মেঘনা
মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ সংকট, বিপাকে জেলেরা
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর পাঁচ সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না।
জেলেরা হতাশ হয়ে ফিরছেন নদী থেকে। তাদের অধিকাংশই ঋণ পরিশোধ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
জেলেরা জানান, ইলিশের আশায় তারা নদীতে গেলেও তাদের খরচের টাকা উঠছে না। উপরন্তু বাড়ছে এনজিও ও মহাজনের ঋণের বোঝা। এছাড়া এ পেশা ছেড়ে দেওয়ার কথাও বলছেন কেউ কেউ।
আরও পড়ুন: ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করছে: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, নদীর পানি আরেকটু বাড়লে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাবে।
স্থানীয়রা জানান, ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদী থেকে দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ ইলিশ আহরণ করা হলেও এবার ভরা বর্ষায় জেলেদের জালে পর্যাপ্ত ইলিশ নেই। যে পরিমাণ মাছ ধরা পড়ছে তা দিয়ে ট্রলারের ইঞ্জিনের তেলের দামসহ অন্যন্য খরচও উঠে না।
ভোলার মেঘনা নদীর ইলিশা ও তুলাতুলি মাছঘাটে গিয়ে দেখা যায়, আড়তদারদের মাছের বাক্সগুলো খাঁ খাঁ করছে। জেলার প্রায় অর্ধশতাধিক ছোট বড় ঘাটের এখন এমন অবস্থা। জেলেদের পাশপাশি আড়তদাররাও রয়েছেন বিপাকে।
মাছের আড়তদাররা জানান, জেলেসহ তারাও বিপাকে দিন কাটাচ্ছেন। নদীতে ইলিশের সংকট থাকায় তারাও দেনায় জড়িয়ে পড়ছেন।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে কমেছে ইলিশের দাম
মেঘনায় ড্রেজার ডুবির ঘটনায় ২ জনের লাশ উদ্ধার, নিখোঁজ ৩
ভোলার মেঘনায় ডুবে যাওয়া ড্রেজার থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় এখনও তিনজন নিখোঁজ রয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকালে তাদের লাশগুলো উদ্ধার করে বিআইডব্লিউটির ডুবুরি দল।
নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের বাঘারহাট গ্রামের বাসিন্দা নুরে আলম (৫০) ও মো. সিয়াম (২৩)।
নিখোঁজ তিন জন হলেন- একই ইউনিয়নের আরিফুল ইসলাম (২১), হারুন অর রশিদ (৪০) ও মো. তানজিল (২১)।
আরও পড়ুন: মেঘনায় ডুবে যাওয়ার ২ দিন পর কিশোরের লাশ উদ্ধার
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত শনিবার রাতের কোনো এক সময় ভোলার কাচিয়া ইউনিয়ন সংলগ্ন মেঘনা নদীতে আফসানা নামের বালুকাটা ড্রেজারটি ডুবে যায়। ধারণা করা হচ্ছে রাতে মালবাহী কোনো লাইটার জাহাজের ধাক্কায় ড্রেজারটি ডুবে যেতে পারে। ওই সময় চালকসহ পাঁচজন বের হতে পারেননি।
ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড সোমবার দিনব্যাপী সন্ধানের পর বিকালের দিকে ডুবে যাওয়া ড্রেজারটি খুঁজে পায়। বরিশাল থেকে আসা বিআইডব্লিউটির ডুবুরি দল মঙ্গলবার সকালে দুজনের লাশ উদ্ধার করে। নিখোঁজ তিনজনকে উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে ডুবে যাওয়া ড্রেজারটি এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
ভোলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের আর্থিক সহায়তার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।
ভোলা ইলিশা নৌ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিদ্যুৎ বড়ুয়া জানান, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিখোঁজদের উদ্ধার তৎপরতা চলছে। এছাড়া ড্রেজারটিও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: মেঘনায় গোসলে নেমে স্ত্রীর সামনে ডুবে গেলেন স্বামী
মেঘনায় গোসলে নেমে স্ত্রীর সামনে ডুবে গেলেন স্বামী
চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে স্বামী-স্ত্রী এক সঙ্গে গোসলে নেমে স্ত্রী মনিরা বেগমের চোখের সামনে তীব্র স্রোতে ভেসে গেলেন স্বামী জহিরুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সকাল আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে চাঁদপুর শহরের টিলাবাড়ি লঞ্চঘাট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিখোঁজ জহিরুল (৩৫) বরিশালের মৃত মনসুর বেপারীর ছেলে। এই দম্পতি দুই সন্তান নিয়ে লঞ্চঘাটের পাশে টিলাবাড়ি মেঘনাপাড়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। জহিরুল ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাতেন আবার কখনো কখনো লঞ্চঘাটে হকারিও করতেন।
আরও পড়ুন: বন্যার কারণে সিলেট বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
এদিকে খবর পেয়ে বিআইডাব্লিউটিএ-র লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ডুবুরিদল নিখোঁজ জহিরুলের সন্ধানে অভিযান শুরু করে। কিন্তু তার কোনো সন্ধান মেলেনি।
নিখোঁজ জহিরের ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে তার স্ত্রী মনিরা বেগমসহ গোসল করতে নেমে আর উঠেনি। আমরা ধারণা করছি, নদীর তীব্র স্রোতের কারণে সে ডুবে গেছে।
চাঁদপুর নৌ ফায়ার সার্ভিস ইউনিটের ইনচার্জ মোসলেম মিয়াজি ইউএনবিকে জানান, দুপুর পর্যন্ত জহিরের সন্ধান করেও পাওয়া যায়নি। তবুও উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে। কিন্তু নদীর তীব্র স্রোতে তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
চাঁদপুর নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান ইউএনবিকে জানান, ঘটনা জানতে পেরে নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধানে নৌ-পুলিশও কাজ করছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা বেড়ে সোয়া ৮ লাখ
মেঘনায় ডুবে যাওয়ার ২ দিন পর কিশোরের লাশ উদ্ধার
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে মেঘনায় গোসল করতে নেমে দুই দিন ধরে নিখোঁজ আলিফের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের ভবানিপুর খেয়া ঘাটসংলগ্ন মেঘনায় লাশটি ভেসে উঠলে পুলিশ এসে উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: বাড্ডা থেকে নারীর লাশ উদ্ধার
নিখোঁজ আলিফ গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের লক্ষীপুরা গ্রামের মো. ফয়সাল প্রধানের একমাত্র ছেলে। সে ভবেরচর ল্যান্ডভারী স্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা অংশ নেয়।
গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিব খাঁন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করেছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আলিফ
উল্লেখ্য, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা সেতুর নিচে নদীতে সাত থেকে আটজন বন্ধু মিলে গোসল করতে নামে। আলিফ সাঁতার না জানায় তলিয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে সবাই মিলে তাকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে তার পরিবার এবং ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সিলেটে ডোবা থেকে লাশ উদ্ধার
বগুড়ায় এক ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনায় জাটকা ধরায় ৩৩ জেলে আটক
সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতের আধাঁরে চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রমে জাটকা ধরায় ৩৩ জেলেকে আটক করেছে টাস্কফোর্স।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকারিয়া হোসেন।
তাদের মধ্যে ১৮ জনকে ১০ দিন করে কারাদণ্ড ৬ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় ৯ জনকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আরও পড়ুন: পাবনায় র্যাবের অভিযানে কিশোর গ্যাংয়ের ৮ সদস্য আটক
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জেলেরা হলেন- মো. নুরু সরকার, খোরশেদ বন্দুকশী, মো. রাসেল ঢালী, মো. হোসেন, মো. আরিফ আব্দুল করিম, আব্দুল শাহজাহান, আব্দুল কাশেম, রবিউল গাজী, বিল্লাল হোসেন, রুবেল বেপারী, রাজিব শুক্কুর দেওয়ান, আব্দুর রহিম, খাজা বেপারী, ইব্রাহীম খলিল তালুকদার, জাকির রাঢ়ি, হাকিম খান এবং আরও দুইজন।
নিয়মিত মামলার আসামিরা হলেন- মিন্টুন খান, শরীফ মিজি, আল-আমিন হোসেন, আমিন খাঁ, সোহাগ ও মো. নোমান।
এরা সবাই চাঁদপুর ও শরিয়তপুরসহ আশপাশের এলাকার।
চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, অভয়াশ্রম এলাকায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) একরামুল ছিদ্দিকের নেতৃত্বে মৎস্য দপ্তর, কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের যৌথ অভিযানে তাদের আটক করা হয়।
এ সময় জেলেদের সঙ্গে থাকা তিনটি বেহুন্দিজাল, ১০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল, পাঁচটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও পাঁচ হাজার মিটার সুতার জাল জব্দ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, জব্দকৃত জাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয় এবং জব্দকৃত নৌকা মামলার আলামত হিসেবে কোস্ট গার্ড হেফাজতে রয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে সীমান্ত থেকে অস্ত্র ও গাঁজা জব্দ; আটক ১
রূপগঞ্জে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ যুবক আটক
মেঘনায় ট্রলারডুবি: স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ এখনও নিখোঁজ কনস্টেবল, পরিবারে চলছে আহাজারি
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ হয়েছেন স্ত্রী ও ২ সন্তানসহ ভৈরব হাইওয়ে থানার পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানা। এ নিয়ে তার পরিবারের চলছে আহাজারি।
শুক্রবার সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর নিচে এই ঘটনা ঘটে। শনিবার সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা উদ্ধার অভিযান শুরু করলেও স্বপরিবারে নিখোঁজ রয়েছেন পুলিশ কনস্টেবল।
আরও পড়ুন: পুরান ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ড, পুড়েছে রাসায়নিক গুদাম
সোহেলের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ গ্রামে এবং তিনি ফতেহাবাদ গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে। সোহেল ২০১১ সালে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পান।
দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের ১নং ইউনিয়ন সদস্য নুরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে নিখোঁজ পুলিশ কনস্টেবল সোহেলের বাবা, মা ও পরিবারের সদস্যরা ভৈরবে ছুটে যান। ছেলে ও তার পরিবারের সদস্যদের না পেয়ে তারা বার বার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার বিকালে ভৈরব সেতু এলাকায় মেঘনা নদীর পাড় থেকে একটি ট্রলার নিয়ে ১৬ জন যাত্রী আশুগঞ্জ সোনারামপুর চরে ঘুরতে যায়। সেখান থেকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভৈরবে ফেরার পথে মাঝ নদীতে নৌকাটিকে একটি বাল্কহেড ধাক্কা দেয়। এতে ট্রলারটি ডুবে যায়। সময় স্থানীয় লোকজন ও নৌ পুলিশ ৯-১০ জনকে উদ্ধার করেন।
আরও পড়ুন: মেঘনায় ট্রলার ডুবে নিহত ১, পুলিশ সদস্যসহ ৮ জন নিখোঁজ
গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে এক নারীকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তোফাজ্জল হক নামের এক যুবককে আহত অবস্থায় ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। এসময় রুবা নামের এক ছাত্রী ও পুলিশ কনস্টেবলের ভাগনেসহ কয়েকজন সাঁতরে পারে উঠলেও বাকিরা নিখোঁজ রয়েছেন।
ভৈরব হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজু মিয়া জানান, ঘটনার পর থেকে ফায়ার সার্ভিস ও নৌ পুলিশ নদীতে ট্রলারটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে। কিন্ত অন্ধকার থাকায় উদ্ধার কাজ ব্যাহত হয়।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর ছাত্রলীগ নেতার হামলা, গ্রেপ্তার ১
পদ্মা-মেঘনা অভয়ারণ্যে মাছ ধরায় ২ মাসের নিষেধাজ্ঞা মধ্যরাত থেকে শুরু
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত (১ মার্চ) থেকে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ৭০ কিলোমিটার জাটকা রক্ষা ও অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশের জাটকাসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষেধ।
জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে শুরু করে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত এ ৭০ কিলোমিটার এলাকায় অভয়াশ্রম বাস্তবায়ন করতে প্রস্তুত জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স।
সরকারি এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন ৪৩ হাজার নিবন্ধিত জেলে।
জেলা মৎস্য বিভাগ থেকে জানা গেছে, ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সরকার প্রতি বছর ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস অভয়াশ্রম এলাকায় জাটকাসহ সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করে।
সরকারের এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলায় টাস্কফোর্সের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পদ্মা-মেঘনা পাড়ের জেলে পাড়াগুলোতে জেলেদের অংশগ্রহণে সচেতনতা সভা করা হয়েছে। আইন অমান্য করে যেসব জেলে নদীতে মাছ আহরণ করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে টাস্কফোর্সে নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনায় মাছ ধরায় ১৩ জেলেকে জরিমানা
জেলা মৎস্য অফিসার মো. গোলাম মেহেদী হাসান ইউএনবিকে বলেন, ‘মার্চ-এপ্রিল দুই মাস জাটকা ধরা থেকে বিরত থাকা জেলেদেরকে মাথাপিছু ৪০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ইউনিয়নে চাল বিতরণ শুরু হয়েছে। জাটকা রক্ষায় জেলা টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
চাঁদপুর সদর উপজেলার মেঘনা উপকূলীয় জেলে পাড়া আনন্দ বাজার এলাকায় জেলেদের সঙ্গে এই সংবাদদাতার কথা হয়। জালাল দেওয়ান ও হৃদয় হোসেনসহ অন্যরা জানান, তারা সরকারি নিষেধাজ্ঞা মানেন। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে যে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়, তাতে তাদের সংসার চলে না। সব দ্রব্যের দাম ডাবল। এরপর তাদের ঋণ থাকে। এই সময় বেকার হয়ে পড়ায় তাদের বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা নেই।
আরও পড়ুন: ২২ দিনের ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে মধ্যরাতে
তারা সরকারি সহযোগিতা দ্বিগুণ বাড়ানোর দাবি জানান।
চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, দুই মাসের অভয়াশ্রম বাস্তবায়নে নৌপুলিশ সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এ ব্যাপারে নদীতে কোনো অনিয়ম দেখলে কঠোরভাবে দমন করা হবে।
চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম বলেন, আইন অমান্য করে কোনো জেলে নদীতে নামলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জাটকা রক্ষায় টাস্কফোর্স নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবে।
আরও পড়ুন: বরিশালে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরায় ৪৯ জেলের কারাদণ্ড
মেঘনায় জাটকা ধরায় ১৫ জেলের কারাদণ্ড
চাঁদপুরে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় নিষিদ্ধ জাল দিয়ে জাটকা ধরার দায়ে ১৫ জেলেকে ভিন্ন ভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশনে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহজাহান।
দণ্ডপ্রাপ্ত সব জেলের বাড়ি মতলব উত্তর থানায়।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান।
একমাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জেলে মো. রুবেল সরদার মতলব উত্তর উপজেলার বাসিন্দা।
অপর ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জেলেরা হলেন- মতলব উত্তর উপজেলার মো. হুমায়ুন মৃধা, আক্তার হোসেন, ইয়াকুব ব্যাপারী, ইয়াজল চোকদার, সাইদুল রহমান, আরিফুল ইসলাম, লিটন বর্মন, মো. হোসেন, আবুল হোসেন, মনির হোসেন, ছৈয়দ হোসেন, মো. সাদেক, মাদব চন্দ্র বর্মন ও মো. আলী নুর।আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শিপ ইয়ার্ড পরিচালনা: ৫ জনকে কারাদণ্ড
সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান আরও বলেন, বুধবার বিকাল ৩টা হতে রাত ১০টা পর্যন্ত ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় ৩টি হাইস্পিড বোট নিয়ে পদ্মা-মেঘনার মোহনা এলাকা, মিনি কক্সবাজার, রাজরাজেশ্বর, মতলব উত্তরের মোহনপুর এলাকায় পদ্মা ও মেঘনা নদীতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এ সময় কাচিকাঠা নামক স্থান থেকে জাটকা ধরা অবস্থায় ১৫ জেলেকে আটক করা হয়। এসময় ১ লাখ মিটার কারেন্টজাল, ৫টি বেহুন্দি জাল, ৫ কেজি জাটকা জব্দ এবং একটি মাছ ধরার নৌকা আটক করা হয়।
অভিযান শেষে রাতেই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জেলেদের কারাদণ্ড এবং জব্দকৃত জালগুলো কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশনে আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়। জব্দকৃত জাটকা দুস্থদের মাঝে বিতরণ এবং নৌকা কোস্টগার্ড হেফাজতে রয়েছে।আরও পড়ুন: গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ, সহকারী পোস্টমাস্টারসহ ৬ জনের কারাদণ্ড
মেঘনায় নিষিদ্ধ জালে মাছ ধরায় ১৫ জেলেকে জরিমানা
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলায় মেঘনা নদীতে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকার করায় আটক ১৫ জেলেকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শুক্রবার বিকালে উপজেলার নীলকমল পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন নদীতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয় বলে জানান হাইমচর উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমা।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনায় মাছ ধরায় ১৩ জেলেকে জরিমানা
জেলেরা হলেন, খোরশেদ, মো. সোহাগ, মো. রাছেল, রিয়াদ মিজি, মো. মোহন মীর, মো. শাওন, মো. শান্ত মোল্লা, মো. বাবু, মো. রাজিব বেপারী, মো. হৃদয় মীর, সেলিম মীর, মো. রুবেল, মো. রিয়াদ, সোহাগ খান ও আবু বকর বেপারী।
অভিযানে অংশগ্রহনকারী হাইমচর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মাহবুব রশীদ জানান, শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা হতে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মেঘনা নদীর চরভৈরবী এলাকায় উপজেলা টাস্ক ফোর্স যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় ৩০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল, একটি চরঘেরা জাল জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, নিষিদ্ধ জাল দিয়ে ১০০ কেজি জাটকা, চেউয়া মাছের একটি ব্রুড স্টক এবং অন্যান্য প্রজাতির মাছ আহরণ করার সময় ১৫ জেলেকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
তিনি জানান, জব্দকৃত জাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট এবং জব্দকৃত মাছ স্থানীয় দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ৩ ইটভাটাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা
যশোরের অভয়নগরে ৩টি ক্লিনিককে ১.৫৫ লাখ টাকা জরিমানা
ভোলার মেঘনায় ট্রলারডুবি, ৮ দিন পর লাশ উদ্ধার
ভোলার মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনার ৮ দিন পর রাজ্জাক সরদারের লাশ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। তবে তার ছেলে পারভেজ সরদার এখনো নিখোঁজ।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেঘনা নদীর তুলাতলি পয়েন্ট থেকে ভাসমান অবস্থায় পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: মেঘনায় ট্রলারডুবি ঘটনায় শিশুসহ ৩ জনের লাশ উদ্ধার
ভোলা নৌ পুলিশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিদ্যুৎ কুমার ঘোষ জানান, ভোলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি এলাকার মেঘনা নদীর তীরে কচুরিপানার মধ্যে একটি লাশ ভাসতে দেখে ৯৯৯ নম্বরে স্থানীয়রা ফোন দিয়ে জানায়। পরে নৌ পুলিশ খবর পেয়ে তুলাতুলি এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করলে ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ রাজ্জাক সরদারের স্বজনরা গিয়ে শনাক্ত করে।
প্রসঙ্গত, মনপুরা থেকে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া মালবাহী ট্রলারটি ইলিশার জোরখাল পয়েন্টে প্রবল ঢেউয়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। ট্রলারটিতে ভাঙারি মালামালসহ ৭ জন শ্রমিক ছিলেন।
ট্রলারটি ডুবে যাওয়ার সময় ৫ জন শ্রমিক সাঁতরে জেলে ট্রলারের সহায়তায় উপরে উঠে আসতে পারলেও আব্দুল রাজ্জাক ও তার ছেলে পারভেজ সরদার ইঞ্জিনরুমে থাকায় তারা বেরোতে পারেনি। কয়েক মিনিটের মধ্যে ট্রলারটি ডুবে যায়।
আরও পড়ুন: ভোলায় ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ২
বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবি, ২০ ট্রলারসহ ২৫০ জেলে নিখোঁজ