অবরোধ
টেকনাফে ইয়াবাসহ ইউপি সদস্য আটক, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বাদশা মিয়াকে (৪৬) ইয়াবাসহ আটকের দাবি করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয়রা কক্সবাজার-টেকনাফ আঞ্চলিক সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেছে। এতে সড়কের উভয় পাশে দুই শতাধিক যানবাহন আটকে পড়ায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াবাজার স্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রাত ১০টা পর্যন্ত সড়কে অবরোধ চলে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান সড়ক অবরোধ করে রাখার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আটক বাদশা মিয়া হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াবাজারের বাসিন্দা নূর হোসেনের ছেলে। তিনি হোয়াইক্যং ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য ছিলেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে কলেজছাত্রকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ, ৩ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত
তবে তাকে মসজিদ থেকে ডেকে নিয়ে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফজল কবির। তাকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
স্থানীয় লোকজন জানান, ইউপি সদস্য বাদশা মিয়াকে আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে তার লোকজন টেকনাফ-কক্সবাজার আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন। এসময় তারা সড়কের উপর টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। এতে উভয় পাশের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকায় বিভিন্ন ধরনের যানবাহন আটকা পড়ে। সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় অনেকে হেঁটে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছান।
এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কক্সবাজার সার্কেলের পরিদর্শক নুরুল আলম বলেন, ইয়াবাসহ বাদশা মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। তবে কী পরিমাণ ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
এ বিষয়ে টেকনাফে মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত ১০ দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আরও পড়ুন: সোনারগাঁ থেকে ২ হাজার৭৯০ পিস ইয়াবা জব্দ, গ্রেপ্তার১
জকিগঞ্জে ৪০ লাখ টাকার ইয়াবা জব্দ, আটক ২
ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে ববি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
সহপাঠীর অকাল মৃত্যুর প্রতিবাদে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের এ অবরোধের কারণে এরই মধ্যে মহাসড়কের দুইপ্রান্তে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, গত ৬ নভেম্বর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুরের ভাঙ্গার মাধবপুরে সাকুরা পরিবহনের বেপরোয়া একটি বাস গাছের সঙ্গে ধাক্কা দেয়। এতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৫ম বর্ষের শিক্ষার্থী ইসমাইল ইমন গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হলে তাকে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে আজ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে তার মৃত্যু হয়।
শিক্ষার্থী আবু মাসুম বলেন, কুয়াকাটা-বরিশাল-ঢাকা রুটে চলাচলকারী সাকুরা পরিবহনের বেপরোয়া গতির কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়। কিন্তু আইনগত কার্যকর কোন ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে তারা প্রতিবারই পার পেয়ে যায়। এ অবস্থায় আমরা ঘাতক চালকসহ পরিবহন সংশ্লিষ্ট যাদের গাফিলতিতে এ দুর্ঘটনা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
আরও পড়ুন: বরিশালে অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ
বরিশালে অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অপসারণসহ ৬ দফা দাবিতে বরিশালের বাবুগঞ্জের রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (এটিআই) শিক্ষার্থীরা বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কক্ষ তালা দিয়ে অবরুদ্ধ করার পর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শেষে বরিশাল-ঢাকা মহাড়কে এসে অবস্থান নেয়। এসময় বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে ২০ মিনিটের মতো অবস্থান করার পর পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। পরে শিক্ষার্থীরা বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের বাবুগঞ্জের রহমতপুর ব্রিজ এলাকার দুই পাশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে।
ইনস্টিটিউটের ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সিয়াম সরদার জানান, অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ শ্রেণিকক্ষে বিনা কারণে শিক্ষার্থীদের হেনস্থা করা, ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ, কল্যাণ তহবিলের নামে অর্থ নিলেও তা শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার কাজে ব্যবহার করেন না ও শিক্ষার্থীদের বিনা কারণে মাদক মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন। এই কারণে তার অপসারণসহ ৬ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থী শচীন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলী জিন্নাহকে বদলি, নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া, কলেজের ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠা করা, অতিরিক্ত ভর্তি নেয়া বন্ধ, ছাত্রীদের যৌন হয়রানি ও শিক্ষার্থীদের বদলি করাসহ নানা হুমকি দেয়ার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ চলছে।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা না এলে তারা পুনরায় মহাসড়ক অবরোধ করবেন।
আরও পড়ুন: মতিঝিলে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে তিনিসহ ৮/১০ জন অবরুদ্ধ রয়েছেন। ইউএনও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন। শিক্ষার্থীরা আগে কিছু না জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, সামনাসামনি আলোচনা না হলে তো বলতে পারবো না, তারা কি অভিযোগ এনেছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসছেন। তাদের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
মহানগরীর এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলালউদ্দিন জানান, মহাসড়ক ক্লিয়ার রয়েছে। যে কোন প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে মহাসড়ক ও ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
আরও পড়ুন: নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত: নোয়াখালীতে সড়ক অবরোধ-বিক্ষোভ
চবি ছাত্রলীগের অবরোধ স্থগিত
নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত: নোয়াখালীতে সড়ক অবরোধ-বিক্ষোভ
নোয়াখালীর আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারিদের নিয়োগ পরীক্ষা আসস্মিক স্থগিতের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে পরীক্ষা দিতে আসা পরীক্ষার্থীরা। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান করে বেগমগঞ্জ-ঢাকা সড়ক এক ঘন্টা অবরোধ করে রাখে চাকরী প্রার্থীরা।
পরীক্ষার্থীরা জানান, শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে নোয়াখালীর আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, ড্রাইভার নিয়োগ পরীক্ষার দিন ধার্য্য ছিল। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতার কারণে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ নিয়োগ পরীক্ষার ৩০ মিনিট আগে প্রধান গেটে নিয়োগ পরীক্ষা অনিবার্য কারণবশত স্থগিতের নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়। ওই সময় বিভিন্ন জেলা থেকে পরীক্ষা দিতে আসা আট শতাধিক পরীক্ষার্থী ওই নোটিশ দেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারপর তারা মেডিকেল কলেজের প্রধান গেটে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন এবং সড়ক অবরোধ করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য কেন পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে তা কর্তৃপক্ষ বলতে নারাজ। কলেজ প্রশাসন শিক্ষার্থীদের পরবর্তী পরীক্ষার তারিখ টেলিটকের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিলে পরীক্ষার্থীরা তাদের মানববন্ধন স্থগিত করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস সালামের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাই এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, আট শতাধিক পরীক্ষার্থী এই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কলেজ থেকে জানানো হয়েছে অনিবার্য কারণবশত এ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এমন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরীক্ষার্থীরা ২-৩মিনিট সড়কে অবস্থান নেয়। তাৎক্ষণিক পুলিশ পরীক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে সমস্যার সমাধান করে।
তিনি জানান, নোয়াখালীর আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে পরীক্ষার্থীদের মুঠোফোনে পরীক্ষার তারিখ জানিয়ে দিবেন বলে জানিয়েছেন।
স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবি: অধ্যক্ষের আশ্বাসে সড়ক ছাড়লো ভিকারুননিসার শিক্ষার্থীরা
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে চলমান অবরোধ প্রত্যাহার করেছে শিক্ষার্থীরা। অধ্যক্ষ কামরুন নাহার ঘটনাস্থলে গিয়ে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় তারা এই অবরোধ প্রত্যাহার করে।
মঙ্গলবার সকালে স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে ধানমন্ডির মিরপুর সড়ক অবরোধ করেছিল বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা স্কুলের ধানমন্ডি শাখা থেকে একটি মিছিল বের করে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে। এতে ব্যস্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
সহপাঠীর মৃত্যুতে ফার্মগেটে শিক্ষার্থীদের অবরোধ
নিরাপদ সড়ক এবং গতকাল তেজগাঁও এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় সহপাঠীর মৃত্যুর প্রতিবাদে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করেছে সরকারি বিজ্ঞান স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন:কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
ইউএনবির ফটোগ্রাফার জানিয়েছেন, ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ ব্যানারে স্কুলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে ফার্মগেট পুলিশ বক্সের সামনে রাস্তায় নেমে আসে।
তারা স্লোগান দিতে থাকে: ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার বন্ধু কবরে, খুনিরা কেন বাহিরে’
একপর্যায়ে বিজয় সরণি থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ফার্মগেট এলাকায় এসে থামে।
রবিবার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় বাংলাদেশ সরকারি প্রেসের সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি গাড়ির ধাক্কায় সরকারি বিজ্ঞান বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র আলী হোসেন (১৬) নিহত হয়।
আরও পড়ুন:সোনারগাঁয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু
কুষ্টিয়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪
সীতাকুণ্ডে মহাসড়ক অবরোধ: দেড়শ লোকের বিরুদ্ধে থানায় ৬ মামলা
সীতাকুণ্ডের ফৌজদার হাটে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সাড়ে ৫ঘন্টা অবরোধ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় জঙ্গল সলিমপুরে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে ৬টি পৃথক মামলা হয়েছে। মামলায় ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামী করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করে।
আরও পড়ুন:সীতাকুণ্ডে দাড়িয়ে থাকা ট্রাকের পিছনে প্রাইভেট কারের ধাক্কা, চালক নিহত
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘গতকালের ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানায় ৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া ১৫০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে মামলার আসামি করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে জঙ্গল সলিমপুর ও আলিনগরের বাসিন্দারা প্রশাসন কর্তৃক জঙ্গল সলিমপুরে বসবাসকারীদের উচ্ছেদের চেষ্টা, পানি, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে মহাসড়কের দিকে অন্তত ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। দুর্ভোগে পড়েন হাজার হাজার মানুষ। পরে বিকাল সাড়ে ৫টায় স্থানীয় গ্রামবাসীর সহযোগিতায় পুলিশ ছিন্নমূল লোকজনকে ধাওয়া দিয়ে অবরোধ ভাঙ্গার চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং সংঘর্ষ লেগে যায়।
পরে পুলিশ টিয়ার সেল মর্টার সেল নিক্ষেপ করলে অবরোধকারীরা ছিন্নমূল পাহাড়ে পালিয়ে যায়।
আর পড়ুন:সীতাকুণ্ডে লরির সঙ্গে পিকআপের সংঘর্ষে নিহত ১
সীতাকুণ্ডে ২ প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, মহাসড়ক অবরোধ
হবিগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়ক অবরোধ চা-শ্রমিকদের
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের লছনা এলাকায় বুধবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত হবিগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন চা-শ্রমিকরা। এ ছাড়া জুড়ী উপজেলার কুলাউড়া-বিয়ানীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কও ঘেরাও করেন তারা।
শ্রীমঙ্গলের সাতগাঁও টি এস্টেটের সামনে মহাসড়ক অবরোধ করে হাজারো চা-শ্রমিক। ফলে শতাধিক গাড়ি আটকে থাকে।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ তালুকদার জানান, স্থানীয় প্রশাসনের অনুরোধে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে চা শ্রমিকেরা।
চা শ্রমিকদের মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে মৌলভীবাজার জেলার অধিকাংশ বাগানে চলছে ধর্মঘট। গতকাল কয়েকটি বাগানে শ্রমিকরা পাতা উত্তোলন করলেও বুধবার সকাল থেকেই জেলার বালিশিরা, মনু, ধলাই, জুড়ী, লংলার অধিকাংশ বাগানে শ্রমিকরা কাজে আসেননি।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানসহ কর্মকর্তারা শ্রমিকদের কাজে নামার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন:চা শ্রমিকদের অবরোধে সারাদেশের সঙ্গে সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ
অন্যদিকে মালিক পক্ষ জানিয়েছে, শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে।
কালিঘাট চা বাগানের চা-শ্রমিকরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর কথা বলে তাদের ধোঁকা দেয়া হচ্ছে। তারা এ সিদ্ধান্ত মানেন না।
তারা বলেন, নেতাদের কথা আমরা বিশ্বাস করি না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে শুনতে চাই যে, আমাদের মজুরি বাড়াবে। প্রধানমন্ত্রী না বলা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থেকে ফিরব না।
প্রসঙ্গত, দেশের ১৬৭ চা বাগানে শ্রমিকের সংখ্যা দেড় লাখেরও বেশি। বর্তমানে দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করছেন তারা। গত ৯ আগস্ট এ আন্দোলন শুরু হয়। শুরুতে প্রথম কয়েকদিন কেবল ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করা হয়। সে সময় মজুরি বৃদ্ধি ও মজুরি চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের সাত দিনের আলটিমেটাম দেয়া হয়।
কিন্তু মালিক পক্ষ এই সময়ের মধ্যে বৈঠক বা সমঝোতায় না আসায় ১৩ আগস্ট থেকে লাগাতার পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শ্রমিকরা। এরপর দফায় দফায় বৈঠক করেও এখন পর্যন্ত কোনো সঠিক সমাধানে যায়নি এই সংকট।
কুলাউড়া লোহানী চা বাগানের শ্রমিক নেতা অজিদ কৈরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে শুনতে চাই যে আমাদের মজুরি বাড়াবে। প্রধানমন্ত্রী না বলা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থেকে ফিরব না।’
আরও পড়ুন:সিলেটে চা বাগান শ্রমিকদের কর্মবিরতি অব্যাহত
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সিলেটে ২৩ চা বাগানে কর্মবিরতি পালন
চা শ্রমিকদের অবরোধে সারাদেশের সঙ্গে সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ
চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে মঙ্গলবারও ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছে সাধারণ চা শ্রমিকেরা। মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় তারা মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার চৌমুহনী রেললাইন ও কুলাউড়া মৌলভীবাজার আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেছে। ফলে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
এসময় সিলেটগামী পাহাড়িকা ট্রেন সিলেটের দিকে আসছিল। অবরোধের কারণে আটকা পরে পাহাড়িকা।
অবরোধে অংশ নেয়া চা শ্রমিক স্বপন নাইডু বলেন, ‘এতদিন ধরে আমরা ধর্মঘট করছি। কিন্তু আমাদের দাবি মেনে নেয়া হচ্ছে না। তাই আজ আমরা রেলপথ অবরোধ করেছি।’
তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন এটা তারা কোন টেলিভিশনে দেখেনি বা শোনেনি। নেতারা প্রধানমন্ত্রীর নামে মিথ্যা নিদের্শনা দিয়ে আমাদের কাজে যেতে বলছেন। তাই ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে তারা আবারও আন্দোলন শুরু করেন।
চলমান আন্দোলন নিরসনে সরকারের জেলা প্রশাসন, শ্রম অধিদপ্তরের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়। এভাবে বিষয়টির সুরাহা না হলে গত শনিবার শ্রীমঙ্গল শ্রম অধিদপ্তরে এক বৈঠকে জানানো হয় বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তিনি দেশের বাইরে যাবেন। সেখান থেকে এসে গণভবনে শ্রমিকদের নিয়ে বসবেন এবং তাদের তাদের সুযোগ-সুবিধার কথা শুনে বিষয়টি দেখবেন। প্রথমে চা শ্রমিক নেতারা এ কথা মানলেও পরে তা প্রত্যাখ্যান করেন।
আরও পড়ুন:মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কাল থেকে চা শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট
সিলেটে বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ চা-শ্রমিকদের, দীর্ঘ যানজট
ন্যূনতম ৩০০ টাকা মজুরি করার দাবিতে আবারও আন্দোলনে নেমেছে সিলেটের চা-শ্রমিকরা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে তারা সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ-মিছিল ও সমাবেশ করেন।
রবিবার সকাল ১১টা থেকে সিলেট ভ্যালির চা-শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন এবং দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিতে থাকেন তারা। এসময় সড়কের দুইপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে সৃষ্টি হয় যানজটের।
পরে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরীর আশ্বাসে ২৪ ঘণ্টার জন্য সড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করে লাক্কাতুরা চা বাগানের দুর্গা মণ্ডপের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে আগামীকাল সোমবার থেকে ফের সড়ক অবরোধ করবেন বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন:টানা তৃতীয় দিনের মতো পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
এদিকে আন্দোলন শুরুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন চা-শ্রমিকের সন্তান ও আন্দোলনকারী দেবাশীষ গোয়ালা। তিনি জানান, চা-বাগান মালিকরা আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছেন। ১২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করে আমাদের দয়া দেখাচ্ছেন তারা। কিন্তু আমরা কারও দয়া চাই না। আমরা আমাদের ন্যায্য দাবি চাই। বর্তমান যুগে কোথাও এই মজুরি নাই। এছাড়া যেখানে শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়ন হয় নাই, সেখানে প্রত্যাহার নয় প্রত্যাখ্যান হওয়া জরুরি। তাই আমরা আমাদের দাবিতে অনড় অবস্থায় আবারও মাঠে নেমেছি।
প্রসঙ্গত, এর আগে চলতি বছরের জুন মাসে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিকপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের বৈঠক হয়। সেখানে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব দেন শ্রমিক নেতারা। কিন্তু মালিকপক্ষ ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা মজুরির প্রস্তাব দেয়। যে কারণে শ্রমিক নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর আরও এক মাস পার হয়ে যায়। মালিকপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।
এর প্রতিবাদে ৯-১২ আগস্ট পর্যন্ত টানা চার দিন প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে ধর্মঘট পালন করেন চা-শ্রমিকরা। তারপরও মালিকপক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো কথা না বলায় ১৩ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের সব চা-বাগানে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেন শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন:গাজীপুরে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, পুলিশের লাঠিচার্জ
সাভারে ঈদ বোনাসের দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ