আন্তোনিও গুতেরেস
'অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমৃদ্ধ গণতন্ত্র' অর্জনে সরকারের প্রচেষ্টা সমর্থন করে জাতিসংঘ: অধ্যাপক ইউনূসকে গুতেরেস
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা এক চিঠিতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, 'অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমৃদ্ধ গণতন্ত্র' অর্জনে তার সরকারের প্রচেষ্টার প্রতি জাতিসংঘের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে এবং বাংলাদেশের জনগণের সুবিধার্থে আবাসিক সমন্বয়কারী ও জাতিসংঘ কান্ট্রি টিমের মাধ্যমে সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সোমবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং চিঠিটি গণমাধ্যমের সঙ্গে শেয়ার করে।
অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করায় শুভেচ্ছা জানান জাতিসংঘ মহাসচিব।
গুতেরেস বলেন, 'আমি বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা এবং সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই।’
অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্ব সহিংসতা বন্ধ, জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, আইন-শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মন্তব্য করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
আরও পড়ুন: আমাদের কৌশলের কেন্দ্রবিন্দুতে তরুণ ও শিক্ষার্থীদের স্থান দিতে হবে: অধ্যাপক ইউনূস
তিনি বলেন, 'আমি আশা করি আপনার সরকার তরুণ ও নারীদের পাশাপাশি সংখ্যালঘু ও আদিবাসী সম্প্রদায়গুলোকেও বিবেচনায় নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্যোগ নেবে।’
গুতেরেস জানান, তিনি সব নাগরিক, বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন বাংলাদেশ সরকারের ওপর নির্ভর করেন।
তিনি বলেন, 'বিশেষ করে মিয়ানমারে অবনতিশীল পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য আমি আপনাদের প্রতি জোরালোভাবে আহ্বান জানাচ্ছি।’
বাংলাদেশ ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে বলে মন্তব্য করেন গুতেরেস।
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেবে জাতিসংঘ: মুখপাত্র
৪ মাস আগে
উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দুর্যোগ মোকাবিলায় তহবিল বাড়ানোর আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, ক্রমবর্ধমান জলবায়ুর প্রভাব ও ব্যাপক দূষণ থেকে গ্রহের প্রয়োজনীয় বাস্তুসংস্থান রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে এ আহ্বান জানান আন্তোনিও গুতেরেস।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাস্তুসংস্থান ও ভূমি পুনরুদ্ধারে এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বৈশ্বিক চুক্তি ‘কুনমিং-মন্ট্রিল বায়োডাইভারসিটি ফ্রেমওয়ার্ক’র অধীনে দেশগুলোকে তাদের সব প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে দেশগুলো কীভাবে বন উজাড় প্রতিরোধ এবং বনায়ন বাড়াবে তা ঠিক করতে অবশ্যই তাদের জাতীয় জলবায়ু কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করা উচিত। উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে, প্রকৃতি রক্ষা করতে এবং টেকসই উন্নয়নে সহায়তা করতে আমাদের অবশ্যই ব্যাপকভাবে অর্থায়ন বাড়াতে হবে।’
১৯৭৩ সাল থেকে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন হচ্ছে। এ দিন পরিবেশ নিয়ে ভাবনার প্রসারের জন্য বৃহত্তম বিশ্বব্যাপী প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: সবুজ জলবায়ু তহবিলের ব্যর্থতায় বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে বঞ্চিত: টিআইবি
এ বছর দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য ‘করব ভূমি পুনরুদ্ধার, রুখব মরুময়তা, অর্জন করতে হবে খরা সহনশীলতা।’
অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল হতে চাইলে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘বাস্তুসংস্থান পুনরুদ্ধারে বিনিয়োগ করা প্রতিটি ডলার অর্থনৈতিক সুবিধার ক্ষেত্রে ৩০ ডলারেরও বেশি ফেরত দেবে।’
অনিয়ন্ত্রিত দূষণ, জলবায়ু বিশৃঙ্খলা ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস রোধে ব্যর্থতা সবার কাছে দৃশ্যমান। স্বাস্থ্যকর, উর্বর জমিগুলো মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে, সমৃদ্ধ বাস্তুসংস্থান মৃত অঞ্চলে পরিণত হচ্ছে এবং কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন বাড়ছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘এর মানে ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, পানির উৎসগুলো হারিয়ে যাচ্ছে, অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং সম্প্রদায়গুলো বিপন্ন হয়ে পড়ছে- আর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দরিদ্র জনগোষ্ঠী। এই অবস্থা পরিবর্তনের সময় এসেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পুনরুদ্ধারকারী প্রজন্ম। আসুন আমরা ভূমি ও মানবতার জন্য একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তুলি।’
আরও পড়ুন: বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হলে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে: পরিবেশমন্ত্রী
৬ মাস আগে
আমরা এখনো পুরুষতান্ত্রিক সংস্কৃতিই লালন করে চলেছি: জাতিসংঘ মহাসচিব
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন, জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং টেকসই উন্নয়নের পথে বড় বাধা।
তিনি বলেন, ‘এই সমস্যা ব্যাপক এবং দিনে দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন থেকে শুরু করে হত্যাকাণ্ড – নারীর প্রতি সহিংসতা নানাভাবে ঘটছে। কিন্তু, এই সমস্যার মূলে রয়েছে কাঠামোগত অবিচার, যা গড়ে উঠেছে যুগ যুগ ধরে চলে আসা পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার কারণে।’
২৫ নভেম্বর নারীর প্রতি সহিংসতা নির্মূলে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো পুরুষতান্ত্রিক সংস্কৃতিই লালন করে চলেছি, যা নারীদের মর্যাদা ও অধিকার প্রত্যাখ্যান করে তাদের আরও ঝুঁকিতে ফেলছে।’
আরও পড়ুন: সহিংসতা ও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে বাংলাদেশের সব পক্ষের প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান
মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের সবাইকেই মূল্য দিতে হচ্ছে: আমাদের সমাজে শান্তি নেই, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক নয়, আমাদের বিশ্বটা তুলনামূলক কম ন্যায়সঙ্গত। কিন্তু নতুন এক বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।’
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘নারী ও কন্যাশিশুর ওপর সহিংসতা প্রতিরোধে বিনিয়োগ’।
বিশ্বজুড়ে নারীর অধিকার রক্ষাকে আরও সুসংহত করতে উপযোগী আইন ও নীতি প্রণয়নে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নারীর প্রতি অন্যায় প্রতিরোধ ও অধিকার নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও শক্তিশালী করতে বিনিয়োগ জোরদার করতে হবে।
জাতিসংঘের প্রধান বলেন, বিশ্বের সর্বত্র ভূক্তভোগীর কথা শুনুন এবং দোষীদের দায়মুক্তির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসুন। নারী অধিকারকর্মীদের পক্ষে দাড়ান এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রতিটি স্তরে নারী নেতৃত্বের পক্ষে কথা বলুন।
তিনি বলেন, আসুন, আমরা একসঙ্গে নারীর পক্ষে দাড়াই, তাদের জন্য কথা বলি। আসুন আমরা এমন এক বিশ্ব গড়ে তুলি, যাতে যে কোনো জায়গায় নারীর প্রতি যেকোনো ধরনের সহিংসতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া যায়।
আরও পড়ুন: গাজার বাসিন্দাদের স্থানান্তর অত্যন্ত বিপজ্জনক: জাতিসংঘ মহাসচিব
পর্যটনশিল্পকে অবশ্যই নিরাপদ করতে হবে: জাতিসংঘ মহাসচিব
১ বছর আগে
অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ ও টেকসই মানব বসতি গড়তে অঙ্গীকারের আহ্বান জাতিসংঘ প্রধানের
সব জায়গায় সব মানুষের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ, স্থিতিস্থাপক ও টেকসই মানব বসতি গড়ে তুলতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক পদক্ষেপ অত্যাবশ্যক এবং বিশ্বব্যাপী সহযোগিতাও অপরিহার্য। এই বিশ্ব আবাসন দিবসে আসুন আমরা সব মানুষের জন্য, সর্বত্র অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ, স্থিতিস্থাপক ও টেকসই মানব বসতি গড়ে তোলার অঙ্গীকার করি।’
আগামীকাল সোমবার (২ অক্টোবর) বিশ্ব আবাসন দিবস উপলক্ষে এক বার্তায় রবিবার (১ অক্টোবর) তিনি এসব কথা বলেন।
এই বছরের বিশ্ব আবাসন দিবসটি 'স্থিতিস্থাপক শহুরে অর্থনীতি' এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক, সবুজ ও টেকসই প্রবৃদ্ধির চালক হিসেবে শহরগুলোর সম্ভাবনার উপর আলোকপাত করেছে।
জাতিসংঘের প্রধান বলেছেন, এই প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য শহরগুলোকে অবশ্যই অর্থনৈতিক ধাক্কা, ক্রমবর্ধমান জলবায়ু সংকট এবং বৈষম্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের স্থানীয় ২০৩০ কোয়ালিশনের মাধ্যমে আমরা এই সঙ্কটগুলোকে মোকাবিলা করতে এবং টেকসই নগরায়নকে এগিয়ে নিতে পুরো জাতিসংঘ ব্যবস্থাকে একত্রিত করছি।’
আরও পড়ুন: পর্যটনশিল্পকে অবশ্যই নিরাপদ করতে হবে: জাতিসংঘ মহাসচিব
গুতেরেস বলেন, সার্কুলার ইকোনমি (উপকরণ বা পণ্যের পুনর্ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা) তৈরিতে সহায়তা করছে স্থানীয় শূন্য বর্জ্য উদ্যোগ।
সবুজ স্থান সম্প্রসারণের জন্য জনসাধারণের প্রচেষ্টা তাপপ্রবাহের সময় শহরের প্রাকৃতিক পরিবেশকে শীতল করতে সহায়তা করে।
তিনি বলেন, ‘খাদ্যের বর্জ্য কমাতে এবং স্থানীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে আঞ্চলিক উদ্যোগ আমাদের খাদ্য ব্যবস্থার পরিবর্তনের মূল পদক্ষেপ।’
জাতিসংঘের প্রধান বলেছেন, ‘বৃহত্তর স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করা এবং দুর্বল জনসংখ্যাকে আরও ভালোভাবে রক্ষা করার জন্য টেকসই অবকাঠামো, আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা এবং সবার জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের ও পর্যাপ্ত আবাসনের জন্য অনেক বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘একইসঙ্গে শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, ডিজিটাল উদ্ভাবন এবং উদ্যোক্তায় বিনিয়োগ করার পাশাপাশি আমাদের অবশ্যই বিদ্যুৎ, পানীয়, স্যানিটেশন, পরিবহন এবং অন্যান্য মৌলিক পরিষেবাগুলোতে অভিগম্যতার উন্নয়নে কাজ করতে হবে।’
আরও পড়ুন: মানুষের উন্নত ভবিষ্যৎ-শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ার পথ হলো শিক্ষা: জাতিসংঘ মহাসচিব
বিশুদ্ধ বাতাসের জন্য বৈশ্বিক সহযোগিতা বাড়াতে জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান
১ বছর আগে
বিশুদ্ধ বাতাসের জন্য বৈশ্বিক সহযোগিতা বাড়াতে জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান
বায়ু দূষণের ক্রমবর্ধমান ‘বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা’মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) নীল আকাশের জন্য আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্ন বায়ু দিবস উপলক্ষে গুতেরেস বলেন, ‘বৈশ্বিক সমস্যার বৈশ্বিক সমাধান প্রয়োজন। আমাদের অবশ্যই পরিষ্কার বাতাসের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
‘টুগেদার ফর ক্লিন এয়ার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে নীল আকাশের জন্য পরিচ্ছন্ন বায়ুর চতুর্থ আন্তর্জাতিক দিবসটি বায়ু দূষণ কাটিয়ে উঠতে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার জরুরি প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।
গুতেরেস বলেছেন, ‘একসাথে, আমাদের অবশ্যই জীবাশ্ম জ্বালানী, বিশেষত কয়লা থেকে দূরে একটি ন্যায়সঙ্গত রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করতে হবে। একই সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে ধাবিত হতে হবে। এমনকি কেউ যাতে পিছিয়ে না থাকে তাও নিশ্চিত করতে হবে।’
বায়ুবাহিত দূষণকারী উপাদানগুলো সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবেশগত স্বাস্থ্য ঝুঁকিগুলোর মধ্যে একটি। জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বিশ্বের জনসংখ্যার ৯৯ শতাংশ দূষিত বাতাসে শ্বাস নেয়। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে এর হার উল্লেখযোগ্যভাবে খারাপ।
আরও পড়ুন: ফোর্স কমান্ডার হিসেবে মেজর জেনারেল ফখরুল আহসানকে নিয়োগ দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব
বায়ু দূষণের বিস্তৃত প্রকৃতির জন্য বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা প্রয়োজন। চলতি বছরের প্রতিপাদ্য ‘টুগেদার ফর ক্লিন এয়ার’শক্তিশালী আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব, বর্ধিত বিনিয়োগ এবং বায়ু দূষণ কমানোর জন্য সম্মিলিত দায়িত্বের জরুরি প্রয়োজনকে তুলে ধরে।
বায়ু দূষণকে যে কোনো রাসায়নিক, ভৌত বা জৈবিক দূষক হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয় যা বায়ুমণ্ডলের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যকে পরিবর্তন করে।
গৃহস্থালীর রান্নার যন্ত্র এবং অন্যান্য দহন যন্ত্র, গাড়ি, শিল্পের নানা সরঞ্জাম এবং দাবানল বায়ু দূষণের সবচেয়ে পরিচিত উৎস। বায়ু দূষণ বাইরে ও ভেতরে উভয়ই বিদ্যমান এবং উভয়ই মানুষের স্বাস্থ্যকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে।
বিশেষ করে বিপজ্জনক দূষণকারীর মধ্যে রয়েছে কার্বন মনোক্সাইড, ওজোন, নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড ও সালফার ডাই অক্সাইড।
বায়ু দূষণের মধ্যে রয়েছে পিএম ২.৫, ইনহেলেবল পার্টিকুলেট ম্যাটার ২.৫ মাইক্রোমিটারের কম ব্যাস। এর ব্যাস মানুষের চুলের চেয়ে কম।
এই কণাগুলো মানুষের চোখের অদৃশ্য এবং ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করতে পারে যেখানে তারা প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করতে পারে এবং হৃদয় ও মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এক্সপোজার নাটকীয়ভাবে স্ট্রোক, হৃদরোগ ও ফুসফুসের রোগ, ক্যান্সার এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। যার ফলে বছরে ৬৭ লাখেরও বেশি অকাল মৃত্যু ঘটে।
আরও পড়ুন: সত্য ও সত্য বলা মানুষগুলোকে আক্রমণ করা বন্ধ করতে হবে: বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে জাতিসংঘের মহাসচিব
বায়ু দূষণ গাছপালাকেও প্রভাবিত করে, ফসলের ফলন হ্রাস করে এবং খাদ্য নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করে। এটি সামাজিক ও লিঙ্গ বৈষম্যকে আরও খারাপ করে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ধীর করে দেয় এবং দেশগুলোর উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণের ক্ষমতা সীমিত করে।
জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি)- এর আহ্বায়ক ক্লাইমেট অ্যান্ড ক্লিন এয়ার কোয়ালিশনের সচিবালয়ের প্রধান মার্টিনা অটো বলেন, ‘যেকোনো স্তরে এক্সপোজারের স্বাস্থ্যগত প্রভাব থাকতে পারে যা জীবনযাত্রার মানকে নষ্ট করে এবং ব্যক্তি, সমাজ ও অর্থনীতির জন্য খরচ বহন করে।’
স্থানীয় প্রেক্ষাপট ও সেক্টরের উপর ভিত্তি করে বায়ুর গুণমান উন্নত করার সমাধান পরিবর্তিত হয়। ব্যক্তি পর্যায়ে, মানুষ পরিচ্ছন্ন বাতাসকে উৎসাহিত করে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে, যেমন পরিবেশবান্ধব কেনাকাটা করা এবং পরিবহন ও রান্নার পরিষ্কার পদ্ধতি ব্যবহার করা।
ব্যবসা ও কর্পোরেশনগুলো কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার বিবেচনায় বায়ুর গুণমান যুক্ত করতে পারে। দূষণ নির্গমন নিরীক্ষণ ও প্রকাশ্যে রিপোর্ট করতে পারে এবং নির্গমন হ্রাস করে এমন কর্মসূচিগুলোকে উৎসাহিত করতে পারে।
বায়ুর গুণমান নিরীক্ষণ করার ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২১ সালের নির্দেশিকাগুলোতে বর্ণিত মাইলফলকগুলো অর্জন করতে সরকারগুলোকে বায়ু দূষণের মান তৈরি এবং প্রয়োগ করা উচিত।
নীল আকাশের জন্য আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্ন বায়ু দিবস, প্রতি বছর ৭ সেপ্টেম্বর পালিত হয়। ২০১৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এটি চালু করেছিল। যা পরিষ্কার বাতাসের গুরুত্ব ও মানব স্বাস্থ্য এবং বাস্তুতন্ত্রের উপর অসামঞ্জস্যপূর্ণ বায়ু ও দূষণের প্রভাবকে স্বীকৃতি দেয়। বিশেষত নারী, শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের উপর এর অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাবকে স্বীকৃতি দেয়।
আরও পড়ুন: কোরআন অবমাননার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে ওআইসির পক্ষে গভীর নিন্দা জানালেন রাষ্ট্রদূত
১ বছর আগে
মানবপাচার মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার লঙ্ঘন: আন্তোনিও গুতেরেস
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মানবপাচার হলো মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, সংঘাত ও অস্থিতিশীলতার সময়ে দুর্বলতার সুযোগে মানুষ এর শিকারে পরিণত হয় এবং তখন এর মাত্রাও বৃদ্ধি পায়।
রবিবার (৩০ জুলাই) বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে জাতিসংঘ মহাসচিব এসব কথা বলেন। ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক প্রস্তাবের মাধ্যমে প্রতি বছর ৩০ জুলাই বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবস হিসেবে সারা বিশ্বে পালন করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর থেকে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালিত হয়।
গুতেরেস বলেন, অসমতা বাড়ছে, জলবায়ু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাস্তুচ্যূতির হার যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি। আর এসকল কারণে অনেক বেশি মানুষ মানব পাচারকারীদের শিকারে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
তিনি বলেন, ভুক্তভোগীদের সিংহভাগই নারী ও শিশু। যাদের অনেকেই নৃশংস সহিংসতা, জোরপূর্বক শ্রম এবং ভয়াবহ যৌন নিপীড়ন ও শোষণের শিকার হয়।
তিনি আরও বলেন, তা সত্ত্বেও মানব পাচারকারীরা এখনো মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে। তাদের অপরাধ দমনের বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না। এই বিষয়ে অবশ্যই পরিবর্তন আনতে হবে।
আরও পড়ুন: আসুন গর্ব করে ঘোষণা করি, আমরা নারীবাদী: গুতেরেস
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আমাদের অবশ্যই শনাক্তকরণ ও সুরক্ষায় আরও বিনিয়োগ করতে হবে। মানুষকে পণ্য বানানো অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ব্যবস্থাকে জোরদার করতে হবে এবং ভুক্তভোগীদের জীবন পুনর্গঠনে সহযোগিতা করতে আমাদের অবশ্যই আরও বেশি কিছু করতে হবে।
তিনি বলেন, এবারের এই বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবসে আসুন আমরা মানবপাচারের শিকার ভুক্তভোগীদের শনাক্ত, সুরক্ষা ও সহযোগিতা দিতে এবং পাচারের শিকার কোনো ভুক্তভোগী যেন পেছনে পড়ে না থাকে, তা নিশ্চিতে আমাদের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করি।
তিনি আরও বলেন, আসুন একসঙ্গে আমরা এমন বিশ্ব গড়ে তুলি, যেখানে কাউকে কখনো বেচা-কেনা কিংবা শোষণ করা হয় না।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক নির্যাতনের বিচারের আহ্বান গুতেরেসের
অভিবাসনের বৈশ্বিক চুক্তি ‘পথ দেখাচ্ছে’: গুতেরেস
১ বছর আগে
সত্য ও সত্য বলা মানুষগুলোকে আক্রমণ করা বন্ধ করতে হবে: বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে জাতিসংঘের মহাসচিব
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস (৩ মে) উপলক্ষে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাণী দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তিন দশক ধরে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের কার্যক্রমের কথা স্মরণ করে আসছে। এই দিবসটি একটি সহজ সত্যকে তুলে ধরে যা হলো - আমাদের সার্বিক স্বাধীনতা নির্ভর করে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর।’
তিনি আরও বলেন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হলো গণতন্ত্র ও ন্যয়বিচারের ভিত্তি। স্বাধীন সংবাদমাধ্যম বস্তুনিষ্ঠ তথ্য উপস্থাপন করে আমাদের মতামত গঠনে এবং ক্ষমতায় থেকে সত্য বলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা মানবাধিকারেরই প্রাণশক্তি।
মহাসচিব বলেন, ‘কিন্তু বিশ্বের প্রতি প্রান্তে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা আজ আক্রান্ত। মিথ্যা তথ্য দ্বারা সত্য হুমকির সম্মুখীন এবং বিদ্বেষপ্রসূত বক্তব্য সত্য ও অলীক কাহিনীর মধ্যেকার ফারাক, বিজ্ঞান ও ষড়যন্ত্রের মধ্যেকার ফারাককে ম্লান করে দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন: প্রফেসর ইউনূসকে ‘জিরো ওয়েস্ট অ্যাডভাইজরি বোর্ড’-এর সদস্য নিযুক্ত জাতিসংঘের মহাসচিবের
তিনি বলেন, ক্রমান্বয়ে গুটি কয়েক মানুষের হাতে সংবাদমাধ্যম শিল্পের নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে। বহু স্বাধীন সংবাদ সংস্থা আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে, পড়ছে। সাংবাদিকের কণ্ঠরোধে দেশে দেশে আইন প্রণয়ন হচ্ছে। এতে সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের সুযোগ যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা আরও বেশি হুমকিতে পড়ছে।
মহাসচিব আরও বলেন, এদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ইন্টারনেটে এবং প্রাত্যহিক জীবনে সরাসরি আক্রমণের শিকার হচ্ছেন সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমকর্মীরা। হয়রানি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, আটক ও কারাবন্দী হওয়া যেন তাদের জীবনের নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠছে।
বিশ্বে ২০২২ সালে অন্তত ৬৭ জন সংবাদমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। আগের বছরের তুলনায় এই সংখ্যা অবিশ্বাস্যভাবে ৫০ শতাংশ বেশি। নারী সাংবাদিকদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অনলাইনে সহিংসতার শিকার হয়েছেন এবং এক-চতুর্থাংশকে সরাসরি হুমকি দেওয়া হয়েছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, সংবাদমাধ্যমকর্মীদের সুরক্ষায় এবং তাদের ওপর হওয়া অন্যায়ের দায়মুক্তির প্রবণতার ইতি টানতে ১০ বছর আগে জাতিসংঘ প্ল্যান অব অ্যাকশন অন দ্য সেফটি অব জার্নালিস্ট বা সাংবাদিকদের নিরাপত্তায় কর্মপরিল্পনা প্রণয়ন করে।
তিনি আহ্বান জানান, আজ এবং প্রতিটা বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম স্বাধীনতা দিবসে সারা বিশ্বকে অবশ্যই একসুরে কথা বলতে হবে। হুমকি ও আক্রমণ বন্ধ করতে হবে। পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সাংবাদিকদের আটক ও কারাবন্দী করা বন্ধ করতে হবে। মিথ্যা ও গুজব রুখে হবে। সত্য ও সত্য বলা মানুষগুলোকে আক্রমণ করা বন্ধ করতে হবে।
মহাসচিব বলেন, সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো সাংবাদিকের পাশে সারা বিশ্ব দাঁড়িয়ে আছে।
আরও পড়ুন: আল জাজিরার সাংবাদিক হত্যায় শোকাহত জাতিসংঘের মহাসচিব, নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি
১ বছর আগে
বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করলেন আন্তোনিও গুতেরেস
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস চলমান বৈশ্বিক সংঘাত, আর্থিক, জ্বালানি ও খাদ্য সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন-এর সঙ্গে রবিবার সাক্ষাৎকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
এই প্রেক্ষাপটে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্ল্যাক সি গ্রেইন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে সার ও শস্য আমদানির মাধ্যমে তাদের খাদ্য সংকট মোকাবিলায় সহায়তা করে।
আরও পড়ুন: আল জাজিরার সাংবাদিক হত্যায় শোকাহত জাতিসংঘের মহাসচিব, নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি
আন্তোনিও গুতেরেস জানান যে লাটভিয়া, এস্তোনিয়া, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসে সারের কাঁচামালের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে যা বাংলাদেশ সাশ্রয়ী মূল্যে আমদানির কথা বিবেচনা করতে পারে।
মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বস্ত করেন যে বাংলাদেশ এই সুযোগ কাজে লাগানোর কথা বিবেচনা করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসাধারণ উন্নয়নের গতিধারার প্রশংসা করে মহাসচিব কামনা করেন যে বাংলাদেশ আগামী বছরগুলোতে বিশেষ করে এসডিজি অর্জনে আরও সাফল্য অর্জন করবে।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে শীর্ষ সেনা ও পুলিশ সদস্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশের ধারাবাহিক নেতৃত্বেরও প্রশংসা করেন তিনি।
সম্প্রতি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের ওপর গৃহীত রেজ্যুলেশনের পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা সংকট ও এর সম্ভাব্য উত্তরণের উপায় নিয়েও আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মহাসচিব।
তারা এই সংকট সমাধানে আসিয়ানের কার্যকর নেতৃত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এই প্রেক্ষিতে মহাসচিব ১ দশমিক ২ মিলিয়ন রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের উদারতার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং মিয়ানমারে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফেরাতে জাতিসংঘের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাধারণ পরিষদের সভাপতি সাবা কোরেসি ডিপার্টমেন্ট অব পিসবিল্ডিং অ্যান্ড পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স (ডিপিপিএ)-এর আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রোজমেরি ডিকার্লো ও পিস অপারেশন বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁপিয়েরে ল্যাক্রুয়া সঙ্গেও বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ‘উন্নয়নের বিস্ময়’: বললেন জাতিসংঘের মহাসচিব
সাধারণ পরিষদের সভাপতির সঙ্গে বৈঠকের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
বিশেষভাবে তিনি সভাপতির সঙ্গে সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন বিষয়ে বাংলাদেশ কর্তৃক একটি মন্ত্রী পর্যায়ের নতুন ফোরাম প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন।
উপরোক্ত উদ্যোগের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভাপতি সাম্প্রতিক সময়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের অসাধারণ নেতৃত্ব, কার্যকর সম্পৃক্ততা ও উল্লেখযোগ্য অবদানের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
ডিপিপিএ-এর আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ জাতিসংঘের শান্তি বিনির্মাণ কমিশনে (পিবিসি) চেয়ারম্যান থাকাকালীন ২০২২ সালের বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল।
পিস অপারেশন বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ভবিষ্যতে জাতিসংঘের পিসকিপিং মিশনসমূহে যৌথ উদ্যোগে শান্তিরক্ষী মোতায়েনের জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশ ও গাম্বিয়ার মধ্যে সমাপ্ত দ্বিপক্ষীয় চুক্তিকে স্বাগত জানান।
তিনি আশ্বস্ত করেন যে তার বিভাগ এমন উদ্যোগকে উৎসাহিত করবে যাতে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে অন্যান্য দেশ উপকৃত হতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে ড. মোমেন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অপারেশনে বাংলাদেশের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি এবং প্রয়োজনে আরও শান্তিরক্ষী ও সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য তার প্রস্তুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
উপরোল্লিখিত বৈঠকসমূহ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করবেন জাতিসংঘের মহাসচিব
১ বছর আগে
বিশ্বের ৭৮ মিলিয়ন শিশু কোনোদিন স্কুলে যায় না: জাতিসংঘ প্রধান
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, যুদ্ধ, জলবায়ু বিপর্যয় ও বাস্তুচ্যুতির কারণে বিশ্বজুড়ে ৭৮ মিলিয়ন ছেলে ও মেয়ে শিশু ‘কোনোদিন স্কুলে যায়না’। এছাড়া আরও কয়েক মিলিয়ন শিশু অনিয়মিত শিক্ষা গ্রহণ করে।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের গ্লোবাল ফান্ড এডুকেশন ক্যানট ওয়েট (ইসিডব্লিউ)’র মাধ্যমে জরুরি পরিস্থিতিতে শিক্ষার জন্য আরও তহবিল সংগ্রহের আহ্বান জানিয়ে গুতেরেস এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন যে শিক্ষার অধিকার থেকে কাউকে বঞ্চিত করা উচিত নয়।
গুতেরেস বলেন, বর্তমানে ২২২ মিলিয়ন শিশুর শিক্ষা ক্ষতির মুখে রয়েছে। ‘তাদের সাহায্য করার জন্য ১৮টি দেশ এবং ব্যক্তিগত অংশীদাররা ল্যান্ডমার্ক সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে জাতিসংঘের বৈশ্বিক তহবিল ইসিডব্লিউ-তে ৮২৬ মিলিয়ন ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের খসড়া রেজ্যুলেশন: ইউক্রেনের শান্তি নিশ্চিত করতে হবে
তিনি বলেন, ‘আপনি যেই হোন না কেন, আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, আপনার জীবনে যে বাধাই আসুক না কেন, আপনার মানসম্পন্ন শিক্ষা পাওয়ার অধিকার আছে।’
তিনি ঝুঁকিপূর্ণ শিশু এবং তরুণদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আরও বেশি বৃহত্তর আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার আবেদন জানিয়েছেন।
জেনেভায় উচ্চ-পর্যায়ের অর্থায়ন সম্মেলনে মহাসচিব এডুকেশন ক্যানট ওয়েট (ইসিডব্লিউ) বিষয়টিকে স্বাগত জানান। ২০১৭ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে তহবিলটি ৮৭ হাজার শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং সঙ্কটে থাকা সাত মিলিয়ন শিশুকে ‘তাদের প্রাপ্য শিক্ষা’ দিয়েছে।
সম্মেলনের প্রথম দিনে ১৮টি দেশ এবং বেসরকারি খাত থেকে প্রতিশ্রুতি হিসাবে ৮২৬ মিলিয়ন ডলার পাওয়া গেছে।
জাতিসংঘের বৈশ্বিক শিক্ষা বিষয়ক বিশেষ দূত এবং ইসিডব্লিউ হাই-লেভেল স্টিয়ারিং গ্রুপের প্রধান গর্ডন ব্রাউন বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বের সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন ও দুর্গম স্থানের এবং সবচেয়ে অবহেলিত শিশুদের কথা বলছি। আমরা সেই মেয়েদের কথা বলছি, যারা পাচার হতে বা শিশুশ্রম কিংবা বাল্যবিয়েতে বাধ্য হবে; যদি না আমরা তাদের সাহায্য করতে পারি।’
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার বিষয়ে প্রথম রেজ্যুলেশন গ্রহণ
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে অপরাধের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে 'গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস' গঠন
১ বছর আগে
বিশ্বে গণতন্ত্রের পশ্চাদপসরণ ঘটছে: জাতিসংঘ মহাসচিব
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মুক্ত গণমাধ্যম ছাড়া গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে না এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছাড়া কোনো স্বাধীনতা নেই।
১৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র দিবসে এবং প্রতিদিন, আসুন আমরা সর্বত্র স্বাধীনতা এবং সকল মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য কাজ করি।’
আজ আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসের ১৫তম বার্ষিকী। ২০০৮ সাল থেকে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বে গণতন্ত্রের পশ্চাদপসরণ ঘটছে, নাগরিকদের মতপ্রকাশের সুযোগ সংকোচিত হচ্ছে।’
গুতেরেস বলেন, অবিশ্বাস ও অপতৎপরতা বাড়ছে এবং মেরুকরণ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা জাতিসংঘ মহাসচিবের
তিনি বলেন, সতর্ক হওয়ায় এখনই সময়। গণতন্ত্র, উন্নয়ন এবং মানবাধিকার যে পরস্পর নির্ভরশীল এবং পারস্পরিকভাবে শক্তিশালী হয় তা নিশ্চিত করার এখনই সময়।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, সাম্য, অন্তর্ভুক্তি এবং সংহতির গণতান্ত্রিক নীতির পক্ষে দাঁড়ানোর এখনই সময়।
আরও পড়ুন: আল জাজিরার সাংবাদিক হত্যায় শোকাহত জাতিসংঘের মহাসচিব, নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি
বিশ্ব ‘পরমাণু বিপর্যয়ের’ থেকে এক ধাপ দূরে: জাতিসংঘ মহাসচিব
২ বছর আগে