জরিপ
এক বছরের মধ্যে নির্বাচন চান ৬১.১% মানুষ, সব সংস্কার শেষে ৬৫.৯% : ভয়েস অব আমেরিকার জরিপ
সম্প্রতি সারা দেশে পরিচালিত ভয়েস অব আমেরিকার এক জরিপে দেখা গেছে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ৬১ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ মনে করেন এক বছরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। আর সবগুলো সংস্কার করার পরই নির্বাচন আয়োজন করার পক্ষে মত দিয়েছেন ৩১ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ।
জরিপে দেখা যায়, ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ লোক চান দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচন আর ৮ দশমিক ৬ শতাংশ নির্বাচন চান ১৮ মাসের মধ্যে। সবচেয়ে কম ৫ দশমিক ৮ শতাংশ জনগণ চার বছর বা তার চেয়ে বেশি সময় পর আগামী জাতীয় নির্বাচন হওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।
কত দ্রুত নির্বাচন হওয়া উচিত এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলেছেন ৪ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ আর নির্বাচন কবে হওয়া উচিত সম্পর্কে কিছু বলতে চাননি ১ দশমিক ১ শতাংশ।
গত ৫ অগাস্ট ছাত্রদের নেতৃত্বে একটি গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অগাস্টের ৮ তারিখ ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে একটি অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণ করে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর কেমন আছে বাংলাদেশ, এ নিয়ে কী ভাবছেন দেশের নাগরিকরা, এ বিষয়ে অক্টোবরের ১৩ থেকে ২৭ তারিখ, ভয়েস অব আমেরিকা দেশব্যাপী একটি জরিপ করে।
জরিপটি ভয়েস অব আমেরিকা বাংলার এডিটোরিয়াল নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালনা করে গবেষণা ও জরিপ প্রতিষ্ঠান ওআরজি-কোয়েস্ট রিসার্চ লিমিটেড।
ভয়েস অব আমেরিকার ঠিক করে দেওয়া সুনির্দিষ্ট (ক্লোজ এন্ড) প্রশ্নমালার উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার এসিস্টেড টেলিফোন ইন্টারভিউইং এর মাধ্যমে দেশের আটটি বিভাগে ১৮ বছর বা এর চেয়ে বেশি বয়সী এক হাজার মানুষের মধ্যে জরিপটি পরিচালিত হয়।
জরিপটি করা হয়, র্যান্ডম ডিজিটাল ডায়ালিং পদ্ধতিতে। বাংলাদেশ টেলিকম্যুনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের সর্বশেষ প্রকাশিত (২০১৭) অফিসিয়াল টেলিফোনে প্ল্যান থেকে বাংলাদেশের মোবাইল নম্বরগুলোর সম্ভাব্য সবধরণের কম্বিনেশন থেকে করা ওআরজি-কোয়েস্ট রিসার্চ লিমিটেড-এর নিজস্ব ডেটা-বেইজ থেকে জরিপটির স্যাম্পল নেওয়া হয়েছে। একটি আর-বেইজড প্রোগ্রাম ব্যবহার করে সিম্পল র্যান্ডম স্যাম্পলিং (এসআরএস) এর মাধ্যমে জরিপটির নমুনা বাছাই করা হয়েছে।
জরিপ পরিচালনা কাজে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদের মাধ্যমে ওআরজি-কোয়েস্ট রিসার্চ লিমিটেড-এর ঢাকা অফিসের কল সেন্টার থেকে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ফোন করা হয়।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন জরিপটিতে মার্জিন অফ এরর ৩ দশমিক ১ শতাংশ। জরিপটির উত্তরদাতারা প্রায় একমাস আগে যেহেতু তাদের মতামত জানিয়েছেন তাই এখন জরিপটি করলে এর ফলাফল অনেকক্ষেত্রেই ভিন্ন হতে পারে।
এই জরিপের ফলাফল নিয়ে আগামী কয়েকদিন কয়েক পর্বে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে যাচ্ছে ভয়েস অব আমেরিকা। আজ থাকছে এর প্রথম পর্ব।
জরিপে অংশ নেওয়া শহরের জনগণের ৬০ দশমিক ৪ শতাংশ ও গ্রামে বাস করেন তাদের ৬১ দশমিক ৪ শতাংশ আগামী এক বছরের মধ্যে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন চান। জরিপে অংশগ্রণকারী পুরুষদের ৫৭ দশমিক ৩ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ নির্বাচন চান এক বছরের মধ্যে।
তরুণদের মধ্যে (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ এক বছরের মধ্যে আগামী নির্বাচন চান আর ৩৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের যারা জরিপে অংশ নিয়েছেন তাদের মধ্যে এক বছরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন চান ৫৯ দশমিক ৮ শতাংশ।
শহরাঞ্চলের ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ ও গ্রামীণ এলাকার ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ জরিপে অংশগ্রহণকারী চান আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচন। দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছেন জরিপে অংশ নেওয়া পুরুষদের ২০ দশমিক ৩ শতাংশ ও নারীদের ১৭ দশমিক ১ শতাংশ। ১৮ থেকে ৩৪ বছরের তরুণদের ১৫ দশমিক ২ ও ৩৫ ও তার চেয়ে বেশি বয়সের জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ২২ দশমিক ৪ শতাংশ মনে করেন দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে আগামী নির্বাচন হওয়া উচিত।
১৮ মাসের মধ্যে আগামী নির্বাচন করার পক্ষে মত দিয়েছেন শহরের ১০ দশমিক ৩, গ্রামের ৮, পুরুষদের ১২ নারীদের ৫ দশমিক ২, তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) ৮ দশমিক ৬ এবং ৩৫ বছর বা এর থেকে বেশি বয়সীদের মধ্যে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী।
চার বছর বা তার চেয়ে বেশি সময় পর নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছেন, শহরের ৬ দশমিক ২, গ্রামের ৫ দশমিক ৭, পুরুষদের ৬ দশমিক ৯, নারীদের ৪ দশমিক ৮, তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) ৭ দশমিক ৬,৩৫ বছর বা এর থেকে বেশি বয়সীদের ৪ শতাংশ মানুষ।
অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণের পর থেকেই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একটি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে দ্রুত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের রোডম্যাপ প্রকাশের দাবি জানিয়ে আসছে।
কিন্তু, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এখনো নির্বাচনের ব্যাপারে কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি। তাদের বক্তব্য, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করার পরই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রায়োরিটি 'সংস্কার'।
এদিকে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রদের প্লাটফর্ম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলছে রাষ্ট্র সংস্কার এর কাজগুলো শেষ হবার আগে নির্বাচন হলে আবার নতুন করে তাদের ভাষায় 'ফ্যাসিবাদের' আবির্ভাব ঘটবে। তারা বলছে, কেবল একটি নির্বাচন করার জন্য ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান হয়নি।
সেপ্টেবরের ২৩ তারিখ (২৪ তারিখ প্রকাশিত) বাংলাদেশের সেনাপ্রধান রয়টার্সের সাথে এক সাক্ষাৎকারে জানান, আগামী ১৮ মাসের মধ্যে যাতে নির্বাচন হতে পারে, সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো সম্পন্ন করতে এই সরকারকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনূসকে ভয়েস অব আমেরিকাতে দেওয়া তার এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদই নির্বাচনের তারিখ জানাবে।
ডক্টর ইউনূস এখনো নির্বাচনের কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা না করলেও অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ১৭ নভেম্বর তিনি বলেছেন, নির্বাচনি সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে খুব দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপও (রূপরেখা) পাওয়া যাবে। প্রয়োজনীয় কিছু অত্যাবশ্যকীয় সংস্কারের কাজ শেষ করেই নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। অবশ্য সংস্কারের জন্য নির্বাচন কয়েক মাস বিলম্বিতও করা যেতে পারে।
ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলার জনমত জরিপে তাই সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ এই বিষয় দুটিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সব সংস্কার শেষ করে নির্বাচন চান ৬৫ দশমিক ৯ শতাংশ
বেশির ভাগ মানুষ (৬৫ দশমিক ৯ শতাংশ) মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকার যা যা সংস্কার করা প্রয়োজন মনে করবে তার সবগুলো করার পরই নির্বাচন আয়োজন করা উচিত আর শুধুমাত্র নির্বাচন সংক্রান্ত জরুরি সংস্কারগুলো শেষ করে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত ৩১ দশমিক ৯ শতাংশ উত্তরদাতার।
আগামী প্রতিবেদনে যা থাকছে
ভয়েস অব আমেরিকা বাংলা পরবর্তী প্রতিবেদনে জরিপের আরও বিস্তারিত ফলাফল প্রকাশ করার পরিকল্পনা করছে, যা বাংলাদেশের শাসন, সংস্কার এবং নির্বাচন সম্পর্কে জনসাধারণের মনোভাবের উপর আরও আলোকপাত করবে।
৪ সপ্তাহ আগে
সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা: জরিপের ফলাফল ঘোষণা ৮ অক্টোবর
১ হাজার ২০০’র বেশি ক্যামেরা ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে এ গণনা শেষ হয়েছে। আগের তুলনায় বাঘের সংখ্যা বেড়েছে বলে আশা করা হচ্ছে।
পরিবেশ রক্ষাবিষয়ক সংগঠন বেলার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, খুলনা ফরেস্ট অফিস ২০১৫ ও ২০১৮ সালের পর তৃতীয়বারের মতো সুন্দরবনের বাঘ গণনা শুরু করেছিল ২০২২ সালে। ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন বছরে বাঘ গণনা ও সংরক্ষণবিষয়ক দুইটি মেগা প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। আমরা জেনেছি বাঘের সংখ্যা সুন্দরবনে বেড়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ উন্নয়ন বেস্টের প্রধান নির্বাহী পরিচালক মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, আমরা এখন অপেক্ষায় আছি কবে ফলাফলটা পাব। আশা করি এবার বাঘ বাড়বে। বাঘ সুন্দরবনসহ প্রকৃতিকে রক্ষা করছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের খাল থেকে মৃত বাঘ উদ্ধার
তিনি আরও বলেন, সচেতনতার কারণেই বাড়ছে বাঘের সংখ্যা। তবে প্রতি তিন বছর অন্তর কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বাঘ গণনা না করে এই টাকা দিয়ে উপকূলীয় মানুষের উন্নয়নে কাজ করলে আরও উপকৃত হবে। প্রতি তিন বছর অন্তর বাঘ গণনা করার কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না তিনি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) জাতীয় পরিষদ সদস্য ও বিভাগীয় সমন্বয়কারী আইনজীবী মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, প্রতি তিন বছর অন্তর বাঘ গণনার জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। এখানে বড় ধরনের অর্থ অপচয় হচ্ছে। বাঘ গণনার নামে লুটপাট হচ্ছে দেশের কোটি টাকা। এগুলো বন্ধ করতে হবে। সুন্দরবন বাঁচাতে ১০ বছর পর পর একবার গণনা করলে সুন্দরবনের উপর চাপ কমবে।
সুন্দরবন পশ্চিম বনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, এর আগে বিশ্ব ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বাঘ জরিপ হলেও, এ বছর দেশীয় প্রযুক্তি ও দেশের অর্থায়নে খুলনার চারটি রেঞ্জেই ক্যামেরার ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়। এছাড়া ঝড়, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস থেকে বাঘকে রক্ষার জন্য বাঘের কেল্লা নির্মাণ করা হচ্ছে সুন্দরবনে। ২০১৫ সালের বাঘশুমারি অনুযায়ী, সুন্দরবনে বাঘ ছিল ১০৬টি। আর ২০১৮ সালের শুমারিতে ছিল ১১৪টি।
আরও পড়ুন: বাঘ সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়াতে বিশ্ব বাঘ দিবস ২০২৪ পালন
সুন্দরবন থেকে বাঘের মরদেহ উদ্ধার
২ মাস আগে
৫৩ শতাংশ ভোটারের মতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সর্বোচ্চ ২ বছর ক্ষমতায় থাকা উচিত: জরিপ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ কতদিন হওয়া উচিত সেই বিষয়ে সম্প্রতি একটি জরিপ পরিচালনা করেছে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি)।
জরিপে দেখা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ দুই বছর বা তার কম হওয়া উচিত বলে মনে করেন ৫৩ শতাংশ ভোটার।
বুধবার (২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে 'বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছ থেকে নাগরিক প্রত্যাশা' শীর্ষক এক সেমিনারে এ গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।
আরও পড়ুন: টিএসসির ত্রাণের ৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে বন্যার্তদের পুনর্বাসনে
গত ৯ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের আটটি বিভাগের ১৭টি জেলার ১ হাজার ৮৬৯ জন অংশগ্রহণকারী ভোটারের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়।
জরিপ অনুযায়ী, উত্তরদাতাদের ৬৩ শতাংশ মধ্যবয়সি (২৮-৫০ বছর বয়সি), ২২ শতাংশ জেনারেশন জেড (১৮-২৭ বছর বয়সি) এবং ১৪ শতাংশের বয়স ৫০ বছরের বেশি। এদের ৫৪ শতাংশ অংশগ্রহণকারী শহরাঞ্চলে বসবাস করেন, বাকি ৪৬ শতাংশ গ্রামাঞ্চলে বসবাস করেন।
জরিপে উত্তরদাতাদের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা এবং সংস্কারে তাদের পছন্দের বিষয়গুলোও তুলে ধরা হয়েছে। ৪৬ শতাংশের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিয়ে অনিশ্চিত থাকলেও ৫৪ শতাংশ মূলধারার রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ৯৬ শতাংশ প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিত করার পক্ষে এবং ৪৬ শতাংশ উল্লেখযোগ্য সাংবিধানিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার পক্ষে দেন। এছাড়া ১৬ শতাংশ সম্পূর্ণ নতুন সংবিধান প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে।
উত্তরদাতারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বর্তমান পারফরম্যান্স, বিশেষ করে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে বন্যা ব্যবস্থাপনা প্রচেষ্টায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
তারা পুলিশ, শিক্ষা, রাজনৈতিক ও নির্বাচনি ব্যবস্থার সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচনি সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এসআইপিজির উপদেষ্টা অধ্যাপক সালাউদ্দিন এম আনিসুজ্জামান ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নবীন মুরশিদ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: হর্ন বাজানো নিয়ন্ত্রণে আনতে ডিসেম্বর থেকে জরিমানা
২ মাস আগে
মেট্রোরেল টঙ্গী পর্যন্ত সম্প্রসারণে জরিপ চলছে: ওবায়দুল কাদের
ঢাকা মেট্রোরেল উত্তরা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত সম্প্রসারণের জন্য জরিপ চলছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) উত্তরার দিয়াবাড়িতে ডিএমটিসিএল ভবনে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেলের মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের নির্মাণ কাজ আগামী বছরের জুনের মধ্যে শেষ হবে।
তিনি বলেন, ইজতেমা ও বইমেলাসহ বিভিন্ন দিনে মেট্রোরেলের সার্ভিসের সময় বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ৩১ ডিসেম্বর থেকে চালু হচ্ছে মেট্রোরেলের কারওয়ান বাজার-শাহবাগ স্টেশন
তিনি বলেন, ‘আজ থেকে শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকে উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়েছে এবং মতিঝিল থেকে শেষ ট্রেন রাত ৮টা ৪০ মিনিটে উত্তরা উত্তরের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।’
ট্রেনের প্রতিটি ট্রিপের সময়ের ব্যবধান হবে পিক আওয়ারে ১০ মিনিট এবং অফ-পিক আওয়ারে ১২ মিনিট।
মন্ত্রী বলেন, ‘আজ বিকালে উত্তরা উত্তর থেকে মেট্রোরেলে মতিঝিল যাব। সময় সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব মেট্রোরেলে নিয়মিত যাতায়াত করার জন্য আমি আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি ‘
তিনি বলেন, মেট্রোরেলে যাত্রীদের সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে মেট্রোরেলের ছয়টি লাইন চালু হবে।
কাদের বলেন, 'সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন: উত্তরা-মতিঝিল রুটে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল
১১ মাস আগে
২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে বেকার সংখ্যা ২.৭০ লাখ বেড়েছে: বিবিএস
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত শ্রমশক্তির ওপর করা এক জরিপে বলা হয়েছে, চলতি বছরের (২০২৩) প্রথম প্রান্তিকে বেকার মানুষের সংখ্যা ২ লাখ ৭০ হাজার বেড়ে মোট ২৫ লাখ ৯০ হাজার হয়েছে।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে জরিপ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে বিবিএস।
বিবিএসের মতে, ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) দেশে ২৫ লাখ ৯০ হাজার লোক বেকার ছিল, যেখানে আগের বছরের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) শেষ প্রান্তিকে এই সংখ্যা ছিল ২৩ লাখ ২০ হাজার।
প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, শীতকালে বিশেষ করে কৃষি খাতে চাকরির সুযোগ কম থাকে। এখন ধান কাটার মৌসুম শুরু হওয়ায় কাজের সুযোগ বেড়েছে।
ফলে আবারও বেকারের সংখ্যা কমবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ২০২২ সালে দেশের প্রতিটি পরিবারের গড় ঋণ ছিল ৭০ হাজার ৫০৬ টাকা: বিবিএস জরিপ
শ্রমশক্তি জরিপ ২০২২ অনুসারে, দেশে মোট বেকার লোকের সংখ্যা ছিল ২৬ লাখ ৩০ হাজার। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ১৬ লাখ ৯০ হাজার এবং নারীর সংখ্যা ৯ লাখ ৪০ হাজার।
জরিপের তথ্যে জানা গেছে, ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। পুরুষদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং মহিলাদের মধ্যে ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
শ্রম বাহিনী সমীক্ষা ২০২৩ অনুসারে, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে নিযুক্ত মোট জনসংখ্যা ৭ কোটি ৩৬ লাখ এবং কর্মরত জনসংখ্যা বর্তমানে ৭ কোটি ১১ লাখ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রমশক্তির বাইরে জনসংখ্যা ৪ কোটি ৬২ লাখ এবং শ্রমশক্তির অংশগ্রহণের হার ৬১ দশমিক ৩৭।
এতে বলা হয়েছে, কৃষি খাতে ৩ কোটি ১৯ লাখ মানুষ, শিল্প খাতে ১ কোটি ২২ লাখ এবং সেবা খাতে ২ কোটি ৬৯ লাখ মানুষ নিয়োজিত রয়েছে।
এ ছাড়া দেশের যুব শ্রমশক্তি খাতে রয়েছে ২ কোটি ৭৩ লাখ।
মোট কর্মসংস্থান জনসংখ্যা ৭ কোটি ৩৬ লাখ, যা দেশের মোট শ্রমশক্তির ২০ দশমিক ১৫ শতাংশ।
বিবিএস-এর মতে, বেকার জনসংখ্যা বলতে মূলত যারা গত সাত দিনে অন্তত এক ঘণ্টা কাজ করেননি, কিন্তু গত সাত দিনে কাজ করতে ইচ্ছুক এবং মজুরির জন্য কাজ করতে আগ্রহী ছিলেন।
আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়েছে: বিবিএস
জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি কমে ৭.৪৮ শতাংশ: বিবিএস
১ বছর আগে
মার্কিন গণতন্ত্রে নিজস্ব ত্রুটি রয়েছে: নতুন জরিপ
কিছুদিন আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সর্বত্রই গণতন্ত্রের 'দুর্বলতা' রয়েছে। ঠিক এর কিছুদিন পর যুক্তরাষ্ট্রে সংগঠিত এক জরিপ বলছে, আমেরিকানদের মাত্র অর্ধেকই উচ্চ আস্থা রাখেন যে আসন্ন মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোট সঠিকভাবে গণনা করা হবে।
দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস-এনওআরসি সেন্টার ফর পাবলিক অ্যাফেয়ার্স রিসার্চের নতুন জরিপ অনুসারে, মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের মাত্র ৯ শতাংশ মনে করেন গণতন্ত্র ‘অত্যন্ত’ বা ‘খুব ভালো’ পর্যায়ে আছে, অন্যদিকে ৫২ শতাংশ মনে করছেন এটি ভালো পর্যায়ে নেই। নিউইয়র্কভিত্তিক বৈশ্বিক সংবাদ সংস্থা দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এ তথ্য জানিয়েছে।
জরিপটি বলছে যে অনেক আমেরিকান মার্কিন গণতন্ত্রের অবস্থা ও নির্বাচিত কর্মকর্তাদের নির্বাচিত করার পদ্ধতি সম্পর্কে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। এপি অনুসারে, প্রায় দুই বছর পর একটি বিভক্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ব্যাপক জালিয়াতি ও মার্কিন ক্যাপিটলে একটি সহিংস হামলার মিথ্যা দাবিকে উৎসাহিত করে।
দুই বছর আগে থেকে একটি বিপরীতমুখী অবস্থা দাঁড়িয়েছে-এখন ডেমোক্র্যাটদের চেয়ে রিপাবলিকানরা বলছেন গণতন্ত্র ভালো পর্যায়ে নেই। এই বছর, ৬৮ শতাংশ রিপাবলিকান দুই বছর আগে ৩২ শতাংশের তুলনায় এইভাবে মনে করেন।
প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্র কীভাবে কাজ করছে সে সম্পর্কে একটি তিক্ত দৃষ্টিভঙ্গিসহ ডেমোক্র্যাটদের অংশ ৬৩ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে নেমে এসেছে।
প্রতিটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরে হেরে যাওয়া দলকে কিছু সদস্য হারানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়। এপি জানিয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার মিত্রদের ডেমোক্র্যাটরা নির্বাচন চুরি করার বিষয়ে মিথ্যাচারের কারণে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফলে বিপর্যয় আরও গভীর হয়েছে।
প্রেসিডেন্সিয়াল ও কংগ্রেসনাল দৌড় থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রতিযোগিতা যেমন স্কুল বোর্ডের জন্য দৌড়, গণতন্ত্র নিয়ে সাধারণ হতাশা দেশব্যাপী ক্রমবর্ধমান মেরুকরণের কয়েক দশক পরে দেখা দেয়।
সামগ্রিকভাবে, রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের অনুরূপ অংশসহ মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের মাত্র এক চতুর্থাংশ বলছে, নেতা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সম্পর্কে তারা আশাবাদী, যেখানে ৪৩ শতাংশ বলেছেন তারা হতাশাবাদী। অন্য ৩১ শতাংশ ব্যক্তি তেমন কিছুই মনে করেন না।
এপি-এনওআরসি জরিপে রিপাবলিকানদের একটি বড় অংশ পাওয়া গেছে, ৫৮ শতাংশ এখনও বিশ্বাস করেন যে বাইডেনের নির্বাচন বৈধ ছিল না।
জরিপটি দেখায় যে ৪৭ শতাংশ আমেরিকান বলছেন যে তাদের ‘অনেক বেশি’ বা ‘বেশ কিছুটা’ আত্মবিশ্বাস রয়েছে যে ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোট সঠিকভাবে গণনা করা হবে।
১১ অক্টোবর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও নির্বাচন সম্পর্কে বিদেশিদের কথা বলা নিয়ে সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রেও দুর্বলতা আছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদেরও দুর্বলতা আছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) সেরাটা আছে। তাদের নিজস্ব দুর্বলতা আছে।’
এপিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই কথার ছাপ দেখা যায়।
২ বছর আগে
সড়ক দুর্ঘটনায় ২৮ মাসে ১৬৭৪ শিশুর মৃত্যু
বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার দিন দিন বাড়ছে। ২০২০ থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় এক হাজার ৬৭৪ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত রোড সেফটি ফাউন্ডেশন (আরএসএফ) তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী হিসেবে নিহত হয়েছে ৩৩১ শিশু, যা মোট নিহতের ১৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। রাস্তা পারাপার ও রাস্তা ধরে হাঁটার সময় যানবাহনের চাপায় বা ধাক্কায় নিহত হয়েছে ১০২৭ শিশু, যা মোট নিহতের ৬১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় অটোরিকশার চাপায় শিশুর মৃত্যু
ট্রাক, পিকআপ, ট্রাক্টর, ড্রাম ট্রাক ইত্যাদি পণ্যবাহী যানবাহনের চালক ও সহকারী হিসেবে নিহত হয়েছে ৪৮ শিশু, অর্থাৎ দুই দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী হিসেবে নিহত হয়েছে ২৬৮ শিশু, অর্থাৎ ১৬ শতাংশ।
জরিপে দেখা গেছে, বাস যাত্রী হিসেবে নিহত হয়েছে ৭২ শিশু (২১.৭৫ শতাংশ) প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও অ্যাম্বুলেন্স যাত্রী হিসেবে ২৫ শিশু (৭.৫৫ শতাংশ), থ্রি-হুইলার (সিএনজি, অটোরিকশা, ইজিবাইক ইত্যাদি) যাত্রী হিসেবে ১৮৩ শিশু (৫৫.২৮ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের (নসিমন, ভটভটি, মাহিন্দ্র, টমটম ইত্যাদি) যাত্রী হিসেবে ৫১ শিশু (১৫.৪০ শতাংশ) নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় বিদ্যুৎ অফিসের দেয়াল ধসে এক শিশুর মৃত্যু, আহত ২
২ বছর আগে
সহিংসতার ভয়ের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী একসঙ্গে যুবদের কার্যক্রম
সহিংসতার ভয়কে রুখে দিতে তরুণদের মধ্যে নেতৃত্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে শুরু হচ্ছে দেশব্যাপী কার্যক্রম এবং প্রচারণা অভিযান। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশি উন্নয়ন সংস্থা জাগো ফাউন্ডেশন একসঙ্গে যুবদের একত্রিত করছে ‘সহিংসতার ভয় আর নয়’ শীর্ষক এই অভিযানে।
সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত আওয়াজ তুললেও সহিংসতার ভয় এবং এই ভয়ের প্রভাব নিয়ে কথা বলা হয় সামান্যই। অথচ যুবদের, বিশেষ করে যুব নারীদের জীবনে এই ভয়ের রয়েছে ভয়াবহ প্রভাব। আর তাই প্রথমবারের মত সহিংসতার ভয়ের বিরুদ্ধে একত্রিত হবে সারাদেশের যুবরা, নানা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে।
সোমবার প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর ঢাকাস্থ কান্ট্রি অফিসে দুই সংস্থার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় এই প্রচারণা অভিযানের।
আরও পড়ুন: তরুণরাই রূপকল্প ২০৪১ এর নেতৃত্ব দেবে: প্রধানমন্ত্রী
আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন- প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর গার্লস রাইটস ডিরেক্টর কাশফিয়া ফিরোজ, ক্যাম্পেইন ম্যানেজার সেমন্তি মঞ্জরী, জাগো ফাউন্ডেশন-এর প্রতিষ্ঠাতা করভি রাখসান্দ, সহকারী পরিচালক এশা ফারুকী।
আলোচনায় কাশফিয়া ফিরোজ জানান, ‘সহিংসতার এই ভয় শুধু কিশোর-কিশোরীদের জীবনেই সীমাবদ্ধ নয়। আর তাই, সহিংসতার ভয়ের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরুর প্রাক্কালে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ দেশের সকল বিভাগ থেকে পারিবারিক বলয়ে, রাস্তায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, অনলাইনে-সহ বিভিন্ন পরিমণ্ডলে ‘সহিংসতার ভয়’ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে। প্রায় ১২ হাজার অংশগ্রহণকারীর উপর জরিপ পরিচালনার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি ৮১ দশমিক ৬ শতাংশ নারী গণপরিসরে বিভিন্ন রকম হয়রানির শিকার হয়। ৮৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী ও কিশোরী জানান তারা নিজ পরিবারেই বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার শিকার হয়েছেন। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৭৪ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষক, সিনিয়র স্টুডেন্ট দ্বারা বিভিন্ন বিরূপ ও অশালীন মন্তব্যের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেন। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিরূপ মন্তব্যের শিকার হওয়ার কথা জানান অংশগ্রহণকারীদের ৫৭ শতাংশ, আর কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছেন অংশগ্রহণকারীদের ৫৬ শতাংশ। যা তাদের মনে দীর্ঘমেয়াদি ভয় সঞ্চার করে। জরিপ হতে প্রাপ্ত তথ্য থেকে আমরা জানতে পারি, ভয়ের কারণে অনেক সময় বাবা-মায়েরা মেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, খেলাধুলা, পিকনিকে অংশগ্রহণ করতে দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। সহিংসতার ভয়ের এই বলয়কেই আমরা আমাদের কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে ভাংতে চাই।
করভি রাখসান্দ বলেন, আগ্রাসন কিংবা জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার ভয় নারীর জীবনকে সীমাবদ্ধ করে তোলে। আমরা চাই সমাজের প্রতিটা জায়গা, প্রতিটা স্তর হবে সকল মানুষের জন্য নিরাপদ।
শুরুতেই ঢাকা, রংপুর, বরিশাল এবং কক্সবাজার থেকে নির্বাচিত ২০ জন যুব গ্রহণ করবেন দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, যেন তারা নিজ নিজ কমিউনিটিতে গিয়ে তাদের কমিউনিটির তরুণদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সহিংসতার ভয়ের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করতে পারেন। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলবে গণপ্রচারণা অভিযান।
পুরো ক্যাম্পেইনটি শেষ হবে একটি জাতীয় আলোচনার মধ্য দিয়ে- যেখানে যুবদের মধ্য থেকেই উঠে আসবে সহিংসতার ভয় বিষয়ক চ্যালেঞ্জের গল্প এবং তা মোকাবিলার পথ।
২ বছর আগে
পাঁচ প্রতিবন্ধী সদস্য নিয়ে এক হতদরিদ্র পরিবারের করুণ কাহিনী
গাছ থেকে পড়ে গিয়ে কোমড় ভেঙে যাওয়ার পর প্রতিরাতেই হাড় ভাঙার তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করেন জিয়া শেখ (৪০)। তীব্র ব্যাথায় তার গোঙানির শব্দ শুনে ফ্যালফ্যাল করে অসহায়ের মতো মুখের দিকে চেয়ে থাকে ঘরের বৃদ্ধা মা, অসহায় স্ত্রী ও চারটি শিশু সন্তান। যাদের মধ্যে তিনজন জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী।
ফরিদপুরের মধুখালীর এক হতদরিদ্র জিয়া শেখের পরিবারের করুণ কাহিনী এটি। মাত্র ছয় মাস আগে একটি তাল গাছ ঝুড়তে যেয়ে গাছ থেকে পড়ে চলাচলের শক্তি হারান জিয়া। ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেয়ার পর ডাক্তার বলেছেন অপারেশন করাতে। কিন্তু অপারেশন করানোর সামর্থ্য নেই তার পরিবারের।
মধুখালী উপজেলার মেগচামী গ্রামের প্রতিবন্ধী জিয়া শেখের বাবা করিম শেখ ছিলেন একজন হতদরিদ্র গৃহকর্তা। বাসাবাড়িতে ভিক্ষা করে যা পেতেন তাই দিয়েই কোনমতে দিন কাটতো পরিবারের। ভূমিহীন এই পরিবারের মাথা গোঁজার কোন ঠাই ছিল না। এই অবস্থায় সাত বছর আগে তিন ছেলে ও স্ত্রী রেখে মারা যান করিম শেখ। ছোট ছেলে জিয়া নিজেও একজন শ্রবণ প্রতিবন্ধী।
আরও পড়ুন: নেতিবাচক প্রভাবে কক্সবাজারে পর্যটনে ভাটা
জিয়া শেখ জানান, দিনমজুরির পাশাপাশি তালগাছ ও নারকেল গাছ ঝুড়ে (গাছের ডগা পরিচর্যা) চলতো তার সংসার। তার স্ত্রী আরজিনা শ্রবণ প্রতিবন্ধী। তাদের সংসারে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। এর মধ্যে বড় ছেলে আকাশ (১৫) জন্ম থেকে শারিরীক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। ছয় বছর বয়সী ছোট মেয়ে ইয়াসমিন বাবা-মায়ের মতোই শ্রবণ প্রতিবন্ধী। শারিরীক কোন প্রতিবন্ধকতা নেই ১৪ বছর বয়সী বড় মেয়ে হেলেনার। সে এখন মেগচামী স্কুল এন্ড কলেজ আদর্শ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তাদের আরেক ছেলে রয়েছে আট বছর বয়সী তামিম। সে স্থানীয় প্রাইমারী স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। সামর্থ্যহীন পরিবারের ঘানি টানতে স্ত্রী আরজিনা বেগম) স্থানীয় একটি মিলে মজুরের কাজ করতেন। আরজিনা নিজেও প্রতিবন্ধী হওয়ায় মিলে কাজ করতে যেয়ে তিনি অসুস্থ্ হয়ে পড়েন।
২ বছর আগে
করের আওতা বাড়াতে এনবিআরের সর্বাত্মক চেষ্টা
কর ফাঁকিবাজদের লাগাম টেনে ধরতে এবং কর জাল সম্প্রসারণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
৪ বছর আগে