বঙ্গবন্ধুর খুনি
শাস্তি এড়াতে বিদেশের আইনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিরা
বিদেশে আশ্রয় নেওয়া বঙ্গবন্ধুর ৫ খুনিকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের চেষ্টা এখনো সফল হয়নি। এদের মধ্যে দুইজন তাদের অপরাধের শাস্তি এড়াতে সেইসব দেশের আইনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে চলেছেন।
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের অন্যতম আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকরের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পথে আরও এক ধাপ এগিয়েছে।
আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর হয় ২০২০ সালের ১২ এপ্রিল। ফাঁসির আগ পর্যন্ত দীর্ঘদিন বিদেশে লুকিয়ে ছিলেন তিনি। এর আগে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি ফাঁসি কার্যকর হওয়া অন্য ৫ জন হলেন- সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ ও মহিউদ্দিন আহমেদ। এ ছাড়া বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার ১৪ বছর আগে ২০০১ সালে বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনি আজিজ পাশা জিম্বাবুয়েতে মারা যান।
পলাতক ৫ খুনি হলেন- খন্দকার আবদুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিন খান। এদের মধ্যে নূর চৌধুরী ও রাশেদ চৌধুরী কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন।
বিভিন্ন অজুহাতে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বাংলাদেশে হস্তান্তর না করে আশ্রয় দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সমালোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের ফিরিয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি দেশ দু’টির জন্য লজ্জার এবং আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।’
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের তথ্য দিলে পুরস্কার দেবে সরকার: মোমেন
মোমেন বলেন, ‘সব খুনিদের বিচারের মুখোমুখি করা হলে সরকার খুব খুশি হবে। কিন্তু আমরা এখনো তা করতে পারিনি। আমরা যদি তা করতে পারি, তাহলে বড় অর্জন হিসেবে মনে করব।’
তিনি বলেন, খুনিদের ফেরত পাঠানোর পদক্ষেপ নিতে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সরকারকে অনেক চিঠি দিয়েছে সরকার। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে চিঠিও লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিদের দুই খুনির বাসভবনের সামনে নিয়মিত বিক্ষোভ করার আহ্বান জানান মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের সম্পর্কে যারা তথ্য দিতে পারবে সরকার তাদের পুরস্কৃত করবে।
যারা ২১ বছর ধরে খুনিদের ব্যাপারে নীরব এবং খুনিদের পেছনে যারা ছিল তাদের মুখোশ উন্মোচন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা যদি তথ্য দিতে পারেন তবে আপনাদের পুরস্কৃত করা হবে। এই সমস্ত লোকদের মুখোশ খুলে দিতে হবে।’
কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের আইনের শাসন অত্যন্ত শক্তিশালী উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের খুনিদের আশ্রয় দেওয়া উচিত নয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর ছায়াকেও ভয় পেতেন খুনিরা: তথ্যমন্ত্রী
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে এই আত্মস্বীকৃত খুনিরা তাদের অপরাধের শাস্তি এড়াতে দেশগুলোর (কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র) আইনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। কোনো দেশই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় তাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি সমাধানে আগ্রহ দেখায়নি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের এই দাবির বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরী ও নূর চৌধুরীকে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওইসব দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস অথবা হাইকমিশনের মাধ্যমে এই আত্মস্বীকৃত খুনিদের সরাসরি দেশে ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়ে আসছে।
সাবরিন বলেন, সমস্ত উচ্চ পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বাংলাদেশ সরকার এই ন্যায়সঙ্গত দাবি উত্থাপন করেছে এবং মনে করিয়ে দিয়েছে- যদি অপরাধীদের সাজা থেকে ছাড় দেওয়া হয়, তবে এটি কেবল ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকে বাধাগ্রস্ত করে না, বরং ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত ব্যক্তি ও পরিবারের মানবাধিকারকে মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী হারজিৎ এস সজ্জনের সাম্প্রতিক বৈঠক, ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং বাংলাদেশ সফররত মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে খুনিদের প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশের দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে দিতে কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ নেই
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, বিষয়টি তাদের বিচার বিভাগের এখতিয়ারভুক্ত এবং এর সঙ্গে যুক্ত আইনি প্রক্রিয়ার জটিলতার কথা উল্লেখ করে জানানো হয়, তাদের বিচার বিভাগ বাংলাদেশের দাবি সম্পর্কে অবগত রয়েছে।
কানাডা বলছে, তারা স্বাধীন বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করে না। তবে, বিষয়টি (নূর চৌধুরীর নির্বাসন ইস্যু) সঠিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য যথাযথ স্থানেই রয়েছে।
কিছুদিন আগে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক বিষয়টি উত্থাপন করেন এবং আত্মস্বীকৃত খুনিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে হস্তান্তরের বিষয়ে দেশটির মতামত জানতে চান।
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘বিদেশি পলাতক অপরাধীদের সমর্পণের বিষয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করি না।’
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করা হবে। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার পরিবারের ১৮ সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
আরও পড়ুন: এটা তাদের জন্য লজ্জার: বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয় দেওয়া যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
১ বছর আগে
বঙ্গবন্ধুর খুনি নূরকে ফেরত দিতে কানাডাকে আবারও অনুরোধ ঢাকার
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত ও দোষী সাব্যস্ত খুনি নূর চৌধুরীকে ফেরত দিতে কানাডাকে আবারও অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরের ইন্দোনেশিয়া লাউঞ্জে কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী হারজিত সজ্জনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষীয় বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ আহ্বান জানান।
কয়েকদিন আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলসের কাছেও একই বিষয়টি তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: নূর চৌধুরীকে ফের ফেরত চেয়েছে ঢাকা
ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হাইকমিশনার সাংবাদিকদের জানান, ‘আমরা বুঝতে পারছি এটা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি এই বিষয়ে আমার দেশকে অবহিত করব।’
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন কানাডার মন্ত্রী হারজিত সজ্জনকে রোহিঙ্গা সমস্যার চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে কানাডার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
কানাডার মন্ত্রী সজ্জন রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে কানাডার সমর্থনের আশ্বাস দেন এবং বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা দেয়ায় বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর: কানাডা থেকে নূর চৌধুরীকে ফেরানোর ওপর জোর বাংলাদেশের
ড. মোমেন কানাডার মন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে কানাডার মন্ত্রী আমন্ত্রণ গ্রহণ করে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফর করবেন বলে জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এখন সরকারি সফরে নিউইয়র্কে রয়েছেন।
উল্লেখ্য নূর চৌধুরী প্রায় ৩০ বছর ধরে পলাতক হিসেবে কানাডায় বসবাস করছেন।
২ বছর আগে
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়াতে জিয়ার মতো বেগম জিয়াও অপরাধী: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বুধবার বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়াতে জিয়ার মতো বেগম জিয়াও অপরাধী।
৪ বছর আগে
বঙ্গবন্ধুর পলাতক ৫ খুনিকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে: আইনমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
৪ বছর আগে
মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনিকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আশাবাদী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আদালতের রায় কার্যকর করতে বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের মধ্যে অন্তত আরও একজনকে মুজিববর্ষে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার কাজ করছে বলে শুক্রবার জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
৪ বছর আগে
বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের ফাঁসি কার্যকর
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদের ফাঁসি শনিবার দিবাগত রাতে কার্যকর করা হয়েছে।
৪ বছর আগে
বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে বাধা নেই
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এর ফলে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পথে আর কোনো বাধা নেই।
৪ বছর আগে
বঙ্গবন্ধুর খুনি আব্দুল মাজেদ কারাগারে
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল মাজেদকে মঙ্গলবার কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
৪ বছর আগে