জীবন-জীবিকা
শাপলা তুলে জীবিকা চলে মাগুরার রহিতোষ মল্লিকদের
মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের নরপতি গ্রামের তালতলা পাড়ার রহিতোষ মল্লিক। তিনি প্রতি বুধবারে ভোর না হতেই বাড়ির পাশের নরপতির বিলে নেমে পড়েন। নৌকায় চড়ে একটি একটি একটি করে শাপলা তোলেন। এক সাথে পাঁচটি করে এক আঁটি বাঁধেন।
প্রতিদিনি প্রায় ২০০ থেকে ৫০০ শাপলা তোলা হলেই উপজেলা সদর আড়পাড়ার হাটে নিয়ে আসেন এবং বিক্রি করেন। আর এই টাকা দিয়েই স্ত্রী ও দুই ছেলেসহ পরিবারের ভরণপোষণ ও স্ত্রী সন্তানদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে থাকেন।
আরও পড়ুন: এক পায়ে দড়ি লাফে জোড়া বিশ্ব রেকর্ড ঠাকুরগাঁওয়ের রাসেলের
রহিতোষ মল্লিক বলেন, ‘আমার জমিজমা তেমন একটা নাই। সারা বছর পরের ক্ষেতে কামলা করে সংসার চালাই। তবে বর্ষাকাল হলে নরপতির বিল থেকে নাইল (শাপলা) তুলে মোটামুটি কিছু পয়সা আয় করে পরিবারের ভরণ-পোষণের চেষ্টা করি।’
এমনই অপর একজন হলেন সীতারানী বিশ্বাস, যিনি উত্তর ধর্মসীমা গ্রামের প্রতিবন্ধী চিতেন বিশ্বাসের স্ত্রী। দুই মেয়েসহ এই পরিবারে মোট চারজন সদস্য।
তিনিও হাটবার হলেই রাত না পোহাতেই নৌকায় করে নেমে পড়েন বাড়ির পাশে বুরুলিয়ার বিলে। বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করেন কয়েক শ’ শাপলা। একসাথে পাঁচটি করে বাধেন এক আঁটি। প্রতি আঁটি বাজারে বিক্রি করেন ৫ টাকা করে। এভাবেই কোনরকম চলে তার সংসার।
আরও পড়ুন: প্রধান শিক্ষক এখন চায়ের দোকানদার
সীতারানী বিশ্বাস বলেন, ‘অভাবের সংসার, স্বামীটা প্রতিবন্ধী হওয়ায় জীবনের শেষ বয়সে নেমে পড়লাম জীবন যুদ্ধে। তবে সরকারি কোনও সহযোগিতা পেলে স্বামী-সন্তান নিয়ে দু’বেলা কিছু খেয়ে বেঁচে থাকতে পারতাম।’
৩ বছর আগে
ঘানিই যাদের জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন
আধুনিক আর ডিজিটাল যন্ত্রপাতির অতল গহব্বরে হারিয়ে যেতে বসেছে আবহমান গ্রাম বাংলার অনেক ঐহিত্যবাহী শিল্প। এই হারিয়ে যাওয়ার ভিড়ে আজও এই ঘানি শিল্পকে আকঁড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করে চলেছে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার নরনিয়া গ্রামের মৃত ইসমাইল বিশ্বাসের ছেলে আব্দুল গফুর বিশ্বাস ও মৃত বাবর আলী সরদারের ছেলে আব্দুল ওয়াদুদ সরদার।
গ্রাম বাংলার ঐহিত্যবাহী এই শিল্পকে আজও আকঁড়ে ধরে আছে এ দু’টি পরিবার। তাদের জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন এই ঘানি শিল্প। এই ঘানি শিল্পকে ধরে রাখার জন্য অন্য পেশাকে তারা আজও গুরুত্বহীন মনে করেন। এ শিল্প যেন তাদের রক্তের প্রতিটি কণায় মিশে আছে।
তারা বলেন, গরু দিয়ে ঘানি টেনে খাঁটি সরিষার তেল বানানো তাদের পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত একটি পেশা। পূর্বে তাদের দুই পুরুষ এই ঘানির কাজ করে পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করেছেন। এ কাজে তাদের স্ত্রী, পুত্র ও কন্যারাও সহযোগিতা করেন। পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত ও পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য আজও তারা ঘানি শিল্পকে আকঁড়ে পড়ে আছেন। তবে ঘানি শিল্পের সে দিন এখন আর নেই। এ কাজ করে বর্তমানে জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
নরনিয়া গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা মো. আফসার হোসেন বলেন, ছোটবেলায় দেখেছি ঘানির খাঁটি সরিষার তেল ক্রয়ের জন্য মানুষ ভোর থেকে এখানে জমায়েত হত। অনেক সময় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে তেল ক্রয় করত। কিন্তু বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রপাতির কারণে গ্রামের ঐতিহ্য ঘানি শিল্প বিলুপ্ত হতে চলেছে।
আরও পড়ুন: এক পায়ে দড়ি লাফে জোড়া বিশ্ব রেকর্ড ঠাকুরগাঁওয়ের রাসেলের
ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ও স্থানীয় ইউপি সদস্য এম এ সালাম বলেন, আমার বাবা এক সময় জমিতে সরিষা রোপণ করতেন। সেই সরিষা আমাদের বাজারে বিক্রয় করার কোন সুযোগ ছিল না। তার আগেই ইসমাইল বিশ্বাস ও বাবর আলী বিশ্বাসরা বাড়ি থেকে ক্রয় করে নিয়ে যেতেন। কারণ তাদের সরিষার তেলের এত চাহিদা ছিল যে তারা সরিষা জোগাড় করে পারতেন না। বর্তমানে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। ইতোমধ্যে ২-৩টি পরিবার এ কাজ ছেড়েও দিয়েছেন।
ঐহিত্যবাহী এ শিল্পকে ধরে রাখার জন্য দু’টি পরিবারকে তিনি ধন্যবাদ জানান এবং সুস্বাস্থ নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য সকলকে সরিষার তেল খাওয়ার অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন: প্রধান শিক্ষক এখন চায়ের দোকানদার
১০ বছরে মেঘনায় বিলীন ১৭০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা
৩ বছর আগে
জনগণের জীবন-জীবিকা নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে, সীমিত সম্পদ দিয়েই সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষ থেকে শুরু করে সকলের জীবনমান উন্নয়নের চেষ্টা করছে সরকার।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ৫৩,৩৪০টি আধা-পাকা বাড়ি ভূমিহীনদের মাঝে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: দারিদ্র্য হার কমাতে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে চায় সরকার
তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি আমাদের সীমিত সম্পদ দিয়ে সাধারণ এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত করতে। এটাই আমাদের লক্ষ্য’
আরও পড়ুন: দেশে আন্তর্জাতিক মানের ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট তৈরি করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় রংপুর বিভাগে ১২,৪৩৬ টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০,৫৪৭টি, ঢাকা বিভাগে ৭,৬৩০ টি, রাজশাহী বিভাগে ৭,১৭২টি, বরিশাল বিভাগে ৭,১৫৩ টি, খুলনা বিভাগে ৯১১ টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ২,৫১২ টি এবং সিলেট বিভাগে ১,৯৭৯ টি আধা-পাকা ঘর জমির মালিকানাসহ হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: মুক্তিযোদ্ধাদের শেষ শ্রদ্ধায় নারী কর্মকর্তায় আপত্তি, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ আহ্বান
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই সমাজের অতি দরিদ্র শেণির মানুষদের সাহায্য করার চেষ্টা করছে এবং বর্তমানে এর ফলাফল চোখে পড়ছে। ‘অতি দরিদ্ররা এখন স্বনির্ভর হতে শিখছে...তারা সমাজের সামনের দিকে এগিয়ে আসছে...আমরা এমনটা ই চাই,’ বলেন শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: আঞ্চলিক প্রভাবশালী রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ: ডেভিড ব্রুস্টার
দেশের গ্রামাঞ্চলগুলোতে শিক্ষা ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তোলাই সরকারের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘গ্রামকে উন্নত করাই আওয়ামী লীগের নীতি, আর এটাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদে শিখিয়েছেন।’
৩ বছর আগে
জীবন ও জীবিকা উভয়ের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে: সরকারকে বিশেষজ্ঞরা
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সারা দেশে চলমান অঘোষিত লকডাউনের মধ্যে দেশের অর্থনীতি স্থবির হয়ে যাওয়ায় লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হারানোর শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় সরকারকে মানুষের জীবন ও জীবিকা উভয়ের ওপর গুরুত্বরোপের আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
৪ বছর আগে