রাঙ্গামাটি
রাঙ্গামাটিতে বৈসাবি উপলক্ষে শোভাযাত্রা
রাঙ্গামাটিতে বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী উৎসব বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু ও সাংক্রান উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার সকালে রাঙ্গামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে উৎসবের উদ্বোধন করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান।
পরে বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু ও সাংক্রান উৎসবের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় প্রধান অতিথি হিসেবে ও সাবেক সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার ছিলেন। এ ছাড়া সাবেক সচিব প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, সুস্মিতা চাকমা, আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ইন্টু মনি তালুকদার বক্তব্য রাখেন।
বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু ও সাংক্রান উপলক্ষে আয়োজিত আনন্দ শোভাযাত্রায় রাঙ্গামাটির চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, রাখাইন ও গুর্খা সম্প্রদায়ের নারী পুরুষ অংশ নেয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর সদস্যরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে ও সাজগোজ করে শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।
আগামী ১২ এপ্রিল শুরু হয়ে ১৬ এপ্রিল শেষ হবে পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের বড় উৎসব বৈসাবির অনুষ্ঠানিকতা।
রাঙ্গামাটিতে চিকিৎসার অভাবে দেড় মাসে ৫ জনের মৃত্যু
রাঙামাটির সীমান্তবর্তী বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নের ঠেগা চান্দবী ঘাট এলাকায় প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসার অভাবে তীব্র জ্বর, পেটব্যথা ও বমির সঙ্গে রক্তক্ষরণে গত দেড় মাসে এক শিশুসহ পাঁচজন মারা গেছেন। এ রোগে আরও ১৪ জনের বেশি আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
মৃতরা হলেন- চিত্তি মোহন চাকমা, বিমলেশ্বর চাকমা, ডালিম কুমার চাকমা, পত্ত রঞ্জন চাকমা, সোনি চাকমা।
এরমধ্যে ডালিম কুমার চাকমা ও সোনি চাকমা বাবা-মেয়ে।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে আগর বাগান থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
স্থানীয়রা জানান, মৃত্যুর আগে প্রত্যেকেরই তীব্র জ্বর ও বমির সঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এছাড়া আরও ১৪ জনের পেটব্যথা, জ্বর দেখা দেওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ওই এলাকায়।
প্রথমদিকে সাধারণ জ্বর মনে করলেও দেড় মাসে পরপর ৫ জনের মৃত্যুতে এলাকাবাসীর মনে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
সর্বশেষ গত ১৭ মার্চ ডালিম কুমার চাকমার মেয়ে সোনি চাকমা জ্বরে আক্রান্ত হয়। এর সঙ্গে পেট ব্যথা ও বমির সঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়। পরে মারা যায়। এর দুই দিন আগে ১৫ মার্চ চিত্তি মোহন চাকমা একই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
২৬ ফেব্রুয়ারি ডালিম কুমার চাকমা, ৭ ফেব্রুয়ারি বিমলেশ্বর চাকমা এবং সর্বপ্রথম গত ১০ জানুয়ারি পত্ত রঞ্জন চাকমা পেট ব্যথা, জ্বর ও বমির সঙ্গে রক্তক্ষরণে মারা যান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৫ জনের মৃত্যুর খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর দুর্গম এলাকায় বৃহস্পতিবার একটি মেডিকেল টিম পাঠানো হয়।
বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মংক্যসিং রাখাইন সাগর বলেন, এলাকাটি অতি দুর্গম। সেখানে কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। আশেপাশে কোনো স্বাস্থ্য কেন্দ্র নেই। এতগুলো মানুষ মারা গেছে, সে খবর এতদিন আমাদের কেউ দেয়নি। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা মেডিকেল টিম গঠন করে সেখানে গিয়ে খোঁজখর নিচ্ছি। চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাঙ্গামাটির সিভিল সার্জন ডা. নীহার রঞ্জন নন্দী বলেন, আমার ধারণা খাদ্যে বিষক্রিয়া থেকেই এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। মেডিকেল টিম নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রকৃত বিষয়টি জানা যাবে।
তিনি আরও জানান, বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মংক্যসিং রাখাইন সাগরের নেতৃত্বে ৭ জনের একটি মেডিকেল টিম চান্দবীঘাট এলাকায় গেছে। এলাকাটি অতি দুর্গম। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে মেডিকেল টিম গঠন করে চান্দবীঘাটে পাঠিয়েছি। আর যেন কোনো প্রাণহানি না হয় সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রয়োজনে রোগীদের রাঙ্গামাটি এনে চিকিৎসা দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে ইউপিডিএফ সদস্যকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ
রাঙ্গামাটিতে সিএনজিতে লরির ধাক্কা, খাদে পড়ে নিহত ৩
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে ইউপিডিএফ সদস্যকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলী ইউনিয়নের বোধিপুর এলাকায় নিপুণ চাকমা চোগা (৩৫) নামে ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপের এক সদস্যকে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে এসে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায় দুই সন্ত্রাসী।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, বঙ্গলতলী ইউনিয়নের বোধিপুর বনবিহারে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেখানে গিয়েছিলেন নিপুন চাকমা ও তার সহকর্মীরা। রাতের অন্ধকারে সন্ত্রাসীরা এসে নিপুণ চাকমাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: উখিয়ায় ঘর থেকে ডেকে নিয়ে রোহিঙ্গা যুবককে গুলি করে হত্যা
ইউপিডিএফ প্রসিত দলের বঙ্গলতলী এলাকার সমন্বয়ক আর্জেন্ট চাকমা বলেন, জেএসএস এমএন লারমা দলের দুই সন্ত্রাসী অতর্কিত গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনা স্থলে নিপুণ চাকমা চোগার মৃত্যু হয়। এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
এই হত্যাকাণ্ডের দায় অস্বীকার করে জেএসএস এমএন লারমা গ্রুপ।
এদিকে জেএসএস এমএন লারমা দলের দলের উপজেলা সভাপতি জ্ঞানজীব চাকমা বলেন, এই হত্যার সঙ্গে জেএসএস এমএন লারমা দল কোনোভাবেই জড়িত নয়।এই হত্যাকাণ্ড ইউপিডিএফের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বিষয়।
এছাড়া হত্যা কান্ডের প্রতিবাদে আজ রবিবার বাঘাইছড়ি উপজেলায় আধাবেলা সড়ক অবরোধের ডাক দেয় ইউপিডিএফ।
বাঘাইছড়ি থানার সার্কেল অফিসার ও রাঙ্গামাটির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল বলেন, সংবাদ পেয়ে বাঘাইছড়ি থানার ওসি ইশতিয়াক আহম্মেদের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়েছে। এলাকাটি দুর্গম এবং রাত হওয়ায় পুলিশ পৌঁছাতে সময় লেগেছে। সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হচ্ছে।
উল্লেখ, গত ৪ ফেব্রুয়ারি সাজেকের মাচালং ব্রিজ পাড়ায় ইউপিডিএফের দুই সদস্য দীপায়ন চাকমা ও আশিষ চাকমাকে একই উপায়ে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ওই ঘটনায় জেএসএসের সন্তু লারমা দলেকে দায়ী করে ইউপিডিএফ। পরে নিহত দীপায়ন চাকমার স্ত্রী এশিয়া চাকমা বাদী হয়ে সাজেক থানায় মামলা করলেও এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার থেকে গুলিবিদ্ধ নারীসহ ৫ রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে যুবক আহত
রাঙ্গামাটিতে ২ ইউপিডিএফ সদস্যকে গুলি করে হত্যা
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের মাচালং ব্রিজ পাড়ায় ইউপিডিএফ প্রসিত দলের সদস্য দীপায়ন চাকমা (৩৮) ও আশিষ চাকমাকে (৪৫) গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে।
রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করে সাজেক থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন: উখিয়ায় রোহিঙ্গা যুবককে গুলি করে হত্যা
নিহত দুইজন হলেন, মোরঘোনা ২ নম্বর ওয়ার্ড বাঘাইছড়ি রূপাকারি ইউনিয়নের মৃত শান্তি কুমার চাকনার ছেলে আশিষ চাকমা।
অপরজন হলেন- উত্তর এগুজ্জ্যাছড়ি ৫ নম্বর ওয়ার্ড বাঘাইছড়ির সাজেক ইউনিয়নের মৃত অনিল বরন চাকমার ছেলে দিপায়ন চাকমা।
তবে ইউপিডিএফের দাবি জেএসএস সন্তু লারমার লোকজন এই হত্যার সঙ্গে জড়িত।
তবে ইউপিডিএফের অভিযোগ অস্বীকার করে জেএসএস সন্তু লারমা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ত্রিদিপ চাকমা বলেন, সাজেক এলাকায় জেএসএসের কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই। ইউপিডিএফের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে আ. লীগ প্রার্থীর সমর্থককে গুলি করে হত্যা
সাজেক থানার সার্কেল এএসপি ও রাঙ্গামাটির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুইজন নিহত হয়েছে। খবর পাওয়ার পরপরই সাজেক থানা থেকে পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
রাঙ্গামাটি জেলা পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ জানিয়েছেন, বাঘাইছড়ির মাচালং এলাকায় দুইজন নিহত হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। ঘটনা নিয়ে মামলা হবে এবং যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিএনপি নেতাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ
রাঙ্গামাটি আসনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন সতন্ত্র প্রার্থী ঊষাতন তালুকদার
আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রাঙ্গামাটি আসনে (আসন নং-২৯৯) প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খানের কাছে লিখিতভাবে তিনি সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাখির করা তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।
এ সময় রাঙ্গামাটি জেএসএস সভাপতি গঙ্গা মানিক চাকমাসহ সংগঠনটির অন্যান্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আ. লীগ প্রার্থী শাম্মী আহমেদের প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল খারিজ
ঊষাতন তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশের সার্বিক চলমান পরিস্থিতি এবং পার্বত্য এলাকায় আমাদের বাস্তব অবস্থা ও সার্বিক দিক বিবেচনা করে সংগঠনের সিদ্ধান্তক্রমে আমি আমার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছি।’
উক্ত আসনে ৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন এবং সকলে বৈধ বলে বিবেচিত হয়। তার প্রার্থিতা প্রত্যাহারে রাঙ্গামাটির নির্বাচনে জনপ্রিয়তার দিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন এলাকার ভোটাররা।
রাঙ্গামাটি আসনে অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, জাতীয় পার্টির হারুনুর রশীদ মাতব্বর, তৃণমূল বিএনপির মো. মিজানুর রহমান ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের অমর কুমার দে।
আরও পড়ুন: মাহি বি, হিরো আলমসহ ৫৬ জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন
ফরিদপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আজাদের প্রার্থিতা বাতিলের দাবি
রাঙ্গামাটি স্টেডিয়াম এলাকায় অগ্নিকাণ্ড: ১২টি দোকান পুড়ে ছাই
রাঙামাটি শহরের মারি স্টেডিয়াম এলাকায় আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ১২টি দোকান।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বিসিক কার্যালয়ের সামনে এই আগুনের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে রাঙ্গামাটি ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। এ সময় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় দাঁড়িয়ে থাকা ৩টি বাসে আগুন
স্থানীয় বাসিন্দা সুমন বড়ুয়া জানান, আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকানপাটের মধ্যে কয়েকটি খাবারের (নাশতা) দোকান, একটি স্বর্ণের দোকান, একটি কাপড় দোকান ও একটি হার্ডওয়্যারের দোকান ছিল।
রাঙ্গামাটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার বিল্লাল হোসেন বলেন, আমরা সকাল ৬টা ৫৫ মিনিটের দিকে আগুন লাগার খবর পাই। ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুনে ১২টি দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি তাৎক্ষণিক বলা যাচ্ছে না তবে নিরূপণ করলে বলা যাবে।
তিনি আরও জানান, প্রধান সড়কের পাশের আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলোর বেশিরভাগ টিনের ছাউনির। খাবারের দোকানসহ অন্য দোকান ছিল। দোকানের ভেতর তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছিল। এখন সেটি নিষ্ক্রিয়ের কাজ চলছে।
এদিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রাঙ্গামাটি সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার ও রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এসময় তারা আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার করার আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে বাসে আগুন
গাজীপুরে কাভার্ডভ্যানে আগুন
রাঙ্গামাটিতে শিশু বলাৎকার: যুবককে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড
রাঙ্গামাটিতে এক শিশুকে বলাৎকারের দায়ে এক যুবককে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন রাঙ্গামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রবিবার (২৬ নভেম্বর) বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নিার্যাতন দমন ট্রাইব্যুলাল এর বিচারক এ.ই.এম. ইসমাইল হোসেনের আদালত এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে মাদরাসা শিক্ষক গ্রেপ্তার
তিনি জানান, বলাৎকারের ঘটনায় শিশুর বাবার দায়ের করা মামলায় যুবক মো. ওমর সাদেক রিয়াদ ওরফে ওমর ফারুককে দোষি সাব্যস্ত করে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে রাষ্ট্র পক্ষে আইনজীবী ছিলেন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর মো. সাইুফুল ইসলাম অভি।
আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আইনজীবী শফিউল আলম মিয়া, আইনজীবী রাশেদ ইকবাল এবং আইনজীবী কামাল হোসেন সুজন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২০ সালের অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে রাঙ্গামাটি শহরের শান্তিনগর বাস টার্মিনাল এলাকায় ওমর সাদেক রিয়াদ ওরফে ওমর ফারুক ওই কিশোরকে বলাৎকার করেন।
এরপর কিশোরের বাবা ওই বছরের ১০ অক্টোবর রাঙ্গামাটি কোতোয়ালি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
মামলার সাক্ষ্য প্রমাণে যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে রবিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে রাঙ্গামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এই রায় দেন এবং জেল হাজতে পাঠান।
আরও পড়ুন: ফেনীতে কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগে পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার
ছাত্রকে বলাৎকারের দায়ে মাদরাসা শিক্ষকের যাবজ্জীবন
রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব সম্পন্ন
শান্তি ও মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ৪৮তম কঠিন চীবর দানোৎসব রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে চীবর উৎসর্গের মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে রাঙ্গামাটি রাজবন বিহার প্রাঙ্গণে লাখো পূণ্যার্থী জমা হয়। প্রয়াত পার্বত্য ধর্মীয় গুরু বনভন্তে স্মৃতির উদ্দেশ্যে বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে ২৪ ঘণ্টায় প্রস্তুতকৃত চীবর দান করেন। রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের ভিক্ষু সংঘের প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবিরের হাতে এসব চীবর উৎসর্গ করেন রাঙ্গামাটি সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার রাজা দেবাশীষ রায়।
আরও পড়ুন: মাটিরাঙ্গায় বন বিহারে কঠিন চীবর দান
চীবর উৎসর্গের সময় ভক্তদের সাধু, সাধু, সাধু কণ্ঠধ্বনিতে রাজবন বিহার এলাকা মুখরিত হয়ে উঠে।
এর আগে রাজবন বিহার প্রাঙ্গণে আসা পূণ্যার্থীদের সামনে প্রধান মহাপরিনির্বাণপ্রাপ্ত শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভন্তের অমৃত কথা অডিও উপস্থাপন করা হয়।
পরে দায়ক দায়িকার উদ্দেশে স্বধর্ম দেশনায় দেন রাজবন বিহারের ভিক্ষু সংঘের প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির।
এ সময় তিনি কৌশল কর্ম, সৎ চেতনা ও জীবনযাপন করার জন্য হিতোপোদেশ দেন।
বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় গেরুয়া কাপড়কে বলা হয় চীবর। প্রাচীন নিয়ম মতে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে চরকায় সূতা কেটে, সুতা রং করে আগুনে শুকিয়ে সেই সুতায় তাঁতে কাপড় বুনে চীবর তৈরি করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করা হয় বলে এর নাম কঠিন চীবর দান।
এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার বিকালে বেইন ঘর উদ্বোধন ও চরকায় সুতা কাটার মধ্যদিয়ে রাজবন বিহারে শুরু হয় দুই দিনব্যাপী ৪৮তম কঠিন চীবর দানোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
রাতভর তুলা থেকে চরকায় সুতা কেটে, সুতা রং করে আগুনে শুকিয়ে সেই সুতায় ভোর ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে চীবর বুননের কাজ। দুপুরে ভিক্ষু সংঘকে সেই চীবর (বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় বস্ত্র) দান করার মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত রাজবন বিহারে দুই দিনের চীবর দানোৎসব সম্পন্ন হয়।
রাজবন বিহার উপাসক পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ান বলেন, বৌদ্ধদের যত ধরনের দান রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে পূণ্যের দান হলো কঠিন চীবর দান। এ জন্য কঠিন চীবর দানোৎসবকে দানোত্তম চীবর দান উৎসব বলা হয়ে থাকে।
তিনি আরও বলেন, এ বছর রাজবন বিহারে প্রায় ২০০ বেইন ও দেড় শতাধিক চরকার সাহায্যে ৬ শতাধিক দায়ক-দায়িকা চীবর বুননের কাজে অংশগ্রহণ করছে।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত
রাঙ্গামাটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
রাঙ্গামাটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন। নিহতরা হলেন- নারীপুরি চাকমা অপরজন গুনিমালা চাকমা।
শনিবার (৪ নভেম্বর) দুপুরের দিকে রাঙ্গামাটি শহরের ভেদভেদী এলাকায় যাত্রীবাহী বাস একটি সিএনজি অটোরিকশাকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে এই ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় ইউপি সদস্য নিহত, যুবলীগ নেতা আহত
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার (৪ নভেম্বর) দুপুরের দিকে রাঙ্গামাটি শহরের ভেদভেদী এলাকায় যাত্রীবাহী বাস একটি সিএনজি অটোরিকশাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। অটোরিকশার ভেতরে থাকা চালকসহ ছয়জনের মধ্যে দুইজন যাত্রী ঘটনাস্থলে নিহত হন। নিহত ও আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে।
রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শওকত আকবর বলেন, আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর একজনকে উন্নত চিকিৎসা দিতে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।
রাঙ্গামাটি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল আমিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এই ব্যাপারে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলের মৃত্যু
চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় মাদরাসাছাত্রী নিহত
রাঙ্গামাটিতে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপিত
দেশের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে রাঙ্গামাটির বৌদ্ধ বিহার ও শাখা বন বিহারগুলোতে যথাযোগ্য মর্যাদায় শনিবার (২৮ অক্টোবর) উদযাপিত হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা।
বৌদ্ধ ধর্মীয় ভিক্ষুরা তিন মাসের বর্ষাবাসের শেষ দিনটিতে প্রবারণা পূর্ণিমা হিসেবে উদযাপন করে।
প্রবারণা হলো আত্মশুদ্ধি ও অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণের অনুষ্ঠান। এরপর থেকে দীর্ঘ একমাস ধরে আয়োজন চলে প্রধান ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবর দান উৎসবের।
প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাঙ্গামাটিতে বৌদ্ধ বিহারগুলোতে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সকালে রাঙ্গামাটির বৃহত্তর রাজবন বিহারে প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে বিভিন্ন দান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। প্রবারণা পুর্ণিমায় রাজবন বিহার প্রাঙ্গণে পূর্ণার্থীর ঢল নামে।
ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ভোরে রাঙ্গামাটির রাজ বন বিহার প্রাঙ্গণে বুদ্ধ পতাকা উত্তোলন, ভিক্ষু সংঘের পিণ্ডদান ও প্রাতঃরাশ, মঙ্গল সূত্র পাঠ, বুদ্ধ পূজা, পঞ্চশিল প্রার্থনা, মহাসংঘ দান, প্রদীপ পূজা, হাজার বাতি দান, ফানুস দানসহ বিভিন্ন দান অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে প্রবারণা পালন করা হয়।
আরও পড়ুন: ২৮ অক্টোবর প্রবারণা পূর্ণিমায় রাজনৈতিক কর্মসূচিমুক্ত রাখার দাবি বৌদ্ধ সমাজের
ধর্মীয় অনুষ্ঠানে স্বধর্ম প্রাণ দায়ক-দায়িকাদের উদ্দেশ্যে ধর্মীয় দেশনা প্রদান করেন, রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান ও শ্রদ্ধেয় ভন্তের প্রধান শিষ্য প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির।
এ সময় হাজার হাজার পূর্ণার্থী সাধু সাধু ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো রাঙ্গামাটি রাজবন বিহার প্রাঙ্গণ।
রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ানের সভাপতিত্বে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমাসহ অন্য নেতারা।
সন্ধ্যায় হাজার বাতি প্রজ্জ্বলন ও ফানুস উত্তোলনের মধ্যদিয়ে প্রবারণা পূর্ণিমা শেষ হবে।
উল্লেখ্য, আড়াই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধ নির্বাণ লাভের পর আষাঢ়ি পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস শেষে প্রবারণা উৎসব পালন করেন। সেই থেকে বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুরা বর্ষাবাস শেষে দিনটি পালন করে আসছেন।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব উদযাপিত
প্রবারণা পূর্ণিমা: পাহাড়ে সম্প্রীতির কল্প জাহাজ ভাসলো