বজ্রপাত
রাজশাহীতে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় বজ্রপাতে তোফিকুল ইসলাম (৫৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে উপজেলার খেতুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য সতর্ক হোন
নিহত তোফিকুল উপজেলার প্রেমতলী ডুমুরিয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান পাটোয়ারি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কৃষক তোফিকুল খেতুর গ্রামের পাশে তার জমিতে কাজ করছিলেন। এসময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য সতর্ক হোন
বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য পরিবেশ বাঁচাতে হবে। নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে বৈশ্বিক উষ্ণতাকে। অন্যথায় বজ্রপাতের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব নয়।
বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় দেড়শতাধিক মানুষ প্রাণ হারায় বজ্রপাতে। এ বছরেও বেড়ে চলেছে হতাহত ও মৃত্যুর সংখ্যা। চলতি জুন মাসে সিরাজগঞ্জ, চট্টগ্রাম, পটুয়াখালী, মানিকগঞ্জ, ফেনী, মাদারীপুর, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ ও শরীয়তপুরে সব মিলিয়ে বেশ কিছু মানুষ বজ্রপাতে মারা গেছেন। শুধু তাই নয়, পরিবেশের উপরেও পড়ছে বজ্রপাতের ক্ষতিকর প্রভাব।
এমতাবস্থায় বজ্রপাতের মত আকস্মিক দুর্যোগ থেকে বাঁচতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বনের জন্য চলুন জেনে নেই বজ্রপাতের ব্যাপারে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
সম্প্রতি বাংলাদেশে বজ্রপাত বৃদ্ধির কারণ
সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম বজ্রপাতের অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার পেছনে মূলত বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও লম্বা গাছের সংখ্যা কমে যাওয়াকেই দায়ী করেছে।প্রতি ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে বজ্রপাত বাড়ে ১০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি। সম্প্রতি ঘন কালো মেঘের ওপরের ও নিচের অংশ দুটি পুল হিসেবে ভেসে বেড়াচ্ছে। ফলশ্রুতিতে তাদের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহের মাত্রা বেড়ে সৃষ্টি হচ্ছে বজ্রপাত। সম্প্রতি কালো মেঘের ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ায় ফলে বৃষ্টিপাতের সাথে পাল্লা দিয়ে বজ্রপাতের পরিমাণ বেড়েছে।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে কৃষক নিহত
ঝড়বৃষ্টির সময় বজ্রপাতের প্রভাব
মানুষের উপর প্রভাব
বজ্রপাত থেকে উৎপন্ন হয় প্রায় ১০ হাজার অ্যাম্পিয়ার বিদ্যুৎ যা থেকে মিলি সেকেন্ডের মধ্যে ৫০ হাজার কেলভিন তাপশক্তি ছড়িয়ে পড়ে। সেজন্যই যদি সরাসরি কোন মানুষের উপর বাজ পড়লে এর আকস্মিকতা বুঝে ওঠার আগেই তার শরীর অঙ্গার হয়ে যায়। অন্য ক্ষেত্রে বাজ পড়ার পরে হার্ট অ্যাটাক হওয়াটা স্বাভাবিক।
রুটগার্স নিউ জার্সি মেডিকেলের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক লুইস নেলসনের মতে, বাজের ফলে সাধারণত তাৎক্ষণিকভাবে হৃদযন্ত্রের এক স্পন্দন বন্ধ হয়ে পরে দ্বিতীয়বারে বা দুই স্পন্দন পরে শুরু হয়।
আমেরিকার গণস্বাস্থ্য সংস্থা সিডিসির তথ্যানুসারে, বজ্রপাতে আক্রান্ত লোক শরীর জ্বালা-পোড়া, শক এবং ট্রমায় ভোগে। কারো কারো মধ্যে দুর্বলতা, বিভ্রান্তি, ত্বক নষ্ট এমনকি স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে।
আপনি হয়ত ইতোমধ্যে জেনে থাকবেন যে, বজ্রপাতপৃষ্ঠ হয়েও অনেকে বেঁচে যায়। কিন্তু এরা কেউই স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারে না। বজ্রপাতের বিদ্যুৎ মস্তিষ্কে প্রবেশ করলে এর তাপ ও স্পার্ক মস্তিষ্কের কোষগুলিকে পুড়িয়ে অকেজো করে দেয়। বেঁচে যাওয়া মানুষদের ক্ষেত্রে তাই ট্রমা, মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত, ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন প্রভৃতি পরিলক্ষিত হয়।
পরিবেশ বিনষ্টসহ অন্যান্য ক্ষতি
দাবানল
বাজ সরাসরি গাছের উপর পড়ে গাছে আগুন ধরিয়ে দেয়। এভাবে তাপ ছড়ানোর ফলে দাবানলের সৃষ্টি হয়। বিমান ও অন্যান্য পরিবহনের ক্ষতিবিমানবন্দর, বিমান ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, যোগাযোগের টাওয়ার এবং নেভিগেশন বীকনগুলি বজ্রপাতের সময় অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে থাকে। বজ্রপাতের ফলে বিমানের ক্রমবর্ধমান বিলম্ব, বাতিলকরণ ও রুটের পরিবর্তন প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
বজ্রপাত সময়কালীন বাঁচার উপায়
১) ঝড়বৃষ্টির ও বজ্রপাতের সময় এপ্রিল-জুন মাস। সাধারণত ৩০-৪৫ মিনিট পর্যন্ত বজ্রপাত স্থায়ী হয়। এ সময়টুকু ঘরে থাকাটাই সমীচীন।২) এ সময় ঘন কালো মেঘ দেখলেই ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। জরুরি প্রয়োজনে রবারের জুতা পড়ে বেরতে পারেন। ৩) মুক্ত আকাশের নিচে ধানখেত বা খোলা মাঠে থাকলে দ্রুত পায়ের আঙ্গুলের ওপর ভর দিয়ে এবং কানে আঙ্গুল দিয়ে মাথা নিচু করে বসে থাকুন। ৪) যত দ্রুত সম্ভব দালান-কোঠা বা কংক্রিটের ছাউনির নিচে গিয়ে আশ্রয় নিন। টিনের চালা ঘর অবশ্যই এড়িয়ে চলবেন।৫) গাড়ির ভেতর অবস্থান করলে গাড়ির ধাতব অংশ থেকে যথাসম্ভব শরীরকে বাঁচিয়ে রাখুন। গাড়িটি নিয়ে দ্রুত কোন কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন। ৬) মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, টিভি, ফ্রিজসহ সকল ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। বজ্রপাতের আভাস পেলে আগে থেকেই এগুলোর প্লাগ খুলে রাখুন।৭) ধাতব হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। এ ক্ষেত্রে প্লাস্টিক বা কাঠের হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করতে পারেন।
৮) এ সময় সমুদ্র বা নদীতে থাকলে মাছ ধরা বন্ধ রেখে নৌকার ছাউনির নিচে অবস্থান করুন।৯) বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির ধাতব রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না।১০) বিস্তৃত জায়গায় একসাথে কয়েকজন থাকলে প্রত্যেকে ৫০ থেকে ১০০ ফুট দূরে দূরে সরে যান।১১) বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে সবাই এক কক্ষে ভিড় না করে আলাদা আলাদা রুমে চলে যান।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে আম কুড়াতে গিয়ে ...
যে স্থানগুলো বজ্রপাতের জন্য বিপজ্জনক
১) বজ্রপাতের সময় খোলা যেমন ধানখেত, মাঠ-ঘাট, নদী ও উঁচু জায়গা সব থেকে বিপজ্জনক। বিস্তৃত ফাঁকা জায়গায় যাত্রী ছাউনি বা বড় গাছে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি।২) উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বাজ পড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে তাই এ সময় গাছ বা খুঁটির কাছাকাছি থাকা নিরাপদ নয়।৩) বাড়িতে থাকলে জানালার কাছে থাকা যাবে না। ৪) রাস্তায় থাকলে অবশ্যই জমে থাকা পানি এবং বিদ্যুতের ছেঁড়া তার এড়িয়ে চলুন।
বজ্রপাতে কেউ আহত হলে কি করণীয়
সাথে সাথেই আহত ব্যক্তিতে খালি হাতে স্পর্শ করতে যাবেন না। অন্যথায় আপনিও শক পেতে পারেন। প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে সিপিআর দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবেন। হাত-পা অনবরত মালিশ করবেন। যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। মনে রাখবেন, বজ্রপাত ও বৈদ্যুতিক শকে আহত ব্যক্তির একই চিকিৎসা।
বজ্রপাত থেকে বাঁচার সর্বোত্তম উপায়
বজ্রপাত যেহেতু একটি আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ তাই আগে থেকেই এর জন্য প্রস্তুত থাকার কোনো বিকল্প নেই।
১) অপেক্ষাকৃত বেশি দুর্যোগপ্রবণ এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করে আগেই সেখানে জনসচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করুন। যেহেতু প্রত্যন্ত অঞ্চলে মৃত্যুর হার বেশি, তাই কৃষক, জেলেসহ যারা খোলা স্থানে কাজ করে তাদেরকে বজ্রপাতের ব্যাপারে সঠিক জ্ঞান দিয়ে সতর্ক করুন। এই খেটে খাওয়া মানুষগুলো নিত্যদিনের খাবারের জন্য যেহেতু প্রতিদিনের কাজের উপর নির্ভরশীল, তাই সরকারিভাবে এদের জন্য বিশেষ প্রণোদোনার ব্যবস্থা করা উচিত।২) সবচেয়ে মোক্ষম উপায় হলো যথেষ্ঠ পরিমাণে গাছ লাগানো যেগুলো দ্রুত লম্বা হয়ে বেড়ে ওঠে। এক্ষেত্রে বেশি বেশি তাল ও নারকেল গাছ লাগাতে পারেন। এভাবে বনায়নের ফলে আবহাওয়ায় ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।৩) শহরে প্রতিটি বিল্ডিংয়ে বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন নিশ্চিত করুন।৪) সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবেও সুউচ্চ টাওয়ার নির্মাণ করা প্রয়োজন। এতে বজ্রপাত টাওয়ারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। লোকালয় বেঁচে যাবে।
বজ্রপাত পরবর্তী পদক্ষেপ
যেহেতু দেশের মধ্যাঞ্চল বজ্রপাতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাই সে সব অঞ্চলের লোকদের ক্ষতির পরিমাণই বেশি। তাই সরকারি ও বেসরকারি সবমহল থেকেই তাদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসা উচিত। আহতরা যেন উপযুক্ত চিকিৎসা এবং নিহতদের পরিবার যেন নিজেদের জীবন চালানোর জন্য অর্থ ও কাজ পায় সেদিকে খেয়াল রাখুন।শহরে ভাঙা গাছ ও খুঁটি উপরে ফেলে সেখানে গাছ লাগান। ছেঁড়া তার ও জমে থাকা পানি পরিষ্কারের সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন। ভাঙা কাঁচ, দালানের কোন অংশ ভেঙে পড়ে থাকলে সেগুলো সাবধানে পরিষ্কার করুন। সাহায্যকারী কোন সংস্থার আশায় বসে না থেকে নিজেরা উদ্যমী হয়ে এক সাথে একে অপরের উপকারে নেমে পড়ুন
শেষাংশ
সর্বপরি বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য উচিত মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, যেহেতু এই অবস্থায় তাৎক্ষণিকভাবে মানুষের কিছুই করার থাকে না। এই দুর্যোগের পেছনে মানুষের হাত নেই বললে মিথ্যে বলা হবে। কারণ বিশ্ব জুড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি আর গাছপালার সংখ্যা কমে যাওয়া এগুলো সব আমাদেরই কাজ। কিন্তু এ অবস্থার উন্নতি অসম্ভব কিছু নয়। এর জন্য প্রয়োজন আমার আপনার সদিচ্ছা এবং প্রত্যেককে প্রত্যেকের জায়গা থেকে এগিয়ে আসা।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বজ্রপাতে ...
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
জেলার নাসিরনগর উপজেলায় বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের দাতমন্ডল গ্রামে শুক্রবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. রুপুজ মিয়া (৫০) ওই এলাকার আব্দুল মালেক মিয়ার ছেলে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বাড়ির পূর্ব পার্শ্বে গরুর ঘাস কাটতে গিয়ে মো. রুপুজ মিয়া বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে কৃষক নিহত
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে হাওর থেকে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে মাহাবুল আলম (৪০) নামে এক কৃষক নিহত হবার ঘটনা ঘটেছে।শুক্রবার বিকালে উপজেলার বাঘাকান্তি হাওরে বজ্রপাতে এই ঘটনা ঘটে।নিহত মাহাবুল আলম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়নের মধ্য আলিনগর গ্রামের মোল্লা বাড়ির হাজী শাহজাহান মোল্লার ছেলে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে মাহাবুল আলম হাওর থেকে গরু আনতে বাঘাকান্তি হাওরে যায়। গরু নিয়ে বাড়িতে ফেরার সময় বজ্রপাতের ঘটনায় মাহাবুল গুরুতর আহত হয়ে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে।মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: বজ্রপাতে তিন জেলায় নারীসহ নিহত ৩
অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম মোল্লা বজ্রপাতে কৃষক মাহাবুল আলমের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিৎ করেছেন।
রাজশাহীতে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার চক কাপাশিয়া গ্রামে আম কুড়ানোর সময় বজ্রপাতে ৪ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ২ জন।
সোমবার বিকালে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম ও ফেনীতে বজ্রপাতে নিহত ৫
স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, ঘটনাস্থলে বজ্রপাতে মারা যান চককাপাসিয়া গ্রামের আজম আলীর স্ত্রী মুক্তা বেগম (৩৫) ও কাবিল উদ্দিনের স্ত্রী আলেয়া বেগম (৫৫)। এসময় আহত হন মাহাবুল হোসেনের শিশুপুত্র সোহান আলী (১০), উকিল হোসেনের ছেলে ভুট্টু আলী ( ২০) এবং জনি প্রমানিকের ছেলে পরশ আলী (১০)। আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীণ অবস্থায় মারা যায় শিশুপুত্র সোহান ও পরশ।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রপাতে মা-ছেলেসহ নিহত ৩
চারঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সৈয়দা সামিরা জানান, ঝড়-বৃষ্টির সময় তারা সবাই একটি বাগানে আম কুড়াচ্ছিলো। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে আলেয়া ও মুক্তা মারা যান। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ৪ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সোহান ও পরশ।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে বজ্রপাতে কলেজছাত্রসহ নিহত ২
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নিহতদের দাফনের জন্য তাদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হবে বলে জানান ইউএনও।
বজ্রপাতে তিন জেলায় নারীসহ নিহত ৩
মাগুরা, খুলনা ও মাদারীপুরে রবিবার বজ্রপাতে দুই নারীসহ তিন জন নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন- মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ঘুল্লিয়া গ্রামের সাকিরণ নেছা (৫০), বটিয়াঘাটা উপজেলার বুনারাবাদ গ্রামের সমির রায় (৩৫) ও মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার চরজানাজাত ইউনিয়নের বালুঘাট গ্রামের আয়শা বেগম (৫০)।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম ও ফেনীতে বজ্রপাতে নিহত ৫
ইউএনবির প্রতিনিধিদের পাঠানোর প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ঘুল্লিয়া গ্রামে রবিবার বিকালে বজ্রপাতে সাকিরণ নেছা নামে এক নারী নিহত হয়েছে। তিনি ঘুল্লিয়া গ্রামের ছুরমান শেখের স্ত্রী। মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারক নাথ বিশ্বাস জানান, বিকালে তিনি নিজ বাড়িতে কাজ করার সময় বজ্রপাত হলে তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান। এ ব্যাপারে মহম্মদপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়েছে।
খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার বুনারাবাদ গ্রামে রবিবার রাত ১০টার দিকে নদীতে মাছ মেরে বাড়ি আসার সময় বজ্রপাতে সমির রায় নামে এক কৃষক নিহত হন।
সোমবার সুরখালি ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৭,৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য রুনা লায়লা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রপাতে মা-ছেলেসহ নিহত ৩
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার চরজানাজাত ইউনিয়নের বালুঘাট গ্রামে রবিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ বজ্রপাত হলে আয়শা বেগম নামে আরেক নারী ঘটনাস্থলে নিহত হন। তিনি স্থানীয় ছোরফান হাওলাদারের স্ত্রী।
শিবচর থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেন জানান, নিজ জমিতে বাদাম সংগ্রহকালে বজ্রপাতে তিনি ঘটনাস্হলে মারা যান।
মানিকগঞ্জে বজ্রপাতে কলেজছাত্রসহ নিহত ২
মানিকগঞ্জের দৌলতপুর ও ঘিওরে পৃথক বজ্রপাতে দুজন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রবিবার বিকালে ঘিওর ও দৌলতপুর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজ আহমেদ বিপ্লব বলেন, উপজেলার বৈলট গ্রামে ধান কাটার সময় বজ্রাঘাতে শাহীন (১৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। শাহীন ঘিওর সদর ইউনিয়নের মুক্তার হোসেনের ছেলে। শিবালয় উপজেলার মহাদেবপুর ইউনিয়ন সরকারি ডিগ্রি কলেজের ছাত্র ছিলেন শাহীন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম ও ফেনীতে বজ্রপাতে নিহত ৫
অপরদিকে দৌলতপুর উপজেলার বাচামারা ইউনিয়নের চরভাঙা গ্রামের মহিষের গাড়িচালক গোলাম মোস্তফা (৪০) বাদামবোঝাই করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে বজ্রাঘাতে তার মৃত্যু হয়। তিনি চরভারাঙ্গা গ্রামের আব্দুল বাতেন মিয়ার ছেলে।
বাচামারা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মো. রমজান আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রপাতে মা-ছেলেসহ নিহত ৩
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৃথক স্থানে বজ্রপাতে মা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হবার ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার বিকেলে বজ্রপাতে এই তিন মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের পাঁচরশিয়া গ্রামের রানা আলীর স্ত্রী এ্যানি বেগম (২৬), তার ছেলে নূর মোহাম্মদ (৬) ও চরবাগডাঙা ইউনিয়নের বাখর আলী গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে ইয়ামিন আরাফাত (১০)।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে বজ্রপাতে নারীসহ ৪ জনের মৃত্যু
সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, বিকেলে ঝড়ের সময় বাড়ির পাশে আম কুড়াতে যান মা-ছেলে। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলে তারা মারা যায়।
এদিকে চরবাগডাঙা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হোসেন আলী ঝাটু জানান, ঝড়-বৃষ্টির সময় বাগানে আম কুড়াতে গিয়ে হঠাৎ বজ্রপাতে ইয়ামিন আরাফাত মারা যায়।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে ২ ভাইয়ের মৃত্যু
সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মৌদুদ আলম খাঁ জানান, জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তিনজন নিহতের বিষয়টি প্রশাসনের কাছে জানানো হয়েছে। সরকারিভাবে তাদের অনুদান দেয়া হবে।
সিরাজগঞ্জে বজ্রপাত, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত ৩
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় বজ্রপাত ও বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ২ কৃষকসহ ৩ জনের মৃত্যু ও ১ নারী আহত হয়েছে।
রবিবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে।
বজ্রপাতে নিহতরা হল ব্রজবালা লেদুরপাড়া গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে সোহেল রানা (৪২) ও আলম মিয়ার ছেলে জাহিদুল ইসলাম (২৭)। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত হায়দার সরকার শাহজাদপুর পৌর শহরের দ্বাবারিয়া দক্ষিণপাড়া মহল্লার মৃত ইউসুফ আলী সরদারের ছেলে।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিদ মাহমুদ খান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, লেদুরপাড়া গ্রামে কৃষকরা জমিতে ধান কাটছিলেন। রবিবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে তারা পাশের একটি সেচপাম্প ঘরে আশ্রয় নেয়। এ সময় প্রচণ্ড শব্দে বজ্রপাত হলে তারা ৩ জন গুরুতর আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সোহেল রানা ও আলম হোসেনের মৃত্যু হয়। আলম হোসেনের স্ত্রী স্ফুর্তি খাতুন (২৬) কে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে বাবা-ছেলেসহ নিহত ৩
তিনি আরও জানান, রবিবার বিকাল ৪ টার দিকে নদীর ধারে যাওয়ার সময় পথে পড়ে থাকা বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হায়দার সরকার ঘটনাস্থলেই মারা যান।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে ২ ভাইয়ের মৃত্যু
এদিকে বজ্রপাতে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের ত্রাণ তহবিল থেকে নগদ ২০ হাজার করে টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে বলে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা জানিয়েছেন।
সিরাজগঞ্জে বজ্রপাতে নারীসহ ৪ জনের মৃত্যু
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও উল্লাপাড়া উপজেলায় বজ্রপাতে নারীসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু
নিহতরা হলেন শাহজাদপুর উপজেলার দুগলি গ্রামের আজম ব্যাপারীর ছেলে স্কুলছাত্র নাজমুল (১৫), একই গ্রামের আজগর আলীর ছেলে হাসেম আলী (২৫) ও চিথুলিয়া গ্রামের শাকেরা খাতুন (৬০) এবং উল্লাপাড়া উপজেলার পশ্চিম কৃষ্টপুর গ্রামের মোশারফ হোসেনের মেয়ে স্কুল ছাত্রী মোহনা খাতুন (১৭)।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে বাবা-ছেলেসহ নিহত ৩
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিদ মাহমুদ খান এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, শাহজাদপুর উপজেলার চিথুলিয়া গ্রামে বাড়ির আঙ্গিনায় কাজ করার সময় সন্ধ্যার আগে বজ্রপাতে শাকেরা খাতুন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। একই উপজেলার দুগলি গ্রামে বজ্রপাতে নাজমুল ও হাসেম আলী ঘটনাস্থলেই মারা গেছে। এদিকে উল্লাপাড়া উপজেলার পশ্চিম কৃষ্টপুর গ্রামে বজ্রপাতে মোহনা খাতুন নামে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে ২ ভাইয়ের মৃত্যু
উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পশ্চিম কৃষ্টপুর গ্রামে বাড়ির পাশে কাজ করছিল মোহনা। এসময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।