তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা আশা করছি মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আরেকজনকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করতে পারব।’
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের একজনকে সম্প্রতি ফাঁসি দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি আমরা সফল হব। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।’
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি এ সময় বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের অন্য সমস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সুরা ফাতেহা পাঠ, দোয়া ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
এছাড়া, তিনি জাতির পিতার সমাধি সৌধে সংরক্ষিত পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহধর্মিনী সেলিনা মোমেন, গোপালঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহেদা সুলতানা, পুলিশ সুপার সাইদুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুন্সী মো. আতিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল বাশার খায়ের, সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন শেখ, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. সোলায়মান বিশ্বাস, পৌর মেয়র শেখ আহমেদ হোসেন প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কিছু বিপথগামী সেনা সদস্য জাতির পিতাকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যা করে।
ন্যাক্কারজনক এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসমিরা হলেন- কর্নেল (বরখাস্ত) খন্দকার আবদুর রশিদ, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব্যাহতি প্রাপ্ত) শরিফুল হক ডালিম, মেজর (অব.) নূর চৌধুরী, মেজর (অব.) রাশেদ চৌধুরী ও রিসালদার মোসলেহউদ্দিন খান। সম্প্রতি ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
এর আগে, জাতির পিতার হত্যায় জড়িত বাকি পাঁচ পলাতক দণ্ডিত খুনিকে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার জন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের সমর্থন চেয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি জানান, পলাতক খুনিদের মধ্যে একজন যুক্তরাষ্ট্রে এবং অন্যজন কানাডায় আছেন।
২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত ১২ সাবেক সেনা কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে।
বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের মধ্যে নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহউদ্দিন- এ তিনজনের অবস্থান সরকার জানতে পারলেও রশিদ ও ডালিমের বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি।
লেবানন পরিস্থিতি
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ লেবাননে চাল, বিস্কুট ও শুকনো খাবারের মতো জরুরি খাদ্য সহায়তা পাঠাচ্ছে। যে বিমান পাঠানো হচ্ছে তা পুরোপুরি খাবারে বোঝাই করে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশিদের মরদেহ ফিরিয়ে আনতে ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে।
ড. মোমেন বলেন, সব ধর্মীয় বিধি মেনেই মরদেহগুলো সেখানে সমাহিত করা হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে কমপক্ষে চারজন বাংলাদেশি নিহত ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২১ সদস্য আহত হন।
এ ঘটনায় আরও কমপক্ষে ৮৬ প্রবাসী বাংলাদেশি আহত হয়েছেন এবং দুজন নাগরিক নিখোঁজ রয়েছেন।
নিহতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেহেদী হাসান রনি ও রাসেল মিয়া, মাদারীপুরের মিজান এবং কুমিল্লার রেজাউল।
ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১০০ জন নিহত ও কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।