ঢল
ঈদযাত্রায় কমলাপুর রেলস্টেশনে মানুষের ঢল
ঈদুল আজহার আর মাত্র একদিন বাকি। বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে ঘরমুকো মানুষ। তবে শুক্রবার থেকে ছুটি শুরু হওয়ায় এ সংখ্যা বাড়তে থাকে।
আরও পড়ুন: সিলেটে শেখ হাসিনার নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতে লাখো মানুষের ঢল
শনিবার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে।
স্টেশনের প্লাটফর্মে ঠাসাঠাসি যাত্রী। কোনো রকমে ট্রেনে ওঠার প্রাণান্ত চেষ্টা। প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে কেউ কেউ জানালা দিয়ে উঠছিল।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু দিয়ে ঘরমুখো মানুষের ঢল
৫ মাস আগে
চুয়াডাঙ্গায় নামযজ্ঞের পঞ্চম দিনে মানুষের ঢল
চুয়াডাঙ্গায় তারকব্রহ্ম মহানামযজ্ঞ অনুষ্ঠানের পঞ্চম দিনে মানুষের ঢল নেমেছে। জমে উঠেছে অষ্টকালীন লীলা কীর্তন।
টানা পাঁচ দিন ধরে চলছে মহানাম সংকীর্তন। প্রতি তিন ঘণ্টা অর্থাৎ এক প্রহর পরপর ভারতসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৯টি সম্প্রদায় পালাক্রমে অখণ্ড মহানামযজ্ঞের সংকীর্তন পরিবেশন করছে।
বার্ষিক এ উৎসবকে ঘিরে চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী পান্না (রূপছায়া) সিনেমা হল প্রাঙ্গণের বিশাল এলাকাজুড়ে দেশি-বিদেশি গৃহস্থালি ও মনোহরি সামগ্রীর পসরাও সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। পাশাপাশি নানা রকম মিষ্টির সঙ্গে তেলে ভাজা লোভনীয় সব খাবারও এখানে পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে ভক্ত-অনুরাগী ও পূণ্যার্থীদের পদচারণায় মুখরিত মহানামযজ্ঞানুষ্ঠান ও অষ্টকালীন লীলা কীর্তন।
আয়োজকরা জানান, বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) মহানাম সংকীর্তনের পঞ্চম দিনে সকাল থেকেই ঢল নামে মানুষের। দেশের অন্যতম বড় এই মহানামযজ্ঞ ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপিত
১ বছর আগে
সুনামগঞ্জে বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত
গত কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পাহাড়ি ঢলে তাহিরপুরের যাদুকাটা, চলতি নদীসহ সব নদীর পানি কয়েক সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জের ঘোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার কিছুটা নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও কয়েক জায়গায় নদীর তীর ডুবে গেছে। গত ২৪ ঘন্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা জানান, সুনামগঞ্জে ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে প্রচুর বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সব কটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও কোথাও বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।
আরও পড়ুন: নদী শুকিয়ে যাওয়ায় কাপ্তাইয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে
তিনি বলেন, আগামী কয়েকদিন সুনামগঞ্জে ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বিপৎসীমা অতিক্রম করবে। গত ২৪ ঘন্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তবে এখনো হাওরে পানি কম থাকায় বন্যার সম্ভবনা নেই বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আরও কয়েকদিন সুনামগঞ্জে ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা থাকায় নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের আগুনঝরা নদীর বুকে ‘ত্রিকোণ দ্বীপ’, পর্যটকদের আগ্রহ বাড়ছে
নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে ডিসিদের সতর্ক থাকার নির্দেশ
১ বছর আগে
রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে নেতাকর্মীদের ঢল
রাজশাহীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সমাবেশে নেতাকর্মীদের ব্যাপক সমাগম ঘটেছে। সকাল থেকে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা দলে দলে সমাবেশেস্থলে প্রবেশ করেন।
সকাল ৯টার দিকে উন্মুক্ত করে দেয়া হয় ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠ (হাজী মুহম্মদ মুহসীন সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠ)। দুপুর ২টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষণ প্রদান করার কথা আছে। তবে নির্ধারিত সময়ে তিন ঘন্টা আগেই বেলা ১১টার মধ্যেই পুরো জনসভা মাঠ জনসাধারণ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঢলে পরিপূর্ণ হয়।
রবিবার বেলা ১১টা ৫০মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের জনসভা শুরু হয়।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন রবিবার
উক্ত সমাবেশ থেকেই এক হাজার ৩১৭ কোটি টাকার ২৫টি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া ৩৭৬ কোটি টাকার আরও ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
ভোর থেকেই জনসভা এলাকায় আসতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। জেলার বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি উপজেলা থেকেও মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে আসছেন। এ সময় তাদের স্লোগানে-স্লোগানে মুখর রাজশাহী নগরী।
জনসভাকে কেন্দ্র করে কয়েক ধাপে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল জনসভার সভাপতিত্ব করছেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী সারদা পুলিশ একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে ৩৮তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। পরে তিনি প্রশিক্ষণে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী কর্মকর্তাদের মাঝে ট্রফি বিতরণ করেন। এরপর নবীন এ পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য ছাড়াও মহাপরিদর্শকসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিন, তাদের আস্থা অর্জন করুন: পুলিশের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী
অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
১ বছর আগে
টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
টানা তিন দিনের বৃষ্টিপাত ও মেঘালয় থেকে নেমে আসা আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বাড়ি-ঘর, বিভিন্ন রাস্তাঘাটসহ কিছু কিছু জমির অবশিষ্ট পাকা বোরো ধান তলিয়ে গেছে। সুরমা, চেলা, মরা চেলা, চিলাই, চলতি, কালিউরি, ধূমখালি ও ছাগলচোরাসহ বিভিন্ন হাওর, খাল-বিলের পানি হু হু করে বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সীমান্তবর্তী বাংলাবাজার, লক্ষ্মীপুর, বগুলা, নরসিংপুর, সুরমা, দোহালিয়া, পান্ডারগাঁও, মান্নারগাঁও ও দোয়ারা সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তা, মাঠঘাট, আউশ জমিতে পানি ঢুকছে।
কৃষকরা জানান, পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে মাঠের অবশিষ্ট বোরো ফসল ও রবিশস্য উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না আশঙ্কা করছেন তারা।
আরও পড়ুন: বন্যার পানি হাওরে ঢুকে ফসলহানির আশঙ্কা সুনামগঞ্জের কৃষকদের
এদিকে মাঠ ও গোচারণ ভূমিতে পানি উঠায় গো-খাদ্য সংকটসহ মৎস্য খামারিরাও রয়েছেন চরম শঙ্কায়। কেননা গত বছর চার দফা বন্যায় শতাধিক খামারের কোটি কোটি টাকার মাছ ও মাছের পোনা ও রেনু ভেসে গেছে।
অপরদিকে শ্রমিক সংকট ও আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে বিপাকে পড়েছে হাওরপাড়ের কৃষকরা।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবাংশু কুমার সিংহ বলেন, পানি বাড়লেও কোথাও ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনও পাওয়া যায়নি। তবে দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের প্রশাসনিক তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: অসময়ের বন্যা থেকে ফসল রক্ষায় নতুন প্রকল্প আসছে: পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী
বন্যা ও নদীভাঙন মোকাবিলায় ১৮০৩ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন একনেকে
২ বছর আগে
সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢলে ৩’শ কোটি টাকার ধান ক্ষতিগ্রস্ত!
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে চলতি বোরো মৌসুমে সুনামগঞ্জ জেলার ৩১টি হাওরের ২০ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন ধান পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।
স্থানীয় কৃষক, হাওরের ফসলরক্ষা আন্দোলনে সম্পৃক্ত সংগঠনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
তবে, কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী তলিয়ে যাওয়া জমির পরিমাণ পাঁচ হাজার ৭৭৫ হেক্টর। যাতে থেকে ২৮ হাজার ৮৭৫ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হতো।
এদিকে, কৃষি বিভাগের এই তথ্যের সঙ্গে একমত নন জেলার কৃষকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজন। তাদের মতে, কৃষি বিভাগ হাওরের ফসলের প্রকৃত চিত্র গোপন করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে লুকোচুরি করছে।
এ প্রসঙ্গে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, কৃষি বিভাগ বলছে ২০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বাস্তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে।
ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে তিনি জানান, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের পরিসংখ্যানে এর চিত্র কিছুটা হলেও পাওয়া যায়। ৩১টি হাওরের ২০ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে যায়। এ নিয়ে কৃষি বিভাগ কেন লুকোচুরি খেলছে তা আমাদের মাথায় আসে না। লুকোচুরি না করে প্রকৃত তথ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে হবে।
তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে কৃষক বাঁচলেই দেশ বাঁচবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন ও ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্যের জন্যে মাঠ পর্যায়ে কাজ করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: বন্যার পানি হাওরে ঢুকে ফসলহানির আশঙ্কা সুনামগঞ্জের কৃষকদের
পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাশমির রেজা বলেন, আমরা হাওরের ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে একটা স্টাডি করছি। যা বর্তমানে চলমান রয়েছে। তবে, এই মুহূর্তে বলতে গেলে তলিয়ে যাওয়া ফসলের পরিমাণ ১৫ হাজার হেক্টর হতে পারে। প্রতি হেক্টরে ছয় মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হলে ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে ৯০ হাজার মেট্রিক টন ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। এর ক্ষতির পরিমাণ ১৫০ কোটি টাকা। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। অনেকে একেবারে কাঁচা ধান কেটেছেন। যা ওজনে কম হবে। এটাও একটা ক্ষতির অন্যতম কারণ।
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, মূল হাওরের ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে। হাওরের ওপরের অংশের প্রায় ২২ হাজার হেক্টর জমির ফসল এখনো কাটা বাকি রয়েছে। ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জ জেলায় মোট পাঁচ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে যায়। এতে ২৮ হাজার ৮৭৫ মেট্রিক টন ধানের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ধানের পরিমাণ প্রায় ৭০ কোটি টাকা।
তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদেরকে প্রণোদনা দেবে কৃষি বিভাগ। এজন্য তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। আগামী কৃষি মৌসুমে প্রণোদনা দেয়া হবে।
জানা গেছে, ভারতের মেঘালয় ও আসাম প্রদেশে ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে মার্চের শেষ সপ্তাহে হঠাৎ করেই সুনামগঞ্জের সকল নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকে। ২ এপ্রিল থেকে শুরু করে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত বাঁধ ভেঙে ও পানি উপচে জেলার ছোট বড় ৩১টি হাওরের প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল তলিয়ে যায়।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন সরেজমিন তথ্য সংগ্রহের পর সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রকাশ করে।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি হেক্টর জমিতে পাঁচ মেট্রিক টন বা ১২৫ মণ ধান উৎপাদন হয়।
২ বছর আগে
সুনামগঞ্জে ঢলের আশঙ্কায় হাওরে দ্রুত ধান কাটার অনুরোধ করে মাইকিং
সুনামগঞ্জে এমনিতেই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। দু-এক দিনের মধ্যে ভারী বৃষ্টি শুরু হবে, আবার উজানের ঢল নামবে। তাই হাওরের ধান ৮০ শতাংশ পাকলেই সেগুলো দ্রুত কেটে তোলার অনুরোধ জানানো হচ্ছে কৃষকদের। বিষয়টি প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে এবং কৃষি বিভাগের লোকজন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত জেলার হাওর ও নদ-নদীর পানি স্থিতিশীল আছে। সকাল নয়টায় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল চার দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার। একইভাবে জেলার অন্যান্য নদ-নদীর পানিও কিছুটা কমেছে। জেলায় ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে তিন মিলিমিটার।
পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেছেন, ১৫ থেকে ১৭ এপ্রিল এই তিন দিন সুনামগঞ্জে ও ভারতের চেরাপুঞ্জি দুই জায়গাতেই ভারী বৃষ্টি হবে, নামবে পাহাড়ি ঢল। এতে দ্রুত নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
আরও পড়ুন: হাওরাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা দেয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের কৃষক স্বপন কুমার বর্মণ (৬০) জানান, মানুষ হাওরের ফসল নিয়ে এমনিতেই চরম আতঙ্কে আছে। ফসল রক্ষা বাঁধগুলো রয়েছে ঝুঁকিতে। প্রশাসন থেকে দ্রুত ধান কাটার অনুরোধ জানিয়ে মাইকিং করা হয়েছে। কৃষকেরা এখন আধা পাকা ধানই কাটার চেষ্টা করছেন।
উপজেলার খরচার হাওরপাড়ের নোয়াগাঁও গ্রামের কৃষক গোলাম রব্বানী বলেছেন, আমরা সংকটে আছি। একদিকে বৃষ্টি, ঢলের ভয়, অন্যদিকে জমিতে কাঁচা ধান। আমরা তো ধান কাটার জন্য বসে আছি। কিন্তু ধান না পাকলে কেটে তো লাভ নাই।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদি উর রহিম জাদিদ জানিয়েছেন, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে তারা পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে একরকম লড়াই করে ফসল রক্ষা বাঁধগুলো টিকিয়ে রেখেছেন। কিন্তু এখন আবার ঢল নামলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। কৃষকেরা ধান কাটছেন। একই সঙ্গে কৃষি বিভাগের লোকজন ২৯টি কম্বাইন্ড হার্ভেস্টর যন্ত্র নিয়ে মাঠে মাঠে আছেন। ১৫ দিন ধরে উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধগুলো দুর্বল হয়ে পড়ছে। কোথাও কোথাও বাঁধে ধস ও ফাটল দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় আরেক দফা ঢল এলে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তাই দ্রুত হাওরের ধান কাটার অনুরোধ জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
তিনি বলেন, ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সুনামগঞ্জের সুরমা, কুশিয়ারা, জাদুকাটা নদ-নদীর কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব হাওরের ধান কেটে ফেলার জন্য বলা হচ্ছে। এ ছাড়া কোথাও যদি ফসল রক্ষা বাঁধে ফাটল দেখা দেয় অথবা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়, সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করতে বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: টাঙ্গুয়ার হাওরে বাঁধ ভেঙে পানির নিচে ১০০ একর ফসল
হাওর রক্ষায় প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা হাওরের ফসল রক্ষায় দিনরাত কাজ করছি। এটা অন্য রকম এক যুদ্ধ বলা চলে। মাঝখানে পানি কিছুটা কমেছে। কিন্তু এখন আবার বাড়বে, শঙ্কা কাটছে না। অনেক স্থানে বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়েছে। আবার ঢল এলে, পানির চাপ আরও বাড়লে, বাঁধগুলো ঠেকানো মুশকিল হবে। গত ৩০ মার্চ থেকে ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জি থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে জেলার সব হাওরের বোরো ফসল। গত ২ এপ্রিল প্রথমে তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরের একটি বাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে যায়। এরপর একে একে ছোট-বড় আরও ১০টি হাওরের ফসলহানি ঘটেছে। তবে জেলার বড় হাওরগুলোর ফসলের এখনো ক্ষতি হয়নি।
জেলা কৃষি বিভাগের হিসাব মতে, এবার সুনামগঞ্জে দুই লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৫০ হাজার ২২০ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত ধান কাটা হয়েছে পাঁচ হাজার ৬৫ হেক্টর জমির।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানিয়েছেন, জেলার বিভিন্ন হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। শ্রমিকদের সঙ্গে মাঠে ধান কাটার যন্ত্রও আছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না এলে কৃষকেরা তাদের ফসল গোলায় তুলতে পারবেন।
আরও পড়ুন: হাওরে পানি বাড়ছে, আতঙ্কে কাঁচা ধান কাটছে কৃষক
২ বছর আগে
পাহাড়ী ঢলের পানির নিচে হাওরের বোরো ফসল
নেত্রকোণার খালিয়াজুরী উপজেলা সদরের কয়েকটি হাওরের অধিকতর নিচু জমির প্রায় ৫শ’ একর পরিমাণ বোরো ফসল উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় পাহাড়ী ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে।
এভাবে ঢলের পানি আসলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ উপজেলার ২১ হাজার হেক্টর জমির ফসলই তলিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এদিকে, খালিয়াজুরী উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, এখানে ইতোমধ্যে ক্ষতি হয়েছে মাত্র ১১৩ হেক্টর জমির ফসল।
৩০ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল সন্ধ্যা সময়ের মাঝে এসব জমি তলিয়েছে। খালিয়াজুরী সদর ইউনিয়নের কীর্তনখোলা হাওর, চুনাই হাওর, বাদিয়ারচর হাওর, টাকটারের হাওর, মনিজান হাওর, লেবরিয়া হাওর, হেমনগর হাওর চাকুয়া ইউনিয়নের গঙ্গবদও হাওর, নয়াখাল হাওর, গাজীপুর ইউনিয়নের বাগানী হাওর ও ডাকাতখালি হাওরের অধিকতর নিম্নস্থানের ও ফসল রক্ষা বাঁধের বাইরে আবাদ করা ওই সব তলিয়ে যাওয়া জমির ফসল ছিল দুধ ও দানা পর্যায়ে।
আরও পড়ুন: হাওর রক্ষা বাঁধের দুর্নীতির অভিযোগে শাল্লার ইউএনও প্রত্যাহার
খালিয়াজুরী সদরের কৃষক মনির হোসেন জানান, খালিয়াজুরীতে কমপক্ষে ৫শ’ একর জমির ফসল তলিযেছে। এরমধ্যে তার নিজের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০ একর জমির ধান। খালিয়াজুরীর লক্ষ্মীপুর গ্রামের কৃষক, আনোয়ার হোসেন, আব্দুর রউফ ও ফুল মিয়া জানান, ঢলের পানিতে তলিয়ে তাদের ১৫ একর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।
খালিয়াজুরী কৃষি কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি প্রবাহ অব্যাহত রযেছে। পানির এমন প্রবাহ থাকলে সপ্তাহখানেকের মধ্যেই ফসল রক্ষা বাঁধের সীমা উপচে খালিয়াজুরী উপজেলার সমস্ত বোরো ফসল তলিয়ে যাবে।
এবছর এ উপজেলায় এবার ২১ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।
নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত রবিবার সন্ধ্যায় জানান, ভারতের চেরাপুঞ্জি থেকে বৃষ্টির পানি বাংদেশের সুনামগঞ্জের যাদুকাটা ও সুরমা নদী দিয়ে খালিয়াজুরীর ধনু নদীতে ঢল আকারে নামছে।
আরও পড়ুন: হাওরে পানি কমার সাথে সাথে বীজতলা তৈরির কাজে ব্যস্ত কৃষকরা
গত ৩০ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল সন্ধ্যা পর্যন্ত ধনু নদীর পানি বেড়েছে পৌনে ৬ ফুট। এরমধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় বেড়েছে ৩ ফুট।
তিনি আরও বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে আগামী কয়েকদিনও মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বভাস রয়েছে। যদি সেখানে বৃষ্টি হয়ই তবে কয়েক দিনের মধ্যে সেই বৃষ্টির পানি এসে তা ধনু নদীতে বিপদ সীমা অতিক্রম করবে।
নেত্রকোণার হাওরে এবার ১৮৩ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। ২৩ কোটি ৬ লাখ টাকার ব্যায় বরাদ্দের এ বাঁধ মজবুত হলেও অতিরিক্ত পানি বেড়ে উপচে পড়লে হাওরের বোরো ফসল রক্ষা কঠিন হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।
নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, নির্দিষ্ট একটি নিয়মের উচ্চতায় প্রতি বছর হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এবারও নিয়ম অনুযায়ীই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এখন অতিরিক্ত মাত্রায় পানি বেড়ে গেলেও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো বালু ভর্তি বস্তা দিয়ে পানি ঠেকিয়ে ফসল বাঁচাতে। আর ইতোমধ্যে যেসব কৃষকের ফসল তলিয়ে গেছে সেসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা তৈরির মাধ্যমে তাদেরকে সরকারিভাবে সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করা হবে বলেও তিনি জানান।
আরও পড়ুন: নিকলী হাওরে নিখোঁজ পর্যটকের লাশ উদ্ধার
২ বছর আগে
বন্যায় তলিয়ে গেছে কুড়িগ্রাম, শেরপুর ও সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চল
গত দু'দিন ধরে পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রাম, শেরপুর ও সিরাজগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চল বন্যাকবলিত হয়েছে। এতে স্থানীয় মানুষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।বন্যার কারণে রাস্তা, ঘর, বীজতলা ও স্কুল পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
আরও পড়ুনঃ বন্যার পানিতে পড়ে দেড় বছরের শিশুর মৃত্যু
কুড়িগ্রামে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (বিডব্লিউডিবি) মঙ্গলবার জানিয়েছে, ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রসহ সমস্ত নদ-নদীর পানির স্তর আবারও বেড়েছে। তবে বিপদসীমার নীচে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেল তিনটা পর্যন্ত ধরলা নদীর পানির স্তর ১২ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
আরও পড়ুনঃ বন্যার আশঙ্কা: কুড়িগ্রামে নদ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত
শেরপুরে, ভারী বর্ষণ এবং সীমান্তের পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতী উপজেলার আহমেদনগর-দিঘিরপাড় সড়কে প্রায় ৮২ ফুট রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। নদীর বাঁধের পথচারীদের বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহৃত রাস্তাটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।ফলস্বরূপ, সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং প্রায় ৩০০০ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।সিরাজগঞ্জে গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানির স্তর বেড়েছে ৩১ সেন্টিমিটার এবং নিম্নাঞ্চলগুলো ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে। বিডব্লিউডিবি’র প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন নিশ্চিত করেছেন।জেলার বেশ কয়েকটি হেক্টর ফসলি জমি বন্যার পানির নিচ তলিয়ে গেছে।গত বছর জুন থেকে আগস্টের শেষ সপ্তাহে বন্যার ফলে সারা দেশে মোট ১৫৯টি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।বন্যায় কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সুনামগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর ও নওগাঁর লোকজন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
৩ বছর আগে
পাটুরিয়ায় ঢাকামুখী কর্মজীবী মানুষের ঢল
গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও শনিবার আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাটে ঢাকামুখী কর্মজীবী মানুষের ঢল দেখা গেছে।
৪ বছর আগে