ব্যবসায়ী নেতা
রপ্তানি প্রণোদনা কমালে দেশীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে: ব্যবসায়ী নেতারা
চলতি অর্থবছরে প্রায় সব খাতে রপ্তানি প্রণোদনা কমানোর সরকারি সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
তারা বলছেন, সরকার এই পদক্ষেপের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছে ২০২৬ সালে দেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) স্ট্যাটাস থেকে উত্তরণের পরে রপ্তানি ভর্তুকি পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হবে।
আইএমএফের পরামর্শ অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় ব্যয়ের ওপর চাপ কমানো এবং রপ্তানিকারকদের সক্ষমতা বাড়িয়ে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে প্রস্তুত হতে উৎসাহিত করাও এ পদক্ষেপের লক্ষ্য।
তবে এ বিষয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) কার্যকরী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
তার মতে, এই পদক্ষেপের প্রভাব পড়বে দেশের প্রধান রপ্তানি আয়ের উৎস পোশাক খাতের ওপর।
হাতেম এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে বলেন, ‘পোশাক খাত এখন আইসিইউতে রয়েছে। যথাযথ চিকিৎসা না দিলে শিগগিরই লাইফ সাপোর্টে রাখতে হবে।’
তার মতে, এই মুহূর্তে রপ্তানি প্রণোদনা কমানো মানে এ খাতকে গলা টিপে হত্যা করা।
তবে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম কিছুটা ভিন্ন মত পোষণ করেছেন।
সোমবার এ বিষয়ে তিনি ইউএনবিকে বলেন, বৈশ্বিক প্রতিযোগীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় রপ্তানিকারকদের উৎসাহিত করতে সরকার রপ্তানি ভর্তুকি কমিয়েছে।
তবে দেশীয় শিল্পের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে রাষ্ট্রীয় সহায়তা এবং প্রণোদনা উভয়ই প্রয়োজন।
এই সিদ্ধান্তের প্রভাব কিছু খাতকে প্রভাবিত করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার বিকল্প উপায়ে এটি কভার করতে পারে।
আরও পড়ুন: ‘বাজারের এই মাথা-ওই মাথা ঘুরছি, কিছু কিনতে পারছি না’
তবে তিনি উল্লেখ করেন, অনেক স্থানীয় শিল্প উচ্চ সুদের হার এবং উচ্চ ইউটিলিটি বিলের কারণে হিমশিম খাচ্ছে, যা উৎপাদন ব্যয় বাড়াচ্ছে।
তাই রপ্তানি খাতে টিকে থাকতে হলে স্থিতিশীল বিনিময় হার ও স্বস্তিদায়ক হারে জ্বালানি সরবরাহ অপরিহার্য।
গত ৩০ জুন এক প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে রপ্তানি প্রণোদনার সর্বোচ্চ হার ১০ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
সব বাজারে পোশাক প্রস্তুতকারকদের নগদ সহায়তা শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে অর্ধেক করে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। নতুন বাজারে প্রবেশের জন্য নগদ ভর্তুকি ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করা হয়েছে।
এই কম রপ্তানি প্রণোদনা পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত মাছ ও কৃষিজাত পণ্যসহ অন্যান্য বিভিন্ন খাতের জন্য প্রযোজ্য হবে। ৩০ জুন পর্যন্ত এটির হার ছিল ১৫ শতাংশ।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির আগে তারা ২০ শতাংশ প্রণোদনা পেতেন। তবে ক্রাস্ট চামড়া রপ্তানিতে ৬ শতাংশ প্রস্তাব করেছে সরকার।
বর্তমানে ৪৩টি খাত এই সহায়তা পেয়ে থাকে। গত তিন বছরে সরকার বার্ষিক প্রায় ৯ হাজার ২৫ কোটি টাকা ব্যয় করেছে।
আরও পড়ুন: নিত্যপণ্যের দাম নাগালে রাখতে সাপ্লাই-চেইন স্থিতিশীল রাখুন: এফবিসিসিআই
৪ মাস আগে
সুদের সীমা তুলে নেয়ার বিপক্ষে ব্যবসায়ী নেতারা
দেশের ব্যবসায়ী নেতারা সুদের হারের সীমা তুলে নেয়ার বিপক্ষে দাবি জানিয়েছেন। কারণ হিসেবে তারা বিনিয়োগে প্রভাব পড়ার কথা বলেছেন।
তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গেও একমত হয়েছেন যিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে সীমা তুলে নেয়ার এটি সঠিক সময় নয়।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এক সম্মেলনে বক্তৃতাকালে বলেন, সুদের সীমা প্রত্যাহারের জন্য একটি ভালো সময়ের অপেক্ষায় রয়েছে তারা।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এই হার বৃদ্ধির বিরোধিতা করেছেন।
শুক্রবার তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে সুদের হার বাড়লে বিনিয়োগকারীরা বিপাকে পড়বেন। উৎপাদন খাতের বিনিয়োগকারীদের একটি প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব বাজারে তাদের পণ্য বিক্রি করতে হবে।’
আরও পড়ুন: মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক
তিনি ইউএনবিকে বলেন, অন্যান্য অনেক প্রতিযোগিতামূলক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে সুদের হার এখনও বেশি, যা সুদের হার বাড়ানোর আগে বিবেচনায় নিতে হবে।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে উদ্যোক্তারা লোকসানে পড়ছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা বিনিয়োগ আনতে চায় কি না। উচ্চ সুদের হার অনেক ক্ষেত্রেই অনিশ্চয়তা তৈরি করবে, যা ইতোমধ্যে মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে হয়েছে।
আরও পড়ুন: মূল সুদের হার বাড়াল শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস) আয়োজিত তিন দিনব্যাপী বার্ষিক উন্নয়ন সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে সুদের সীমা বিষয়টি উঠে আসে।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যেই ভোক্তা ঋণের সুদের হার শিথিল করেছে।
বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার সম্পর্কে রউফ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার শক্তিকে তা নির্ধারণ করতে দিবে।
আরও পড়ুন: পোশাক শিল্প উন্নয়ন তহবিলে ঋণের সুদের হার কমাল বাংলাদেশ ব্যাংক
১ বছর আগে
দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, চাঁদপুরের ব্যবসায়ীদের
ঈদ সামনে রেখে দোকান খোলার অনুমতি পেলেও সিলেট, রাজশাহী, চাঁদপুরের ব্যবসায়ীরা এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামের কিছু ব্যবসায়ী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করার জন্য তাদের ব্যবসা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
৪ বছর আগে