বাংলাদেশ রেলওয়ে
সিগন্যাল ব্যবস্থা আধুনিকায়নে কাজ করছে রেলওয়ে
দুর্ঘটনা কমাতে সব জায়গায় সিগন্যাল ব্যবস্থার আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের সব মিটার গেজ লাইন বদলে ব্রডগেজে রূপান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী।
ইউএনবিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে রেলওয়ের চলমান ও ভবিষ্যৎ প্রকল্পগুলো নিয়ে পরিকল্পনার বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
রেলওয়ের মহাপরিচালক বলেন, ট্রেনের সাংঘর্ষিক বা কোনো ধরনের দুর্ঘটনা যেন না ঘটে তাই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব জায়গায় সিগন্যাল ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘কুপিবাতি ব্যবহার করে সিগন্যাল দেওয়ার সিস্টেম পুরোনো হলেও এটি কার্যকর এবং পরীক্ষিত একটি সিগন্যাল ব্যবস্থা। ডিজিটাল সিস্টেম চালু করা ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার।’
সম্প্রতি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা বেড়েছে। এজন্য দায়ী করা হচ্ছে ত্রুটিপূর্ণ সিগন্যাল ব্যবস্থাকে।
আরও পড়ুন: সংস্কারের অভাবে রেললাইন ও সেতুতে ঘটছে দুর্ঘটনা
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক বলেন, ‘আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত মিটার গেজের জন্য লোকোমোটিভ সংগ্রহ করা হবে। ২০৩০ সালের পরে এই ইঞ্জিন আর সংগ্রহ করা হবে না। আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে মিটার গেজ অবলুপ্ত করে সম্পূর্ণটাই ব্রডগেজে রূপান্তর করা হবে। ফলে ট্রেনে কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটবে না।’
সরদার সাহাদাত আলী আরও বলেন, বর্তমানে যে লোকোমোটিভ ব্যবহৃত হচ্ছে তার মধ্যে ব্রডগেজের লোকোমোটিভগুলো চাহিদার মোটামুটি কাছাকাছি পরিমাণে আছে। ব্রডগেজ লাইনে ইঞ্জিনের সংকট এই মুহূর্তে নেই। আরও ৪৬টি লোকোমোটিভ আনার পরিকল্পনা রয়েছে। মিটারগেজের জন্য ৫০টি লোকোমোটিভ আসবে। এছাড়া চট্টগ্রাম-দোহাজারী প্রজেক্টের মধ্যে আরও ৩০টি লোকোমোটিভ আনার পরিকল্পনা রয়েছে। মিটারগেজ লোকোমোটিভের কিছুটা সংকট রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আব্দুল্লাহপুর থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত ডিজিটাল সিগন্যাল সিস্টেমের টেন্ডার হয়েছে। এটি মূল্যায়ন পর্যায়ে আছে। পদ্মা রেললাইন প্রজেক্টে জুন মাসের মধ্যে ডিজিটাল সিস্টেম চালু করে দেবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনে এরই মধ্যে ডিজিটাল সিস্টেম চালু রয়েছে। টঙ্গী, জয়দেবপুর, দিনাজপুর, বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব-পশ্চিম এসব জায়গায় নন-ইন্টার লকিং প্রজেক্টের কাজ হচ্ছে। তাদের সবারই কাজ শেষ হয়ে যাবে। কাজ শেষ হলে এগুলো ইন্টার লকিংয়ের মধ্যে চলে আসবে, তখন আর এ সমস্যা থাকবে না। তাই পর্যায়ক্রমে সবগুলোই আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।’
মিটারগেজ মেরামতের বিষয়ে ডিজি বলেন, ‘মিটারগেজ মেরামতের জন্য কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ ওয়ার্কশপে নিতে হয়। এগুলো আবার যমুনা সেতুর ওপর দিয়ে পার করতে হয়, সেক্ষেত্রে কিছু জটিলতা থাকে। এছাড়া ওয়ার্কশপে লোকবলের সংকটও আছে।’
নতুন কিছু লোকোমোটিভ না আসা পর্যন্ত মিটারগেজের এ সংকট কাটবে না উল্লেখ করে সাহাদাত আলী বলেন, ‘আমরা আশা করছি ২০৩০ সালের মধ্যে মিটারগেজের সব সংকটই কেটে যাবে। এ বিষয়ে কাজ করছি।’
আরও পড়ুন: পরিবহন-যোগাযোগ খাতে ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা সরকারের
লোকোমোটিভের বেশ কিছু ত্রুটির কথা শোনা গেছে- এ প্রসঙ্গে রেলওয়ে পরিচালক বলেন, ‘তিন হাজার সিরিজে যে লোকোমোটিভ আনা হয়েছে কিছু কিছু সমস্যা আমাদের নজরেও এসেছে। সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ারদের সাহায্যে সমস্যাগুলো মেরামত করা হচ্ছে। যে ওয়ারেন্টি পিরিয়ড আছে এ সময়ের মধ্যে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা গেলে ঠিক করে নেওয়া যাবে।’
ট্রেন সংযোগ সম্প্রসারণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেশের প্রতিটি জায়গায় ট্রেন যোগাযোগ ব্যবস্থা করার উদ্যোগ আছে সরকারের। পর্যায়ক্রমে সেটি করা হবে। কোথাও কোথাও ট্রেন/বগির সংখ্যা বাড়ানো হবে যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী। আরও নতুন নতুন লোকোমোটিভ কেনা হবে।’
দক্ষ জনবলের অভাবের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দক্ষ জনবল নিয়োগ দেওয়া সম্ভব নয়। আগে জনবল নিয়োগ দিয়ে তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। কর্মচারীরা অবসরে যাবে আবার নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হবে, তাদের প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলা হবে- এটা একটা নিয়মিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে।’
রেলওয়ে সার্ভিসের উন্নয়নে আর কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে রেলওয়ে ডিজি বলেন, ‘আমরা যাত্রীসেবার মান বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছি। ট্রেন যথাসময়ে ছাড়া এবং পৌঁছানোর বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। এছাড়াও ট্রেন যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং খাবারসহ সব বিষয়ে মান ভালো করছি।’
ট্রেনের টিকিট সহজে পাওয়ার বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি না- জানতে চাইলে রেলওয়ের মহাপরিচালক বলেন, ‘এখন টিকিট কালোবাজারি বন্ধ হয়েছে, কালোবাজারি টিকিট বিক্রি নেই বললেই চলে। ঘরে বসে অনলাইনেই টিকিট কেনা যাচ্ছে, স্টেশন থেকেও যথাসময়ে মধ্যে টিকিট নিতে পারছে, তবে ট্রেনের যে চাহিদা সে অনুযায়ী অনেক সময় সিট দেওয়া যায় না। তারপরও মানুষ ট্রেন জার্নিতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করে।’
আরও পড়ুন: ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি বন্ধ হবে: রেলমন্ত্রী
৬ মাস আগে
সংস্কারের অভাবে রেললাইন ও সেতুতে ঘটছে দুর্ঘটনা
বাংলাদেশ রেলওয়ের উন্নয়নে একাধিক নতুন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলেও সংস্কার হচ্ছে না পুরোনো রেললাইন ও সেতু। দেশজুড়ে ৩ হাজার ৪০০ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-জয়দেবপুর এবং যশোর-আব্দুলপুর ডাবল রেললাইন। আর বাকি রেললাইনগুলো সিঙ্গেল রেললাইন এবং বেশির ভাগই জরাজীর্ণ। এসব রেললাইনে প্রতিনিয়তই ঘটছে লাইনচ্যুতিসহ নানা দুর্ঘটনা।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, দুর্ঘটনা ও লাইনচ্যুতির প্রায় ৬৩ শতাংশই হয় ঝুঁকিপূর্ণ লাইন ও দুর্বল সেতুর কারণে। গত পাঁচ বছরে রেলপথে ২ হাজারের বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে দেড় শতাধিক যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে এবং পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে ৫০০ যাত্রীকে।
রেলওয়ে সূত্র আরও জানায়, গত চার মাসে সারা দেশে রেল দুর্ঘটনা ও নাশকতার ঘটনা ঘটেছে ১৬০টি। এসব ঘটনায় ১৮ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা দুই শতাধিক। কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারি না থাকায় নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না এসব দুর্ঘটনা।
আরও পড়ুন: আবেদনের মেয়াদ শেষ হলেও ভিসা অনিশ্চয়তায় ১১ হাজারের বেশি হজযাত্রী
এদিকে পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যোগাযোগব্যবস্থায় রেলওয়েকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। উন্নয়ন বাজেটেও অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এরপরও তেমন কোনো সুফল মিলছে না। একের পর এক স্টেশন বন্ধ, মেয়াদোত্তীর্ণ রোলিং স্টক, জরাজীর্ণ রেল কারখানা, জনবলসংকট, সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারা, টিকিট পেতে ভোগান্তি, টিকিট কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্যসহ নানা অব্যবস্থাপনা লেগেই আছে।
রেল মন্ত্রণালয়ের ২০২২-২৩ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সারা দেশে ৩১৫টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে ১৪৩টি ট্রেন বিগত ১৫ বছরে চালু করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে ৮৪৩ কিলোমিটার রেলপথ। মেরামত করা হয়েছে ১ হাজার ৩৯১ কিলোমিটার রেললাইন।
আরও উন্নয়ন কাজের মধ্যে রয়েছে, ১৪৬টি নতুন রেলস্টেশনের ভবন নির্মাণ, ২৭৩টি স্টেশন ভবন পুনর্নির্মাণ, ১ হাজার ৩৭টি নতুন সেতু নির্মাণ, ৭৯৪টি রেলসেতু পুনর্নির্মাণ, ১০৯টি লোকোমোটিভ সংগ্রহ, ৬৫৮টি যাত্রীবাহী ক্যারেজ সংগ্রহ, ৫৩০টি যাত্রীবাহী ক্যারেজ পুনর্বাসন, ৫১৬টি মালবাহী ওয়াগন সংগ্রহ, ২৭৭টি মালবাহী ওয়াগন পুনর্বাসন ইত্যাদি।
রেলে বর্তমানে কোচ আছে ১ হাজার ৭৮৮, যার ৪৭ শতাংশেরই অর্থনৈতিক মেয়াদকাল শেষ। আর সচল ইঞ্জিন মাত্র ২৯৫টি, যার ৬০ শতাংশ মেয়াদোত্তীর্ণ। আর মালবাহী ওয়াগনের সংখ্যা ৩ হাজার ২৪৭টি, যার ৬৭ শতাংশ মেয়াদোত্তীর্ণ। রেলওয়েতে ৪৭ হাজার ৬০০ জনবলের বিপরীতে মাত্র ২৪ হাজার জনবল রয়েছে।
বেসরকারি তথ্য মতে, বর্তমানে সারা দেশে ৩ হাজার ৪০০ কিলোমিটারের বেশি রেললাইন রয়েছে। এর মধ্যে মানসম্পন্ন রেললাইন মাত্র ১ হাজার কিলোমিটার। সিগন্যালিং ত্রুটি, ঝুঁকিপূর্ণ রেলক্রসিং, মেয়াদোত্তীর্ণ কোচ সংযোজন, জরাজীর্ণ রেললাইন, রেললাইন পর্যাপ্ত নজরদারির অভাব ও জনবলের অভাবের কারণে রেল দুর্ঘটনা বাড়ছে।
গণপরিবহন বিশ্লেষক ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান ইউএনবিকে বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের উন্নয়নে একাধিক নতুন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলেও সংস্কার হচ্ছে না পুরোনো রেললাইন ও সেতু। নতুন প্রকল্পের পাশাপাশি পুরোনো রেললাইন ও সেতু যথাযথ সংস্কার না থাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে ট্রেন লাইনচ্যুতিসহ নানা দুর্ঘটনা।
আরও পড়ুন: খোলা বাজারে ডলার সংকট, দাম বেড়ে ১২৫ টাকায় উন্নীত
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন রেললাইনের পাশাপাশি পুরোনো রেললাইনগুলো মেরামত করতে হবে। মেরামতের পেছনে কম টাকা খরচ হয় বলে রেল সবসময় বিদেশ থেকে লোকোমোটিভ ও কোচ কেনায় আগ্রহী। আবার রেললাইন ও সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার নামেমাত্র করা হচ্ছে। রেলওয়ের সংশ্লিষ্টরা কেনাকাটায় মন না দিয়ে বিদ্যমান ঝুঁকিপূর্ণ রেলপথ সংস্কার করাটাই জরুরি।’
এছাড়াও সিগন্যালিং ত্রুটি, ঝুঁকিপূর্ণ রেলক্রসিং, মেয়াদোত্তীর্ণ কোচ সংযোজন, জরাজীর্ণ রেললাইন, পর্যাপ্ত নজরদারির অভাব ও জনবল অভাবের কারণে রেল দুর্ঘটনা বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন নতুন লোকোমোটিভ, কোচ কেনা হচ্ছে। এসব কেনাকাটায় ব্যক্তিগতভাবে কেউ কেউ লাভবান হচ্ছেন। কিন্তু এতে যাত্রীসেবার মান বাড়ছে না। এই লোকোমোটিভ ও কোচ যখন দেশে আনা হচ্ছে, তখন দেখা যাচ্ছে যে, এগুলো পরিচালনার জন্য মানসম্মত লাইন নেই। প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার রেলপথ ঝুঁকিপূর্ণ। এসব লাইন মেরামত না করেই কেনাকাটা করা হচ্ছে। এতে রেলের গতি বাড়ছে না। রেলের গতি কমছে।’
সম্প্রতি গাজীপুরের জয়দেবপুরে সংকেতের (সিগন্যাল) ভুলে দুই ট্রেন এক লাইনে এসে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরদিনই বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমে একই ভুল হয়। ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস ও ঢাকা-রাজশাহীর ধূমকেতু এক্সপ্রেস সিগন্যালের ভুলে এক লাইনে চলে এলেও অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়।
এছাড়াও চট্টগ্রামের দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে গত এক মাসে তিনবার ভুল সংকেতের ঘটনা ঘটেছে।
সিবিআইএসে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে সংকেত দেওয়া হয়। লাইন পরিবর্তনের সময়, পয়েন্ট ঠিক না হওয়া পর্যন্ত ট্রেনকে চলাচলের অনুমতি দেয় না সিবিআইএস। কিন্তু পুরোনো পদ্ধতিতে পয়েন্টসম্যানরা ট্রেনকে এক লাইন থেকে অন্য লাইনে নিতে পয়েন্ট তৈরি করেন। এতে ভুল হওয়া এবং স্টেশন মাস্টাররা সঠিক সংকেত দিতে না পারায় দুই ট্রেন এক লাইনে চলে আসার ঘটনা ঘটছে। আবার পয়েন্ট ঠিকভাবে তৈরি না হওয়ায় ট্রেন লাইনচ্যুত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রচণ্ড গরমে ঢাকার হাসপাতালে রোগীর অতিরিক্ত চাপ, শিশু ওয়ার্ডে আসন সংকট প্রকট
এদিকে গত এক দশক ধরে ঢাকা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত তৃতীয় ও চতুর্থ রেললাইন নির্মাণের কাজ চলছে। ঢাকাসংলগ্ন টঙ্গী জংশনও চলছে সনাতন সংকেত পদ্ধতিতে। ভারতীয় ঋণের প্রকল্পে অর্থছাড়ে ধীরগতি এবং অন্যান্য জটিলতায় ঠিকাদাররা সময়মতো বিল পাচ্ছেন না। এতে কাজ এগোচ্ছে না। প্রকল্প শেষ না হওয়া পর্যন্ত সিবিআইএস চালু করাও সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী ইউএনবিকে বলেছেন, ‘বছরের পর বছর চলমান এসব প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এলাকায় কম্পিউটারভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় সংকেত ব্যবস্থা তথা কম্পিউটারবেইজড ইন্টারলিঙ্ক সিস্টেম (সিবিআইএস) নেই। সনাতন পদ্ধতির নন-ইন্টারলিঙ্ক ব্যবস্থায় মানুষ সংকেত দেন। মানুষ কাজ করলে ভুল হবেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘অর্ধেক জনবল দিয়েছে সংস্থাটি। সিবিআইএসে দুইজন কর্মী লাগলে সনাতনে লাগে পাঁচজন। যারা নতুন আসছেন, তারাও দক্ষ নন। শিখিয়ে-পড়িয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। সিগন্যালের ভুল রোধে এখন থেকে কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করবেন। এ বিষয়ে প্রতিটি সিগন্যালে দক্ষ লোক বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যদিও দক্ষ জনবল সংকট তবে আমরা দক্ষ জনবল নেওয়ার চেষ্টা করছি।’
রেলওয়ে মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘রেল দুর্ঘটনা রোধে আমরা মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করব। এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক আমরা খেয়াল রাখছি, কীভাবে দক্ষতার সঙ্গে প্রতিটি সিগন্যাল পরিচালনা করা যায়। আর যাতে কোনো ভুলের কারণে দুর্ঘটনা না ঘটে সেটি আমাদের লক্ষ্য।’
এছাড়াও রেলওয়ে থেকে জানা যায়, নতুন নিয়োগ পাওয়া জনবল পুরোনো সংকেত (ম্যানুয়াল) পদ্ধতিতে দক্ষ হয়ে উঠতে পারেননি। আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে ঠিকাদারের সরবরাহ করা পয়েন্টসম্যান রেলের বিশেষায়িত কাজ জানেন না। এসব কারণে ভুল হচ্ছে। আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ পাওয়া জনবলের দক্ষতায় ঘাটতি রয়েছে। আবার নিয়মিত লোক বদল হয়।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহায় ঢাকায় বসবে ২২টি পশুর হাট
৬ মাস আগে
টিকিটের বর্তমান মূল্য বজায় রাখতে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রতি এনসিপিএসআরআরের আহ্বান
আগামী ৪ মে থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি (এনসিপিএসআরআর)।
রেলওয়ের ভাড়ার ক্ষেত্রে যে ছাড় দেওয়া হতো তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এর ফলে ১০০ কিলোমিটারের বেশি ভ্রমণের জন্য ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ভাড়া বেড়ে যাবে।
জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক মো. শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে মঙ্গলবার এক গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ উদ্বেগের কথা জানান।
আরও পড়ুন: রেলের ভাড়া না বাড়ানোর আহ্বান জাতীয় কমিটির
জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিসহ বর্তমান অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা তুলে ধরেন তারা। চলমান তাপপ্রবাহ এবং শ্রমিক ও নিম্ন-মধ্যবিত্তদের আয় কমে যাওয়ায় তা আরও বেড়েছে বলেও জানান। এই পরিস্থিতিতে ভাড়া বৃদ্ধি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং জনস্বার্থের পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপিএসআরআর নেতারা।
বিবৃতিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি এবং কৃষি পণ্যের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এমন অবস্থায় ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধি সাধারণ নাগরিকদের জন্য বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশ্বব্যাপী জনসাধারণের বোঝা লাঘব করার জন্য রাষ্ট্র পরিচালিত পরিবহনে ভর্তুকি দেয় সরকার। বাংলাদেশেও এই চর্চা রয়েছে। সরকার ভর্তুকি প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয় এবং ভাড়া বৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণকে ভোগান্তির পরিবর্তে এই ভর্তুকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
এনসিপিএসআরআরের নেতারা এই কঠিন সময়ে জনগণের উপর অতিরিক্ত আর্থিক চাপ রোধে ভর্তুকি অব্যাহত রাখতে এবং পরিকল্পিতভাবে ভাড়া সমন্বয়ের জন্য পুনর্বিবেচনা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: তিন মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১,২১২: এনসিপিএসআরআর
পাঁচ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৮৯০: এনসিপিএসআরআর
৬ মাস আগে
লোকসান সত্ত্বেও বাংলাদেশ রেলওয়ে ডেমু ট্রেন মেরামত করবে
ডেমু ট্রেন চালানোর জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ক্ষতি হওয়ার বিষয়ে গুরুতর উদ্বেগ থাকলেও বাংলাদেশ রেলওয়ে আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ২০টি অচল ট্রেন পুনরায় চালানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
সরকার ২০১৩ সালে চীনের তাংশান রেলওয়ে ভেহিকল কোম্পানি লিমিটেড থেকে আনুমানিক ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ডিজেল ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট (ডেমু) ট্রেন কিনেছিল। সাত বছর ধরে এগুলো চালানোর পর সবগুলো অচল হয়ে পড়ে এবং এখন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সেগুলো মেরামতের জন্য তড়িঘড়ি করে চেষ্টা করছে।
কিছু কর্মকর্তা ডেমু ট্রেনের ক্রয় বিষয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কারণ কিছু ট্রেন কয়েক বছরের মধ্যে অচল হয়ে যায়। তবে ১৯৫৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা লোকোমোটিভগুলো এখনও চালু আছে। এছাড়া, ১৯৮০’র দশকে জার্মান থেকে কেনা কোচগুলো এখনও যাত্রী বহনের জন্য ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন: দেশীয় প্রযুক্তিতে সচল ডেমু ট্রেন চলাচল শুরু
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, এখন দুই থেকে তিন সেট ডেমু ট্রেন ২০২৩ সালের জানুয়ারির মধ্যে মেরামত করা হবে। অন্য পাঁচটি ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে চালু করা হবে এবং বাকি ট্রেনগুলো ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে মেরামত করা হবে।
কর্মকর্তারা জানান, ডেমু ট্রেনগুলোর যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক অংশগুলো দীর্ঘ সময় ধরে মেরামত না করার কারণে অকার্যকর হয়ে পড়েছে, তাই মেরামত করা জরুরি।
স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনা অনুসারে, ডেমু ট্রেনগুলোর মধ্যে যেগুলো ভালো অবস্থায় আছে এবং সামান্য মেরামতের প্রয়োজন, সেগুলো প্রথমে চালু করা হবে। তারা জানান, এই ট্রেনগুলোর মডিউলভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমের বাজারে সহজলভ্য যন্ত্রাংশ ও যন্ত্রপাতি দ্বারা মেরামত করা হবে।
যেসব ডেমু ট্রেন আরও মেরামতের প্রয়োজন হবে সেগুলো মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এবং যে ট্রেনগুলোর বড়ধরনের মেরামতের প্রয়োজন তা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হবে।
যদিও ডেমু ট্রেনের জন্য রেল ট্র্যাক স্থাপনের ছয় বছর হয়ে গেছে, তবে ব্যস্ত সময়সূচির জন্য চালু না করায় বেশিরভাগ ট্রেনের ইঞ্জিন অচল হয়ে পড়ে। ইঞ্জিনের বিকট শব্দ, বিপুল পরিমাণ কালো ধোঁয়া নির্গমন, লোড সমস্যা ও ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হওয়ার কারণে ডেমু অপারেশন স্থগিত করা হয়েছিল।
ডেমু ট্রেনগুলো মেরামতের জন্য কোনো পৃথক ওয়ার্কশপ না থাকায় ২০১৮ সালে পরিষেবার জন্য বিদ্যমান ডিজেল ওয়ার্কশপগুলো ব্যবহার করার পদক্ষেপ নেয়া হয়।
ডেমু ট্রেনগুলোর প্রতিটিতে দুটি মোটরকার ও একটি ট্রেলার কার রয়েছে৷ এই ট্রেনগুলোর দুই পাশে ইঞ্জিন আছে।
প্রথম ডেমু ট্রেনগুলো ঢাকা, চট্টগ্রাম ও লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের অধীনে বিভিন্ন রুটে চলাচল করে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০০৮-২০০৯ ও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের মধ্যে ১৩ বছরে ১৫ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকার বেশি লোকসান করেছে।
২০২০-২০২১ অর্থবছরে একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে বলা হয় যে রাষ্ট্রচালিত সংস্থাটির এক হাজার ৩৮৪ কোটি টাকার লোকসান গুনতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ রেলওয়ে: ঢেলে সাজানোর বিস্তর পরিকল্পনা সরকারের
২ বছর আগে
পর্যায়ক্রমে সকল রেল ব্যবস্থাকে ব্রডগেজে রূপান্তর করছি: রেলমন্ত্রী
রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, দেশের রেল ব্যবস্থা ব্রডগেজ এবং মিটারগেজ দ্বারা দুই অঞ্চলে বিভক্ত। আমরা পর্যায়ক্রমে সকল রেল ব্যবস্থাকে ব্রডগেজে রূপান্তর করছি।
তিনি বলেন, ‘ভারতের সকল রেললাইন ব্রডগেজে। আমরাও দেশের গেজ ব্যবস্থাকে একরকম ব্রডগেজে রূপান্তর করছি। এছাড়া রেললাইন সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে যে প্রকল্প নেয়া হচ্ছে সবগুলোকেই আমরা ব্রডগেজ আকারে করছি।’
বৃহস্পতিবার রেলভবনে বাংলাদেশ রেলওয়ের পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত মিটার গেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর এবং খুলনা-দর্শনা সেকশনে নতুন ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে, একটি ভারসাম্যপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী তার দূরদর্শী সিদ্ধান্তে ২০১১ সালে আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করেন। দেশের প্রতিটি জেলায় রেল সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। রেলের উন্নয়নে অনেক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলোর কাজ চলমান আছে।’
আরও পড়ুন: ঢাকা-ভাঙ্গা রেল চলাচল শুরু জুনে: রেলমন্ত্রী
তিনি বলেন, যমুনা নদীর ওপর ‘বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু’ নির্মিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে পূর্বাঞ্চল এবং পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ সহজ হবে। এছাড়া ঈশ্বরদী থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত ডাবল লাইনের প্রকল্প আমরা হাতে নিয়েছি।
ভারতীয় অর্থায়নে এ প্রকল্প দুটি নির্মিত হবে। ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এ সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। পার্বতীপুর কাউনিয়া ডুয়েলগেজ নির্মিত হলে ভবিষ্যতে আমরা ভারত ছাড়াও নেপাল, ভুটানের সাথে কানেক্টিভটি বাড়াতে সক্ষম হব এবং এর ফলে আমাদের যাত্রীসহ মালামাল পরিবহনের সুযোগ বাড়বে।’
খুলনা-দর্শনা সেকশনের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রকল্প পরিচালক মনিরুল ইসলাম ফিরোজী এবং ভারতীয় কনসালটেন্ট সার্ভিস স্টুপ কনসালটেন্ট লিমিটেড ও আরভি এসোসিয়েটস জয়েন্ট ভেঞ্চারের পক্ষে মো. আসাদ। এ প্রকল্পের আওতায় খুলনা দর্শনের মধ্যে পুরনো লাইনের পাশাপাশি নতুন ১২৬ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন নির্মিত হবে। কনসালটেন্সি সার্ভিসের চুক্তিমূল্য ৮৭ কোটি ৩৭ লাখ ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা ট্রেন চালু আগামী বছরের জুনে: রেলমন্ত্রী
অন্য একটি প্রকল্প পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত মিটারগেজ লাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর প্রকল্পের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রকল্প পরিচালক লিয়াকত শরীফ খান এবং ভারতীয় কনসালটেন্সি সার্ভিস আরভি এসোসিয়েট এবং স্টুপ কনসালট্যান্টস লিমিটেড জয়েন্ট ভেঞ্চার এর পক্ষে অভিক ভট্টাচার্য। কনসালটেন্সি সার্ভিসের চুক্তিমূল্য ৭৫ কোটি ৮৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৯০ টাকা। এই প্রকল্পে ৫৭ কিলোমিটার মিটারগেজ লাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর করা হবে। উভয় প্রকল্পই ভারতীয় এলওসি এর অর্থায়নে হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার, ভারতীয় হাইকমিশনের প্রথম সচিব সালোনি সাহাইসহ মন্ত্রণালয় , রেলওয়ে, ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক প্রতিনিধি এবং কনসালট্যান্ট সার্ভিসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রেলমন্ত্রীর আশ্বাসে রানিং স্টাফদের ধর্মঘট প্রত্যাহার
২ বছর আগে
সহজ ডটকমকে ২ লাখ টাকা জরিমানা
বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিট বিক্রিতে অব্যবস্থাপনার প্রমাণ পেয়ে অনলাইন টিকিটিং প্ল্যাটফর্ম সহজ ডটকমকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর (ডিএনসিআরপি)।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মহিউদ্দিন রনির কাছ থেকে সহজ ডটকমের টিকিট বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ার পর বুধবার ডিএনসিআরপি শুনানির আয়োজন করে।
সকাল ১০টার দিকে ডিএনসিআরপির সভাকক্ষে রনির অভিযোগের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয় বলে বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিএনসিআরপির মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান জানান।
আরও পড়ুন: ট্রেন লাইনচ্যুত: ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলের মধ্যে রেল যোগাযোগ বন্ধ
ডিএনসিআরপির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রনি এই জরিমানার ২৫ শতাংশ ( ৫০ হাজার টাকা) পাবেন।
শুনানিতে মহিউদ্দিন রনি ও সহজ ডটকমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সহজ ডটকমের আইনজীবী মির্জা রাগিব হাসনাত বলেন, তারা রায়ে সন্তুষ্ট নন। তিনি বলেন, ‘আমরা এর বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করবো।’
২ বছর আগে
ঈদ উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু
ঈদুল আজহা উপলক্ষে শুক্রবার সকাল থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ৫ জুলাইয়ের অগ্রিম টিকিট ঢাকা ও জয়দেবপুরের ছয়টি স্থানে সকাল ৮টা থেকে বিক্রি শুরু করেছে। ঢাকার ছয়টি স্থান হলো- কমলাপুর, কমলাপুর শহরতলি প্ল্যাটফর্ম, বিমানবন্দর রেলস্টেশন, তেজগাঁও রেলস্টেশন, ক্যান্টনমেন্ট, ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন)।
‘রেল সেবা’ মোবাইল অ্যাপ ও ইন্টারনেটে ই-টিকিট প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেও সকাল ৮টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। প্রতিদিন বিকাল ৪টা পর্যন্ত রেলস্টেশনে টিকিট বিক্রি চলবে।
আরও পড়ুন: পবিত্র ঈদুল আজহা ১০ জুলাই
৬, ৭, ৮ ও ৯ জুলাইয়ের টিকিট যথাক্রমে ২, ৩, ৪ ও ৫ জুলাই পাওয়া যাবে।
এছাড়া ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ৭ জুলাই থেকে। ১১, ১২, ১৩, ১৪ ও ১৫ জুলাইয়ের ফিরতি টিকিট যথাক্রমে ৭, ৮, ৯, ১০ ও ১১ জুলাই পাওয়া যাবে।
একজন যাত্রী সর্বোচ্চ চারটি টিকিট ক্রয় করতে পারবেন।
২ বছর আগে
টিটিই বরখাস্ত: স্ত্রীর কর্মকাণ্ডে বিব্রত রেলমন্ত্রী
ঢাকাগামী ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’-এ তিন টিকিটবিহীন যাত্রীকে জরিমানা করায় ট্রেনের টিকিট চেকারকে বরখাস্ত করার আদেশ প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
রবিবার পদত্যাগের দাবির মুখে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় স্ত্রী জড়িত থাকায় তিনি খুব বিব্রত বোধ করছেন।
আরও পড়ুন: টিটিই বরখাস্তের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, যাত্রীরা আমার আত্মীয় নয়: রেলমন্ত্রী
রেল ভবনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং কীভাবে তারা (টিকিটবিহীন যাত্রীরা) এত দ্রুত লিখিত অভিযোগ করেছে তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, তদন্ত শেষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলামকে কেন বরখাস্ত করেছেন তা ব্যাখ্যা করতে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য রেলমন্ত্রীর আত্মীয় দাবি করে টিকিট ছাড়া শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচে ভ্রমণের জন্য তিনজনকে জরিমানা করার একদিন পরে বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশী ডিভিশনে কর্মরত শফিকুলকে শুক্রবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন কাজ ধীরগতিতে হওয়ায় রেলমন্ত্রীর অসন্তোষ
২ বছর আগে
রেলওয়ে এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠান: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার রাষ্ট্র পরিচালিত বাংলাদেশ রেলওয়েকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে, যা বিগত বিএনপি শাসনামলে ভেঙে পড়েছিল।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিআরটিসিকে যেমন লাভজনক করেছি, আজ আমরা প্রমাণ করেছি যে রেল পরিষেবা লাভজনক করা যায়।’
বুধবার দুটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মোবাইল রেল জাদুঘর এবং ৪৬টি লোকোমোটিভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে বিএনপি সরকার বিভিন্ন রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি লাভজনক সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
২ বছর আগে
২১ থেকে ২৫ মার্চ ট্রেনের অনলাইন টিকিট বিক্রি বন্ধ
বাংলাদেশ রেলওয়ের সার্ভিস প্রোভাইডার পরিবর্তনের কারণে নতুন দায়িত্ব গ্রহণের সুবিধার্থে আগামী ২০ মার্চ মধ্যরাত থেকে ২৫ মার্চ মধ্যরাত পর্যন্ত ট্রেনের অনলাইন টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকবে। এ সময় কাউন্টার থেকে ম্যানুয়ালি শতভাগ টিকেট বিক্রি হবে।
সোমবার রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন রেলভবনে এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি’র সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিটিং সিস্টেম পরিচালনার জন্য পাঁচ বছর মেয়াদী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর আগে টিকিট বিক্রির দায়িত্ব পালন করত সিএনএস নামক প্রতিষ্ঠান। উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সহজ কাজটি পায়।
নূরুল ইসলাম বলেন, রেলকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করার লক্ষে্ আমরা কাজ করছি। মানুষকে আরও ভালো সেবা দেয়ার উদ্দেশ্যে আমরা নতুন কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছি। কারণ রেলওয়ের টিকিট বিক্রিতে স্বচ্ছতা আনা ও সহজলভ্য করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
আরও পড়ুন: রেললাইনে গেম খেলার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের পা বিচ্ছিন্ন
মন্ত্রী উল্লেখ করেন, রেলওয়ের টিকিট বিক্রির নিজস্ব সক্ষমতা এখনও গড়ে ওঠেনি। কাজেই এক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
চুক্তি অনুযায়ী সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি প্রাথমিকভাবে চলমান সিসিএসআরটিএস সিস্টেমটি সচল রাখবে এবং আগামী ১৮ মাসের মধ্যে সিসিএসআরটিএস সিস্টেমটি বিআরআই টিএস দিয়ে প্রতিস্থাপিত হবে। আগামী ২০ মার্চ পর্যন্ত সিএনএস লিমিটেড রেলওয়ের আন্তনগর ট্রেনের কম্পিউটারাইজড টিকেটিং পরিচালনা করবে। পরবর্তীতে ৭৭টি স্টেশনে সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি কর্তৃক কম্পিউটার টিকিটিং সিস্টেম পুনরায় সচল রাখার জন্য সিস্টেমে কিছু কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে যার জন্য ন্যুনতম পাঁচ দিন সময় প্রয়োজন হবে।
টিকিট ইস্যু কার্যক্রম সফলভাবে সচল রাখার লক্ষ্যে ২১ মার্চ-২৫ মার্চ তারিখ পর্যন্ত পাঁচ দিন অনলাইনে এবং কাউন্টারে কম্পিউটারের মাধ্যমে টিকিট ইস্যু করার পরিবর্তে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে শতভাগ টিকিট ইস্যু করা হবে।
ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে পাঁচ দিনের পরিবর্তে দুই দিনের অগ্রীম টিকিট ইস্যু করা হবে এবং এক্ষেত্রে সকল টিকিট উন্মুক্ত থাকবে কোন কোটা বা আসন সংরক্ষিত থাকবে না।
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাইভেটকার উল্টে নিহত ১, আহত ৫
২ বছর আগে