বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকায় কেন এত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল শহরগুলোর একটি ঢাকা। অপরিকল্পিত নগরায়ন ও দূষণে শহরটি অনেক আগেই বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তার ওপর গড়ে উঠেছে যত্রতত্র প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। এতে করে ভুগতে থাকা এই শহরটির ওপর নতুন করে চাপ বাড়ছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মত, শিক্ষাকে অতিমাত্রায় বাণিজ্যিকীকরণের কারণে এমনটি হয়েছে, যা সুষ্ঠু নগর-পরিকল্পনার সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। অতীতের সরকারগুলো মালিকপক্ষকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ায় শিক্ষাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা সম্ভব হয়নি।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাবে ঢাকার বর্তমান জনসংখ্যা দুই কোটি ৪৬ লাখের বেশি। আর ঢাকাকে বিশ্বের বসবাসের সবচেয়ে অনুপযোগী শহরের একটি বলছে ইআইইউ গ্লোবাল লাইভেবিলিটি ইনডেক্সের ২০২৪ সালের সমীক্ষা। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ যটতা বসবাসের অনুপযুক্ত, ঢাকার অবস্থান তারও নিচে।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) প্রতিবেদন অনুসারে, দেশে ৫৩টি পাবলিক ও ১১০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। যদিও এই পরিসংখ্যানে ইবাইস ইউনিভার্সিটি, দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা, কুইন্স ইউনিভার্সিটি ও আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির কোনো তথ্য যুক্ত করা হয়নি।
আরও পড়ুন: কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতির উন্নয়নে বাকৃবি-মারডক বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণা
২০২২ সালের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা বিভাগে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ১৭টি, আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৬৯টি। অর্থাৎ সরকারি-বেসরকারি মোট ১৬৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢাকা বিভাগেই রয়েছে ৮৬টি। দেশের ১১০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা তিন লাখ ৪১ হাজার ৯৮ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২ লাখ ৪০ হাজার ৫১৩ জন এবং ছাত্রীর সংখ্যা ১ লাখ ৫৮৩ জন। অন্যদিকে, ৫৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মোট ৭ লাখ ২৫ হাজার ৯৭১ জন।
২০২২ সালের পর গত তিন বছরে আর কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি ইউজিসি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে উচ্চশিক্ষার চাহিদার তুলনায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা অপর্যাপ্ত। সীমিত আসন সংখ্যা এবং জাতীয় শিক্ষা বাজেটে উচ্চশিক্ষাখাতে বরাদ্দ ঘাটতি থাকার কারণে উচ্চশিক্ষা বাধাগ্রস্ত হয়। এ অবস্থায়, উচ্চশিক্ষার সম্প্রসারণে ভারত, পাকিস্তান ও জাপানের আদলে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে চায় সরকার।
ঢাকায় কেন এত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়?
শিক্ষার অবাধ বাণিজ্যিকীকরণের কারণেই ঢাকায় এত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠেছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ইউজিসির প্রতিবেদন অনুসারে, এ জেলায় বর্তমানে ৫৭টি প্রাইভেট ও ৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।
ঢাকায় এত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন আছে কিনা—জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘কথা হচ্ছে, প্রয়োজন থাকলেও যেখানে-সেখানে যেমন-তেমন লেখাপড়া করানো আর সার্টিফিকেট দেওয়া—এটা তো সার্টিফিকেট বাণিজ্য! এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’
এজন্য কঠোরভাবে আইনের প্রয়োগের পাশাপাশি নিয়মিত মনিটরিং করাও দরকার বলে মনে করেন এই শিক্ষা অধিকারকর্মী। তিনি বলেন, ‘এটির দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের। তাদের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর ধারা ৬ এর ৩ উপধারায় বলা হয়েছে, পাঠদানের উদ্দেশ্যে প্রস্তাবিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যাপ্তসংখ্যক শ্রেণিকক্ষ, লাইব্রেরি, ল্যাবরেটরি, মিলনায়তন, সেমিনার কক্ষ, অফিস কক্ষ, শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক কমন রুম এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য কক্ষের জন্য পর্যাপ্ত স্থান ও অবকাঠামো থাকতে হবে।
৩ উপধারায় বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যূন ২৫ হাজার বর্গফুট আয়তনবিশিষ্ট নিজস্ব বা ভাড়া করা ভবন থাকতে হবে।
ঢাকার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় অংশই কিন্তু এই শর্ত পূরণ করছে না—প্রসঙ্গে রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘ইউজিসি কয়দিন পরপর বলে যে ক্যাম্পাস করতে হবে, কিন্তু শিক্ষার মান নিয়ে খুব একটা নাড়াচাড়া হয় না। কী পড়ানো হচ্ছে এবং কী প্রয়োজনে এগুলো হচ্ছে—সেটি আগে দেখার বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণের কারণে এমনটি করা হয়েছে। ঢালাও বাণিজ্যিকীকরণ তো গ্রহণযোগ্য নয়। প্রাইভেট খাতের বিকাশ ঘটলে সমস্যা নেই, কিন্তু একটি নিয়ন্ত্রিত কাঠামোর মধ্যে তো তাদের আসতে হবে! কয়দিন পরপর বলেন—প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজস্ব ক্যাম্পাস করতে হবে। অথচ শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে না। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় অনেক ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট বাণিজ্যের একটি উপায়। এ ব্যাপারে তাই আইন কঠোর করতে হবে।’
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কয়েকটি নিজেদের স্থায়ী ক্যাম্পাসে চলে গেছে স্বীকার করে এই শিক্ষাবিদ বলেন, ‘কিছু প্রতিষ্ঠান বড় বড় ক্যাম্পাস করে চলে গেছে, বেশিরভাগই গেছে; কিন্তু বাকিরা গরজ করছে না, আইনের তোয়াক্কাই করছে না। এই তোয়াক্কা করানের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।’
নগর-পরিকল্পনার সঙ্গে বেমানান
ঢাকা শহরের এত এত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নগর-পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা—জানতে চাইলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, এটা একেবারেই বেখাপ্পা। যেখানে আমরা বিক্রেন্দ্রীকরণের কথা বলে আসছি, সেখানে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় করার মাধ্যমে ঢাকা শহরকে আরও কেন্দ্রীভূত করা হয়েছে।’
‘এমনকি যখন বিকেন্দ্রীকরণের কথা ওঠে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাস ঢাকার বাইরে নিয়ে যেতে বলা হলো, তখনও আশুলিয়াসহ ঢাকার আশপাশের এলাকাগুলোতে তারা ক্যাম্পাস স্থাপন করল। অথচ ঢাকার বাইরে এতগুলো বিভাগীয় শহর আছে, জেলা শহর আছে; সেখানে যদি এসব বিশ্ববিদ্যালয় যেত, তাহলে ঠিক হতো।’
উদহারণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন রংপুর থেকে একজন শিক্ষার্থীকে ঢাকায় এসে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। যদি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সেখানে হতো, তাহলে তারা সেখানে বসেই লেখাপড়া করতে পারতেন।’
আগের সরকারের মন্ত্রী ও আমলাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়েই এসব হয়েছে বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের এই অধ্যাপক।
তার ভাষ্যে, ‘বিগত সময়ে যারা মন্ত্রী ও আমলা ছিলেন, তারা তাদের মতো করে পরিচিত লোকজনকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সরকারে বিকেন্দ্রীকরণ নীতি নিয়ে ভাবার মতো সময় তাদের ছিল না।’
ঢাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি দেওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতামতেও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি।
আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকদের ইচ্ছামাফিক এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কারণ তারা ঢাকা ছেড়ে যেতে চাননি। এর ফলে এটি নগরীতে অনেক বেশি চাপ তৈরি করেছে। এতগুলো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শহরের জন্য কখনোই ভালো কিছু নয়। সব মিলিয়ে সিদ্ধান্তগুলো নগর-পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না।’
ঢাকা বিকেন্দ্রীকরণের বিপরীত
ঢাকাকে বাসযোগ্য নগর হিসেবে গড়ে তুলতে সবসময় বিকেন্দ্রীকরণের কথা বলে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সরকারগুলো তাদের মতামতের বিপরীতে গিয়ে ঢাকাকে কেন্দ্র করেই বেশিরভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি দিয়েছে।
এই প্রসঙ্গ তুলে নগর-পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয় আশুলিয়ায় যাওয়া মানে সেটি ঢাকার বাইরে নয়। পঞ্চাশটি বিশ্ববিদ্যালয় যদি ঢাকার (জেলার) মধ্যেই কোথাও জমি ভরাট করে তৈরি হয়, তাহলে সেটিকে ঢাকার বাইরে যাওয়া বলে না। ঢাকার বাইরে বলতে একেবারে নতুন জেলা কিংবা বিভাগীয় শহর হতে হবে। সেটাকে বলে বিকেন্দ্রীকরণ।’
তার অভিযোগ, ‘ঢাকার কেন্দ্রস্থল থেকে সরে গিয়ে যদি আশুলিয়া কিংবা বিরুলিয়ায় ক্যাম্পাস স্থাপন করা হয়, তাহলে সেটিকে বিকেন্দ্রীকরণ বলে না। আর এ কারণে ঢাকার আয়তন বাড়ছে, গ্রেটার ঢাকা হচ্ছে। ঢাকার বাইরে বলতে একেবারে ঢাকা জেলা পার হতে হবে, কিন্তু তারা বলছেন ঢাকা শহর ছাড়লেই হবে। সরকার আসলে বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রাহ্য না করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় মালিকদের ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এমনটি হয়েছে।’
তার সঙ্গে একই মত পোষণ করেছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. মনজুর আহমেদ।
ইউএনবিকে তিনি বলেন, ‘প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও বিকেন্দ্রীকরণ করা উচিত। আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি—সবই ঢাকাকেন্দ্রিক। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে এই বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত। এগুলোকে বিকেন্দ্রিকরণ করা উচিত।’
ইউজিসি কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে না বলেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঢাকাকেন্দ্রিক হচ্ছে বলে মনে করেন এই প্রবীণ শিক্ষক। বলেন, ‘উচ্চশিক্ষা নিয়ে সরকারের একটি সামগ্রিক পরিকল্পনা থাকা উচিত। ঢাকার বাইরের মানুষও যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ও গবেষণায় যুক্ত হতে পারেন, সেরকম কার্যক্রম প্রণয়ন করা উচিত।’
ঢাকার সবকিছুই অপরিকল্পিত
কেবল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, ঢাকায় কোনোকিছুই পরিকল্পনামফিক করা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ইউজিসি সদস্য ড. আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘বর্তমানে আমাদের যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আছে, সেগুলোকে কোয়ালিটি এডুকেশনের (মানসম্পন্ন শিক্ষা) দিকে নিয়ে যেতে চাই।’
ড. আনোয়ার বলেন, ‘এই চিন্তা মাথায় রেখে মানের ঘাটতি থাকলে নতুন করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় করতে আমরা সর্বাত্মক নিরুৎসাহিত করব। পাবলিক ও প্রাইভেট মিলিয়ে দেশে এখন ১৬৮টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। এত ছোট দেশে এতগুলো বিশ্ববিদ্যালয়! একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করতে দুইশ থেকে পাঁচশ বিঘা পর্যন্ত জমি লাগে এবং আমাদের জনসংখ্যার তুলনায় জমির পরিমাণ খুবই কম।’
‘অধিকাংশ জমি জলাভূমি ও কৃষিজমি। এসব ভরাট করে আমাদের উন্নয়নের অনেক প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে, হোক সেটা পাওয়ার প্ল্যান্ট কিংবা ইন্ডাস্ট্রি। এসবের মধ্যে বিশ্ববিদ্যায় একটা কমপোনেন্ট, যেটা আসলে খুব অল্প জায়গা নিচ্ছে। তবে খুব সচেতনভাবে এ বিষয়টির পরিচালনা করা দরকার।’
নগর-পরিকল্পনাবিদরা তো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকার বাইরে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দিচ্ছেন— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সরকারি পর্যায় থেকে যদি আসে, পলিসিতে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তাহলে অবশ্যই আমরা সেটাকে উৎসাহিত করব। শিক্ষার সঙ্গে সোসাইটিকে কমিউনিকেট করার জন্য যে ধরনের পলিসি ও কাঠামোগত সাপোর্ট দরকার, সেটা ডেভলপড করা অত্যন্ত জরুরি।’
পরিকল্পিত শহর আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেই দিক থেকে নগরের সিভিক ফ্যাসিলিটির ক্ষেত্রে কোন কোন কম্পোনেন্টগুলো থাকবে, কোথায় থাকবে, সেটা কতটা থাকবে, কতটা থাকলে ওভারক্রাউডেড হবে না, নগরীর বাসিন্দাদের জন্য ক্ষতিকর হবে না—সেই জিনিসগুলো বিবেচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন এই শিক্ষক।
ধীরে ধীরে ঢাকা থেকে বেরোচ্ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ধীরে ধীরে ঢাকার বাইরে চলে যাচ্ছে বলে জানান ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ। তার কথায়, ‘এখন সবগুলোই আস্তে আস্তে শহরের বাইরে যাচ্ছে। আমাদের তিন বিঘা জমি যেটা দরকার, এক একর জমি দরকার—সেটা করতে গিয়েই সবাই ঢাকার বাইরে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় তো ঢাকার বাইরেই ছিল, কিন্তু ওটা এখন শহর হয়ে গেছে। ইন্ডিপেন্ডেন্ট ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ও ঢাকার প্রান্তে চলে গেছে।’
‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জন্য তিন বিঘা জমির যে রিকোয়ারমেন্ট আছে, সেটা তারা কোথায় পাবে? এগুলো ঢাকার বাইরে শিফট করতে একটু সময় নিচ্ছে, তবে শিফট করার প্রক্রিয়া চলমান আছে। আর শিফট না করলে তো (আমরা) সার্টিফাই করছি না!’
আরও পড়ুন: ৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রাণিসম্পদ ডিজিকে বাকৃবির সংবর্ধনা
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ অনুযায়ী প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী ক্যাম্পাসে গিয়ে স্থায়ী সনদের জন্য আবেদন করার নিয়ম রয়েছে, কিন্তু সেটি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য বলেন, ‘আমরা মনিটর করছি। যারা ঢাকার মধ্যে আছে, সেগুলোকে আমরা সনদের জন্য এন্টারটেইন (বিবেচনা) করছি না। যতক্ষণ পর্যন্ত না ঢাকার বাইরে যাচ্ছে, তারা কনভোকেশন করতে পারছে না, কিছুই করতে পারছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটা সহযোগিতার মধ্য দিয়ে এগোতে চাই। খবরদারি কিংবা জুলুমে আমরা বিশ্বাস করি না। আমাদের একটা মেকানিজম আছে, সেটা পূর্ণ না করলে তারা কনভোকেশন কিংবা অন্যকিছু করতে পারে না। ফলে ওরা নিজেদের স্বার্থেই ঢাকার বাইরে চলে যাচ্ছে।’
৭০ দিন আগে
চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মৃত্যু
চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছেন। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে তার লাশ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা।
নিহত জুনায়েদুল ইসলাম জারিফ (১৮) চন্দনাইশস্থ বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি আমিরাবাদ ইউনিয়নের জনকল্যাণ এলাকার জুলফিকার আলী ভুট্টোর ছেলে।
আরও পড়ুন: উলিপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্রের মৃত্যু
স্থানীয়রা জানায়, গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ২টার সময় অতিবৃষ্টির কারণে নিজ বাড়ি থেকে বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাবার সময় আমিরাবাদ ইউনিয়নের জনকল্যাণ এলাকায় বন্যার পানির স্রোতে ভেসে যায়। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মঙ্গলবার তার লাশ পাওয়া যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, পানিতে ডুবে নিখোঁজ এক যুবকের লাশ উদ্ধারের খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফুলবাড়ীতে আম পাড়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে স্কুলছাত্রের মৃত্যু
সিরাজগঞ্জে বজ্রপাতে কলেজ ছাত্রের মৃত্যু
৬১৯ দিন আগে
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ন্যাশনাল স্টিম অলিম্পিয়াডের বুটক্যাম্প
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এ ন্যাশনাল স্টিম অলিম্পিয়াডের বুটক্যাম্প আয়োজন করেছে আইটেসারেক্ট টেকনোলজিস।
আগামী ২০ জুন থেকে অফিসিয়াল রেজিস্ট্রেশন শুরু হবে। আবেদনের সুযোগ থাকছে জুলাই পর্যন্ত।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সারা দেশে আয়োজন করা হচ্ছে ন্যাশনাল স্টিম অলিম্পিয়াড। অলিম্পিয়াডটি আয়োজন করেছে আইটেসারেক্ট টেকনোলজিস।
অলিম্পিয়াডে মোট তিনটি রাউন্ডে আটটি ভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: ঢাকায় নিউ হরাইজন কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের যাত্রা শুরু
অলিম্পিয়াডের প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মাদ আবদুল হামিদ বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দক্ষতাসমূহের ওপর গুরুত্বারোপ করে আসন্ন চ্যালেঞ্জ ও পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণে সব শিক্ষার্থীকে সচেতন ও দক্ষতা উন্নয়নে উৎসাহিত করাই এ অলিম্পিয়াডের মূল লক্ষ্য।
অলিম্পিয়াডে প্রতিটি বিভাগের বিজয়ীদের জন্য প্রথম পুরস্কার হিসেবে থাকবে ২ লাখ টাকা, প্রথম রানার্সআপ ও দ্বিতীয় রানার্সআপের জন্য যথাক্রমে ১ লাখ ও ৫০ হাজার টাকা।
মোট ছয়টি স্তরের শিক্ষার্থীরা এ ন্যাশনাল স্টিম অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে পারবে। স্তরগুলো হচ্ছে প্রথম-পঞ্চম শ্রেণি, ষষ্ঠ-দশম শ্রেণি, কলেজ শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, পলিটেকনিক শিক্ষার্থী ও মাদরাসা শিক্ষার্থী।
এ আয়োজন নিয়ে দেশব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যায়ক্রমে বুটক্যাম্প করা হবে।
আরও পড়ুন: ঢাবির ‘কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আইটেসারেক্ট টেকনোলজিস আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে অনলাইনে (www.nationalsteamolympiad.com) নিবন্ধন করতে হবে।
স্টিম অলিম্পিয়াডের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে থাকছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এবং প্রধান উপদেষ্টা ও আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইটেসারেক্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মাদ আবদুল হামিদ, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল জুবায়ের ও সমন্বয়ক সাকাওয়াত হোসেন।
আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রধান হাতিয়ার শিক্ষা: মন্ত্রী
৬৭৪ দিন আগে
শ্রমবাজারের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষা দিন: রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শ্রমবাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একাডেমিক পাঠ্যক্রমের পরিকল্পনা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘শ্রমবাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের একাডেমিক পাঠ্যক্রমের পরিকল্পনা করতে হবে। প্রায়ই দেখা যায় শিক্ষার্থীরা তাদের আগ্রহ ও পছন্দ অনুযায়ী পড়াশোনা করতে পারে না।’
রবিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি। রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: ইসিকে সাহসের সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান রাষ্ট্রপতির
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার।
তিনি বলেন, ‘এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষিত ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।’
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রকৌশল ও তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে।’
আরও পড়ুন: পিএসসিকে সরকারি নিয়োগ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা যেন কোনোভাবেই সনদ ভিত্তিক না হয় তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়তে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু আসন টিউশন ফি-মুক্ত রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণার কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যান্য দেশে তাদের পাঠদান নিয়ে কী করা হচ্ছে তা জানতে গবেষকদের যথেষ্ট আগ্রহ ও উদ্দীপনা থাকতে হবে।
সংগঠনটির চেয়ারম্যান কবির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
১১২৫ দিন আগে
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা চায় ইউজিসি
পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি নিরসনের জন্য দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও একটি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
১৫৫৮ দিন আগে
বিদেশি শিক্ষার্থী টানতে পারছে না ঢাবি
শিক্ষার মানের জন্য একদা ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ হিসেবে অভিহিত করা হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা দিন দিন কমছে।
১৬৪৫ দিন আগে
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ইউজিসির অনলাইন পাঠদান নির্দেশনা প্রকাশ
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে পাঠদান, পরীক্ষা নেয়া, মূল্যায়ন ও শিক্ষার্থী ভর্তি বিষয়ে নির্দেশনা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
১৮০৭ দিন আগে