আসাম
দেশে ৫.৪ মাত্রার ভূমিকম্প
সোমবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) অনুসারে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ভারতের আসামের গোয়ালপাড়া থেকে ২৪ কিলোমিটার দক্ষিণে, ১০ কিলোমিটার গভীরে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ভারত ও বাংলাদেশের পাশাপাশি ভুটানেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের শীর্ষ ১০ ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ
ঢাকায় ৪.২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত
১২ দিনের মাথায় সিলেটে আবারও ভূমিকম্প
আসামের বাংলা ভাষা আন্দোলন নিয়ে মাসুদ করিমের তথ্যচিত্র
বাংলা ভাষার আন্দোলন মানেই ১৯৫২ এর ২১শে ফেব্রুয়ারি। শুধু সালাম, রফিক, শফিক, বরকত ও জব্বারের নাম। কিন্তু এর বাইরেও যে বাংলা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন, তা বর্তমান প্রজন্মের কাছে অজানাই রয়ে গেছে।
১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন আর আসামের ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট এক নয়। কেননা, আসামে বহু জাতি উপজাতি ও ভাষাভাষী মানুষের বসবাস। এই সকল মানুষের নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, রাজনৈতিক পটভূমি ও সংস্কৃতিগত স্বাতন্ত্র্যও বিদ্যমান।
তাই ১৯৬১ সালের আসামে ভাষা আন্দোলনটি শুধুমাত্র বাংলা ভাষার জন্য নয়। ওখানে মনিপুরী, গারো ছাড়াও অন্যান্য ভাষার আন্দোলনকারীও ছিলেন।
তবে ১৯৬১ সালের ১৯ মে ভাষা আন্দোলনের জন্য যারা আসামের কাছাড় জেলার শিলচর রেলওয়ে স্টেশানে প্রাণ হারান, তারা সবাই বাঙালি ছিলেন। বিষয়টি আরও আলোচিত হয় কমলা ভট্টাচার্যের কারণে। কারণ তিনিই বিশ্বে প্রথম নারী ভাষা শহীদ। সে আলোকে আসামের ভাষা আন্দোলন একটি গুরুত্ব বহন করে।
তাই আসামে বাংলা ভাষার জন্য পৃথকভাবে একটা ইতিহাস তৈরি হয়, যার অবদান বাঙালিদেরই বেশি। কেননা ১১ জন শহীদের বেশিরভাগের আদি নিবাস ছিল অধুনা বাংলাদেশের সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মুন্সীগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে।
আরও পড়ুন: ইলন মাস্ককে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করছেন অস্কার বিজয়ী অ্যালেক্স গিবনি
আসামের ভাষা আন্দোলন নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্যচিত্র এখনও তৈরি করা হয়নি। প্রথমবারের মত আসামের ভাষা আন্দোলনের গবেষণামূলক তথ্যচিত্র ‘আসামের বাংলা ভাষা আন্দোলন’- নির্মাণ করছেন বাংলাদেশের তথ্যচিত্র নির্মাতা মাসুদ করিম।
ঠিক কোন প্রেক্ষাপটে এই ভাষা আন্দোলন সৃষ্টি হয় তা জানা যাবে এই তথ্যচিত্রে। আসামের ভাষা আন্দোলনটি কোনো রাষ্ট্রভাষার আন্দোলন ছিল না। শুধুমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে মায়ের ভাষায় কথা বলার দাবি ছিল।
তথ্যচিত্রে কমলার চরিত্রে অভিনয় করেছেন হালের চলচ্চিত্রের ও টেলিভিশনের নায়িকা নিঝুম রুবিনা। কমলার মায়ের ভূমিকায় বিশিষ্ট অভিনেত্রী শিরন আলম এবং কমলার সেজদির ভূমিকায় অভিনয় করেন মনিষা শিকদার।
বাংলাদেশের বাইরে কলকাতায় আংশিক চিত্রগ্রহণ করা হয় এবং তাতে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক পবিত্র সরকার, উনিশে মে পত্রিকার সম্পাদক শান্তনু গঙ্গারিডিসহ কমলা ভট্টাচার্যের ভাইঝি বর্ণালী ভট্টাচার্য কমলার কিছু অপ্রকাশিত তথ্য প্রকাশ করেন।
শিলচরে মূল্যবান সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয় আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য, শিলচর ভাষা শহিদ স্টেশন আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ডা. রাজীব কর, উনিশের গবেষক নীহার রঞ্জন পাল, এ্যাডভোকেট ইমাদ উদ্দিন বুলবুল, করিমগঞ্জ এর দিলীপ কান্তি লস্কর এবং ভাষা শহিদ পরিবারের সমস্যদের সাক্ষাৎকার যুক্ত করা হয়।
আগামী বছরের ১৯শে মে আসামের শিলচর, আগরতলা, কলকাতা ও ঢাকায় একযোগে এই তথ্যচিত্রের প্রদর্শনী হবে।
সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নের মাসুদ করিম এই তথ্যচিত্র নির্মাণ করছেন।
উল্লেখ্য, মাসুদ করিম ২০১৫ সালে ভারতের প্রখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, ২০১৭ সালে বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক অনিসুজ্জামান এবং ২০২০ সালে অমর একুশের গীতিকার আবদুল গাফফার চৌধুরীর জীবন ও কর্মভিত্তিক তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর কলকাতার জীবন নিয়ে নির্মাণ হচ্ছে তথ্যচিত্র ‘কলকাতায় বঙ্গবন্ধু’
তথ্যচিত্রে সালমানের জীবন
সিলেট-শিলচর উৎসবে যোগ দিতে আসাম গেলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল শিলচর-সিলেট ফেস্টিভ্যালে যোগ দিতে ভারতের আসামের শিলচরে গেছেন।
প্রতিনিধি দলটি শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সিলেট সীমান্তের শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে আসামে প্রবেশ করে।
সুতারকান্দি আইসিপিতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ও বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যদের স্বাগত জানায়।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রশংসায় নিউ হ্যাম্পশায়ারের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ বি খান
ভারতীয় অংশের সুতারকান্দি সীমান্তে পৌঁছানোর পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ৫০ বছর পর শেওলা-সুতারকান্দি হয়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত অতিক্রম করলাম। আমাদের প্রতিনিধিদলকে তারা উষ্ণ, বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে স্বাগত জানিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। কারণ দুই প্রতিবেশী আশা-আকাঙ্খার পরিবেশে একত্রিত হয়েছে।
মন্ত্রী ভারতের সুতারকান্দির বর্ডার ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টকে তাদের চমৎকার ব্যবস্থার জন্য ধন্যবাদ জানান।
আসামের শিলচরে ২-৩ ডিসেম্বর প্রথম শিলচর-সিলেট ফেস্টিভ্যালে প্রধান অতিথি হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলে রয়েছেন ইকবালুর রহিম, গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, মহিবুর রহমান মানিক, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মোবিন চৌধুরী, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও মিডিয়া প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন: ১৯৭১ সালের পরাজয়কে ‘সামরিক ব্যর্থতা’ বললেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
চলন্ত বাসে যাত্রী উঠানামা বন্ধ ও মানসম্পন্ন সাংবাদিকতা করতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আসামের ৫৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকায়
ভারতের আসাম রাজ্য থেকে ৩৫ জন বিধায়কসহ ৫৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল শনিবার এক সরকারি সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এদিন বিকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন এবং সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন রাষ্ট্রপতি
আসাম বিধানসভার স্পিকার বিশ্বজিৎ দৈমারী রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করবেন।
২০২১ সালের ২১ মে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
রবিবার তারা বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয় পরিদর্শন করবেন এবং স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করবেন।
স্পিকার পুরো প্রতিনিধি দলের জন্য মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন।
বিকালে তারা বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে তার বাসায় দেখা করেন।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ ও বঙ্গবন্ধু সমাধি কমপ্লেক্স পরিদর্শন করবেন।
প্রতিনিধি দলের সদস্যদের ২২ নভেম্বর আসামের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের
আসামে ৩০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করা হবে
ভারতের আসাম রাজ্যের রাজ্য সরকারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আসাম ইলেক্ট্রনিকস ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেড বাংলাদেশ থেকে ৩০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ আমদানি করার কথা নিশ্চিত করেছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং ভারতের একটি প্রতিনিধিদলের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে নীতিগতভাবে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।
বৈঠকে আগামী নভেম্বরের মধ্যে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর এই বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরসহ রপ্তানির বিষয়টি চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে এ বিষয়ে ঢাকায় কোম্পানির প্রতিনিধির সঙ্গে প্রাথমিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।মেঘালয় রাজ্য সরকারের যুগ্মসচিব (আইটি) কুমবামুট লাং ননগরি আজকের বৈঠকে অসমীয়া প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। বৈঠকে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী প্রতিনিধিদলকে আশ্বস্ত করে বলেন, আমাদের ব্যান্ডউইথ রপ্তানির বিষয়ে কোনও সমস্যা নেই, আমাদের নিজস্ব চাহিদা মেটানোর পরও হাতে যথেষ্ট পরিমান ব্যান্ডউদথ আছে ও থাকবে।
আরও পড়ুন: মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান বাড়ানোর আহ্বান মোস্তফা জব্বারের
মন্ত্রী বলেন, দেশে নেটওয়ার্কের বর্ধিত চাহিদা মিটিয়ে সৌদি আরব ও ভারতে ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগের কাজ শুরু করেছে। তৃতীয় সাবমেরিন সংযোগ সম্পন্ন হলে অতিরিক্ত আরও প্রায় ১৩২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সংযুক্ত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এছাড়াও প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলে আরও ৩৮০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সংযুক্ত হচ্ছে অর্থাৎ বর্তমানে বিদ্যমান ক্যাপাসিটির চেয়ে প্রায় ৫ গুণ বেশি।
আসামে ব্যান্ডউইথ রপ্তানির যথাযথ প্রক্রিয়া গ্রহণের জন্য মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সিলেটের তামাবিল থেকে মেঘালয়ের ডাউকি হয়ে গুয়াহাটিতে আসাম নিজস্ব ব্যয়ে ক্যাবল সংযোগ স্থাপন করবে। এজন্য বাংলাদেশ তামাবিল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ নিশ্চিত করতে বিকল্প লাইন স্থাপন করবে বলে মন্ত্রী প্রতিনিধিকে আশ্বস্ত করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ইন্টারনেটকে ডিজিটাল বাংলাদেশের মহাসড়ক আখ্যায়িত করে দেশের মানুষের ডিজিটাল জীবনধারা নিশ্চিত করতে প্রতিটি অঞ্চলে নেটওয়ার্ক সুবিধা পৌঁছে দিতে সরকারের গৃহীত কর্মসূচি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে দেশে মাত্র সাড়ে সাত জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহৃত হতো। ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৮ লাখ। ২০২০ সালে কোভিড শুরুর প্রাক্কালে দেশে ১ হাজার জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে তা বেড়ে ৩৮০০ জিবিপিএসে উন্নীত হয়েছে। ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৩ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা‘র ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।প্রতিনিধিদলের অপর সদস্যরা হলেন-আসাম ইলেক্ট্রনিকস ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেডের ম্যানেজার শ্যামল সরকার, আসাম ইলেক্ট্রনিকস ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের কনসালটেন্ট সিআর ডেকা, দীপংকর চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য বাংলাদেশ থেকে ২০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ আমদানি করে। ১০ জিবিপিএস দিয়ে আমদানি শুরু করলেও সম্প্রতি তা বেড়ে ২০ জিবিপিএসে উন্নীত হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রাথমিক স্তর থেকে সকলকে প্রোগ্রামিংয়ে যুক্ত করতে হবে: মোস্তাফা জব্বার
পৃথিবী হবে ডাটা নির্ভর: মোস্তাফা জব্বার
বন্যায় ক্ষতি ৮৬,৮১১ কোটি: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
এ বছর বন্যায় সারা দেশে আনুমানিক ৮৬ হাজার ৮১১ কোটি ৬৫ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭২ টাকার সমপরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
তিনি বলেছেন, এ বছর মে মাসের ২য় সপ্তাহে দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে অবিরামভাবে কয়েক দিন ভারী বৃষ্টিপাত হয়। এছাড়া ভারতের মেঘালয়, আসাম, ত্রিপুরায় কয়েকদিন ধরে অবিরাম ভারী বৃষ্টিপাত হয়। দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের কয়েকদিনের অবিরাম ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানিতে ১৩ মে থেকে পূর্বাঞ্চলের সিলেটের সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে এবং সিলেট, সুনামগঞ্জ ও আশেপাশ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পর্যায়ক্রমে এই বন্যা দেশের ১৮টি জেলায় বিস্তৃতি লাভ করে।
প্রতিমন্ত্রী সোমবার বিকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সাম্প্রতিক বন্যা, ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ক পর্যালোচনা ও করণীয় নির্ধারণ সংক্রান্ত ‘আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটি’র সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের (সম্পূর্ণ) আনুমানিক আর্থিক মূল্য এক হাজার ২৫৮ কোটি ৫৩ লাখ ৯১ হাজার ১১২ টাকা এবং ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের (আংশিক) আনুমানিক আর্থিক মূল্য ৫৫ হাজার ৯৫৭ কোটি ২১ লাখ ২০ হাজার ৫০৮ টাকা।
আরও পড়ুন: ১ হাজার বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করবে সরকার: এনামুর
ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি (সম্পূর্ণ) ৩৬৪ কোটি ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ০৪৩ টাকা এবং (আংশিক) এক হাজার ৩৫৫ কোটি তিন লাখ ১০ হাজার ৫৫৫ টাকা।
তিনি বলেন, এভাবে ব্রিজ/কালভার্ট পাকা সড়ক, ইট-নির্মিত সড়ক, কাঁচা সড়ক, প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ, মাদরাসা, কমিউনিটি স্কুল, মসজিদ, মাদরাসা, মন্দির এবং বাঁধের সম্পূর্ণ ও আংশিক মিলিয়ে আনুমানিক বন্যায় সারা দেশে ক্ষতি ৮৬ হাজার ৮১১ কোটি ৬৫ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭২ টাকা।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে মানবিক সহায়তা হিসেবে বিতরণের লক্ষ্যে ১ এপ্রিল থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সাত হাজার ২০ মেট্রিক টন চাল, ৯ কোটি ৪৪ লাখ নগদ টাকা, এক লাখ ৪০ হাজার ১৩২ প্যাকেট/বস্তা শুকনো ও অন্যান্য খাবার , শিশু খাদ্য ক্রয়ের জন্য ৪০ লাখ টাকা, গো-খাদ্য ক্রয়ের জন্য ৪০ লাখ, গৃহ মঞ্জুরী বাবদ দুই কোটি ৬১ লাখ টাকা, এবং আট হাজার ৭০০ বান্ডিল ঢেউ টিন বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২৯: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে ৪ দিনের আসাম সফরে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল
মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্যকে উদ্যাপন ও স্মরণ করতে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল চারদিনের সফরে ভারতের আসাম রাজ্যে গেছেন। রবিবার ২৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলাট যাত্রা শুরু করে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তী, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর এবং ভারতের আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের অংশ হিসেবে ভারত সরকার এই সফরটির আয়োজন করেছে।
প্রতিনিধি দলটিতে আসাম সংলগ্ন অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধে জড়িত থাকা ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা, ছয়জন সাংবাদিক ও চারজন যুব প্রতিনিধি রয়েছেন।
সফরকালে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলটি আসাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রীসহ শীর্ষ সাংবিধানিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
এছাড়া তারা আসাম ও পার্শ্ববর্তী মেঘালয়ের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহ পরিদর্শন করবেন।
মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ভারতীয় ও বাংলাদেশি নাগরিকদের স্মরণ করতে ও তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভারতের নেয়া বিভিন্ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই সফর আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে ৪ দিনের মেঘালয় সফরে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল
আ.লীগ ও বিজেপি প্রতিনিধি দলের বৈঠক, সম্পর্ক উন্নয়নে জোর
আসামে বন্যায় আরও ৮ জনের মৃত্যু, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬২
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম প্রদেশে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে বলে রবিবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এ নিয়ে প্রদেশটিতে বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬২ জনে পৌঁছেছে।
আসামের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, স্ফীত ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ভেঙে প্রদেশের ৩৫টি জেলার মধ্যে ৩২টি জেলা প্লাবিত হয়েছে। এতে ৩০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। উদ্ধার অভিযানে ভারতীয় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং বিমানবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ব্রহ্মপুত্র চীনের তিব্বত থেকে ভারত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়েছে।
রবিবার পূর্ব আসামের ডিব্রুগড় জেলায় ৯ জন যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা ডুবে চারজন নিখোঁজ হয়েছেন। ডিব্রুগড় প্রদেশটির রাজধানী গুয়াহাটি থেকে ৫০০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। উদ্ধার অভিযান চলমান থাকলেও প্রবল স্রোতের কারণে তা বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে টানা বর্ষণের পর বৃষ্টি থেকে মুক্তির আশা করছেন আবহাওয়াবিদরা।
শনিবার আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং পরিস্থিতিকে ভয়াবহ বলে বর্ণনা করেন।
সেনাবাহিনী ও অন্যান্য উদ্ধার সংস্থা ২০ হাজারের বেশি লোককে উদ্ধার করেছে উল্লেখ করে শর্মা বলেন, ‘আমরা এখন ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানে মনোনিবেশ করছি।’
তিস্তা চুক্তি ১১ বছর ধরে ঝুলে থাকা ‘লজ্জাজনক’: মোমেন
ভারতের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, এটা ‘দুর্ভাগ্যজনক’ এবং ‘লজ্জাজনক’ যে চুক্তিটি ১১ বছর ধরে ঝুলে আছে।
সোমবার আসামের গুয়াহাটিতে ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে আমরা ১১ বছর ধরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি করতে পারিনি। এটা লজ্জারও, আমরা প্রস্তুত ছিলাম, তারাও প্রস্তুত ছিল, তবুও চুক্তিটি হয়নি। ভবিষ্যতে পানির জন্য একটি বড় হাহাকার তৈরি হবে এবং আমাদের এর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
২৮-২৯ মে গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত নদী সম্মেলনের ফাঁকে এনডিটিভির সঙ্গে কথা বলার সময় মোমেন বলেন, দুটি দেশের ভারতের সঙ্গে অভিন্ন ৫৪টি নদী রয়েছে। এই দুই পক্ষই অভিন্ন নদী সমূহের যৌথ ব্যবস্থাপনায় ভারতের অংশীদার হতে এবং একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। ‘অববাহিকা এলাকার মানুষের কল্যাণের জন্য দুই পক্ষের মানুষেরই যৌথ ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন।’
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘তিস্তা নদী তিস্তা কংশ হিমবাহে উৎপন্ন হয়েছে এবং বাংলাদেশে প্রবেশের আগে সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ১৯৪৭ সাল থেকে তিস্তার ক্যাচমেন্ট এলাকাগুলো ভারতকে বরাদ্দ দেয়ার পর থেকে এটি নিয়ে সংঘাত তৈরি হয়। ২০১১ সালে ভারত তিস্তার পানির ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ শেয়ার করতে সম্মত হয়েছিল এবং ডিসেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে শুষ্ক মৌসুমে ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ পানি ধরে রেখেছিল। তবে,পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কঠোর বিরোধিতার কারণে চুক্তিটি হয়নি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খুব আশাবাদী যে ভারত চুক্তির ব্যাপারে এগিয়ে আসতে রাজি হবে, এমনকি পশ্চিমবঙ্গও সম্মত হবে। এবং আমরা এটি অর্জন করতে পারব।’
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা আসামের মুখ্যমন্ত্রীর
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চলতি বছর আসাম ও বাংলাদেশে একই সময়ে বন্যা হয়। আমাদের পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে, যৌথভাবে বন্যার আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং নদীগুলোর যৌথ ব্যবস্থাপনা উভয় দেশের জন্যই উইন-উইন।’
বেশকিছু গণমাধ্যমের গুঞ্জন উঠেছে, তিস্তা নদীর ওপর ব্যবস্থাপনা বৃদ্ধি ও পুনরুদ্ধার প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে আলোচনা করছে। প্রকল্পটির লক্ষ্য নদী অববাহিকা দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা এবং গ্রীষ্মকালে পানি সংকট মোকাবিলা করা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনও তিস্তা নিয়ে চীনের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আসেনি। চীন প্রাথমিকভাবে যেটি প্রস্তাব করছিল সেটি ছিল একটি ফরাসি প্রকল্প। ১৯৮৯ সালে ফরাসি প্রকৌশলীরা এটি ডিজাইন করেছিলেন। এটি ব্যয়বহুল ছিল, তাই তখন আমরা তহবিল সংগ্রহ করতে পারিনি। এখন চীনারা এর একটি অংশ হিসেবে তিস্তা প্রকল্পকে বাছাই করেছে। কিন্তু আমি মিডিয়া রিপোর্ট থেকে এটি জানতে পেরেছি। তারা এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে এ বিষয়ে প্রস্তাব পাঠায়নি। আমাদের এখন এটি কেমন হবে তা দেখতেই হবে। কারণ ভারত এখনও তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যা সমাধানে আসলে তেমন কিছু করছে না। তাই তারা (চীন) একটি প্রস্তাব নিয়ে এসেছে, এটি (আমাদের জন্য) একটি লাভজনক প্রস্তাবও।’
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের সুবিধার জন্য তিস্তাকে আরও ভালভাবে পরিচালনা করার জন্য একটি প্রযুক্তিগত সমীক্ষা চালানোর জন্য পাওয়ারচিনা বা চায়না পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তবে, তিস্তা একটি অমীমাংসিত ইস্যু। তাই আমাদের জনগণ স্বাভাবিকভাবেই সরকারকে নতুন কোনো প্রস্তাব (সমাধান) ভেবে দেখার জন্য চাপ দেবে। এই কারণেই হতে পারে তিস্তার ওপর চীনা প্রকল্প নিয়ে গণমাধ্যমগুলোতে এত আলোচনা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: গুয়াহাটিতে শনিবার নদী সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন মোমেন ও জয়শঙ্কর
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করতে ইউএনএইচসিআরের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, বাড়ছে পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের নদীগুলো এখন পানিতে টুইটম্বুর। সুরমা-কুশিয়ারায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপদসীমার ওপর দিয়ে। সদর উপজেলার পাশাপাশি সীমান্তবর্তী গোয়াইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও জকিগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে আছে। এসব এলাকায় পানিবন্দি রয়েছে কয়েক লক্ষাধিক মানুষ।
মঙ্গলবার (১৭ মে) দিনে ও রাতে সিলেট জেলায় বৃষ্টি হয়নি। তবে ভারতের আসাম ও মেঘালয়ের পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার (১৮ মে) সকাল পর্যন্ত বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় বেড়েছে দুর্ভোগ। বিপর্যস্ত হয়ে আছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বিভিন্ন উপজেলায় প্লাবিত এলাকায় বাঁধ ও পাকা রাস্তাসহ বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেয়া লোকজন বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য ও শৌচাগার সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, ওষুধ ও জ্বালানি তেলের দোকান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মানবিক বিপর্যয়ের শংকা দেখা দিয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় বাঁধ ও পাকা রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় মানুষজনকে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: টানা বর্ষণে সিলেট-সুনামগঞ্জে নদ-নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি
বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও সিলেট নগরীর কয়েকটি এলাকার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছেন। বেশ কয়েকটি আবাসিক এলাকার রাস্তাঘাট এখনও পানির নিচে। বাসাবাড়ি ও সরকারি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানেও প্রবেশ করেছে পানি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় পাশা জানান, সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি। নতুন করে বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ভাঙনের খবর সংগ্রহ করছেন তারা।
সিলেট নগরীর জলাবদ্ধতার ব্যাপারে তিনি জানান, নগরীর জলাবদ্ধতার মূল কারণ হচ্ছে ড্রেনেজ সমস্যা। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতিতে নগরীর দুর্ভোগ আরও বাড়তে পারে।
এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন, ভারতের আসাম ও মেঘালয়ের পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। সিলেটে আগামী ২০-২১ জুন পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। যে কারণে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
সিলেট জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এছাড়াও চাল ও শুকনো খাবার বিভিন্ন উপজেলার বন্যার্তদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যার্তদের জন্য ১৯৯ আশ্রয়কেন্দ্র
সুনামগঞ্জে নদনদীর পানি বিপদসীমার ওপরে