সিরিয়া
তুরস্কে ফের ৫.৬ মাত্রার ভূমিকম্প, নিহত ১
দক্ষিণ তুরস্কে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) একটি ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা এএফএডি জানিয়েছে, ভূমিকম্পে কমপক্ষে একজন নিহত হয়েছে।
স্থানীয় একজন কর্মকর্তা বলেছেন, তিন সপ্তাহ আগের বিপর্যযের পর ফের ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে বেশ কিছু ভবন ধসে পড়েছে।
এএফএডি প্রধান ইউনুস সেজার সাংবাদিকদের বলেছেন, মালতয়া প্রদেশের ইয়েসিলিউর্ট শহরে ভূমিকম্পের ফলে আরও ৬৯ জন আহত হয়েছেন। এতে কমপক্ষে দুই ডজনের বেশি ভবন ধসে পড়েছে।
ইয়েসিলিউর্টের মেয়র মেহমেত সিনার হ্যাবারতুর্ক টেলিভিশনকে বলেছেন যে শহরের একটি চারতলা ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে একজন বাবা ও মেয়ে আটকা পড়েছেন। ওই দম্পতি মালামাল সংগ্রহ করতে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে প্রবেশ করেছিল।
এএফএডি প্রধান লোকদের ক্ষতিগ্রস্ত বিল্ডিংগুলিতে প্রবেশ না করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন যে শক্তিশালী আফটারশকগুলো একটি ঝুঁকি তৈরি করছে।
আরও পড়ুন: তুরস্কে নতুন করে ভূমিকম্পে নিহত ৩, আহত ২ শতাধিক
দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, সোমবারের ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মালতয়া প্রদেশের ইয়েসিলিউর্ট শহরে।
ইয়েসিলিউর্টের মেয়র মেহমেত সিনার হ্যাবারতুর্ক টেলিভিশনকে বলেছেন যে শহরের কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে।
মালতয়া ছিল তুর্কি প্রদেশের ১১টি প্রদেশের মধ্যে একটি, যেগুলো গত ৬ ফেব্রুয়ারি ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
এই ভূমিকম্পের ফলে তুরস্ক ও সিরিয়ার ৪৮ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি তুরস্কের এক লাখ ৭৩ হাজারেরও বেশি ভবন ধসে পড়েছে বা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা এএফএডি জানিয়েছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় ১০ হাজারটি আফটারশক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এ অঞ্চলে আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন: তুরস্কে ভূমিকম্পের ২৯৬ ঘণ্টা পর দম্পতি জীবিত উদ্ধার, মারা গেছে তাদের সন্তান
তুরস্কে ভূমিকম্প: ঘানার ফুটবল তারকা ক্রিশ্চিয়ান আতসুর মরদেহ উদ্ধার
১ বছর আগে
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্প পরবর্তী প্রধান অগ্রগতি
৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্প তুরস্ক এবং সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ধ্বংসাবশেষ থেকে জীবিত লোকদের খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা ক্রমাগত সঙ্কুচিত হয়ে আসছিল। এমতাবস্থায়ও অনুসন্ধান এবং উদ্ধারকারী দলগুলো বেঁচে থাকা আরও অনেক মানুষকে উদ্ধার করেছে৷
ভূমিকম্পের পর থেকে শনিবার পর্যন্ত মৌলিক অগ্রগতির দিকে নজর দেয়া হয়েছে এখানে।
হাতায় তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে
উদ্ধার অভিযানের ১৩তম দিনে হাতায় প্রদেশের রাজধানী আন্তাকিয়ার একটি বহুতল ভবনের নিচ থেকে একটি শিশুসহ তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় একটি টেলিভিশন জানিয়েছে, শহরের কেন্দ্রস্থলে কানাটলি বহুতল ভবনের ধ্বংসস্তুপের নীচে ২৯৬ ঘন্টা চাপা থাকার পর নারী, পুরুষ এবং শিশুকে অ্যাম্বুলেন্সে করে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ফুটেজে দেখা গেছে স্ট্রেচারে শুয়ে থাকা অবস্থায় তার হাতে একটি আইভি পুশ করেছেন চিকিৎসকরা।
তুরস্কের দুর্যোগ কবলিত অঞ্চলের ১১টি প্রদেশের মধ্যে হাতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় তুরস্কের নিহতের সংখ্যা ছিল ৩৯ হাজার ৬৭২ জন যা উভয় দেশে রেকর্ডকৃত মৃত্যুর সংখ্যা ৪৩ হাজার ৩৬০ পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়াল, তুরস্কে ঠিকাদার আটক
নিখোঁজ ঘানার তারকা খেলোয়াড়ের লাশ পাওয়া গেছে
অনুসন্ধান দলগুলো তুরস্ক ও সিরিয়ায় আঘাত হানা বিধ্বংসী ভূমিকম্পের সময় ধসে পড়া একটি ভবনের ধ্বংসাবশেষে ঘানার আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলোয়াড় ক্রিশ্চিয়ান আতসুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে শনিবার জানিয়েছেন তার ম্যানেজার মুরাত উজুনমেহমেত।
তুর্কি সুপার লিগ ক্লাব হাতায়স্পোরের হয়ে খেলা ফুটবল তারকার দেহাবশেষ পাওয়া গেছে বিলাসবহুল একটি ১২তলা ভবনের ধ্বংসস্তুপ থেকে। তিনি হাতাই প্রদেশের আন্তাকিয়া শহরে সেসময় অবস্থান করছিলেন।
ম্যানেজার মুরাত বেসরকারি সংবাদ সংস্থা ডিএইচএকে বলেছেন, ‘আতসুর প্রাণহীন দেহটি ধ্বংসস্তূপের নিচে পাওয়া গেছে। এই মুহুর্তে, তার জিনিসপত্র সরানো হচ্ছে।’
৬ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক এবং উত্তর সিরিয়ায় সাত দশমিক আট মাত্রার ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা শুক্রবার পর্যন্ত ৪৩ হাজার ছাড়িয়েছে। অনুসন্ধান দলগুলো আরও লাশ খুঁজে পাওয়ায় এই সংখ্যা নিশ্চিতভাবেই বাড়বে।
৩১ বছর বয়সী আতসু আগে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব চেলসি, নিউক্যাসল ইউনাইটেড, এভারটন এবং বোর্নেমাউথের হয়ে খেলেছিলেন। গত বছরের শেষের দিকে সৌদি দল থেকে হাতাসপোরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন তিনি।
আরও পড়ুন: তুরস্কে ভূমিকম্পের ৮ দিন পর আরও জীবিত মানুষ উদ্ধার
হাতাসপোর ক্লাবটি টুইট করে বলেছে, আতসুর লাশ ঘানায় পাঠানো হচ্ছে।‘দুঃখ প্রকাশের কোনো ভাষা নেই আমাদের।’
ভূমিকম্প আঘাত হানার একদিন পরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে আতসুকে একটি ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত টেনে এনে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ক্লাব অবশ্য কয়েকদিন পরে ঘোষণা করেছিল যে আতসু এবং ক্লাবের ক্রীড়া পরিচালক তানের সাভুত এখনও নিখোঁজ। সাভুতকে অবশ্য এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ভূমিকম্পের সময় আতসু এবং সাভুত যেই বিলাসবহুল ১২ তলা রোনেসান রেজিডান্স ভবনে ছিলেন। সেই ভবনের ঠিকাদারকে এক সপ্তাহ আগে ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে। তিনি মূলত দেশ ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
আরও পড়ুন: তুরস্কে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে ১ বিলিয়ন ডলার সহায়তার আহ্বান জাতিসংঘের
১ বছর আগে
তুরস্কে ভূমিকম্পের ৮ দিন পর আরও জীবিত মানুষ উদ্ধার
গত সপ্তাহে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত তিনটি প্রদেশে ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা মানুষদের উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
মঙ্গলবার অলৌকিকভাবে জীবিত আরও একজনের সন্ধান পায় উদ্ধারকর্মীরা।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক এবং উত্তর সিরিয়ায় সাত দশমিক আট এবং সাত দশমিক পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্পে ইতোমধ্যে মৃতের সংখ্যা ৩৫ হাজার পেরিয়ে গেছে। এবং উদ্ধারকর্মীদের চলমান অনুসন্ধান কার্যক্রমে আরও লাশ খুঁজে পাওয়ায় সংখ্যাটি নিশ্চিতভাবেই বৃদ্ধি পাবে।
তুর্কি টেলিভিশন মঙ্গলবারও উদ্ধারকাজ সম্প্রচার অব্যাহত রেখেছে। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন জীবিতদের খোঁজার পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
আদিয়ামান প্রদেশে ১৮ বছর বয়সী মুহাম্মাদ ক্যাফার সেটিনের কাছে উদ্ধারকারীরা পৌঁছেছিল। একটি বিপজ্জনক ভবন থেকে উদ্ধার চেষ্টা করার আগে চিকিৎসকরা তাকে আইভি দিয়ে তরল খাবার দিয়েছিলেন। উদ্ধারকারীরা কাজ করার সময় ভবনটি আরও ভেঙে পড়েছিল।
তার চাচা বললেন, ‘আমরা খুব খুশি,’ চিকিৎসকরা তাকে একটি স্ট্রেচারে অক্সিজেন মাস্কসহ ঘাড়ের বন্ধনী বেঁধে রেখেছিলেন এবং ১৯৯ ঘন্টা পর তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
আরও পড়ুন; ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়াল, তুরস্কে ঠিকাদার আটক
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছে কেন্দ্রীয় কাহরামানমারাসে ধ্বংস হওয়া একটি ভবন থেকে প্রায় ১৯৮ ঘন্টা পরে মঙ্গলবার অন্য দু'জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
হাবের্তুর্ক টেলিভিশন জানিয়েছে, ১৭ বছর বয়সী মুহাম্মাদ এনেস নামে এক কিশোরকে একটি গরম কম্বলে মুড়িয়ে স্ট্রেচারে করে একটি অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। কয়েক ডজন উদ্ধারকারী ঘটনাস্থলে কাজ করছিল এবং তুর্কি সৈন্যরা তাদের উদ্ধারের পরে জড়িয়ে ধরে হাততালি দিয়েছিল।
উদ্ধারকারীরা তখন অন্যদের অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়ার জন্য শান্ত থাকতে বলে এবং চিৎকার করে বলেছিল ‘কেউ কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছে?’
উদ্ধারকৃতদের স্বাস্থ্যের অবস্থা স্পষ্ট নয়।
হাতায় প্রদেশে ধ্বংসস্তূপের সামনে অপেক্ষা করার সময় অত্যন্ত শোকাহত সেনগুল আবালিওগ্লু দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, তিনি তার বৃদ্ধ বোন এবং চার ভাগ্নেকে হারান। ‘মৃত বা জীবিত এটা কোন ব্যাপার না, আমরা কেবল আমাদের লাশ চাই যাতে তাদের অন্তত একটি কবর থাকে এবং আমরা তাদের কবর দিই।’
ভূমিকম্পে লক্ষ লক্ষ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য এবং সরঞ্জাম সরবরাহ জরুরি বলে সোমবার ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ। এরপর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ তুরস্ক থেকে দেশটির বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিমে দু’টি নতুন ক্রসিং পয়েন্ট খুলতে সম্মত হয়েছেন।
বাব আল-সালাম এবং আল রাইয়ের ক্রসিংগুলো প্রথমত তিন মাস সময়ের জন্য খোলা হবে। অদ্যাবধি জাতিসংঘকে কেবলমাত্র বাব আল-হাওয়াতে একটি একক ক্রসিংয়ের মাধ্যমে ইদলিব অঞ্চলে সহায়তা সরবরাহ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এক সপ্তাহ আগে ভূমিকম্পের পর থেকে সিরিয়ার বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আরও সাহায্য এবং ভারী সরঞ্জাম পাওয়ার জন্য জাতিসংঘের তীব্র চাপ রয়েছে। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের অন্যান্য জীবিত স্বজনদের উদ্ধারের উপায় নেই এবং মৃতের সংখ্যা বাড়ছে।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে ৩৫ টন খাদ্য নিয়ে প্রথম সৌদি ত্রাণবাহী একটি বিমান সরকার নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পো বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সৌদি আরব তুরস্ক এবং সিরিয়াকে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য করার ঘোষণা দিয়েছে। মঙ্গলবারের আগে, সৌদি বিমানগুলো তুরস্কে অবতরণ করেছে। সৌদি ট্রাকগুলো বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত পিছিয়ে পড়া উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় কিছু সহায়তাও সরবরাহ করেছে।
জর্ডান, মিশর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি আরব দেশ সরকার নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ায় আরও বেশ সাহায্য বোঝাই বিমান পাঠিয়েছে। এছাড়া আলজেরিয়া, ইরাক, ওমান, তিউনিসিয়া, সুদান এবং লিবিয়া রাজধানী দামেস্কে সাহায্য পৌঁছে দিয়েছে।
তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায় জানিয়েছেন, সোমবার গভীর রাতে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল কাহরামানমারাস এবং আদিয়ামানসহ হাতায় প্রদেশে উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে। বাকি সাতটি প্রদেশে উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
ভূমিকম্পে তুরস্কের ১০টি প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেখানে প্রায় এক কোটি ৩৫ লাখ মানুষ বাস করে। পাশাপাশি উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার একটি বিশাল এলাকায়ও লক্ষাধিক মানুষ বাস করে।
ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরাও বিধ্বস্ত শহরগুলোর মধ্যে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। তারা অনেক ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে বাইরে ঘুমাচ্ছে। এই অঞ্চলের বেশিরভাগ পানির ব্যবস্থা কাজ করছে না। এবং সিস্টেমের ক্ষতি দূষণের ঝুঁকি বাড়ায়। তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন যে পানি সঞ্চালন ব্যবস্থার কয়েক ডজন পয়েন্ট থেকে নেয়া নমুনাগুলো ‘মাইক্রোবায়োলজিক্যাল পরীক্ষায় অনিরাপদ’ দেখা যাওয়ায় মৌলিক চাহিদাগুলো অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে চলেছে।
আরও পড়ুন: তুরস্কে আরও একজনকে জীবিত উদ্ধার করল বাংলাদেশ দল, ৯ জনের লাশ পুনরুদ্ধার
পরিবেশ ও নগরায়ন মন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রায় ৪১ হাজার ৫০০ এর বেশি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে বা এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে সেগুলো ভেঙে ফেলতে হবে। ওই ভবনগুলোর নিচে লাশ রয়েছে এবং নিখোঁজের সংখ্যা এখনও স্পষ্ট নয়।
তুরস্কের অনেকেই বিশাল ধ্বংসযজ্ঞের জন্য ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণকে দায়ী করেন এবং কর্তৃপক্ষ ধসে পড়া ভবনের সঙ্গে জড়িত ঠিকাদারদের শনাক্ত করা অব্যাহত রেখেছে।
তুরস্ক যে ভবন নির্মাণ আইন চালু করেছে তা ভূমিকম্প-ইঞ্জিনিয়ারিং মান নিশ্চিত করে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে কোডগুলো খুব কমই প্রয়োগ করা হয়।
সোমবার পর্যন্ত তুরস্কে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৬৪৩ জনে। কর্মকর্তারা প্রতিক্রিয়ার প্রথম সপ্তাহ থেকে মৃত্যুর সংখ্যার আপডেটের পুনরাবৃত্তির হার হ্রাস করেছে। এখন দিনে একবার বা দুবার বড় সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করছে।
উদ্ধারকারী দল হোয়াইট হেলমেট’র তথ্যানুসারে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে নিহতের সংখ্যা দুই হাজার ১৬৬ জনে পৌঁছেছে।
এছাড়া দামেস্কে সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুসারে, সরকার-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এক হাজার ৪১৪ জন মারা গেছে। সিরিয়ায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৫৮০ জনে।
মঙ্গলবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের মন্ত্রিসভার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প: ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় বেঁচে যাওয়া হাজারো মানুষ
১ বছর আগে
একটু উষ্ণতার জন্য লড়ছে তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া মানুষেরা
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্প ও সিরিজ আফটারশকে ১৯ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। দুর্ঘটনার তিনদিন পর বৃহস্পতিবার তীব্র ঠান্ডা ও ক্ষুধা-তৃষ্ণায় ধ্বংসস্তূপের মাঝে আটকে পড়া জীবিতদের বেঁচে থাকার আশা ক্ষীণ হয়ে পড়েছে।
এখনও কয়েক হাজার মানুষ ক্যাম্পফায়ারের চারপাশে জড়ো হয়ে খাবার ও পানির জন্য অপেক্ষা করছে।
উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও বেশি লোককে জীবিত বের করার জন্য তাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
তুরস্কের আন্তাকিয়া শহরে কয়েক ডজন মানুষ শিশুদের পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রী বিতরণকারী একটি ট্রাকের সামনে সাহায্যের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে।
দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া আহমেত তোকগোজ বিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
যদিও ভূমিকম্পে ঘরবাড়ি হারানো কয়েক হাজার মানুষ তাঁবু, স্টেডিয়াম এবং অন্যান্য অস্থায়ী বাসস্থানে আশ্রয় পেয়েছে। তবে এখনও অনেক মানুষ সোমবারের ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের পর থেকে বাইরে রাত কাটাচ্ছেন।
তিনি বলেন, বিশেষ করে এই ঠান্ডায় এখানে বসবাস করা সম্ভব নয়। ‘লোকেরা ক্যাম্পফায়ারের চারপাশে কিছুটা উষ্ণতা পায়, তবে ক্যাম্পফায়ারগুলো পর্যাপ্ত উষ্ণতা দিতে অপ্রতূল ... যদি মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে মারা না যায়, তবে তারা ঠান্ডায় মারা যাবে।’
এদিকে, ভূমিকম্পের পর বৃহস্পতিবার সকালে তুরস্ক থেকে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় জাতিসংঘের সাহায্য পাঠানো প্রথম ট্রাক প্রবেশ করেছে। ছোট কিছু সাহায্য সংস্থা কিছু পণ্য পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্প: বাংলাদেশে ৯ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
শীতকালীন আবহাওয়া ও ভূমিকম্পের ফলে রাস্তা এবং বিমানবন্দরে হওয়া ক্ষতি, ইতোমধ্যে সিরিয়ায় এক দশকেরও বেশি গৃহযুদ্ধের ফলে বিপর্যস্ত অঞ্চলকে আরও বেশি বিধ্বস্ত করে ফেলেছে।
গৃহযুদ্ধ সিরিয়ার লক্ষাধিক লোককে বাস্তুচ্যুত করেছে এবং দেশটির অনেক মানুষ বেঁচে থাকার জন্য মানবিক সাহায্যের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। পাশাপাশি আরও কয়েক লাখ মানুষ আশ্রয়ের খোঁজে সীমান্ত দিয়ে তুরস্কে পাড়ি জমায়।
অন্যদিকে, তুরস্কের কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন যে দুর্ঘটনার পর উদ্ধার তৎপরতা খুব ধীর ছিল।
প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সরকার এই সংকটে অব্যবস্থাপনা করেছে এমন কোনো অভিযোগ যদি ওঠে, তবে আগামী মে মাসে হতে যাওয়া নির্বাচনে তিনি কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি হবেন।
তবে এরদোয়ান বৃহস্পতিবারও ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকা সফর করে সমালোচনা কমানোর চেষ্টা করেছেন।
এদিকে, সীমান্তের উভয় পাশে জরুরি কর্মীরা জীবিতদের খুঁজে বের করতে রাতভর কাজ করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া বা মৌলিক প্রয়োজনীয়তা পেতে অক্ষমদের বেঁচে থাকার আশা দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে।
তুরস্কের এলবিস্তান শহরে উদ্ধারকারীরা মানববন্ধন করেন।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্প: তুরস্ক, সিরিয়ায় নিহত ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে
১ বছর আগে
সিরিয়াতেও উদ্ধারকারী দল পাঠাতে পারে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
সিরিয়ায় উদ্ধারকারী দল পাঠানোর বিষয়ে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বাংলাদেশ। কারণ, ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং আফটারশকের পর দুর্ঘটনা কবলিতদের জীবন বাঁচাতে উদ্ধারকারীরা সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবররিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি আমাদের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।’
সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, উদ্ধার হওয়া দুই বাংলাদেশি ছাত্র নূর-ই-আলম ও মো. গোলাম সৈয়দ রিংকু চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরাইলি হামলায় সিরিয়ার বিমানবন্দরের রানওয়ে ক্ষতিগ্রস্ত
মুখপাত্র বলেছেন, ‘তুরস্কে বাংলাদেশ মিশন তাদের এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে।’
বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই তুরস্কে ৬১ সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে।
সেহেলি সাবরিন বলেন, তুরস্কের সবচেয়ে ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত অঞ্চলে আটকে পড়া ১৯ বাংলাদেশিকে বৃহস্পতিবার আঙ্কারায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃত্যু বেড়ে ৬৪০
১ বছর আগে
তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্প, নিহত ১০০
তুরস্কের দক্ষিণ-পূবাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। দেশটির সিরিয়া সীমান্তবর্তী এলাকা গাজিয়ানটেপে এই এই ভূমিকম্প আঘাত হানে।
সোমবার এক বিবৃতিতে প্রাণঘাতী এই ভূমিকম্পে তুরস্ক এবং সিরিয়ার কর্মকর্তারা নিহতের সংখ্যা ১০০ জনের বেশি উল্লেখ করেছেন। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।
নিহতদের মধ্যে তুরস্কের মালত্যায় কমপক্ষে ২৩ জন, সানলিউরফায় ১৭ জন, দিয়ারবাকিরে ছয়জন এবং ওসমানিয়েতে আরও পাঁচজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। সিরিয়ার সীমান্ত জুড়ে অন্তত ৪২ জন নিহত হয়েছে, সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৬৮
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান এক টুইটে বলেছেন, ভূমিকম্পে আক্রান্ত এলাকায় আমাদের উদ্ধার অভিযান চলছে। আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপন করতে পারবো।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলাইমান সুয়েলু জনগণকে বিধ্বস্থ ভবনে প্রবেশ না করতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের প্রধান কাজ হলো ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন থেকে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া।
মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে যে সাত দশমিক আট মাত্রার কম্পনটি স্থানীয় সময় ০৪টা ১৭ মিনিটে (০১:১৭ জিএমটি) গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার (১১ মাইল) গভীরতায় আঘাত হানে।
আরও পড়ুন: পূর্ব ইন্দোনেশিয়া ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল
রাজধানী আঙ্কারা এবং তুরস্কের অন্যান্য শহর এবং পুরো অঞ্চল জুড়ে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল।
বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।এতে অনেক মানুষ সেখানে আটকে থাকতে পারে।
শহরের একটি শপিং মল ধসে পড়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন দিয়ারবাকিরের বিবিসির তুর্কি সংবাদদাতা।
গাজা উপত্যকায় বিবিসির প্রযোজক রুশদি আবুলউফ বলেছেন যে তিনি যে বাড়িতে ছিলেন সেখানে প্রায় ৪৫ সেকেন্ড কাঁপুনি ছিল।
তুর্কি ভূমিকম্পবিদরা সাত দশমিক চার মাত্রার ভূমিকম্পের শক্তি পরিমাপ করেছেন।
তারা বলেছে যে এই অঞ্চলে মাত্র কয়েক মিনিট পর দ্বিতীয় কম্পন আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন: ইরানে ৫ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প
১ বছর আগে
সিরিয়ায় হামলায় নিহত ১০, কুর্দি বাহিনীর হাতে ৫২ জঙ্গি গ্রেপ্তার
শুক্রবার পূর্ব সিরিয়ায় তেল শিল্পের কর্মীদের বহনকারী বাসে একটি জঙ্গি রকেট হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে।
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনী ঘোষণা করেছে যে তারা ইসলামিক স্টেট গ্রুপের স্লিপার সেলের বিরুদ্ধে অভিযানে ৫২ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে।
সিরিয়ার পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের মতে, রকেটটি পূর্ব দেইর এল-জোর প্রদেশের আল-তাইম গ্যাসক্ষেত্রে আঘাত হানে। তাৎক্ষণিকভাবে কোনো দায় স্বীকার করেনি কেউ। তবে যুদ্ধ বিরোধী ব্রিটেন-ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী বলেছে যে ওই হামলার পিছনে আইএস জড়িত।
অবজারভেটরিও রকেট হামলায় নিহতের সংখ্যা বেশি বলে জানিয়েছে, শেষ পর্যন্ত ১২ জন শ্রমিক নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২২
শুক্রবার মার্কিন সমর্থিত এবং কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক বাহিনী বলেছে যে তাদের অভিযানগুলো নববর্ষের প্রাক্কালে পরিকল্পিত একটি আক্রমণকে ব্যর্থ করেছে বলে জানা গেছে। বাহিনীর একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইএস জঙ্গিরা আবাসিক এলাকা এবং খামারগুলোতে লুকিয়ে ছিল।
বছরব্যাপী মার্কিন-সমর্থিত মহড়া ইরাক ও সিরিয়ায় জঙ্গিদের আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণকে চূর্ণ করতে সফল হয়েছে। কিন্তু আইএস যোদ্ধারা গুপ্ত বাহিনী টিকিয়ে রেখেছে এবং এমন হামলা চালিয়েছে যা গত মাসগুলোতে বহু ইরাকি ও সিরিয়ানকে হত্যা করেছে।
বৃহস্পতিবার সিরিয়ার কুর্দি-নেতৃত্বাধীন বাহিনী তাদের অভিযানের ঘোষণা দিয়েছে, আইএস হামলার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে যে ‘অপারেশন আল-জাজিরা থান্ডারবোল্ট’ এর লক্ষ্য আল-হোলে এবং তাল হামিস এলাকায় কাছাকাছি গুপ্ত বাহিনীকে লক্ষ্য করা।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় মার্কিন বিশেষ বাহিনীর অভিযানে নিহত ১৩
২০১১ সাল থেকে সিরিয়া একটি রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধে নিমজ্জিত হয়েছে। যা আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক শক্তিগুলোর ছড়িয়ে পড়ে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদ দেশের বেশিরভাগ অঞ্চরের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করেছেন। তবে এর উত্তরের কিছু অংশ এখনো বিদ্রোহীদের পাশাপাশি তুর্কি ও সিরিয়ান কুর্দি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এছাড়াও সিরিয়ায় প্রায় ৯০০ মার্কিন সৈন্য আইএসের বিরুদ্ধে কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীকে লড়াইয়ে সহযোগিতা করছে।, বেশিরভাগই কুর্দি নিয়ন্ত্রণাধীন উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার কিছু অংশে প্রায়শই আইএস জঙ্গিরা হামলা চালায়।
বৃহস্পতিবার ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছে যে ২০২২ সালে সিরিয়া এবং ইরাকে আইএসের বিরুদ্ধে প্রায় ৩১৩টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এর বেশিরভাগই কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর সহযোগিতায়।
সেন্টকমের বিবৃতি অনুসারে, সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট গ্রুপের ২১৫ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ৪৬৬ জন নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরাইলি হামলায় সিরিয়ার বিমানবন্দরের রানওয়ে ক্ষতিগ্রস্ত
১ বছর আগে
ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৫ সিরীয় সেনা নিহত: সানা
সিরিয়ার রাজধানীর দক্ষিণের দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও পাশ্ববর্তী সেনা চৌকিতে ইসরায়েলি হামলায় পাঁচ সেনা নিহত হয়েছে। শনিবার সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিরিয়ান আরব নিউজ এজেন্সি (সানা) এ তথ্য জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সামরিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সানা জানায়, শুক্রবার মধ্যরাতের পরে ওই হামলা করা হয়। এর ফলে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বার্তা সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, কিছু ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর আগেই গুলি করে ভূপাতিত করা হয়।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শীর্ষ জঙ্গী নিহত
ব্রিটেন ভিত্তিক বিরোধী যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, হামলায় পাঁচ সিরীয় সৈন্য এবং ইরান সমর্থিত গ্রুপের দুই সদস্য নিহত হয়।
এ বিষয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তারা বলেছে, ‘বিদেশি প্রতিবেদনের’ ব্যাপারে তাদের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।
ইসরায়েল সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের আলেপ্পো বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর ১০ দিন পর দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলা চালিয়েছে।
১০ জুন দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইসরায়েলি বিমান হামলার ফলে অবকাঠামো ও রানওয়ের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয় এবং মূল রানওয়েটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সংস্কার কাজ শেষে দুই সপ্তাহ পর বিমানবন্দরটি চালু করা হয়।
আরও পড়ুন: ‘ভুল’ করে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ: ভারতীয় বিমানবাহিনীর ৩ কর্মকর্তা বরখাস্ত
ইসরায়েল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত অংশগুলোকে লক্ষ্য করে শত শত হামলা চালিয়েছে। তবে তারা খুব কম হামলার কথা স্বীকার করেছে।
ইসরায়েল অবশ্য স্বীকার করেছে যে তারা লেবাননের হিজবুল্লাহর মতো ইরান-মিত্র জঙ্গি গোষ্ঠীর ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। যারা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের বাহিনীকে সমর্থন করে হাজার হাজার যোদ্ধা পাঠিয়েছে।
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে বৃহত্তর ছায়াযুদ্ধের মধ্যেই এই হামলার এই ঘটনা ঘটেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে,ইরানি অস্ত্র সিরিয়ায় প্রবেশ করার কারণেই দামেস্ক ও আলেপ্পোর বিমানবন্দরে হামলা চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আল-কায়েদা প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরি নিহত
২ বছর আগে
সিরিয়ায় মার্কিন বিশেষ বাহিনীর অভিযানে নিহত ১৩
সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ইদলিব প্রদেশের আতমেহ শহরে বৃহস্পতিবার বড় ধরনের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালিয়েছে মার্কিন বিশেষ বাহিনী। এ অভিযানে ছয় শিশু ও চার নারীসহ ১৩ জন নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তুর্কি সীমান্তের কাছে আতমেহ শহরে চালানো অভিযানটি দুই ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হয়। এ এলাকায় সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষজন থাকেন। তবে এ অভিযানের লক্ষ্য অস্পষ্ট।
পেন্টাগনের প্রেস সচিব জন কিরবি এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলেন, তাদের মিশন সফল হয়েছে। এ সময় কোনো মার্কিন বাহিনীর সদস্যের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২২
২০১৯ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে মার্কিন হামলায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর নেতা আবু বকর আল-বাগদাদি নিহত হওয়ার পর এটিই প্রদেশটিতে চালানো সবচেয়ে বড় অভিযান।
ইদলিব প্রদেশটি ব্যাপকভাবে তুরস্ক-সমর্থিত যোদ্ধাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তবে এটি আল-কায়েদার ঘাঁটি এবং এর বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার আবাসস্থল। এছাড়া অন্য জঙ্গিরাও এই অঞ্চলে রয়েছে।
সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্স বা হোয়াইট হেলমেট নামে একটি সংস্থা জানায়, মার্কিন এ অভিযানে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ছয় শিশু ও চারজন নারী রয়েছেন।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় বিমান হামলায় ২৯ তুর্কি সেনা নিহত
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসও বলেছে, মার্কিন এ হামলায় চার শিশু ও দুই নারীসহ ১৩ জন নিহত হয়েছেন।
২ বছর আগে
‘আফগানিস্তান’ কোনো একক রাষ্ট্র নয়
আফগনিস্তান, ইরাক, ইরান, সিরিয়া অঞ্চলের অস্থিরতা কমবে না যতক্ষণ না পশ্চিমাদের সাথে চীনের দ্বন্দ্বের শেষ না হয়। এই অঞ্চলের প্রতিটি দেশেই মার্কিনিরা আগ্রাসন চালায় এবং তারা বিপদে আছে। আর আফগানিস্তানে রাশিয়া আগ্রাসন চালিয়ে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হারায়। প্রতিটি দেশে এর প্রক্রিয়ায় উগ্রবাদ জন্মায়।
অর্থনৈতিকভাবে মার্কিনিরা আগের মতো সবল নেই। কিন্তু যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবে। তবে তারা তা করতে চায় না। যে খরচ তা আজকের দুনিয়ায় সামলানো কঠিন। ‘ঠান্ডা যুদ্ধের’ কালে অর্থাৎ সোভিয়েত ইউনিয়ন / রাশিয়ার সাথে এই যুদ্ধ ছিল আদর্শের বা ইডিওলজিক্যাল। সমাজতন্ত্র বনাম পুঁজিবাদ। বিশ্বব্যাপী সমাজতন্ত্রের পতন হয়েছে। কিন্তু তার মধ্য থেকে রাশিয়া উঠে এসেছে এবং আজকের বিশ্ব দ্বন্দ্বের নায়ক হয়ে উঠেছে। ধারাবাহিকতায় মার্কিন বিরোধী। এটাই উগ্রবাদের উত্থানের পটভূমি। এই দুই শক্তির দ্বন্দ্ব।
চীন ?
২০ বছর আগের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের দলিল দেখলে পরাশক্তি হিসেবে চীনের কোনো রেফারেন্স পাওয়া যাবে না। কিন্তু গত ২০ বছরে বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। দুনিয়ায় যার ভিত্তি চীনের মৌলিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। যার নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রের হাতে। যদিও চীন সেই অর্থে ‘সমাজতন্ত্রিক’, প্রশাসনিকভাবে কমিউনিস্ট পার্টির অধীনে। কিন্তু তার অর্থনীতি বাজার ভিত্তিক পুঁজিবাদী। এটি সনাতনী মার্ক্সবাদী ধারণাকে এতটাই বিরোধিতা করে যে এটিকে একটি নব্য ব্যবস্থা বলাই ভালো। তারা উঠে এসেছে প্রবলভাবে। তাই মার্কিনিদের প্রধান লড়াই তাদের সাথেই এবং সেটি বিশ্ব বাজার দখলের। আমেরিকা সেটা আগে অস্ত্র দিয়ে করতো। কিন্তু এখন দেখছে সেটা পারে না বা হয় না। তাই তারা বিশ্বের যত ঝামেলা তৈরি করেছিল বিশেষ করে ‘ইসলামী উগ্রবাদ’ ঠেকাতে সেটা থেকে সরে আসতে চাইছে। তারা চায় নিজেদের বাজার সামলাতে। অতএব এই উগ্রবাদ কালকেই চলে যাবে না।
উগ্রবাদ
এই উগ্রবাদী শক্তি তৈরি হয়েছে ক্রিয়া নয় প্রতিক্রিয়া হিসেবে। যেখানেই মার্কিনিরা অথবা রাশিয়া দখল করেছে সেখানেই এদের উত্থান। তারা ইসলামী জঙ্গিবাদ বলে ব্র্যান্ডিং করে -মার্কিনিরা ও তাদের মতপন্থীরাই এটা বেশি বলে - কিন্তু এর শুরু আত্নরক্ষায়। মানুষের মনের ভাবনায় যেটা ‘দেশ’। তার ওপর আঘাত হানলে মানুষের তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। মাটি থেকে শত্রু উচ্ছেদের মূল উদ্দেশ্য, কোনো বিশেষ কায়দায় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা নয়। ওই অঞ্চলের মানুষের ‘ইসলামী’ সংস্কৃতিও রাজনীতির অংশ। আফগানিস্তানে যেমন তালেবানদের মূল চর্চা পুশতুনবাদ বা গোত্রবাদ। এটির চর্চা চলে ইসলামের নামে। কাবুল বিমানবন্দরে আত্মঘাতী বোমা হামলা অনেককে হতবাক করেছে। কারণ সবার ধারণা ছিল সব ‘উগ্রবাদী ভাই ভাই’। কিন্তু সেটা যে নয় তার প্রমাণ আগেও ছিল। মার্কিনিরা কখনো বলেনি, আর সুশীল -লিবারেলরাও চায় এই ধারণা চলুক। কিন্তু এই আক্রমণ প্রমাণ করে প্রতি রাষ্ট্রের ভেতরে দ্বন্দ্ব আছে এবং এর শক্তির প্রকাশ ঘটে সহিংসতায়। আফগানিস্তান বা ইরাকের যে রাজনীতি তা অনেকটাই এরকম। অর্থাৎ আফগানিস্তানে তালেবান নিজ শক্তিতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে বলে মনে হয় না। একদিকে মার্কিনিদের পলায়ন, অন্য দিকে রাশিয়া -চীনের প্রবেশ এই পরিসরে।
আফগানিস্তানসহ গোটা অঞ্চলে রক্তপাত বন্ধ হওয়ার সহসা সম্ভাবনা কম। মার্কিনিরা চাইবে আফগনিস্তানে ঝামেলা হোক যাতে তালেবান/রাশিয়া -চীন বিপদে থাকে। ঠিক একই কারণে তারা ক্রমেই সরব হবে অস্ত্রের ভাষায় উগ্রবাদের বিরুদ্ধে। এই যুদ্ধে উগ্রবাদীরা জিতবে না হারবে সেটা কথা নয়, আফগনিস্তানে শান্তির সম্ভাবনা কম। পুরাতন রাষ্ট্র গঠন ভাবনা বাদ দেয়া দরকার। এইসব রাষ্ট্রগুলো একক নয়, এতগুলো বিবাদমান গোষ্ঠীর একসাথে থাকা মানে ঝামেলা বাড়ানো। হয়তো আফগান বলে কেউ নেই, পুশতুন, খোরাসানি, ইত্যাদি আছে। তাই এক রাষ্ট্র বানাতে গেলে বিপদ হবেই। তারা প্রথমে গোষ্ঠী, শেষেও তাই। এটি কোনো একক জনগোষ্ঠী নয়, অনেকগুলো জনগোষ্ঠীর একসাথে বসবাস মাত্র। তবে সেই নয়া রাষ্ট্র অবধারিত হলেও কবে হবে এখনো বলা যাচ্ছে না। যুদ্ধ চলবেই, উগ্রবাদ চলবেই, যুক্তরাষ্ট্র দুর্বল হবেই, চীন ও তার মিত্ররা সবল হবেই। পশ্চিম থেকে পূর্বের দিকে অর্থনীতি সরে আসছে। ওটাই মূল কথা, বাকি সব এই মহা পরিবর্তনের সূচক বলা যায়। কি হবে এখনো পরিষ্কার নয়।
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি
আরও পড়ুন: তালেবান মাস্ক না পরলে কি কিছু এসে যায়
আমার আফগান স্টুডেন্টরা ও ১৯৭১ : ব্যক্তিগত অনুভূতি
৩ বছর আগে