভেম্বর ৩৪২ মেট্রিকটন চাল আমদানি করেছে।
সাতক্ষীরার কলারোয়ার মুকুল এন্টারপ্রাইজ ১৩ নভেম্বর ১০০ মেট্রিক টন, ১৪ নভেম্বর ১০০ মেট্রিকটন এবং ১৭ নভেম্বর আরও ১০০ মেট্রিক টনসহ মোট ৩০০ মেট্রিকটন চাল আমদানি করে।
যশোরের ঝিকরগাছা ইসমাইল হোসেন মিলন ১৩ নভেম্বর ১০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি করেন।
বগুড়ার আবুল মনসুর খান ১৪ নভেম্বর ১৫০ মেট্রিক টন, ১৬ নভেম্বর ১৫০ মেট্রিক টন এবং ১৮ নভেম্বর ২০০ মেট্রিক টনসহ মোট ৫০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি করেন।
যশোর বাগআঁচড়া সরদার অ্যালুমিনিয়াম স্টোর ১৪ নভেম্বর ১০০ মেট্রিক টন এবং ১৮ নভেম্বর ১০০ মেট্রিক টনসহ মোট ২০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি করে।
সিলেটের জাকিরগঞ্জের মো. আবুল কালামের প্রতিষ্ঠান ১৬ নভেম্বর ৪০ মেট্রিক টন চাল আমদানি করে।
যশোরের ইসলামপুর রাইস মিল ১৬ নভেম্বর ১০০ মেট্রিক টন এবং ১৮ নভেম্বর ৯৫ মেট্রিক টনসহ মোট ১৯৫ মেট্রিক টন চাল আমদানি করে। জেলার নওয়াপাড়া সুশান্ত কৃষ্ণ রায় ১৬ নভেম্বর ৯৯.৯৯৬ মেট্রিক টন এবং ১৮ নভেম্বরসহ মোট ২০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি করেন। ঝিকরগাছা ইমো ট্রের্ডাস ১৭ নভেম্বর ২০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি করে। একই জেলার মজুমদার অ্যান্ড সন্স ১৭ নভেম্বর ৩৫২.৫০ মেট্রিক টন এবং ১৮ নভেম্বর ৩৮২.৫০ মেট্রিক টনসহ মোট ৭৩৫ মেট্রিক টন চাল আমদানি করে।
এছাড়া যশোরের বেনাপোলের এসএম এম ইন্টারন্যাশনাল ১৮ নভেম্বর ২৫১ মেট্রিক টন চাল আমদানি করে এবং মাগুরার মহামায়া ট্রেডার্স ১০৫.২৪ মেট্রিকটন চাল আমদানি করে।
২০ নভেম্বর কলারোয়ার মুকুল এন্টারপ্রাইজ ২০০ মেট্রিক টন, ঝিকরগাছার ইসমাইল হোসেন মিলন ২০০ মেট্রিক টন, বেনাপোলের এস এম এম ইন্টারন্যাশনাল ২০০ মেট্রিক টন, যশোরের মজুমদার ফুড প্রোডাক্ট প্রাইভেট লিমিটেড ৪৬২.৫০ মেট্রিক টন এবং যশোরের রেজাউল অ্যান্ড সন্স ৭৫ মেট্রিক টন চাল আমদানি করে।
ভোমরা কাস্টম সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুছা জানান, ২০২৩ সালের ২০ জুলাই থেকে দেশের বাইরে চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত সরকার। দীর্ঘদিনের জটিলতা নিরসনের পর চাল রপ্তানির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় ভারত সরকার। এরপর গত ১৩ নভেম্বর থেকে পুনরায় ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় দেশের শীর্ষ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো ভোমরা বন্দর ব্যবহার করে ভারত থেকে চাল আমদানি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
ভোমরা স্থল শুল্ক স্টেশনের ডেপুটি কমিশনার আবুল কালাম আজাদ বলেন, এনবিআর চাল আমদানির উপর থেকে শুল্ক কর প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়েছে।
আমদানির শুরুর পর গত ১৩ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ৮ দিনে অনুমোদনপ্রাপ্ত ১২টি চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ভোমরা বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৬৫২০.২১ মেট্রিক টন চাল আমদানি করেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীতে এই বন্দর দিয়ে চাল আমদানি বাড়বে বলে জানান তিনি।